গতকাল জনাব ফরহাদ মজহার উনার চিন্তা পাঠচক্রে থমাস হবসের ‘লেভিয়াথান’ নিয়ে আলোচনা করেছেন। এ নিয়ে আজ সকালে তিনি একটা স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতে উনি হবসের সামাজিক চুক্তি মতবাদকে ভুল হিসাবে চিহ্নিত করে, উনার মতে, এরই ওপর ভর করে গড়ে উঠা আধুনিক ইউরোপীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থার সমালোচনা করেছেন। প্রসংগক্রমে, যারা ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম করতে চাচ্ছে তাদেরও তিনি সমালোচনা করেছেন। উনার ভাষায়, “ইসলামপন্থিরা যখন কেন্দ্রীভূত ক্ষমতা সম্পন্ন আধুনিক রাষ্ট্রের গায়ে ইসলামি জোব্বা পরিয়ে ইসলামি রাষ্ট্র দাবি করে, তারা তখন মানুষের চরিত্র ও সমাজ সম্পর্কে হবসের অনুমানকেই মেনে নেন।”

আমি উনার বক্তব্যের বিরোধিতা করা ওয়াজিব মনে করেছি। উচিত ছিলো, এ নিয়ে প্রবন্ধাকারে কিছু লেখা। সময়, পরিবেশ ও আলসেমির জন্য তা না করে আমি ৩৮ মিনিটের এই ভিডিও বক্তব্যটি তৈরি করেছি।

এতে আমি বলেছি, ইউরোপীয় রাষ্ট্রদর্শনে সামাজিক চুক্তি মতবাদ প্রধানত তিনটি। হবসের সামাজিক চুক্তির প্রস্তাবনার সাথে জন লক ও রুশোর সামাজিক চুক্তি মতবাদের প্রস্তাবনা সামঞ্জস্যশীল নয়। যদিও পরিণতির দিক থেকে তারা মোটাদাগে একই। অর্থাৎ তারা সবাই-ই রাষ্ট্র গঠনের পিছনে সামাজিক চুক্তির অপরিহার্য ভূমিকার কথা বলেছেন। আধুনিক রাষ্ট্র গঠনটা ভুল ছিলো, এ কথা তারা কেউ বলেন নাই।

সামাজিক চুক্তির মতবাদগুলোকে একসাথে অধ্যয়ন না করে এর একটাকে খণ্ডিতভাবে উপস্থাপন ও ‘পর্যালোচনা’ করা মতলবি বুদ্ধিজীবীতার পরিচায়ক। মজহার ঠিক এই কাজটিই করেছেন। উনার লক্ষ্য হলো, উনার আরাধ্য ‘শ্রেণিহীন সমাজের’ পক্ষে ওকালতি করা। যে ধরনের ইউটোপিয়ান সমাজে, উনাদের কষ্টকল্পনা মোতাবেক, রাষ্ট্র নামক প্রতিষ্ঠানটাই থাকবে না।

কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বার বার ‘সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের’ কথা বলেছেন। আমরা জানি। শক্তিশালী রাষ্ট্রব্যবস্থা ব্যতিরেকে ‘সৎ কাজের আদশে ও অসৎ কাজের নিষেধ’ অসম্ভব। আল্লাহ রাসূল (সা) বলেছেন, “তোমরা মন্দ কাজকে হাত দিয়ে বাধা দাও। না পারলে প্রতিবাদ করো। তা না পারলে সেটাকে ঘৃণা করো।” আমরা জানি, যাকাত থাকা মানে শ্রেণীবিভক্ত সমাজ থাকা। শ্রেণিহীন সমাজে যাকাত নামক এবাদত থাকার প্রশ্ন উঠে না। আমরা জানি, যাকাত একটা ত্রিপাক্ষিক ব্যাপার: (১) দাতা, (২) আদায়কারী কর্তৃপক্ষ ও (৩) গ্রহীতা। তো, এই আদায়কারী কর্তৃপক্ষকে নিয়োগ দিবে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রের তরফে ক্ষমতাসীন সরকার। জুমা ও ঈদের নামাজে এবং হজ্বের সময়ে আরাফাতের ময়দানে খুতবা দিবে রাষ্ট্রপ্রধান বা তাঁর প্রতিনিধি। জিহাদ ঘোষণা ও পরিচালনা করবে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ। ইসলামে ধর্ম ও শাসনক্ষমতা অংগাঅংগিভাবে জড়িত। একটি ছাড়া অপরটি অচল ও অকার্যকর।

শক্তিশালী প্রশাসনিক ব্যবস্থা ছাড়া ইসলাম ‘ধর্ম’ পালন করা অসম্ভব। ইসলাম অবশ্য অগত্যা পরিস্থিতিতে মানুষকে প্রয়োজনীয় ছাড় দিয়েছে। ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা না থাকা বা ন্যূনতম মানে না থাকা সত্ত্বেও এই রোখসত বা ছাড়ের কারণে মানুষ দুর্বল মানে হলেও মুসলমান হিসাবে জীবনযাপন করতে পারে।

ইসলামের গোড়া কেটে, ইসলামকে ইসলাম যেভাবে চায় সেভাবে গ্রহণ না করে, একে প্রকারান্তরে ডিজঔন করে মজহারের মতো ধান্ধাবাজ আন্তর্জাতিক এজেন্টরা অবুঝ ইসলামপন্থীদের কাছে নিজেকে ইসলামদরদী বিশেষজ্ঞ হিসাবে উপস্থাপন করে। নিজেদের মধ্যে স্বাধীন বুদ্ধিবৃত্তি চর্চা না থাকা ও হীনমন্যতার কারণে কিছু অবুঝ ইসলামপন্থী মোহাম্মদ মোজাম্মেল হকের মতো ইসলামপন্থী বুদ্ধিজীবীদেরকে দৃশ্যত ভালো জানেন, একই সাথে তারা আবার কথায় কথায় ‘ফরহাদ ভাই’ বলে নিজেদের মজহারী হিসাবে পরিচয় দিতেও প্রীতবোধ করেন। কী পিকিউলিয়ার তাদের মেন্টালিটি!

কম্যুনিজম জানতে চান? ভালো কথা। দুনিয়াজোড়া বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে পরাজিত এই মতবাদ বাংলাদেশে ডমিন্যান্ট ইন্টেলেকচুয়্যাল ট্রেন্ড। অতএব, এ সম্বন্ধে জানা শোনা থাকাটা জরুরী। তো, ইসলামিস্ট ভাইবেরাদরগণ, বাংলাদেশে মজহারের মানের কম্যুনিস্ট তো আরো অনেকেই আছেন। তাদের ঢেরায় আপনাদের আনাগোনা দেখি না কেন? মজহার আপনারদেরকে জায়গা মতো ‘তেল মালিশ’ করতে জানে। তাই তো, উনাকে আপনারা খুব ভালা পান।

আপনাদের পত্রিকা ও প্লাটফরমে উনাকে ‘সহজিয়া-সাম্যবাদী-ইসলাম’ নামক অনৈসলামী মতবাদ ফেরি করার সুযোগ দেন। উনার ‘তবুও কম্যুনিজমের কথাই বলতে হবে’-তে আপনারা আনকমফোর্ট ফিল করেন না। কিন্তু উনি যখন উনার কোনো একজন সেবাদাসীর সাথে যৌন সম্পর্ক করেন, এবং এ নিয়ে উনার ‘স্ত্রী’র সাথে নাটক করতে গিয়ে যখন মিডিয়া সেনসেশনের কবলে পড়েন, সেটি তখন আপনাদের খুব খারাপ লাগে। ‘এসব কিছু’ জানাজানি হওয়ার পরে উনাকে আর আপন মনে করেন না। ‘ব্যভিচারী’ হিসাবে প্রত্যাখ্যান করেন। এতো অবুঝ আপনারা!

নেট কানেকশনের সমস্যার কারণে অনেকে আমার ভিডিওগুলো ডাউনলোড করে দেখতে পারেন না। তাদের জন্য এবং মজহার সমর্থক ইসলামপন্থী হিসাবে আপনার চিন্তার অসংগতির জায়গাটা চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়ার জন্য, আপনাদের বোধেদয়ের জন্য এই ছাঁচাছোলা কথাগুলো এভাবে বলা। আমার পক্ষ থেকে যে ধরনের ভাষা আপনারা মোটেও আশা করেন না, সে ধরনের ভাষা কিছুটা এসে পড়েছে। আই এম সরি ফর দ্যাট!

মজহারপন্থী ইসলামিস্টরা চিন্তার সংকটে ভুগছেন। মজহারের চৌদ্দ পৃষ্ঠা পড়তে তারা ক্লান্ত হন না। কিন্তু (কারো কারো কাছে,) ‘নিজেদের লোক’ মোজাম্মেল স্যারের তিন-চার পৃষ্ঠা লেখা পড়তেও কষ্ট লাগে। মজহারের বাগাড়ম্বর-সর্বস্ব, সারবত্তাহীন ও বৈপরীত্যপূর্ণ লেখাগুলো তাদের কাছে দীর্ঘ মনে হয় না। শুধু মোজাম্মেল স্যারের লেখাগুলো তাদের কাছে কঠিন ও দুর্বোধ্য ঠেকে। আসলে তারা ‘নিজেদের’ কাউকে সেই মানের বুদ্ধিজীবী বলে মনে করতে মানসিকভাবে প্রস্তুত নন। এখনকার ইসলামপন্থীদের একটা বিরাট অংশের ধারণা, বুদ্ধিজীবী হতে হলে যেন অন্তত খানিকটা হলেও বামপন্থী হতে হবে। আমি জানি, বামপন্থীরা কতটা শ্রুড প্রকৃতির। আপনাদের অনেকের চেয়ে আমি তাঁদের বেশি চিনি। বামপন্থীদের মধ্যে কেউ কেউ অবশ্য খানিকটা মন্দের ভালো বা তুলনামূলকভাবে ভালো। বাট আল্টিমেইটলি, অল দ্যা বার্ডস আর উইথ দ্যা সেইম ফেদার। এট দ্যা এন্ড অব দ্যা ডে, দে আর ইনহারেন্টলি ইসলামোফোব-রেডিক্যাল-ফেনাটিক এথিইস্ট। তাদের মধ্যে যারা মজহারের মতো চতুর তারা ইসলামপন্থীদের ব্যবহার করতে চায়। মজহারের ভাষায়, এটি বুর্জোয়াতন্ত্র হতে সাম্যবাদের পথে ‘গণতান্ত্রিক রূপান্তরের’ ফর্মূলা।

সামাজিক আন্দোলন’ নামের ইউটিউব চ্যানেলে আপ করা আমার এই ভিডিও বক্তব্যটির নিচে ফরহাদ মজহারের পুরো স্ট্যাটাসটি উদ্ধৃত করা আছে।

ফেইসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

Arman Alauddin: ইসলামপন্থীদের এই আচরণ শুধু ফরহাদ মাজহারের ব্যাপারেই নয়, অন্যদের ব্যাপারেও দেখা যায়। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে যেমন তারা এক একটি দলকে আপন মনে করে পরবর্তীতে সেই দলটিই তাদেরকে আবর্জনার মতো দূরে ছুঁড়ে দেয়। বুদ্ধিবৃত্তিক দিক দিয়েও তেমনটিই দেখা যায়। যেমন আল-মাহমুদের ক্ষেত্রে। ইসলামপন্থী হিসাবে তাকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে তার অশ্লীল ও নোংরামিপূর্ণ লেখাগুলো নিজেদের কৰ্মীদেরকে পড়তে উৎসাহ জুগিয়েছে।

Jubaer Talha: ভালোই বলেছেন স্যার। সব দিক থেকে আপনার সাথে একমত হয়তো পোষণ করি না, তবে এ বিষয়ে সম্পূর্ণ একমত। ২০১২/১৩ সালের দিকে তিনি যখন বিভিন্ন শিরোনামে ইসলামের নামে সাম্যবাদের ভিন্ন ভিন্ন রূপ তুলে ধরতেন তখনই এই বিষয়ে চিন্তা হচ্ছিলো যে, উনি ভিন্ন পাত্রে মদ খাওয়াচ্ছেন। এটা বুঝতে আসলেই কেন যেন অনীহা আমাদের।

Mohammad Mozammel Hoque: ইসলামের দিক থেকে পুঁজিবাদ এবং সাম্যবাদ দুটোরই কিছু ভালো দিক আছে, কিছু খারাপ দিক আছে। এক অর্থে ইসলাম যেমন সাম্যবাদী, অন্য অর্থে ইসলাম তেমন পুঁজিবাদী। যে ধর্ম বা আদর্শের পাঁচটা স্তম্ভের একটা হলো কম্পালসারি চ্যারিটি তথা যাকাতব্যবস্থা, সেটি শ্রেণীহীন সাম্যবাদী কোনো আদর্শ হতে পারে না। আবার পুঁজিবাদী ব্যবস্থা যেভাবে পুঁজিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে, ইসলামের মতো কোনো আদর্শ সেটাকে সামগ্রিকভাবে সমর্থন করতে পারে না। কথাটা আবার রিপিটেশন করে বললে বলতে হয়, ইসলাম একই সাথে পুঁজিবাদী এবং সাম্যবাদী। অন্যদিক থেকে ইসলাম পুঁজিবাদীও নয়, সাম্যবাদীও নয়।

বর্তমান বুদ্ধিবৃত্তিক পরিমণ্ডল এসব সাম্যবাদীদের নিয়ন্ত্রণে থাকার কারণে ইসলামপন্থীরাও তাদের নানা ধরনের রেটরিক ব্যবহার করে তাদের কাছে প্রিয় পাত্র হতে চায়। যারা মানুষকে একটা বস্তু হিসেবে মনে করে, সেসব লোকেরা সাম্যবাদের মাধ্যমে মানবতাবাদ কায়েম করতে চায়। কতইনা বৈপরীত্যমূলক কথাবার্তা তারা বলে। ড. আলী শরীয়তী উনার Marxism and other western fallacies নামক বইয়ে এই বিষয়গুলো সুন্দরভাবে তুলে ধরেছেন। আমরা বইটির অনুবাদের কাজ শুরু করেছি।

Nure Elahi Shafat: মজহার মতবাদ ও তার এজেন্সির বিপদগামিতা সম্পর্কে শুধু একজন মোজাম্মেল হক স্যারের প্রতিবয়ানের দিকে তাকায়ে থাকলে হবে না। বরং নিজ নিজ বলয় হতে সহজিয়া ‘সাম্যবাদী ইসলামের’ বিরুদ্ধে আপনাদের ইসলামনিষ্ঠ বৃদ্ধিবৃত্তিক, ধর্মতাত্ত্বিক চিন্তাশীলতা জারি রাখেন। সলিমুল্লাহ যেভাবে শাহবাগীয়তাবাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে শাহবাগের পরাজিত শক্তির নখদন্তহীন প্রাণীতে পরিণত হয়েছেন, ঠিক অন্যভাবে সহজিয়া সাম্যবাদী ইসলামের মার্কসিস্ট অলী হযরত ফরহাদ মজহারের প্রোপাগান্ডার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তার ভাবান্দোলনকে মোকাবেলা করেন।

Mohammad Mozammel Hoque: হাঁ, ঠিক তাই। চিন্তাকে মোকাবেলা করতে হবে চিন্তা দিয়ে। ‘সহজিয়া সাম্যবাদী ইসলাম’ যে আদতে সর্বেশ্বরবাদ ও নাস্তিকতার একটা রূপ সেটা বুঝতে হবে। অবুঝদেরকে বোঝাতে হবে। কেউ বুঝেও না বোঝার ভান করে থাকলে সেটা ভিন্ন কথা। মজহারের ইসলাম প্রজেক্ট যে খুবই মারাত্মক একটা ষড়যন্ত্র সেটা সরলমনা ইসলামপন্থীদের কাছে পরিষ্কার করে দিতে হবে।

Nure Elahi Shafat: মজহার ইসলাম সম্পর্কে আলোচনায় এনগেইজ হবার পূর্বেই একজন ফিলোসফিক্যাল গড বানায়া নিছেন। যাকে অন্যরা একেশ্বরবাদী/ অভিন্ন খোদা হিশেবে নিয়ে থাকে। বিশেষ করে মাছুম ইসলামিস্টরা। যার কারণে মজহারের প্রতি এক ধরনের অন্ধ ফেনোমেনা তৈরি হয়, যা তাদেরকে অন্ধবিশ্বাসের দিকে নিয়ে যায়। এভাবে করে তার লালনবাদী সর্বেশ্বরত্ব ধরা পড়ে না, বরঞ্চ মানুষকে ঈশ্বরে পরিণত করার বস্তুবাদী দর্শন তার বানানো ককটেল ভাবচিন্তায় চাপা পড়ে যায়। মজহারের তাত্ত্বিক ভণ্ডামী বুঝার জন্য ভাবান্দোলনের ‘বস্তুবাদী লালন’ অপর দিকে মোকাবিলার ‘বস্তুবাদী ঈশ্বর’ প্রকল্পের সাথে লালন ও মার্কসের পরস্পর সমন্ধ বোঝাপড়া জরুরি। লালন দিয়ে তিনি আল্লাহর লোকায়িত গুণগান গান মাত্র। অন্যত্র মার্কস দিয়ে তিনি পোস্টমডার্ন সোসাইটির বাতিল পরিণত মার্কসের দৃষ্টিতে রাষ্ট্রের সবকিছুরে মোকাবেলা করবার চান। জাগতিক পর্যায়ে এই হচ্ছে উনার আমলনামা, আর ইহাকে আমাদের মাথামোটা মাছুম ইসলামী পণ্ডিতরা বুজরুকি/ মজহারের কারামত মনে করে ইসলাম ইসলামপন্থীদের সাথে আল্লাহর প্রিয় বান্দার (মজহার) সম্বন্ধ জড়ায়া দেয়। স্যার, একটু আগে তিনি আরেকটি পোস্ট দিয়েছেন। দেখে নিবেন আশা করি। কীভাবে সে ইসলামপন্থীদের মনোজগতকে যন্ত্রের মতো কন্ট্রোল করে তার একটা নযির এখানে দেখবেন।

Mohammad Mozammel Hoque: এসব বিষয়ে তোমাদের মতো যারা আছে তাদের উচিত লেখালেখি এবং পাঠচক্র ইত্যাদির মাধ্যমে শক্তিশালী প্রতি-পদক্ষেপ নেওয়া।

Nure Elahi Shafat: নিজ বলয় হতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি, যদিও তা ক্ষুদ্র। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানেই মজহার নিয়ে আলোচনা হয়েছে তার ঈমানদার কমিউনিজমের ক্রিটিক করেছি এবং পাঠকদের করবার তাগিদ দিয়েছি। আশা করি প্রচেষ্টা আরো বেগবান হবে এবং আপনার ভাষায় বুদ্ধিবৃত্তিক গেরিলাযুদ্ধ ও Rezaul Karim Rony ভাইয়ের জবানে ইন্টেলেকচ্যুয়াল ভায়োলেন্স তরান্বিত হবে। হতেই হবে।

Mohammad Mozammel Hoque: বুদ্ধিবৃত্তিক গেরিলাযুদ্ধ এবং সাংস্কৃতিক জনযুদ্ধ। রেজাউল করিম রনির টার্মটা আমার খুব পছন্দ– ইন্টেলেকচ্যুয়াল ভায়োলেন্স। বিশেষ করে বর্তমান সময়ের জন্য বিশেষভাবে উপযোগী এই তত্ত্ব বা পদ্ধতি, ইন্টেলেকচুয়াল ভায়োলেন্স। ঠিকমতো না বুঝে যারা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করেন তাদেরকে থামানোর জন্য একটি কার্যকর পদ্ধতি। অনেকটা কাউন্টার টেরোরিজমের মতো।

Rezaul Karim Rony: জ্ঞানের নামে ফরহাদের অশিক্ষাগুলোকে মোকাবেলা করতে হবে। ধন্যবাদ।

Mohammad Mozammel Hoque: ফরহাদ মযহার হলেন একজন সত্যিকারের জ্ঞানপাপী। এদেশে তিনি বৃহৎ শক্তির এজেন্ট। জামাত-শিবিরের লোকেরা ঢাকা শহরে দু’চারজন একত্রিত হলেই নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্মুখীন হন। অথচ তারাই আবার মজহারের মজলিসে গিয়ে গোল হয়ে বসেন, আসা যাওয়া করেন। তাতে কিন্তু কোনো ‘সমস্যা’ তাদের হয় না। তারমানে, ইসলামপন্থীদের জন্য বর্তমানে এই প্রতিকূল সময়েও মজহারের পক্ষপুটে থাকলে তারা নিরাপদ। মনে হচ্ছে, মজহারের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গোপন আন্ডারস্ট্যান্ডিং আছে। তাই মজহারের অশিক্ষাগুলার পাশাপাশি উনার প্রকৃত অবস্থানটাও আম পাবলিকের কাছে পরিষ্কার করে তুলে ধরা এখন সময়ের দাবি।

Md Mahdi Hasan: সব মুকাল্লিদ বা অনুসারীকে মনে হয় এক পাল্লায় মাপা ঠিক না। যেমন ধরুন, আমি ফরহাদও পড়ি, আবার মুযাম্মেলও পড়ি। ঈসরায়িলি স্কলারও পড়ি, আবার তার বিপরীতে তারিক রমাদানও ধরি। এই ধরা বা ছারার ব্যাপারটাতে সব সময় সতেচন থাকার চেস্টা করি।

জ্ঞানীগুণীদের আশপাশে লোকজন ভীড় করবে, এটাই স্বাভাবিক। যেমন অনেকেই আপনার শরীরেও একটি সীল দেখায় যে আপনি সংস্কারপন্থী হিসেবে সংগঠনের রশি গলা থেকে খুলে ফেলেছেন, অথবা মূল ইসলামী আন্দোলন থেকে বের হয়ে গিয়েছেন এবং এই প্রচলিত অরগানাইজেশনের বিরোধিতা করেন ইন্টেলেকচ্যুয়াল পলিসিতে।

এই বাধা-নিষেধ সত্ত্বেও অনলাইনে ভাইরাল হওয়া আপনার প্রায় সব ভিডিও এবং লিখা শুষে নিয়েছি। বিশেষ করে স্পেসিফিক জামাত নিয়ে আপনার দুটি বই খুব মনোযোগের সহিত পড়ে আপনার জায়গা থেকে আপনার পয়েন্ট অফ ভিউ বোঝার চেস্টা করেছি।

বুড়ো ফরহাদ মজহার আগামীকালের পাঠচক্রে জ্ঞানগত দিক থেকে ভন্ডামি ব্যাতিরেকে ইনসাফের সহিত আপনার মোকাবেলা করতে না পারলে তার তরুণ ইসলামিস্ট ভক্তকুলের কাছে এমনিতেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে। অলরেডি গিয়েছেও (এটা এখন ওপেন সিক্রেট যে ইসলামিস্টদের ইউজ করা শেষে এক সময় ইসলামকে ফেলে দিবে সে)।
সুতরাং জ্ঞানীগুণীদের আক্ষেপ বা ভয় পাওয়ার দরকার নেই। এই ভাংগা-গড়ার মাঝেই শেষমেষ কিছু প্রকৃত সৎ জ্ঞানী স্কলার বিজয়ী হয়ে আসবে।

Mohammad Mozammel Hoque: বিপরীত পক্ষগুলোকে পড়া ও জানার চেষ্টা করা এবং সেই জন্য এক ধরনের সম্পর্ক রাখা, এটাকে মোটেও খারাপ মনে করি না। কিন্তু যারা আল্লাহ প্রদত্ত সব ধরনের বিদ্যা বুদ্ধি এবং সামাজিক অবস্থান নিয়েও, এমনকি যথেষ্ট পরিমাণ বয়স হয়ে যাওয়ার পরও, কেবলই শুধু জানতে চান, দিনরাত শুধু এদিক-ওদিক ছুটে বেড়ান, মনোজগতে এক ধরনের অস্থির সিদ্ধান্তহীনতার মধ্যে বসবাস করেন; আমরা যারা একটা স্থির অবস্থানে আছি, একটা কালজয়ী আদর্শে স্থিত হতে পেরেছি, তাদের উচিত, এই অস্থিরমনা লোকদের দোদুল্যমানতার ব্যাপারে ক্লিয়ার কাট অবস্থান গ্রহণ করা।

ইসলামে বুদ্ধিজীবীতার চেয়েও বোধোদয় এর গুরুত্ব অনেক বেশি। রাসূলুল্লাহ (সা) কী কারণে হযরত ওমরকে (রা) ইহুদি খ্রিস্টানদের ধর্মগ্রন্থ পড়ার জন্য কঠোরভাবে নিষেধ করেছিলেন, সেটা যদি বুঝতে পারেন তাহলে মৌলিক আকীদাগত বিষয়ে ইসলাম কেন কঠোরতা আরোপ করে সেটা বুঝতে পারবেন। বাতিলকে বাতিল জেনে সেটার সাথে প্রায়োগিকভাবে এনগেজ হওয়া কিংবা সেটাকে বুদ্ধিবৃত্তিক দৃষ্টিকোণ থেকে জানতে চাওয়ার চেষ্টা করা, এগুলো ঠিকই আছে। কিন্তু যখন বাতিলকে হক হিসেবে উপস্থাপন করা হয় তখন সেটা হতে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এমনকি, নিরাপদ অবস্থান থেকে সেটাকে যথাযথভাবে মোকাবেলাও করতে হবে। এটা ইসলামের নীতি। যতটুকু আমি বুঝেছি।

Rezaul Karim Rony: শাপলার সরকারী সখ্যতা রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বুদ্ধিজীবী হিসেবে ফরহাদের ব্যর্থতাকে পাবলিকের কাছে উদাম করে দিছে। তবে তার কাজকর্ম যারা অনেক দিন থেকে ফলো করেন তারা ঠিকই বুঝতে পেরেছেন এটাই মজহারদের এজেন্ডা। কারা এই সরকারের বিরোধিতা করতে পারবে তা কিন্তু সরকার ঠিক করে দেয়। মজহার এই দায়িত্ব নিয়ে বিরোধিতার নামে সরকারের কোর্টে বল ঠেলে দেওয়ার দায়িত্বে আছেন। বিএনপি মজহারের আছর থেকে দূরে থাকার কারণে এখনও বেঁচে আছে। জামায়াত এই মজহারের জালে আটকে দিন দিন মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। ক্রিকেটের কুফা হলো পুটুনদা (আনিসুল হক) আর রাজনীতির কুফা হলো ফরহাদ মজহার। সে যেই দলের দিকে ভেড়ে সেই দলের ১২টা বেজে যায়। ফলে মজহারের মতলব নিয়ে সন্দেহ থাকা স্বাভাবিক। আজ এইসব ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কথা না বলে লেখাটা ধরে আলাপ শুরু করি। জানি, মজহার নিজের দোষ স্বীকার করে শুধরে নেয়ার সেই সততা দেখাবে না। তারপরেও আমার দায়িত্ব হলো ওদের ব্যক্তি-কুৎসার সংস্কৃতির বাইরে গিয়ে লেখা ধরে ক্রিটিক করা। শাপলার শাহবাগী পরিণতি

Mohammad Mozammel Hoque: মজহার কার এজেন্ট সেটা আমি জানি না। তবে এটুকু নিশ্চিত বুঝতে পারছি, তিনি কোনো না কোনো বৃহৎ শক্তির এজেন্ট হিসেবে কাজ করছেন। তাই তো এই ‘বিরুদ্ধ-পরিবেশেও’ তিনি যথেষ্ট সুরক্ষাপ্রাপ্ত ও নিরাপদ আছেন। নিশ্চিন্তভাবে তিনি তার এজেন্ডা বাস্তবায়নে কর্মতৎপর আছেন। এরপরও যদি কেউ উনাকে চিনতে না পারেন সেটি তারই ব্যর্থতা।

Farid A Reza: চমৎকার! দর্শন পাঠ করলেও তুলনামূলক আলোচনার মাধ্যমে পাঠ করিনি। পাঠ করেছি পরীক্ষা পাশ এবং নিজের ‎কৌতুহল নিবারণের জন্যে। দর্শনশাস্ত্রের পণ্ডিত প্রিয়ভাজন মোজাম্মেল হক সহজ ভাষায় বিষয়টা বিশ্লেষণ করতে ‎পারেন। আমার মতো সাধারণ পাঠকদের জন্যে নতুন যুগের দার্শনিকদের সাংঘর্ষিক এবং দ্ব্যর্থবোধক মন্তব্য অনুধাবন ‎করা সহজ নয়। আরো কঠিন এর তুলনামূলক বিশ্লেষণ। যেসব বিষয় আমাদের চিন্তাকে প্রভাবিত করে সেগুলো নিয়ে ‎আমরা অধ্যাপক মোজাম্মেল হকের নিকট থেকে আরো আলোচনা আশা করি। তবে আলোচনা সাবজেক্টিভ না হয়ে অবজেক্টিভভাবে হলে ভালো হয়। ধন্যবাদ। ‎

Mohammad Mozammel Hoque: হ্যাঁ, আলোচনা খানিকটা ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। সেজন্য আমি দুঃখ প্রকাশও করেছি। তবে, কাজের বাস্তবসম্মত পন্থা হলো অতিব্যক্তিকেন্দ্রিকতা এবং তথাকথিত নিরপেক্ষ নৈর্বেক্তিকতা, এই দুইয়ের মধ্যবর্তী অবস্থানে থাকা। বহুদিন পরে আপনার মন্তব্য পেলাম আমার কোনো লেখায়। মনে হয় আমার লেখাগুলো আপনার কাছে ঠিকমত পৌঁছে না। সে যাই হোক, আপনার দোয়ার মধ্যে আমাদেরকে যেন সবসময়ে অন্তর্ভুক্ত করেন!

Farid A Reza: শোকরিয়া। একেবারে পৌঁছে না বলা যায় না। গত কিছুদিন থেকে শরীরটা কম সহযোগিতা করছে। এর সাথে নতুন কিছু ব্যস্ততা যোগ হয়েছে। তাই আগের মতো নিজের খুশিমতো পড়ালেখায় সময় দিতে পারছি না। দোয়া চাই।

Hasan Morad Siddique: ফরহাদ মজহারের চিন্তার কাছাকাছি পৌঁছুতে আপনাকে কয়েক শতাব্দি মেহনত করতে হবে। আগে পড়ালেখা চালিয়ে যান, তারপর দার্শনিক ব্যাখ্যার ভুল ধরার চেষ্টা করুন।

Mohammad Mozammel Hoque: বোঝা গেছে, আপনি একজন মজহারী। মজহারের কুযুক্তিসুলভ চিন্তার মোকাবেলায় আমার লেখা ও ভিডিও বক্তব্যে আমি তো রেফারেন্স দিয়েছি। যুক্তি দিয়েছি। চিন্তাকে চিন্তা দিয়ে মোকাবেলা করছি। দু’চারটা ব্যক্তিকেন্দ্রিক কথাও অবশ্য বলেছি। কিন্তু আপনি তো দেখছি নিছকই ব্যক্তিপূজারী। আপনার সাথে আমার হবে না। লাকুম দ্বীনুকুম ওয়াল ইয়া দ্বীন। ভালো থাকেন। No more engagement please, accept argumentative and logical exchange.

Nure Elahi Shafat: ল্যাঞ্জা ইজ হাউড টু ভেরি ডিফিকাল্ট। গো ব্যাক ইয়োর ফাদার ফরহাদ মজহার।

Hasan Morad Siddique: আমাদের সমস্যা হলো, আমরা সবকিছু মামুলিপনার চোখে দেখি। যা ভাবি, বেশিরভাগ ভাসাভাসা ভাবি। সচরাচর ভাবাকে দার্শনিক ভাবায় উন্নিত করতে না পারলে, ফরহাদ মজহার বোঝা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। কারণ ফরহাদ মজহারকে কয়েকটা প্রবন্ধ বা কলামের উপর মাপাটা অত্যন্ত কঠিন ব্যপার। যে মাপের চিন্তা করতে পারেন, সে মার্গীয় চিন্তক টোটাল বাংলা সাহিত্যে রেয়ার। তাঁর অনেক লেখা এতো এতো উঁচু চিন্তার বুননে ঠাসা যে, অনেকবার গভীর মনোযোগ দিয়ে না পড়লে তলানীতে পৌঁছা জটিল হয়ে দাঁড়ায়। আগে তাঁকে অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে নীরিক্ষণ করেন, পরে তার মতো চিন্তা আপনার মধ্যে গ্রো হয়েছে আত্নবিশ্বাস জমলে, বাহাসে নামবেন, অথবা ভুলবালের হদিস দেবেন। অল্প লেখাপড়া করে ফরহাদ মজহারকে অন্যভাবে উপস্থাপনের চেষ্টা নিজের অজ্ঞতা প্রকাশ বৈ অন্যকিছু নয়।

Mohammad Mozammel Hoque: কেন আমাকে বা কাউকে ‘ফরহাদ গবেষক’ বা ‘ফরহাদ হাফেজ’ হতে হবে? ফরহাদকে বোঝার জন্য যদি ফরহাদের সবগুলো লেখা ভালোভাবে পড়তে হয় তাহলে তো আমাকে বোঝার জন্য আমার সবগুলো লেখাও ভালোভাবে বুঝতে হবে, আমার সম্বন্ধে কোনো রকমের মন্তব্য করার আগে। এবং এটা যে কারো জন্যই প্রযোজ্য। আপনিই বলেন, এটি কি কোনো বাস্তবসম্মত পদ্ধতি হলো?

Hasan Morad Siddique: আলোচনাটা ব্যক্তিগত হয়ে যাচ্ছে না? ফরহাদ মজহারের সাথে আপনার তুলনা দিলে আলাপের পথটা অটোমেটিক বন্ধ হয়ে যায়। পদ্ধতিগত আলোচনার জন্য পদ্ধতিগত কমেন্টই আশা করবো।

আনারুল ইসলাম: ফরহাদ মজহার কী এমন দার্শনিক যে তাকে বুঝতে এতকিছু করতে হবে? যে ব্যক্তি দুনিয়াতে এত এত প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ দর্শন থাকতে লালনের বিকার দর্শনকে প্রমোট করে, সে নাকি আবার দার্শনিক! বাংলাদেশে দর্শনের বাজারে এত আকাল পড়ছে এটাই তার প্রমাণ।

Nure Elahi Shafat: “ফরহাদ মজহারের চিন্তার কাছাকাছি পৌঁছুতে আপনাকে কয়েক শতাব্দি মেহনত করতে হবে।” “আগে পড়ালেখা চালিয়ে যান”

১ম বাক্যে বোঝা যায় আপনে মজহারের ফেনাটিক কমরেড। আদতে মজহারের সমকক্ষ হবার কথা বলা ইউটোপিয়া ও খোদ মজহারকে ইন্টেলেকচ্যুয়ালি অপমান-অবমাননা করা। কারণ মানুষের চিন্তার সমকক্ষ সে নিজেই, অন্য কেউ হতে পারে না। জরুরতও পড়ে না। দ্বিতীয়ত আগে পড়ালেখা চালায়া যান বলেছেন। প্রশ্ন করি, আগ-পর নির্ধারণ করার আপনি কে? কেমনে পড়তে হবে এই পাঠের মালিকানা কি আপনার কথার সাথে সম্পর্কিত? শেষে বললেন, তারপর মজহারের দার্শনিক ভুল ধরার চেষ্টা করুন, তারমানে আপনি নিজেও মনে করেন মজহারীয় দর্শনে ভুল আছে, বাঙলাদেশে তিনি অদ্বিতীয় দার্শনিক হবার পরও! So, try to understand you have a fallacious position on your own method. thank you, bro…

Hasan Morad Siddique আপনি যদি আমাকে মজহারিয় দর্শনের পছন্দের তালিকায় দেখতে চান, অস্বীকার করার জো নেই। কারণ পুরানা হেরাক্লিটাস থেকে হালের নোম চমস্কি পর্যন্ত আদ্যোপান্ত দর্শনের ধারণা অন্য অনেকের মতো তাঁর সেও আমাকে আলোড়িত করেছে। বাংলাদেশে দর্শন শাস্ত্রের পাঠ, ব্যাপ্তি এবং চর্চার প্রাণ পুরুষের তালিকায় ফরহাদ মজহার সামনের কাতারের। তাঁর দার্শনিক ব্যাখ্যা সম্পর্কে আপনি কতটুকু অবগত আছেন জানি না, তবে তাঁর প্রস্তাবিত কনসেপ্টের সামান্যও যদি আপনার আইডিয়া থাকে তাহলে তাঁর সম্পর্কে এমন বিরূপ মন্তব্যে প্রাণ কাপতো।

দর্শন ব্যতিত বুদ্ধিবৃত্তিক জায়গায় ফরহাদ মজহারের যে অবদান, এবং একটি প্রগতিশীল, জ্ঞান ভিত্তিক প্রজন্ম বিনির্মানে তাঁর যে নিরন্তর প্রচেষ্টা, সেই প্রচেষ্টাকে এড়িয়ে যাবার কোনো উপায় নেই। আপনি যদি চরম সাম্প্রদায়িক মনোভাব পোষণ করেন, সনাতন সমাজ ব্যবস্তার ঘোরতর সমর্থক হোন, কিংবা রাষ্ট্রের অচলায়তন যে তিমিরে আছে, সেই তিমিরের আমূল পরিবর্তন না চান, তাহলে ফরহাদ মজহারে আপনার এলার্জি থাকাকে স্বাভাবিক বলতে হবে।

কিন্তু আপনি যদি একটি স্বপ্নবান তারুন্যের নাতুনিক প্রজন্মকে বেগবান স্রোতে অবগাহনের চেষ্টা জোরদার করতে চান, পুরানা জীবনবোধের গোড়ায় কোপ মেরে একটি কাঠামোগত এবং অভিনব জীবনবোধ সংশ্লেষে আমূল পরিবর্তিত জাতির আশা করেন, মুক্ত চিন্তার দ্ব্যর্থহীন সারথির মিছিলের স্রোতে দেশের অগ্রগতির প্রত্যাশা জিইয়ে রাখেন এবং কৃৎকৌশলের অভিনব উদ্ভাবনায় মেধা ও মননের মিশিলে অপরাপর সভ্যতার সাথে পাল্লা দিতে অন্য অনেক বুদ্ধিবৃত্তিক ঝলমলে দীপ্ত পুরুষদের সাথে ফরহাদ মজহারের নাম আভা ছড়াবে।

গাড়িতে থাকার কারণে অনেক বানান সঠিক হয়নি বলে দু:খিত।

Mohammad Mozammel Hoque: ফরহাদ মজহার এর কথার মধ্যে তাও তো কিছু যুক্তি থাকে। আপনার এই অতি বড় কমেন্টের মধ্যে কথার ফুলঝুরি এবং বাগাড়ম্বর ছাড়া কোনো যুক্তি তো দেখলাম না!

MD Masudul Alam: ফরহাদ মজহারের দার্শনিক প্রস্তাবনাটা কী?

আমি এই প্রশ্নটা ফরহাদ ভক্তদের অনেককেই করেছি। এখন পর্যন্ত কনক্লুসিভলি কিছু কেউ বলতে পারেনি। আশা করছি ফরহাদ মজহারের একজন ভক্ত-অনুসারী হিসেবে আপনি উত্তরটা দিয়ে যাবেন। আর কোনো বই, আর্টিকেল বা বক্তৃতার লিংক ধরিয়ে দেবেন না, প্লিজ। সংক্ষেপে এক/দুই প্যারায় কিছু বললে খুশি হবো।

Siddikul Islam: ফরহাদ মাজহার হতে এক সেকেন্ডও লাগে না কিন্তু একজন মুসলিম হতে হলে নিয়মিত দ্বীন ইসলাম মানতে হয়।

Mohammad Mozammel Hoque: এবং সত্যপন্থী একটা মন লাগে। যা সদা সর্বদা বিবেকের অনুসরণ করে।

আমরা জানি, রাসূলুল্লাহ (সা) তাঁর সাহাবীদেরকে কোনো এক সময় এভাবে শিক্ষা দিয়েছেন। তিনি মাটিতে একটি সোজা রেখা আঁকলেন এবং বললেন এটি হচ্ছে ইসলাম। আর এর আশেপাশে অনেকগুলো বক্ররেখা টানলেন। এরপর বললেন, এগুলো হচ্ছে অন্যান্য দ্বীন।

ইসলাম হচ্ছে অত্যন্ত সহজ-সরল এবং অকাট্য যুক্তির জিনিস। এর কোনো অতীন্দ্রিয় মরমী অথবা সর্বেশ্বরবাদী ব্যাখ্যা কখনো গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। মজহারেরা প্রমোট করেন যে বাউল তত্ত্ব সেটা অনুসারে মানুষই হচ্ছে ঈশ্বর। মানুষের যৌনতার মাধ্যমে ঈশ্বরের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। এই বাউল তত্ত্বের পক্ষে যিনি বলেন তিনি কীভাবে ইসলামের পক্ষের লোক হতে পারেন, সেটা আমার কখনও বুঝে আসে না। ইসলাম সম্পর্কে যে কেউ বলতে পারেন। গবেষণা করতে পারেন। কিন্তু নিজেকে ইসলাম অনুসারী, ইসলামপন্থীদের একজন হিসেবে দাবি করে ইসলামবিরোধী কোনো কিছু ফেরি করে বেড়াতে পারেন না। যেটা ফরহাদ মজহার করছেন। এজন্যই উনার বিরোধিতা।

Siddikul Islam: আপনার বিরুদ্ধবাদীদের বিরোধিতা যেন আপনাকে হতাশ না করে। জেনে রাখবেন সকল সত্যপন্থীদের বিরুদ্ধে শয়তানের শয়তানী চিরন্তন।

Jaber Ahmed: স্যার, আপনার কথার টোনে বিষোদ্গারের ছাপ স্পষ্ট, নিজেকে প্রো-একটিভ ইসলামিস্ট দাবি করা ব্যক্তির থেকে এরকম আচরণ হতাশাজনক। আমি ঠিক শিওর না কেন আপনি এভাবে কথা লিখলেন। তাঁর ব্যক্তিগত আর নির্বিবাদে পাঠচক্র করার দিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন, আমি শুধু বলবো, আপনিও একটা ক্রান্তিকালে আপনার পুরাতন মতবাদ ছেড়ে নতুন রাস্তা ধরেছেন, কিন্তু আমি অন্তত এটাকে ভীরুতা বা অন্য নেতিবাচক কোনো দৃষ্টিভঙ্গিতে না দেখে বরং আপনার চিন্তা বদলেছে তাই রাস্তা বদলেছেন এমনটাই ভেবে নিয়েছি। আমি আপনাদের দুইজনের চিত্তাকর্ষক মিথস্ক্রিয়া দেখতে আগ্রহী, আমি কারোরই সমর্থক নই। এরকম ডিবেটে আলোচনায় বিপক্ষের পয়েন্টকে সর্বোচ্চ benefit of the doubt দেয়া, charitable explanation দেয়া ইত্যাদি ভালো ডিবেটের জন্য সহায়ক, যা এখানে আমার মনে হয়েছে অনুপস্থিত। স্যার, আপনার সামান্য গুণমুগ্ধ ফলোয়ার হিসেবে এই কথাগুলো বললাম।

Mohammad Mozammel Hoque: জনাব ফরহাদ মজহারের আলোচনার তথা উনার যে স্ট্যাটাসটার ব্যাপারে আমি কাউন্টার করেছি সেখানকার পয়েন্টগুলো যদি খেয়াল করেন তাহলে দেখবেন, সেগুলোর ব্যাপারে আমি সুনির্দিষ্ট কথা বলেছি। সেগুলোকে খণ্ডন করে আমি অকাট্য যুক্তি দিয়েছি। কোরআন-হাদীস থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছি। আপনার জ্ঞাতার্থে এখানে উনার শুরুর পয়েন্টটাকে একটু সংক্ষেপ তুলে ধরছি:

সামাজিক চুক্তি পূর্ববর্তী প্রাকৃতিক রাজ্যে মানুষের চরিত্রকে টমাস হবস নেতিবাচকভাবে তুলে ধরেছেন। ফরহাদ মজহারের দৃষ্টিতে এটি ভুল। আমি বলেছি, হবসিয়ান সামাজিক চুক্তি মতবাদ ছাড়াও জন লক ও রুশোর যে সামাজিক চুক্তি মতবাদ আছে সেখানে কিন্তু মানুষের চরিত্রকে ইতিবাচকভাবে চিত্রায়িত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে সামাজিক চুক্তির এই হাইপোথিসিসগুলো একসাথে পাঠ করানো হয়। কোথাও এর কোনো একটাকে বিচ্ছিন্নভাবে পড়ানো হয় না। উনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে এর একটাকে নিয়ে পূর্বাপর বিচ্ছিন্নভাবে আলোচনা শুরু করেছেন।

পাশ্চাত্য রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি যদি সামাজিক চুক্তি মতবাদ হয়ে থাকে সেটা নেসেসারিলি বা এক্সক্লুসিভলি হবসিয়ান নয়। বরং পাশ্চাত্য রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত্তি হলো জন লকের রাষ্ট্রদর্শন। যেখানে তিনি লাইফ, লিবার্টি এন্ড ইকোয়ালিটির কথা বলেছেন। সামাজিক চুক্তির একটি অধিকতর ও সুসংহত ও সমন্বিত চিত্র তুলে ধরেছেন যেটি আমার ভিডিও বক্তব্যে আমি ক্লারিফাই করেছি।

এমনকি হবসের যে সামাজিক চুক্তি মতবাদ সেখানেও দেখা যায় রাষ্ট্রনায়ক বা শাসক, যাকে তিনি লেভিয়াথান বলেছেন, তিনি অর্থাৎ সে লেভিয়াথান নিজে নিজে এসে মানুষের উপর চেপে বসেন নাই। বরং মানুষরাই নিজেদের বৃহত্তর কল্যাণ ও সুবিধার কথা চিন্তা করে তাদের সমস্ত ক্ষমতা শর্তহীনভাবে তেমন উপযুক্ত একজনের হাতে সমর্পণ করে তাকে রাজা বা সম্রাট বা নেতা হিসেবে মেনে নিয়েছেন। এ থেকে আমরা এটাও বুঝতে পারি, এমনকি হবসের প্রস্তাবনাতেও মানুষের চরিত্রের নেতিবাচক দিকগুলোর পাশাপাশি একটি বৃহত্তর ও ইতিবাচক দিকের কথাও এসেছে। যার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে সামাজিক চুক্তির মাধ্যমে। এভাবে নিজেরা নিজেরা হানাহানি করার চেয়ে একটি সমন্বিত ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা মানুষ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ভেবেছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে, এমনকি হবসের ব্যাখ্যা মোতাবেকও মানুষ সর্বাংশে খারাপ নয়।

উপযুক্ত শাসন কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতিতে মানুষ যে মন্দপ্রবণ, সেটাকে কি ইসলাম অস্বীকার করে? নবী রাসুল কেন প্রেরণ করা হয়? খলিফার দরকার কেন? আমিরের দরকার কেন? খলিফার প্রতি আনুগত্য কেন? ক্ষমতার এত গুরুত্ব ইসলামী শরীয়তে কেন? এই সব কেন’র উত্তর যদি কেউ পেতে চায় তাহলে সে দেখবে যে, মানুষ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রাষ্ট্রহীন শ্রেণীহীন একটি সুষম সমাজ কায়েম করে ফেলবে, এরকম উর্বর অথচ অবাস্তব কল্পনা, মানুষ সম্পর্কে ইসলাম কখনো প্রস্তাবনা পেশ করেনি।

বরং মানুষের মধ্যে ভালো-মন্দ দুটো প্রবণতাই আছে, এটিই হচ্ছে মানুষ সম্পর্কে ইসলামের প্রস্তাবনা। হবসের কিংবা সামাজিক চুক্তি সম্পর্কে যারা কথা বলেছেন তাদের প্রত্যেকেরই এই প্রস্তাবনা।

Mohammad Mozammel Hoque: আমার এই কথাগুলোর আলোকে আপনি যদি ফরহাদ মজহারের কথার এই পয়েন্টটাকে বিবেচনা করেন তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন, কীভাবে তিনি ফিলোসফির একটি সামগ্রিক আলোচনার বিশেষ একটা দিককে বিশেষভাবে চিত্রায়িত করে ওই বিষয় সম্বন্ধে যারা তেমন ভালো জানে না, তাদেরকে বিভ্রান্ত করার প্রয়াস চালাচ্ছেন।

উনার পুরো বিষয়টা নিয়ে নতুন করে ব্যাখ্যা দিয়ে এখানে নতুন একটা লেখা তৈরির সুযোগ নাই। আপনার আন্তরিকতা এবং আমার প্রতি আপনার ভালোবাসার কারণে এই পয়েন্টেকে আমি একটু ব্যাখ্যা করে আপনাকে বললাম। এভাবে আমি উনার বক্তব্যের প্রত্যেক পয়েন্টকে অত্যন্ত সংক্ষেপে কিন্তু খুব ভালোভাবে রিফিউট করেছি।

হ্যাঁ, আমার কথার মধ্যে ক্ষোভ আছে। ভাষার মধ্যে অসংযত কিছু আছে। সেটা তো আমি আমার স্ট্যাটাসটাতেই স্বীকার করেছি। সেটার কারণ কিন্তু শুধুমাত্র ফরহাদ মজহার নন। বরং সেখানে বসে থাকা আমার পরিচিত দুজন ব্যক্তি। ছবিতে যা দেখলাম। তাদের মধ্যে একজন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ছিলেন। আরেকজন ছাত্রশিবির পূর্ববর্তী ইসলামী ছাত্র সংঘের সদস্য ছিলেন। তারা যখন মজহারের শিষ্যত্ব নিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে উনার এসব বক্তব্য বিনা প্রতিবাদে গিলতে থাকেন তখন আমার বেশ খারাপ লাগে।

উনাদের একজনকে আমি এ নিয়ে কোনো এক সময়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন ফরহাদ মযহার নাকি উনার দাওয়াতী টার্গেট। তখন আমি উনাকে বলেছিলাম, “একই সাথে আপনিও কিন্তু উনার দাওয়াতী টার্গেট।”

যাহোক, কথা বললে অনেক কিছুই বলা যায়। আমার ওই পরিচিত ব্যক্তিবর্গসহ এখানকার বামপন্থীদের খুব সিনিয়র পর্যায়ের কেউ কেউ চেয়েছিলেন, আমার সাথে যাতে ফরহাদ মজহারের একটা যোগাযোগ স্থাপিত হয়। কিন্তু উনার এই সাম্যবাদী সহজিয়া ইসলামকে আমি কখনো মানতে পারিনি। লোকটাকে কখনই আমার কাছে তেমন ভালো লাগেনি। যদিও উনার অনেক গুণের আমি স্বীকৃতি প্রদান করি। উনার এহেন নিরলস ও নিরবচ্ছিন্ন কর্মতৎপরতাকে আমি খুবই শ্রদ্ধা করি। কাজের দিক থেকে আমি উনার মতোই হতে চাই। এই অর্থে বলতে পারেন, তিনি আমার কাছে একজন আইকন। তবে, উনি যা কিছু বলতে চান সেটি আমার দৃষ্টিতে ভীষণ আপত্তিজনক।

সেটাও আসলে মূল সমস্যা না। সমস্যা হলো, ওই যে উপরে একটু করে বললাম, উনার পিছনে যারা ঘুরেন, আমি চাই না তারা উনার পিছনে ঘুরুক। অনেকের ক্ষেত্রে আমার এই অভিজ্ঞতা হয়েছে, যারা উনার ডেরায় গেছে, তারাই কোনো না কোনোভাবে contaminated হয়ে এসেছে। শেষ পর্যন্তও তারা ওই চিন্তার সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হতে পারেনি।

এ ধরনের আরো অনেকেই একাডেমিকভাবে ইসলাম চর্চা করেন। যেমন রেহনুমা আহমেদ। তাতে আমার কোন গা জ্বালা করার কোনো কিছু নাই। এই লোকটা যেভাবে ইসলামপন্থীদের ভিতরে একটা অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে সেটা আমার কাজের ক্ষেত্রের সাথে একটা কনফ্লিক্ট অলরেডি তৈরি করেছে। যার কারণে আমি বাধ্য হয়ে উনার বিষয়ে এনগেইজ হয়েছি। That’s all.

Mahbubur Rahman Alam: একটি প্রশ্ন, ক্ষমতার প্রতি গুরুত্ব মানে? কোথায়? নাকি, ক্ষমতায়িত ব্যক্তির রেসপন্সিবিলিটিকে কেন এত গুরুত্ব দেয়া হয়েছে? বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা দরকার।

Mohammad Mozammel Hoque: ক্ষমতা ও দায়দায়িত্ব হচ্ছে একটা পারস্পরিক সম্পর্ক ও ভারসাম্যের ব্যাপার। এগুলাকে এইটা, নাকি ওইটা, কিংবা এই দুইটার মধ্যে কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ, এইভাবে ‘আইদার অর’ হিসাবে ভাবা ও এই অনুমানকে সামনে রেখে কোনো আলোচনাতে এনগেইজ হওয়াটাকেই ভুল বলে মনে করি।

Mahbubur Rahman Alam: অনেক বিষয়ে মন্তব্য আছে। তবে, একটি আপাতত বলি। কুরআনের শুধু বংগীয় অনুবাদ পড়েই যদি রাষ্ট্রের সবকিছু বুঝে ফেলতে কেউ সক্ষম হতো, তাহলে ইউরোপীয় বাদ দিলাম, মুসলিম ইতিহাসে এত বড় বড় আলেম-উলেমা আর মুসলিম স্কলারদের যুগে যুগে এত কদর করা হয়েছে কেন? ইসলামী সামাজিক সুবিচার নীতিমালা রাষ্ট্রে কায়েম করা আর ইসলামী রাষ্ট্র হওয়া তো ভিন্ন কথাই। এ দুয়ের মধ্যে যে একটি অতি সূক্ষ্ম অথচ গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে তার পর্যালোচনা কীভাবে করবেন? ইন ফ্যাক্ট, আপনি কিছু ক্রিটিক আগে করেছেন, বাট এখানে সেগুলো অনুপস্থিত।

Mohammad Mozammel Hoque: ইসলামী রাষ্ট্র নিয়ে আমার সুনির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা আছে। সেগুলো “ইসলামী মতাদর্শের আলোকে সামাজিক আন্দোলন” শিরোনামে “সমাজ ও সংস্কৃতি অধ্যয়ন কেন্দ্রের” সাইটে আপ করা আছে। এবং আমার স্ট্যাটাসের একটা কমেন্টের মধ্যেও সেটার লিংক দেয়া আছে। এই নিয়ে আমি এখানে আর নতুন করে কথা শুরু করতে চাচ্ছি না।

আমি বলেছি, ‘ইসলামী রাষ্ট্র’ – এই কথা বা ঘোষণাটা বলা না বলা, সেটা খুব একটা ম্যাটার করে না। কিন্তু যারা বলে, ইসলামী রাষ্ট্র কার্যত হওয়া সত্ত্বেও সেটাকে নামে ইসলামী রাষ্ট্র বলা যাবে না বা বলার দরকার নাই, তাদের সাথে আমি দ্বিমত পোষণ করি। এরই সাথে যারা মনে করে, কার্যত থাকার পাশাপাশি নামেও একটি রাষ্ট্রের নাম ইসলামী রাষ্ট্র হতেই হবে, তাহলেই সেটা একটি সত্যিকারের ইসলামী রাষ্ট্র হবে– তাদের সাথেও আমি দ্বিমত পোষণ করি। আমার ভিডিও বক্তব্যে আমি এই বিষয়ে কথা বলেছি।

Mahbubur Rahman Alam: এটিই হচ্ছে দারুণ গ্রে এরিয়া। এখানেই কাজ চলতে থাকবে লক্ষ কোটি বছর। এই একটু জায়গায় ব্ল্যাক হোলের মত। নাম নিবেন, নাকি নেবেন না, এটুকুই দার্শনিক আর প্রফেসরদের কাজ। তবে, এই আলোচনায় নিজেদের মতামত দিয়ে চুপ হলে চলবে না। বরং এই জায়গাটাকে এলাস্টিকের মত টান দিয়ে বড় করে মাইক্রোসকোপ সেট করতে হবে। তখন বের হবে শত শত ইন্ডিকেটর। এই ইন্ডিকেটর নিয়ে আলোচনা করতে হবে। আশা করি এই জায়গায় ফরহাদ মজহার, নুরুল কবির, সলিমুল্লাহ খান, আপনারা মিলে কিছু ইন্ডিকেটর বের করে বলবেন, কোনটি জনগণের জন্য সুবিধাজনক, আর কোনটি ক্ষতিকর। তার উপর ভিত্তি করেই তৈরি হবে মতামত। এর পরের প্রজন্ম এখানে এসে আপনাদের করা কাজের উপর আবারো মাইক্রোস্কোপ বসিয়ে জনস্বার্থে অবদান রাখবে। সভ্যতা আগাবে এভাবেই, ইনশাআল্লাহ।

Mohammad Mozammel Hoque: ইসলামের তরফে দেশ জাতি সমাজ ও জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় যা কিছু করার তা সম্পন্ন করার জন্য ইসলামকে যারা own করে না, তাদের সাথে বসে কোনো কার্যব্যবস্থা গ্রহণ বা কোনো কার্যকর মতামত গঠনের ব্যাপারে আমার কোনো আগ্রহ নাই। কেননা, ইসলামকে আমি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যাপার বলে মনে করি। এবং নিজের ওপর আমার যথেষ্ট কনফিডেন্স আছে। এবং আমি মনে করি, আমার মতো এরকম আত্মবিশ্বাসী বহু ইসলামপন্থী অতীতেও ছিল, এখনও আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে, ইনশাআল্লাহ।

Nure Elahi Shafat: সলিমুল্লাহ খান, ফরহাদ মজহার, মোজাম্মেল হকেরা মিলে ইন্ডিকেটর বের করবে! হাউ ফানি। আপনি মতাদর্শরে গুলায়া ফেলে ককটেল চিন্তার কথা বলতেছেন। করতেই পারেন, যেটা মজহারের কমিউনিজামাইজেশন অব ইসলাম প্রকল্প। মজহারকে রাষ্ট্রব্যবস্থার (ইসলামী রাষ্ট্র/ সিভিল রাষ্ট্র। লেভিয়াথান নয়) সহযোগী মনে করাই মজহার প্রকল্পের বিরোধিতা। মার্কসিস্ট সেক্যুলারিষ্ট পুঁজিবাদীর সাথে বসা যায়, আলাপ বয়ান তৈরি করা যায় কিন্তু লেভিয়াথান রাষ্ট্রের স্ট্রাকচারাল পাওয়ারকে হ্রাসকরণ/ দমাতে যে পদ্ধতি অনুযায়ী এগোতে হবে সেটার সাথে মার্কসিজম আর ইসলামপন্থার চিন্তা-কর্মধারা পরস্পর বিরোধী। সেটাই সামাজিকতা বুদ্ধিবৃত্তি নৈতিকপদ্ধতি এবং রাষ্ট্রনীতির প্রশ্ন।

অনেক জায়গায় সাদৃশ্য পাবেন নানান ইডিয়োলজীর কিন্তু বস্তুবাদিতা আর তওহীদপন্থার জায়গায় সিম্বলিক/ কল্পচিন্তার অভিলাষ নিতান্তই আড়ম্বর ও শিশুসুলভ প্রস্তাব।

আমি বুঝি না মোজাম্মেল স্যারের লেখার/ ভিডিওর সারতত্ত্বই অনেকে ধরতে পারে নাই। মজহার নিয়ে উনার ক্রিটিক হচ্ছে নবুয়তকেন্দ্রিক রাষ্ট্র সভ্যতার আলোকে। সিভিক ও ইউরোপীয় লিবেরেল অর্থে নয়। মিস্টার মোজাম্মেল হক ক্লিয়ার্ড দ্যা ক্রিটিকস অন মজহার্স মেথোডলজি।

আর নাম নেয়া শুধু দর্শনবিদ ও অধ্যাপকেদের কাজ না। সমাজকর্মীর কাজও বটে।

Masudul Alam: ধন্যবাদ Shafat। ফরহাদ মজহারের ‘ইসলামপন্থী’ শিষ্যরা আসলে খুবই হীনমন্য। তবে তারা মজহারের মতো অ্যাবস্ট্রাক্ট কথাবার্তা বলার তরিকা রপ্ত করতে ভোলেনি। এদেরকে যখন টু দ্যা পয়েন্ট প্রশ্ন করা হয়, তখন আর কিছু বলতে পারে না।

Mahbubur Rahman Alam: Nure Elahi Shafat, আমি বা আপনি কেউই প্রফেট নয়, কাজেই ভুলভ্রান্তি হতেই পারে। যাক, ‘নবুয়তকেন্দ্রিক রাষ্ট্র সভ্যতা’ এটা কী? একটু ব্যাখ্যা করবেন? এটার ক্রিটিক পরে। আগে জিনিসটা বুঝে নেই।

Mohammad Mozammel Hoque: ‘নবুয়ত কেন্দ্রিক রাষ্ট্র সভ্যতা’ সম্বন্ধে বলতে পারবো না। তবে, এর কাছাকাছি একটা কথাকে [নবুয়তকেন্দ্রিক সভ্যতার ধারণা] হেডলাইন করে আমি এই স্ট্যাটাসটা দিয়েছি। যার ব্যাখ্যা স্ট্যাটাসের মধ্যেই সংক্ষেপে দিয়েছি। এখানে তার উদ্ধৃতি দিচ্ছি:

“কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বার বার ‘সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধের’ কথা বলেছেন। আমরা জানি। শক্তিশালী রাষ্ট্রব্যবস্থা ব্যতিরেকে ‘সৎ কাজের আদশে ও অসৎ কাজের নিষেধ’ অসম্ভব। আল্লাহ রাসূল (সা) বলেছেন, “তোমরা মন্দ কাজকে হাত দিয়ে বাধা দাও। না পারলে প্রতিবাদ করো। তা না পারলে সেটাকে ঘৃণা করো।” আমরা জানি, যাকাত থাকা মানে শ্রেণীবিভক্ত সমাজ থাকা। শ্রেণিহীন সমাজে যাকাত নামক এবাদত থাকার প্রশ্ন উঠে না। আমরা জানি, যাকাত একটা ত্রিপাক্ষিক ব্যাপার: (১) দাতা, (২) আদায়কারী কর্তৃপক্ষ ও (৩) গ্রহীতা। তো, এই আদায়কারী কর্তৃপক্ষকে নিয়োগ দিবে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রের তরফে ক্ষমতাসীন সরকার। জুমা ও ঈদের নামাজে এবং হজ্বের সময়ে আরাফাতের ময়দানে খুতবা দিবে রাষ্ট্রপ্রধান বা তাঁর প্রতিনিধি। জিহাদ ঘোষণা ও পরিচালনা করবে রাষ্ট্রীয় কর্তৃপক্ষ। ইসলামে ধর্ম ও শাসনক্ষমতা অংগাঅংগিভাবে জড়িত। একটি ছাড়া অপরটি অচল ও অকার্যকর।

শক্তিশালী প্রশাসনিক ব্যবস্থা ছাড়া ইসলাম ‘ধর্ম’ পালন করা অসম্ভব। ইসলাম অবশ্য অগত্যা পরিস্থিতিতে মানুষকে প্রয়োজনীয় ছাড় দিয়েছে। ইসলামী রাষ্ট্রব্যবস্থা না থাকা বা ন্যূনতম মানে না থাকা সত্ত্বেও এই রোখসত বা ছাড়ের কারণে মানুষ দুর্বল মানে হলেও মুসলমান হিসাবে জীবনযাপন করতে পারে।”

Mahbubur Rahman Alam: স্যার, এই বাক্যগুলার প্রত্যেকটাই হচ্ছে মুসলিম স্কলারদের মতামত। এসবগুলোতেই বিতর্ক বা ডেভেলপ করার সুযোগ রয়েছে। এগুলো আল্লাহ আর রাসূলের নামে চালানো যাবে না। এগুলোকে আমাদের আন্ডারস্টান্ডিং হিসাবে ধরে ফরমুলা এগিয়ে নিতে হবে। এই স্পেসটা হচ্ছে আমাদের (মুসলিম স্কলারদের) উন্নয়নের জায়গা। কাজেই এগুলাকে ফর গ্রান্টেড ধরা যাবে না। যেহেতু ধরা যাবে না, সেহেতু কুরান হাদিসের অনুবাদ করেও উদ্ধৃত করা যাবে না। বরং আমাদের আন্ডারস্টান্ডিং হিসাবে ধরে বাক্যকে পুনর্বিন্যাস করতে হবে। তখন দেখবেন, স্কলারদের টোন আর টিউন পালটে যাবে। সেসব নতুন বাক্য অনেক কম্প্রিহেন্সিভ। এ জায়গায় প্রচলিত আলেমদের অনেক বড় একটা গ্যাপ রয়েছে। আশা করি, আপনাদের হাত ধরে সেই গ্যাপটা দূর হবে। এতে আরেকটা বড় কাজ হয়ে যাবে। সেটি হচ্ছে সালাফিজম বা ওয়াহাবি মতবাদের যে জংগী চেতনা, সেটা নতুন ডিসকোর্সের উন্নয়নের সাথে সাথে দুর্বল হয়ে পড়বে। ধন্যবাদ।

Mohammad Mozammel Hoque: মুসলিম স্কলাররা কিছু বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। আমি সেসব বিষয়ে তাদের অনুসারী। আর কিছু বিষয়ে মুসলিম স্কলারগণ পরস্পরের সাথে মতবিরোধ করেছেন। সেসব বিষয়সমূহের ক্ষেত্রে আমি মুসলিম স্কলারদের কোনো না কোনো পক্ষের সাথে। অভিনব কোনো পক্ষের সাথে থাকার ব্যাপারে আমার কোনো আগ্রহ নাই।

Mahbubur Rahman Alam: আরেকটি পয়েন্ট; ইসলামকে রাষ্ট্র ছাড়া মানা যায় না, ইসলামের আদর্শ বাস্তবায়ন করা যায় না, বা ভালো কাজের আদেশ বা খারাপ কাজের নিষেধ কীভাবে করা যাবে রাষ্ট্র ছাড়া? এই সিলি কোয়েশ্চিনটি অনেককেই মিসলিড করে। আপনিও দেখছি সেই ভ্রান্ত যুক্তিটি ব্যবহার করেছেন। কারণ মহান আল্লাহর কুরানের বিধানকে যদি ১৯৪৭, কিংবা ১৯৭১ সালের পাওয়া ১ লক্ষ ৪৭ হাজার বর্গমাইলের সীমানার ভেতর আটকিয়ে ফেলেন, যেখানে আদেশ ও নিষেধ বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে, তাহলে ক্যামনে কী হলো? বাংগালীর সীমানার জন্য কুরানের জন্য রাষ্ট্র প্রয়োজন বুঝলাম। তাহলে, ভারতীয় সীমানার ভেতর কোন কুরানীয় বিধান চলবে? কুরানীয় বিধানকে আইন হিসাবে দেখলে সমূহ বিপদ। কারণ কুরানীয় হালাল হারাম কিংবা শাস্তির বিধানের দার্শনিক নুয়ান্সেস অনেক গভীর। একে কোনোভাবেই রাষ্ট্র কাঠামোর সংসদীয় আইনের সাথে কিংবা সাহাবীদের তৈরি করা বা মুসলিম ইতিহাসের কোনো আইনের সাথেই মেলানো উচিত নয়। বরং রাষ্ট্রের জন্য কুরান সুন্নাহকে সোর্স ম্যাটেরিয়াল হিসাবে রেখে দিয়ে জাস্টিসের ভিত্তিতে মানবীয় আইন রচিত হতে পারে, যা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক চলবে। এতে রচিত আইনের বিভিন্ন অংশ নিয়ে তর্ক বিতর্ক হতেই থাকবে। আলোচনার মাধ্যমে অধিকতর জাস্টিসের পথ তৈরি হবে।

কুরানে আছে এমন বিধান বাস্তবায়নের জন্য কোনো কিছু করা আবশ্যক? নাকি, জীবনযাপনের পর্যায়ে যেই নীতিমালা প্রাসংগিক, সেটি মেনে চলা গুরুত্বপূর্ণ? এ তো দেখছি, জীবনের জন্য আইন না হয়ে, আইনের জন্য জীবন হয়ে গেল। কুরান-হাদিসসহ কোনো আইনই প্রয়োজনের আগে তৈরি হয়নি, নাযিলও হয়নি। এজন্যই কুরানের আয়াত পড়ার সাথে সাথে আমরা তার শানে নুযুল বা প্রেক্ষিত খুঁজতে থাকি। অবশ্য, বর্তমানের কুরান আমাদের জন্য আগেই নাযিলকৃত। কিন্তু তা আল্লাহ তায়ালা এক সাথে আইনী বা গাইডলাইন বই আকারে পাঠিয়ে দেননি।

এ হিসাবে, ফরহাদ মজহার বরং এই আলোচনা তুলে এনে বাংগালী জনপদে ভালো কাজ করেছেন। অন্যরা এই সুযোগে কন্ট্রিবিউট করতে পারবে। আপনারও অবদান রাখার পথ হবে, এই সুযোগে। কাজেই, মধ্যযুগীয় ইহুদী চার্চের মতো যে কোনো বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনাকে ধর্মের খুবই লিটারেল এবং মিসলিডিং ব্যাখ্যা দিয়ে থামিয়ে না দিয়ে একে এগিয়ে নেয়াই কি উত্তম নয়?

Mohammad Mozammel Hoque: আমার এই বক্তব্যটা শুনেন। এবং এরপরও যদি আপনি এ বিষয়ে আমার সাথে একমত হতে না পারেন তাহলে অন্তত এই বিষয়ে আপনার সাথে আমি আর কথা চালিয়ে যেতে আগ্রহী নই।

ইসলাম, ইসলামী রাষ্ট্র ও ইকামতে দ্বীন নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে

Mahbubur Rahman Alam: সবই ছিল, বা আছে, বা আপনি ধারণ করেন বলেই জানি। কিন্তু হঠাৎ করে এই আলোচনায় সবকিছুই নাই হয়ে গেছে। এজন্য আলোচনা করার সময় শব্দ, বাক্য, যতিচিহ্ন খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ্যানিহাউ, ধন্যবাদ।

Masudul Alam: ভাই, আপনার কাছে সিম্পলি জানতে চাই, মতাদর্শিক জায়গা থেকে ফরহাদ মজহার সম্পর্কে আপনার অবস্থান কী?

Mahbubur Rahman Alam: খুবই সিম্পল? ইবাদাতমূলক ফতোয়ার জন্য আমি কখনোই তাকে খুঁজি না। বরং সামাজিক সমস্যার গভীরতর ব্যাখ্যার প্রয়োজন হলেই আমি দার্শনিক বা সমাজচিন্তকদের মুখোমুখি হই। তবে, যে ব্যক্তি নিজেকে মার্ক্সীয় চিন্তার দাবি করে, তাকে আমি এ্যান্টি ইসলামিক বা নন মুসলিম বা অন্য কোনো নেগেটিভ শব্দ দিয়ে পরিচিত করতে চাই না। এটি যে ব্যক্তির পরিচয়, সে করবে। এজন্যই দেখবেন, সাধারণ আলেমদের মুখে খই ফুটে। কিন্তু তারিক রামাদান বা হামযা ইউসুফরা কথা বললে পাগলের মত শব্দ খুঁজে বেড়ায়। দশ মিনিট কথা বললে ঘেমে যায়।

Masudul Alam: আপনার কাছ থেকে সরাসরি উত্তর আশা করি। এ রকম ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ মার্কা উত্তর আশা করিনি। তারপরও যা বলেছেন, তা থেকেই বলি, আপনার দৃষ্টিতে ফরহাদ মজহার কি নিছকই একজন মার্কসিস্ট বা কমিউনিস্ট? নাকি তিনি এমন একজন কমিউনিস্ট, যিনি নিজ মতাদর্শের স্বার্থে ইসলাম সম্পর্কে নানান বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলে থাকেন?

হাসান রিয়াদ: আমার শুধু অবাক লাগে লালনীয় ইসলামিস্ট এই ফরহাদ মজাহারকে চিনছি নয়াদিগন্ত দিয়ে। আর প্রোগ্রামে সাবেক একজন সিপির মুখে উনার লেখালেখি, চিন্তা-দর্শনের সুনাম শুনে। ?

লেখাটির ফেইসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *