কোনোকিছু মোকাবেলার ক্ষেত্রে, কোনো মতাদর্শ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে কাজের কাজ হলো স্বপক্ষে শক্তিশালী ন্যারেটিভ বা বয়ান তৈরী করা। সোজা কথায়, মানুষকে কিছু কথা মুখস্ত করানো।
একটু আগে ফেইসবুকে দেখলাম, বলা হচ্ছে, ‘দরকার ছিল ভাত, ধরিয়ে দিল জাত। দরকার ছিল কর্ম, ধরিয়ে দিল ধর্ম’। এখানে চমৎকারভাবে, নেগেটিভ সেন্সে বললে, সুচতুরভাবে ভাত আর জাতকে বাইনারি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। অথচ, এটি ভুল। কেননা, জাতিগত পরিচয়কে অস্বীকার করতে বাধ্য করে কাউকে থালা ভর্তি ভাত দিলে সে যে সন্তুষ্ট হবে ব্যাপারটা এমন না।
পরের বাক্যে কর্ম আর ধর্মকে মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে, যেন কর্ম ধর্মকে নাকচ করে এবং ধর্ম কর্মকে নাকচ করে। অথচ ব্যাপার কিন্তু তা না।
এই ন্যারেটিভকে আপনি প্রশ্ন করতে পারেন। অপছন্দ করতে পারেন। তৎসত্বেও এই সেকুলার বয়ানের শক্তিকে আপনি অস্বীকার করতে পারেন না। এই বয়ানকে মোকাবেলা করতে হলে আপনার জন্য করণীয় হলো জনগণকে পটানো যাবে এমন পাল্টাবয়ান (counter narrative) তৈরী করা। এবং এর মাধ্যমে দেশের বুদ্ধিবৃত্তিক জনপরিসর তথা ইন্টেলেকচুয়াল পাবলিক স্ফিয়ারকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করা।
‘তুমি কে, আমি কে? বাঙ্গালী, বাঙ্গালী’ – এইটাও একটা বয়ান। এ’রকম বয়ান শুনতে শুনতে আমরা বড় হয়েছি। জীবনযাপন করছি। বয়ানের উদাহরণ হতে পারে,
‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘শিক্ষা নিয়ে গড়ব দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’, ‘ছেলে হোক মেয়ে হোক, দু’টি সন্তানই যথেষ্ট’, ‘আপনার কন্যাশিশুকে স্কুলে দিন’, ‘আপনার সন্তানকে কোরআন শিক্ষা দিন’, ‘সকল মানুষ ভাই ভাই’, ‘নারীর প্রতি বৈষম্য রুখতে হবে’, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার’ ইত্যাদি।
বয়ানের শক্তি মারাত্মক। দুর্নিবার। খুব কম মানুষই সাত-পাঁচ ভেবে, সচেতনভাবে ও যুক্তিসহকারে সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু একটা করে। মানুষ স্বভাবতই স্রোতে গা ভাসিয়ে চলে। সবাই যা বলে সেও তা বলে। সবাই যা করে সেও তা করে। মানুষ সাধারণত যে কোনো কিছুর মূলধারায় থাকতে চায়। group conformity একটা মারাত্মক শক্তিশালী জিনিস।
তাই মানুষজনকে হরেদরে বুদ্ধিজীবী বানানোর চেষ্টা না করে, শুরুতে যা বললাম, কাজের কাজ হলো ন্যারেটিভ বা বয়ান তৈরী করা।
ক্যামিকেল রিচার্স ল্যাবরেটরির পাশে বসবাসকারী জনসাধারণকে যেমন করে ওই ল্যাবের গবেষকরা কিছু ঔষধ/দাওয়াই দিয়ে থাকেন, তেমন করে বুদ্ধিজীবীদের কাজ হলো সমকালীন ইস্যুতে গণমানুষের উপযোগী কিছু টু-দ্যা-পয়েন্ট চোখা কথা মাঠে ছেড়ে দেয়া। তত্ত্বের মূলকথাটুকুকে ন্যারেটিভ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। ইস্যু না থাকলে প্রয়োজনে ইস্যু তৈরী করা।
কোনো কথা নিছকই কথার কথা থেকে বয়ান হয়ে উঠেছে কিনা তা কীভাবে বুঝবেন?
যখন দেখবেন চায়ের দোকানের আলাপ আর সোশ্যাল মিডিয়া থেকে মূলধারার গণমাধ্যমে, গৃহিনী থেকে অধ্যাপক মহোদয়ের কণ্ঠে এই একই কথা ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হচ্ছে, এই প্রসঙ্গে লোকজন ঠিক এই যুক্তিগুলোকেই তুলে ধরছে, একই লাইনে সবাই কথা বলছে, তখন বুঝবেন সংশ্লিষ্ট কথাটি একটা সোশ্যাল নর্ম বা ন্যারেটিভ হয়ে উঠেছে।
ন্যারেটিভ গড়ে তোলা ছাড়া সেল্ফ-আইডেন্টিটি তৈরী করা যায় না, গণঐক্য গড়ে তোলা যায় না।
নিউক্লিয়াসের ফিউশানের মতো, কেমিক্যাল রিএকশানের মতো বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হবে, যুক্তির পাল্টাপাল্টি হবে, রেজাউল করিম রনির ভাষায় ‘ইন্টেলেকচুয়াল ভায়োলেন্স’ হবে, বুদ্ধিজীবীতা হবে প্রচুর। কিন্তু জ্ঞানগবেষণার সারকথাটুকুই শুধু বাইরে প্রচার করা হবে।
ক্যারামবোর্ড খেলায় যেমনটি হয়, গুটি মারা হবে একদিকে, কিন্তু টার্গেট থাকবে অন্যকিছু। শক্তিশালী ন্যারেটিভ দাঁড় করানো ছাড়া দুনিয়াতে কোনো ধর্ম, আদর্শ বা তত্ত্ব আজপর্যন্ত সাফল্য অর্জন করেনি।
‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ এই শ্লোগান কমিউনিজমের বিজয়ে এটমবোমার চেয়েও শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে কাজ করেছে। একটি ছোট্ট বাক্য (‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, মোহাম্মদুর রাসুলুল্লাহ’) দুনিয়াতে ইসলামের প্রচার, প্রসার ও প্রতিষ্ঠা লাভে কেমন কার্যকর ভূমিকাপালন করেছে, আমরা সবাই তা জানি।
অনেকগুলো শুণ্যের আগে একটা সংখ্যা বসিয়ে যেমন একটা বিরাট সংখ্যা বানানো যায় তেমন করে শূণ্যগর্ভ কিছু অযৌক্তিক কথাকেও অতিগুরুত্বপূর্ণ কথা হিসেবে চালিয়ে দেয়া যায়, শ্রুতিমধুর একটা সুন্দর বয়ান তৈরীর মাধ্যমে। এরমানে এই নয়, বয়ানমাত্রই ফাঁপা ও অযৌক্তিক।
বয়ানের ভিত্তি যৌক্তিকও হতে পারে, আবার অযৌক্তিক ও স্ববিরোধীও হতে পারে। কোনো বয়ান মানুষের জন্য শেষ পর্যন্ত ভালকিছু আনতেও পারে, আবার ভুল বয়ান অনুসরণ করার কারণে পরিণামে প্রভূত ক্ষতিও হতে পারে।
বয়ান হলো ছুরির মতো। ব্যবহারনির্ভর।
ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে অতিসম্প্রতি এ’রকমেরই একটা পার্ফেক্ট বয়ান তৈরী করেছে এ’দেশের রক্ষণশীল সামাজিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী উচ্চশিক্ষিত জনগণ।
জন্মগত ত্রুটির ব্যাপারে যা যা করণীয় তা সব করো। আপত্তি নাই এতটুকু। বরং সহযোগিতা সর্বোত। মাগার, চলবে না মনে মনে মনকলা খাওয়া। শরীফ থেকে শরীফা বানে যাওয়া।
‘হিজড়া ইয়েস, ট্রান্সজেন্ডার নো’, কী চমৎকার স্ট্র্যাটেজি…!
কিছুদিন আগ পর্যন্তও মানুষে হিজড়া আর ট্রান্সজেন্ডারদেরকে সমার্থক (interchangeable) মনে করতো। পেপার পত্রিকায় হিজড়া বোঝাতে ট্রান্সজেন্ডার লিখতো। পরিস্থিতি বর্তমানে এমন হয়েছে, হিজড়ারাও এখন লিঙ্গান্তরবাদী ট্রান্সদেরকে রিজেক্ট করতেছে। ডিজঔন করতেছে।
হিজড়াদের মানবাধিকারকে সামনে রেখে জেন্ডারনৈরাজ্যকে প্রতিষ্ঠা করা এবং সেই সূত্রে পাশ্চাত্য যৌনবিপ্লবকে এ’দেশে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রগতিশীল এজেন্ডা দৃশ্যত মাঠে মারা গেছে।
এ’রকম ‘মাইর’ বামপন্থীরা এ’দেশে আরো দু’বার খেয়েছে। স্বাধীনতার পর রাজনৈতিকভাবে প্রথমবার। তাদের ছক ছিল তৎকালীন পূর্বপাকিস্তান হবে এক সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ। তাদের জন্য ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, তা হয়নি।
আরেকবার তারা এই লেভেলের ‘মাইর’ খেয়েছে ২০১৩ সালে। ধর্মীয়ভাবে। ‘এমন বাংলাদেশে দেখেনি কেউ’ খ্যাত শাহবাগের বিরিয়ানি বিপ্লবের গণজাগরণ মঞ্চ যে মাত্র তিনমাসের মাথায় তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে, তা ছিল অকল্পনীয়।
আমরাও ভাবি নাই এত দ্রুত তাদের পতন হবে। কিন্তু তা হয়েছে। যাদের সহায়তায় তারা উঠেছে তাদের হাতেই তাদের পতন হয়েছে।
এ’বার তারা ধরা খেয়েছে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে। আমার ধারণা, ২০১৩ সালের মতো এই ইস্যুতেও ক্ষমতাসীনেরা তাদেরকে শেষ পর্যন্ত পরিত্যাগ করবে।
আওয়ামী লীগ কখনো বামপন্থী ছিল না। আওয়ামী লীগ কৌশলগতভাবে ভারতপন্থী দল। বিএনপি কৌশলগতভাবে ভারতবিরোধী দল। এই দুই প্রধান দলই নিজের মতো করে পাওয়ার-পলিটিক্স করে। তারা মূলত ক্ষমতাপন্থী। বামপন্থীরা আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করেছে। আওয়ামী লীগও বামপন্থীদেরকে রেসিপ্রোকালি ব্যবহার করেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, জামায়াত যদি বিএনপি’র সাথে গাঁটছড়া না বাঁধতো, হেফাজত যদি রাজনীতির সাথে জড়িয়ে না পড়তো তাহলে যা হয়েছে, ঘটনা তার থেকে ভিন্নতর কিছু হতো।
রাজনীতির ফর্মূলা না বুঝে অনেকেই রাজনীতি করে, রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাজে, তাদের কনসেপ্টচুয়াল ক্লারিফিকেশনের জন্য রিস্ক নিয়ে অতিস্পর্শকাতর হওয়া সত্বেও এই কথাটুকু বললাম।
‘জামায়াতে ইসলামী: অভিজ্ঞতা ও মূল্যায়ন’ এই শিরোনামে আমার একটা বই আছে। সেটার ৩৬৫ পৃষ্ঠায় বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে একটা ছক দেয়া আছে। আলোচনা আছে বিস্তারিত।
যা বলছিলাম, এ’দেশে বামপন্থীদের এটি তৃতীয় পরাজয়। বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে প্রথম। ইসলামপন্থীদের এই নজিরবিহীন সাফল্যের পেছনে ‘হিজড়া ইয়েস, ট্রান্সজেন্ডার নো’ — এই অবস্থান তথা ন্যারেটিভের গুরুত্ব সেন্ট্রাল।
‘সিএসসিএস সোশ্যাল মুভমেন্ট’ — এই নামে আমার একদা সক্রিয় একটা গ্রুপ ছিল। সেই গ্রুপে ২০২১ সালে আমরা যখন এলজিবিটিকিউ+ নিয়ে অনলাইন সেমিনার করি, তখনো হিজড়ার ইংরেজী প্রতিশব্দ কী হবে তা নিয়ে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কারো কারো কনফিউশান ছিল। অথচ এখন হিজড়ারাও বলছে, ‘আমরা ট্রান্সজেন্ডার না। আমরা ইন্টারসেক্স।’
সিএসসিএস-এর পক্ষ হতে নারী ইস্যুতে আমরা একটা ন্যারেটিভ হাজির করেছি, ‘রুখে দাও নারীবাদ। দিতে হবে নারী অধিকার।’ আশা করি বছর কয়েকের মধ্যে নারীবাদের বিরুদ্ধে এটিও একটা কাউন্টার-ন্যারেটিভ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
এ’রকম নানা বিষয়ে ‘সমাজ ও সংস্কৃতি অধ্যয়ন কেন্দ্র’ (সিএসসিএস) এর ব্যানারে আমরা কাজ করছি।
বছর চারেক আগে আমার এক সহকর্মীর সাথে বাজি ধরেছিলাম, আগামী এক দশকের মধ্যে বামপন্থার পাশাপাশি প্যারালাল বুদ্ধিবৃত্তিক ধারা হিসেবে এ’দেশে ইসলামপন্থা তার জায়গা করে নিবে। বুঝতেই পারছেন, ইটস বিকামিং।
টু দ্যা নিউ ইন্টেলেকচুয়াল অর্ডার, ওয়েলকাম!
মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য
Khaled Sami: বামপন্থীদের মধ্যেও অনেক সেক্ট আছে। ওই সেক্টগুলোর মধ্য থেকে লীগও একটা সেক্ট। এটা হল পলিটিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে আলাপ। কারণ সবগুলো সেক্টই নিম্নলিখিত বিষয়গুলোর উপর প্রায় একমত।
১. রাজনীতিতে ধর্মীয় ভ্যালুসকে আনা যাবে না । এই পয়েন্টে লীগের লোকজন বিএনপির নেতা কর্মীদেরকে টকশোতে প্রচুর কথা শোনায়।
২. মুক্তিযোদ্ধ নিয়ে লীগসহ সব বামদের বয়ান একই। এ ব্যাপারে তারা মোটামুটি প্রায় ঐক্যমত।
৩. একজন নেতাকে কাল্ট ফিগার হিসেবে দাঁড় করানো।
৪. আমার দেখা নয়া চীন বইটি পড়লে বুঝা যায় যে উনি সমাজতন্ত্রের প্রতি খুবই দুর্বল ছিলেন। এবং বাস্তব জীবনে বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিজ আদর্শকে প্রতিষ্ঠাই করেছিলেন। এই বয়ানটা বাকশালকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে লীগের বহু লোকজনই দেয়।
৫. লীগের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা ভাসানী একজন বামই ছিলেন। এর প্রভাব দলে অবশ্যই পড়েছিল। এটা লম্বা আলাপের বিষয়।
আমার মূল পয়েন্টটা হচ্ছে যে রাজনৈতিকভাবে লীগ আর বাম একই। সেক্টগত পার্থক্য থাকবেই। তাছাড়া ভিন্ন দল হিসাবে কিছু পার্থক্য থাকতেই পারে। সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকেও অনেক পার্থক্য থাকতে পারে। লীগের লোকজন বামপন্থী বক্তব্যটাকেই বাস্তবভাবে উপস্থাপন করে। অন্যদিকে তথাকথিত বাম দলগুলো তাদের বক্তব্যটাকে ইউটোপিয়ানভাবে উপস্থাপন করে। ফলে আমাদের কাছে দৃশ্যত পার্থক্য মনে হয় কিন্তু বাস্তবে কোন পার্থক্য নাই। সেকুলারিজমের বয়ানসহ আরো নানান পয়েন্টে লীগ ও বামদের বহু মিল দেখানো যাবে।
Mohammad Mozammel Hoque: এরা বামঘেঁষা ক্ষমতাপন্থী। ইংরেজিতে বললে সেন্টার লেফট। আর তখনকার সময়ে সবার মধ্যে একটা সমাজতান্ত্রিক চেতনা কাজ করত। যারা ইসলামপন্থী ছিল তাদের মধ্যেও সমাজতান্ত্রিক ও সাম্যবাদী সেন্টিমেন্ট কাজ করত। দেওয়ান মোঃ আজরাফের লেখা বা ওই সময়ের যে কোনো মুসলিম চিন্তাবিদের লেখা পড়লে এটাই বোঝা যায়। মাওলানা মওদূদী তো রীতিমতো কমিউনিস্ট পার্টির স্ট্রাকচারে সংগঠন গড়ে তুলেছেন। উনার ‘একটি সত্যনিষ্ঠ দলের প্রয়োজন’ এর মধ্যে তিনি এটি পরোক্ষভাবে স্বীকারও করেছেন।
Khaled Sami: বিষয়টা হচ্ছে যে, বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আপনি বাম শব্দটাকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে কীভাবে সংজ্ঞায়িত করেন তার ওপর নির্ভর করছে সবকিছু। রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে যেমনভাবে জামাত ও চরমোনাই একই। অর্থাৎ উভয়টিই ইসলামিস্ট ।
২. লীগের গঠনতন্ত্র, ওদের কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তব্য ও টকশোতে নেতাদের বক্তব্য বিশ্লেষণ করে আমার উল্লেখিত পয়েন্টগুলোতে আমি প্রায়ই মিল পাই। এগুলোই আমাদের বঙ্গীয় অঞ্চলের বামপন্থীদের কমন বৈশিষ্ট্য। ধর্মীয় আচার-আচরণ পালন করে ও কথাবার্তা বলে-এমন লোক কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যেও আছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ দল বড় হওয়াতে বাহ্যিক ধর্ম-কর্ম করা লোকজন ওই দলে সংখ্যাগত একটু বেশি অবস্থান করে এবং তারা আলেমদেরকে ভোদাই বানানোর জন্য একটু সম্পর্ক মেইনটেইন করে । তারা একটু ম্যাচিউরড হওয়াতে সব বামপন্থী জিনিসপত্রই সমাজে ও রাজনীতিতে বাস্তবভাবে উপস্থাপন করতে পারে। ফলে দেখতে তাদেরকে ইসলাম ঘেঁষা অনেকের কাছে মনে হতে পারে, কিন্তু বাস্তবে তেমন না।
Mohammad Mozammel Hoque: আওয়ামী লীগ মূলত ডানপন্থী দল। বামদের সাথে দহরম মহরম করতে করতে তারা এখন বেশ খানিকটা বামঘেঁষা। আবার দক্ষিণপন্থী আওয়ামী লীগের সাথে দীর্ঘদিন আঁতাত করে চলতে চলতে বামপন্থীরাও হারিয়েছে তাদের আদর্শ। এখনকার বাম যত না বুদ্ধিবৃত্তিক ও আদর্শিক, তারচেয়ে বেশি তারা সাংস্কৃতিক। দে আর বেসিকেলি কালচারাল কমিউনিস্ট।
ফর্মূলা হলো, ছোট আদর্শিক দল যখন বড় ক্ষমতাপন্থী দলের সাথে গাঁটছড়া বাঁধে, তখন তাদের মধ্যে এ’ধরনের লেনদেন বা শিফট ঘটে। যেমনটি ঘটছে বিএনপি এবং জামায়াতসহ ইসলামী দলগুলোর মধ্যে। ইসলামপন্থী দলগুলোর মধ্যে তুলনামূলকভাবে বড় হওয়ার কারণে জামায়াতের এই পরিবর্তন (বিএনপিকরণ) বেশি লক্ষ করা যায়।
Shahrian Ahmed Anim: বাংলাদেশের বেশিরভাগ হিজড়া শারিরীকভাবে পুরুষ। যে কারণেই হোক তারা মেয়েলি বেশভূষা নিয়ে পাপ কাজ করে বেড়ায়। দেখা যায় যারা আসল হিজড়া (ইন্টারসেক্স), তারা এদের জন্য নিপীড়িত। হিজড়াদের ভেতর এখন আসল হিজড়া কম, সমকামী মেয়েলি স্বভাবের পুরুষ বেশী। এটা এক আসল হিজড়ার ভাষ্যমত।
গত কিছুদিন আগে এক সুস্থ বায়োলজিক্যাল ছেলেকে ময়মনসিংহ হিজড়াদের আখড়ায় পাওয়া গেছে। অনেক কথাই বলে ফেললাম, যা হয়ত দৃষ্টিকটুও হতে পারে। দিনশেষে দাবি একটাই, কওমে লুতের পাপ বাঙালি জাতির গায়ে লাগতে দেয়া যাবে না।
Md. Omar Faruk: বয়ানের শক্তি মারাত্মক। দুর্নিবার। খুব কম মানুষই সাত-পাঁচ ভেবে, সচেতনভাবে ও যুক্তিসহকারে সিদ্ধান্ত নিয়ে কিছু একটা করে। মানুষ স্বভাবতই স্রোতে গা ভাসিয়ে চলে। সবাই যা বলে, সেও তা বলে। সবাই যা করে, সেও তা করে। মানুষ সাধারণত যে কোনো কিছুর মূলধারায় থাকতে চায়। group conformity একটা মারাত্মক শক্তিশালী জিনিস।
Nuzhat Tabassum: মূল উদ্দেশ্য হলো সূক্ষ্মভাবে পশ্চিমা প্রপাগাণ্ডাকে উপমহাদেশে স্বীকৃত করা! ছোট ছোট বাচ্চা যাদের ইন্টারসেক্স আর ট্রান্সের মধ্যে পার্থক্য জানা নেই, তাদের বিভ্রান্ত করে ব্যাপারটা নরমালাইজ করা। অন্যদিকে বেশিরভাগ শিক্ষকরাই জানে না এই ব্যাপারে ভয়েজ রেজ করা কত জরুরি ছিলো। তারা সুশীল সমাজের প্রতিনিধি হতে চায় শুধু বাচ্চাদের বইয়ের লাইন গিলিয়ে আর বেতন নিয়ে। যদিও বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরাই এই বিকৃত মানসিকতা সাপোর্ট করে কথা বলবেন, স্টেপ নিবেন এসব এর পক্ষে, কারণ এতে নিজেদের সো কল্ড প্রগতিশীল প্রমাণ করার সাথে সাথে ফান্ড এরও ব্যাপার-স্যাপার থাকে।
Mohammad Mozammel Hoque: যা হচ্ছে, sexualization in the name of sex education.