২০১২ সালে সমকালীন অন্যতম শীর্ষ নিউ এথিইস্ট পদার্থবিদ লরেন্স এম. ক্রাউস why there is something rather than nothing? এই মৌলিক প্রশ্নের ‘উত্তর’ দেয়ার জন্য উনার চিন্তাভাবনার সমর্থনে A Universe from Nothing শিরোনামে একটা বই লিখেন। পাশ্চাত্য বিশ্বে সেটি ব্যাপক প্রচার লাভ করেছে। জগত সৃষ্টির কারণ হিসাবে এই nothingness-এর স্বরূপ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আমি এই ২৬ মিনিটের আলোচনাটা করেছি। গতকাল সন্ধ্যায়। বরাবরের মতোই শ্রোতা ছিলেন একজন। যারা এই বিষয়ে আগে থেকে জানেন তারা এটা বেশ পছন্দ করবেন।
PBS প্রযোজিত closer to truth-এর হোস্ট রবার্ট এল. কুনের Levels of Nothing শীর্ষক প্রবন্ধে nothingness-এর সম্ভাব্য ৯টি স্তরের কথা বলা হয়েছে। আমি সেই ৯টি স্তরের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে, ক্রাউসের নাথিংনেস সম্পর্কিত থিওরির অসংগতি কোথায়, তা এই আলোচনায় দেখিয়েছি।
রবার্ট কুনের প্রবন্ধটির পাওয়ারপয়েন্ট উপস্থাপনা: Levels of Nothing by Robert Lawrence Kuhn
এই আলোচনাকে আমি ইসলামের তাওহীদ ধারণার সাথে রিলেট করেছি। সেখানে দেখিয়েছি, আল্লাহকে আমরা জানতে পারি তাঁর সিফাত তথা গুণাবলীর মাধ্যমে। তাঁর যাত তথা সত্তাগত যে অনন্যতা তা আমাদের বোধগম্যতার অতিবর্তী। প্রসংগক্রমে বলা যায়, আপনি ঈশ্বরবাদী হোন বা নিরীশ্বরবাদী হোন, আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে, ইসলাম যে ঈশ্বর, খোদা বা সৃষ্টিকর্তার কথা বলে তা অন্য কোনো ধর্মে নাই। অন্যান্য ধর্ম সিফাতি খোদার কথা বলে। যাত তথা সত্তাগত অবোধগম্য যে খোদা, তা অন্য কোনো ধর্মে পাওয়া যায় না। সেসব ধর্মে খোদার যাতকে সিফাতের সাথে গুলিয়ে ফেলা হয়েছে। কেউ কেউ আবার একেকটা সিফাতকে একেকটা খোদা বানিয়ে নিয়েছে। উল্লেখ্য, আমি মনে করি না যে আল্লাহর সিফাতসমূহ তাঁর যাত হতে স্বতন্ত্র।
আরো বিস্তারিত জানতে চান? আপাতত কিছু মেগাবাইট খরচ করে ভিডিওটা ডাউনলোড করে দেখেন। ডাউনলোডের কথা বলছি এ জন্য যে, বুঝতে হলে অন্তত কিছু কিছু অংশ রিপ্লে করে শুনতে হতে পারে। ভিডিওটা না দেখে এ সংক্রান্ত স্পেসিফিক প্রশ্ন করবেন না, প্লিজ! আবার, ভুল বুঝবেন না যেন। আমি আপনাদের নির্দোষ প্রশ্নকে বাধাগ্রস্ত করতে চাচ্ছি না। চাইতেছি, ক্রাউসের কোয়ান্টাম-ম্যাজিকের নানা রকম বুজরুকি দেখে যারা এ বিষয়ে জানার জন্য আগ্রহী হয়েছেন, তারা যেন সিরিয়াসলি এনগেইজড হোন।
আপনি যদি আস্তিক হোন, তাহলে এক কথাতেই ক্রাউসকে নাকচ করে দিয়ে সুখে শান্তিতে ঈমান-আমল নিয়ে দিনাতিপাত করতে পারেন। এই ভিডিও আপনার জন্য নয়। কিন্তু সন্দেহবাদীদের যারা মোকাবিলা করেন অথবা নিজের এতমিনানের জন্য যারা উভয়পক্ষের যুক্তি সম্বন্ধে নিরপেক্ষভাবে জানতে চান, এই ভিডিও তাদের জন্য।
ফেসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য
Sourav Abdullah: ১। আলোচনাটা দেখার আগে লাইক দিয়েছিলাম, আর দেখার পরে reacted love।
২। প্রসঙ্গক্রমে ইতালিয়ান প্রাণ পদার্থবিদ পল ক্লায়েন্স ইবারসোল্ডের কথা মনে পড়ে। “এই মহাবিশ্বের জন্ম সম্পর্কে বিজ্ঞান আপাতদৃষ্টিতে খুবই প্লাবনিক একটা তত্ত্ব দাঁড় করাতে পারে। কিন্তু কোথা থেকে এই সৃষ্টির জন্য জড় পদার্থ ও শক্তি এসেছে এবং কেনই বা এই মহাবিশ্বটা এমনইভাবে গঠিত ও শৃঙ্খলাবদ্ধ, সে বিষয়ে কোন ব্যাখ্যাই বিজ্ঞানে জুটবে না।”
৩। মোদ্দাকথা হলো, আমরা যেহেতু এই মহাবিশ্বের সৃষ্টির পরবর্তী অধ্যায়ের ব্যক্তি বা বস্তু, তাই এর পূর্ববর্তী কোন কিছু নিয়ে আমাদের চিন্তা, কল্পনা, কথা, বা কাজ ইত্যাদি কিছুদূর গিয়ে থেমে যেতে বাধ্য।
Mohammad Mozammel Hoque: হ্যাঁ, ব্যাপারটা তাই। sciencistদের মতে, একটা Supreme Nothingness থেকে জাগতিক নিয়ম হয়ে জগত সৃষ্টি হয়েছে। অথবা, জাগতিক নিয়মগুলো স্বয়ম্ভূ। তাদের মতে, এটি হতে পারে। যদিও এটি আমাদের জানা ও মানার মতো সব চিন্তাশক্তি ও সূত্রকে ভায়োলেট করে।
অচেতন এই ‘সর্বশক্তিমান’ শূন্যতা বা এই অচেতন স্বয়ম্ভূ জাগতিক নিয়মের যুক্তিবিরোধী পূর্ব-উপস্থিতির মতো অকল্পনীয় কল্পনার পিছনে ছোটার চেয়ে আল্লাহর ওপর ঈমান আনাই তো অধিকতর যুক্তিসংগত। বিজ্ঞানবাদীদেরকে এসব বুঝানোর জন্য আমার কৌশলটা বেশ কার্যকরী।
সেটা হলো not shouldering the burden of proof । অর্থাৎ, ‘প্রমাণের’ বোঝা কাঁধে না নেয়া। যুক্তির খাতিরে আপাতত পরাজয় মেনে নিয়ে অপরপক্ষকে যুক্তির ময়দানে টেনে আনা। এটি সক্রেটিস অনুসৃত দ্বান্দ্বিক পদ্ধতি।
আফসোস, যুক্তি চর্চার এই ধারা তথা ফিলোসফিকে কিছু অবুঝ ইসলামপন্থী ‘গ্রীক ভাবধারা’ বলে এড়িয়ে যায়। গ্রিক দর্শনে নাস্তিকতা আছে। অথচ সক্রেটিস, প্লাটো, এরিস্টটল, পিথাগোরাস – এরা কেউই নাস্তিক ছিলেন না।
যাদের জন্য এটি লেখা you are one of them.
“এগিয়ে যাও
আগামীর পথে
সূর্যের মতো জ্বলে উঠ
অনুভবের বিস্ফোরণে
অবিরত ছড়াও আলো
জীবনের অপার সম্ভাবনার রূপায়নে
অদম্য ইচ্ছার অমিত উত্তাপে
সত্য হোক তোমার সব
সুপ্ত সৃজনশীল স্বপ্ন…!”
may Allah grace us all.
Sourav Abdullah: ameen