ফেইসবুকে দেখলাম, বিয়েতে বাহুল্য খরচের বিষয়টাকে কটাক্ষ করে একজন লিখেছেন,

“…প্ল্যান করে রাখছিলাম আমার বিয়ের আয়োজন সাদামাটা করব, মসজিদে বিয়ে হবে। আর ইয়াতিমখানায় কিংবা সুবিধাবঞ্চিতদের কোন স্কুলে ছোট্ট একটা খানাপিনার আয়োজন করে করব। তাসনিম জারার ঘটনার পর মনে হইল এইটা করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। বরং আমার উচিৎ ধার কর্য করে হলেও লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করে জাঁকজমক করে হিন্দি সিরিয়ালের মত বিরাট আয়োজনে সাজসজ্জার সাথে বিবাহ করা।”

আমাদের সমাজে মেয়েদের সমস্যা হলো, অতি নগন্য ব্যতিক্রম বাদে তারা বিয়েটাকে জীবনের পরম একটা কিছু বলে মনে করে। এটি সমাজের সমস্যা। নারীরা এর শিকার। বলবেন, ‘সমাজ সংস্কারই এর থেকে উত্তরণের উপায়’। আমি আপনার সাথে অর্ধেক একমত। সমাজ কোনো বায়বীয় ব্যাপার না। সমাজের সদস্যদের নিয়েই সমাজ। সদস্যদের যে আচরণ সমাজে প্রভাব বিস্তার করে তা-ই সামাজিক সংস্কৃতি হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। কোনো সামাজিক সংস্কৃতিকে ক্ষতিকর মনে করলে, সেটির অবলুপ্তি কামনা করলে কোনো বেটার অল্টারনেটিভ দিয়ে সেটিকে পরিবর্তন করতে হবে। শুধু যুক্তি আর মুখের কথা দিয়ে কোনো সামাজিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা বা পরিবর্তন হয় না।

মানবিক সত্তা ও মানবিক পরিচয়কে ছাপিয়ে বিশেষ লিঙ্গ পরিচয় যখন মেয়েদের ১ নম্বর বা মূল পরিচয়, মানবিক নৈতিকতাকে ছাড়িয়ে নারীত্ব যেখানে কারো সবচেয়ে বড় অবলম্বন বা ঝুঁকি, সেখানে নারীদের রূচি ও দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হতে পারে তা বুঝতে বেশি কষ্ট হওয়ার কথা নয়।

উপরে উদ্ধৃত স্ট্যাটাসে এক নারী-পাঠক মন্তব্য করেছেন,

“…বিয়ের সাজসজ্জা, আয়োজন কেমন হবে সেটা বর কনের নিজস্ব ব্যাপার। সুতরাং কেউ সাদামাটা করলে তাকে নিয়ে টানা হেচড়া যেমন শোভনীয় নয়। আবার হেভী মেকওভার, দামী অলংকার কিংবা গর্জিয়াসলি দিনটাকে সাজানো নিয়ে তাচ্ছিল্য করে কটাক্ষপাত করাটাও কোন অংশে সহী না। এটা যার যার নিজস্ব ব্যাপার। আপনার কাছে স্রোতের উল্টাহাটা সাদা শাড়ি জিরো মেকাপের বিয়ের সাজ যেমন ইন্সপায়ার্ড বলে মনে হয়, অন্য কোন মেয়ের কাছে বিয়েতে হেভী বেনারসী লাল টুকটুক শাড়ি গয়নাটাও সারাজীবনের সবচেয়ে দামী স্বপ্ন বলে মনে হয়! নিজস্বতা যার যার, তাই নিয়েই বাঁচুক।”

সমস‍্যা হলো, সমাজ ও রাষ্ট্র এত বড় নয় যে, যে যার মতো করে নিজস্বতা নিয়ে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারবে। দুনিয়াটা বরং খুব ছোট। এখানকার আহরণযোগ্য রিসোর্স সীমিত। বণ্টনও অ-সুষম। তারচেয়ে বড় কথা হলো, সমাজ হলো পরষ্পরের সাথে সহযোগিতা করার ক্ষেত্র। এটি মানিয়ে চলার জায়গা। যে যার খুশী মতো চললে পরিবার হয় না, সমাজ হয় না। ব্যক্তি স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্যই সব সামাজিক প্রতিষ্ঠান। এ কথাটা যতটুকু সত্য, স্বাধীনতা মাত্রই জাগতিক সীমাবদ্ধতা দ্বারা সীমিত, মূল্যবোধ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, এ কথাগুলোও ততটুকু সত্য। ব্যক্তির লাগামহীন স্বাধীনতা আর সমাজ – এই দুইটা কনসেপ্ট পরষ্পর বিরোধী।

পুরো জীবনে অন্তত একবার একদিনের জন্য হলেও বাদশা বা রানী হতে কে না চাইবে? এ’রকম কতো আকাশ-কুসুম কল্পনা মাঝে মাঝেই আমাদের আচ্ছন্ন করে। সেটা দোষের কিছু নয়। কিন্তু এ ধরনের অবাস্তব চিন্তায় অবসেসড থাকা, এ ধরনের অপচেষ্টাকে লেজিটিমেইট করার চেষ্টা করা নিঃসন্দেহে মানসিক সুস্থতার পরিপন্থী। বিয়ের সময়ে যারা একদিনের জন্য হলেও সামর্থ্যের বাইরে গিয়ে রানী হতে চান, আমার দৃষ্টিতে সেটি তাদের মজ্জাগত হীনমন্যতার পরিচয়। তাদের একাংশকে দেখি, পুরুষতন্ত্রের বিরুদ্ধেও তারা সময়ে সময়ে সোচ্চার। বড় বড় কথা বলেন। কী বৈপরিত্য …! আশ্চর্য …! যেখানে রানী আছে, সেখানে রাজাও তো থাকবে। রাজা ন্যায়পরায়ণ হবেন, সেটি আশা করা যায়। কিন্তু এর তো কোনো নিশ্চয়তা নাই। যেখানে দেবী আছে, সেখানে শক্তিমান দেবতাও থাকবে। নারীদের রানী বানানো, দেবী বানানো, এ’সব আদতে পুরুষতন্ত্রেরই মাজেযা। সিম্পলি, রিভার্স গেইম। আত্মমর্যাদা, বুদ্ধি ও কাণ্ডজ্ঞানসম্পন্ন নারীরা এটি না বুঝার কথা না।

বিয়েটাকে এত সিরিয়াসলি নেয়ার কোনো কারণ দেখি না। এটি জীবন-মরণের মতো কোনো ব‍্যাপার না। খাওয়া, পরা, শিক্ষা, চিকিৎসা ও নিরাপত্তার মতো এটিও অন্যতম মৌলিক মানবিক প্রয়োজন।

বিয়ে একবারই হবে। একজনের সাথেই জীবন কাটাতে হবে। এসব ভারতীয় উপমহাদেশের সংস্কৃতি। এর ভিত্তি হলো অযৌক্তিক অবদমন ও পুরুষতন্ত্র। ইসলাম, মানবিকতা ও যুক্তি-বুদ্ধির সাথে এহেন ‘দেব-দাসী’ সম্পর্ক ও সংস্কৃতির কোনো সম্পর্ক নাই।

Cplus Tv নামে একটা ইউটিউব চ্যানেল হয়েছে। চাটগাঁইয়া ভাষা সেখানে একমাত্র ভাষা। সেখানে ডিভোর্সের ওপর একটা সাক্ষাতকার দেখলাম। যেসব বিষয়কে বিয়ে ভেংগে যাওয়ার কারণ হিসাবে সংশ্লিষ্ট মহিলা মেজিস্ট্রেটকে বলতে দেখলাম তা ব্যক্তিগতভাবে আমিও খেয়াল করেছি। সেসব উপসর্গ নিয়ে আমিও চিন্তিত। কিন্তু তারমানে এই নয় যে, ডিভোর্স রেইট বেড়ে যাওয়াটা ওভারঅল খারাপ হচ্ছে। ধুঁকে ধুঁকে মরা, বাধ্য হয়ে ঝুলে থাকার চেয়ে যে যার পথে চলাই ভালো। মানসিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার কোনো মানে হয় না। প্রত্যেকের উচিত নিজের জীবনই যাপন করা। কারো জন্য কারো দ্বীন-দুনিয়া সেক্রিফাইস করাকে আমি সমর্থন করি না। সেটি স্বামী-স্ত্রী শুধু নয়, যে কোনো সম্পর্কের জন্যই প্রযোজ্য।

আমার এক ভাগিনা পেশাগত প্রয়োজনে প্রায়শ ইন্দোনেশিয়ায় যায়। সে বললো, সেখানে নাকি মেয়েদের আর্লি টিন এইজে বিয়ে হয়ে যায়। বাচ্চা-কাচ্চাও হয়। বিয়ের পরেও তারা লেখাপড়া কনটিনিউ করে। তিরিশের কোটায় বয়স হতে হতে প্রায় এক চতুর্থাংশ মেয়ের বিয়ে ভেংগে যায়। ওসব ডিভোর্সি মেয়েরা আবারো বিয়ে করে। এটাই তো সুস্থ সমাজের চিত্র। ব্যভিচারকে কঠিন ও বিয়েকে সহজ করতে হলে ডিভোর্স দেয়া ও নেয়ার বিষয়টাকেও সহজভাবে নিতে হবে। আজকের দিনে ক’জন ইসলামিস্ট পুরুষ পাওয়া যাবে যারা খাদিজা (রা.) এর মতো বয়স্কা বিধবাকে বা কোনো ডিভোর্সি নারীকে বিয়ে করতে প্রস্তুত? এমন কোনো ক‍্যারিয়ারিস্ট ইসলামী নারীনেত্রী কি আছেন যিনি খাদিজা (রা.)-এর মতো ‘অপ্রতিষ্ঠিত’ কিন্তু ভালো ছেলেকে বিয়ে করার জন্য আগ্রহী হবেন? এবং, তেমন স্বামীর অনুগত থাকবেন? তার জন্য ক্যারিয়ার সেক্রিফাইস করবেন? আগের ঘরের বাচ্চাওয়ালা নারী বা পুরুষকে বিয়ের করার কথা নাই বা বললাম …! আদর্শটা বোধের ব্যাপার। শুধুমাত্র এক্সপোজারে থাকার জিনিস না।

আমাদের সমাজে বিয়ে নিয়ে যে ভজঘট পরিস্থিতি, তা নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় ভাবলে বুঝবেন, সমস্যাটা উভয় পক্ষেরই। সমস্যার আসল দিকটা হলো দেশীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির দোহাই দিয়ে স্বাভাবিক কামনা ও প্রবৃত্তিকে অবদমনের কৃত্রিম অপসংস্কৃতি। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পরে এখানকার এক একজন নারী বা পুরুষকে গড়পরতা এক যুগেরও বেশি সবচেয়ে উর্বর ও উন্মত্ত সময়ে ‘মোহন্ত’ সেজে বসে থাকতে বাধ্য করা হয়। দাম্পত্য যৌন জীবনের অনুপস্থিতি মানে, অন্য কোনো ফরমেটের যৌন জীবন তথা যৌন ক্রিয়ারও অনুপস্থিতি, ব‍্যাপারটা তো এমন নয়। এটি যদি স্বীকার করেন তাহলে আশপাশে কী হচ্ছে, কী চলছে তা আর খুলে বলার দরকার নাই। কথা পরিষ্কার, এই জটিল সমস্যাকে কীভাবে যতটা সম্ভব সমাধান করা যায় তা নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবতে হবে। বিয়েতে বাহুল্য খরচ এই মানবিক সংকট নিরসনে বিরাট বাধা।

এ বিষয়ে কোনো একটা লেখাতে বলেছিলাম, “আমি বুঝি না, পর্দানশীন পাত্রীরাও কেন পার্লারে গিয়ে ওভাবে মোটা অংকের বিল দিয়ে সাজগোজ করে। আজকে থেকে তের-চৌদ্দ বছর আগে এলএলএম করা এক স্নেহাষ্পদ এসে বললো, ‘মোজাম্মেল ভাই, আমি বুঝি না, ইসলামী সংগঠনের দায়িত্বশীলা এমন মেয়েকে বারো শ’ টাকা দামের নেইল পালিশ কেন কিনে দিতে হবে, বুঝতে পারছি না’। পাত্র পক্ষের লোকজন পাত্রী পক্ষের প্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে কনের জন্য শপিং করতে গেছে। সেখানে যা যা পাত্রীপক্ষকে কিনে দিতে হইছে তার মধ্যে বারো শ’ টাকা দামের নেইল পালিশও ছিলো।”

অপর একটা পুরনো লেখাতে এইটা পাইলাম, ” …তো, নারী অধিকার নেত্রীরা, বলুন, আপনার বিয়েতে কত খরচ হয়েছে? সমানাধিকারের সূত্রানুসারে তাতে আপনার ব্যক্তিগত উপার্জনের অংশ কত? বিয়েকে সহজ করো, ব্যভিচারকে কঠিন করো – আল্লাহর রাসূলের (সা) এই হেদায়েতকে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আপনার সহযোগিতা ও ভূমিকা কতটুকু? ফেইসবুকে পাল্টাপাল্টি যুক্তি দিয়ে জয়-পরাজয়ের ব্যাপার এটি নয়। এ আমার আপনার ব্যক্তি ও সমাজ জীবনের জ্বলন্ত সমস্যা। অপ্রতিষ্ঠিত দ্বীনদার ছেলেকে বিয়ে করার ব্যাপারে আপনার অন্তর কতটুকু সায় দেয়? পাশ্চাত্য ভোগবাদিতার ইসলামী সংস্করণ বানাতে যারা আগ্রহী তাদের ফেরানো যাবে না। কিন্তু সৎ ও সাহসী মানসিকতার পুরুষ ও নারীদের মধ্যে যারা এখনো সংবেদনশীল মননের অধিকারী, আমার এ কথাগুলো তাদের জন্য।”

শিরোনামে যৌতুকের কথা লিখেছি। এ নিয়ে এখানে আর নতুন করে কিছু বলতে চাচ্ছি না। এমনিতেই কথা খানিকটা লম্বা হয়ে গেছে। ‘যৌতুকের বিষ ফোঁড়া‘ শিরোনামে আমার একটা লেখার লিংক দিচ্ছি। পড়তে পারেন। লেখাটি শুরু হয়েছে এ কথা দিয়ে, “লাখ লাখ অনূঢ়া মেয়ের মাতা ও পিতার চোখে ঘুম নাই আজ / ক’টা মুখ জ্বল জ্বল করে ভুল সুখে।”

ফেইসবুকে প্রদ্ত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

Rtn Mitu Chowdhury: সহমত। ইদানিং দেখা যাচ্ছে বিয়েটাকে খুব সাধারণ কিছু ভেবে কাবিন রাখা হচ্ছে ১০০১ টাকা, এতে আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু বর্তমান ব্রোকেন সমাজে ম্যাচ হচ্ছে না বলেই কথায় কথায় সেপারেশন অথবা ডিভোর্স কিন্তু একেবারে ছেলেখেলার মতো। এসব নিয়ে আমি অধম না ভাবলেও আপনাদের কাছ থেকে দেশ ও সমাজ আশা করে সঠিক দিক নির্দেশনামা।

Mohammad Mozammel Hoque: তুচ্ছ কারণে ডিভোর্স ভালো না। এতদিন পুরুষেরা ডিভোর্সের অপব্যবহার করেছে। এখন ক্রমান্বয়ে এমপাওয়ার্ড হওয়া নারীরা এটি প্র্যাকটিস করছে। মোদ্দা কথা হলো, ক্ষমতা থাকলে মানুষ সেটার কমবেশি অপব্যবহারও করে বা করবে। সেজন্য কোনো পক্ষকে ক্ষমতাহীন বা দুর্বল করে রাখার যুক্তি নাই।

Msh Hridoy: এত দিন আমার ভুল ধারণা ছিলো যত অত্যাচার হোক সংসারটা টিকিয়ে রাখতে হবে, এখন আমার ভুল ধারণা ভেঙ্গেছে। স্যার, প্রতিটি লাইন প্রতিটি শব্দ ছিলো অসাধারণ।

Ahsanul Hoque Melon: ধন্যবাদ স্যার। বিয়ে এবং সমান অধিকার নিয়ে কথিত নারীবাদীদের জন্য চরম ভাবার বিষয়, যদি তারা চিন্তা করে তাহলে অনেক কিছু বুঝতে পারবে।

তবে,আমার প্রশ্ন হলো ইসলামী ছাত্রী সংস্থা করা মেয়ের বিয়েতে কেন ১২শ টাকা দামের নেইল পালিশ কিনতে হবে?সে এতো দিন পর্যন্ত কুরআন-হাদীসের আন্দোলন করে কি নিজের বিয়েতে ১২শ টাকা দামের নেইল পালিশ কেনার প্রশিক্ষণ নিয়েছে?সে কি বিয়ে সম্পর্কে শরীয়তের কোন জ্ঞানই অর্জন করতে পারে নি,না’কি যা অর্জন করেছে তা শুধু অপরের কাছে দাওয়াতী কাজ করার জন্য, নিজের জন্যে নই!

আমি আপনার মাধ্যমে যারা ইসলামী আন্দোলন করে এবং দায়িত্বশীল তাদের কাছে সবিনয়ে জানতে চাই,আপনারা সমাজ থেকে ব্যভিচার ও কুসংস্কার দূর করতে চান অথচ দ্বীনদার অপ্রতিষ্ঠিত ছেলের কাছে নিজের মেয়ে বিয়ে দিতে চান না কেন?

আপনারা কেন বিয়ের সময় নিজের মেয়ের জন্য পাত্র পছন্দ করার সময় অনেক ক্ষেত্রে দুনিয়াবী স্বার্থকে প্রধান্য দেন? আপনারা কি জানেন না, দ্বীনদার ছেলের কাছে হয়তো প্রচুর সম্পদ না থাকতে পারে, কিন্তু এতে তো নিশ্চয়তা আছে যে, আপনার মেয়ের সহজে ডির্ভোস হবে না!

তাই সমাজ থেকে এইসব কুসংস্কার ও শরীয়তের সাথে সাংঘর্ষিক বিষয়গুলোকে দূর করার জন্য আগে যারা সমাজে ইসলাম প্রতিষ্টিত করতে চাই তাদের পরিবার থেকে শুরু করতে হবে, অন্যথায় বস্তুবাদী মানুষগুলো কখনো শরীয়তের অনুসরণ করবে না।

Mohammad Mozammel Hoque: অচলায়তন ভাংগার জন্য কাউকে না কাউকে তো আগায়া আসতে হবে। যারা আদর্শ অনুসরণের দাবী করে, আদর্শ বাস্তবায়নের দাবী করে, তাদের তো উচিত অন্তত নিজেদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও আওতাধীন সামাজিক পরিমণ্ডলে আদর্শের দাবীকে পূরণ করে উদাহরণ স্থাপন করা।

Habibur-rahman Papul: বিয়ে সহজ হোক! ডিভোর্সও!! কিন্তু ব্যাভিচার কঠিন হোক….;

Mohammad Mozammel Hoque: বিয়ে সহজ হলে ব্যভিচার এমনিতেই বিরল হয়ে পড়বে। বিয়েকে সহজ করার জন্য বিয়েতে বাহুল্য ব্যয়কে প্রতিরোধ করতে হবে।

Abdullah Al Noman: বাহুল্য ব্যয়টা আসলে কি এবং সামাজিক প্রতিরোধের পাশাপাশি এর মানসিক ও অর্থনৈতিক সংক্রান্ত উৎস সম্বন্ধে সচেতনতা ও প্রতিরোধও সমানভাবে জরুরী

Mohammad Mozammel Hoque: বিয়েতে ছবি তোলার জন্য এক লাখ টাকা ব‍্যয় নিঃসন্দেহে বাহুল্য ব‍্যয়। উদাহরণ হিসেবে বললাম।

Habibur-rahman Papul: যেমন, ১২০০ টাকার লিপস্টিকও বাহুল্য বিয়ে….

Abdullah Al Noman: আমার প্রশ্ন এত নিরীহ টাইপ ছিল না। যাক সেটা আমার দুর্বলতা। যার সামর্থ্য আছে বা চাহিদা (অর্থনীতির ভাষায়) আছে তাকে বাহুল্য ব্যয় বলে প্রতিরোধ করবেন কিভাবে?

ভঙ্গুর অর্থনীতি বা আরো নির্দিষ্ট করে বললে বায়বীয়/ফাঁপা মুদ্রানীতির অবাধ প্রবাহ বন্ধ করতে উদ্যোগী না হলে এইসব বাহুল্য ব্যয় কোন না কোনভাবে লাভার মত উদগীরন হবেই। আমি এখানে পুঁজিবাদের ব্যর্থতা বা সম্পদের অসম বন্টনের কথা বুঝাচ্ছি না। আশা করি বুঝে নিবেন।

Mohammad Mozammel Hoque: আইন করে। মূল্যবোধ তৈরী করে। সাংস্কৃতিক-সামাজিক আবহ সৃষ্টি করে। এর কোনো একটা স্বয়ং যথেষ্ট না। বরং এই ত্রিবিধ ব্যবস্থার একটা সমন্বয়। কতজন অতিথিকে আপ্যায়ন করা যাবে তা নিয়ে আইন তো এখনো আছে। প্রয়োগ নাই। কারণ প্রয়োজনীয় ন্যূনতম সাংস্কৃতিক-সামাজিক আবহ নাই। নাই মানবিক মূল্যবোধের বন্ধন।

Abdul Kader Akib: এইটা নিয়ে কথা বলাটাও সমাজে ট্যাবুর মতো আমাদের মতো টিন এইজের ছেলে-মেয়েদের জন্য। পাছে বলে উঠবে, বিয়ের ভূত মাথায় ঢুকসে বাচ্চা ছেলের। কিন্তু প্রেম করে রোমান্টিক স্ট্যাটাস বা সেলফি দিলে লাভ ইমোর বন্যা।?

লেখাটির ফেইসবুক লিংক

Similar Posts

২ Comments

  1. আসসালামু আলাইকুম…… বারাকাতুহ

    আমি আপনার সাথে শুধু একমতই নই, বরং নিজের ও আত্মীয় পরিসরে এটা প্রতিষ্ঠিত করতে সারাটা জীবন ধরেই লড়াই করে চলছি!
    আমার অভিজ্ঞতায় যা পেয়েছি, বর-কণে উভয় পক্ষ বিষয়টা বুঝলেও আত্মীয়-সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার ঝুঁকি নিতে অনেকেই সাহসী হতে পারেননা! কিন্তু যে কোন এক পক্ষও যদি শক্ত অবস্থান ধরে রাখেন তবে সফলতা আসে, অন্ততঃ মোটামুটি সহনশীল পর্যায়ে আনা যায় !

    1. তবে চট্টগ্রামের ঐদিকের ব্যাপারটা অস্বাভাবিক বাড়াবাড়ি পর্যায়ের, ধীরে ধীরে অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ছে!!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *