আহা জুলাই, তারা কোথায়…!

মনে হয় তারা আছে এই তো আশপাশে।
মিছিলের সামনে, কলেজ ক্যাম্পাস ফ্যাকাল্টির করিডোরে।
দেখা হলে সলজ্জ হাসি দিয়ে বলবে,
‘স্যার, আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন?’
‘চেনো আমাকে?’ – আমার খানিকটা অপ্রস্তুত প্রশ্ন।
বলবে, ‘হ্যাঁ, আপনি তো মোজাম্মেল স্যার’।
প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীরা এভাবে বলে আমাকে।

ভাবি, অকালে ঝরে যাওয়া এইসব তাজা ফুল,
আমাদের সব শহীদেরা
সহসাই একদিন নেমে আসবে পৃথিবীতে।
আবারো এগিয়ে যাবে দুর্বার
ন্যায্যতার দাবিতে।
আমাদের দেখা হবে কোনো বিক্ষোভ সমাবেশ, মিছিলে।
গণআন্দোলনে জ্বলে উঠবো আমরা আবারও
অপ্রতিরোধ্য জুলাই হয়ে।

আসহাবে কাহাফের সপ্ত যুবকের মতো
আমাদের শত সহস্র শহীদ জেগে উঠবে আবার,
ফিরে আসবে তাদের মাতৃভূমিতে। দেখবে, এখানে ন্যায় প্রতিষ্ঠা হয়েছে।
এরপর তারা ঘুমাবে শান্তিতে,
চিরতরে।

আলোর পাখি, আমাদের নয়ন মনি, কলিজার টুকরা, সোনার ছেলেরা,
আমার নিহত সন্তানেরা,
আহা, কত নিষ্পাপ তোমরা!
কত পবিত্র তোমাদের চেহারা!
কীভাবে পারলো এত সব কচি বুকে
গুলি চালাতে, পাষাণেরা?

বাঙালি জাতি স্মরণ করবে তাদের
জানা-অজানা বীর শহীদদের, চিরকাল।
তোমরা আছো, থাকবে আমাদের হৃদয়ে,
সাহসিকতার, প্রেরণার বাতিঘর হয়ে,
প্রতিটা দুপুর সন্ধ্যা সকাল।

তোমাদের আত্মদান আমাদেরকে করেছে গর্বিত, মহিয়ান।
আমাদেরকে দিয়েছে জীবন।
এর প্রতিদান হয় না কিছুতে।
এক নগণ্য সহযোদ্ধা হিসেবে
আজ একটি বছর পরে
তোমাদের স্মরণ করছি শ্রদ্ধাভরে।
মরে গিয়ে তোমরা বেঁচে গেছো।
তোমাদেরকে ছুঁতে পারেনি স্বার্থলোভের কোনো গ্লানি, কালিমা।
ভালো থাকো তোমরা জীবনের ওপারে।

৪ জুলাই, ২০২৫ | এস.ই. ১৫, দক্ষিণ ক্যাম্পাস, চবি

কবিতাটির আবৃত্তি শুনুন এখানে

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *