জ্ঞান নয়, বিবেক নয়, আবেগই হলো মানুষের শুদ্ধ পরিচয়। প্রথমটার উৎস হচ্ছে দ্বিতীয়টা। দ্বিতীয়টা উৎসরিত হয় তৃতীয়টা থেকে।
জ্ঞান, বিশ্বাস, যুক্তি, অভিজ্ঞতা বা পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি হলো নিজের সম্পর্কে, জীবন সম্পর্কে, জগত সম্পর্কে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গী তথা যার যার শুদ্ধ মানবিক অনুভবের বহিঃপ্রকাশ। খাতা কাটার ভীষণ বোরিং কাজ করতে করতে ভাল লাগা এক প্রিয় শিল্পীর সেতারের ঝংকারের মূর্ছনা শুনছি। এ মুহুর্তে মনে হচ্ছে, ‘আমি’ মানে আমার একান্ত ব্যক্তিগত আবেগ ও অনুভূতির ভাষাতীত ভালো লাগার একটা খাস জমিন।
শুধু সুর কেন আমাদের মাঝে মাঝে এত ভালো লাগে? কারণ, তাতে ভাষার সীমাবদ্ধতা, বাধ্যবাধকতা বা যন্ত্রণা থাকে না। মহাজাগতিক সুর-লয়-তালের সাথে যেন আমাদের অন্তরের সম্পর্ক। গহীন অরণ্যের আওয়াজ, সমুদ্রের গর্জন, মরুভূমির বিপুল নিস্তব্ধতা, নিঃসঙ্গ সময়ে আকাশের বিশালতা কেন আমাদের কেমন যেন উন্মনা আকূল করে তোলে? অবুঝ শিশু কেন সুরের প্রতি গভীরভাবে অনুরক্ত? সে কি বস্তুবাদী, ভোগবাদী? আমাদের মতো যৌনকাতর? অথচ, প্রতিটা শিশু জন্মগতভাবেই নিষ্পাপ, আমরা জানি।
তাই, ভালো-মন্দকে সব সময়ে আইনের ফুট-ইঞ্চি দিয়ে পরিমাপ করতে চাওয়াটা ভুল। কোনো কিছু ভালো বা মন্দ হওয়াটা মূলত গুণগত ব্যাপার। আইনের কাঠামো দিয়ে বিশেষ কোনো গুণগত বিষয়কে যাচাই করতে আমরা বাধ্য হই। এটি আমাদের মানবিক সীমাবদ্ধতা।
Quality cannot be quantified properly. Law focuses on quantification. It’s due to our various limitations, specifically physical and linguistic limitations. Precision through quantification is a must but ultimately false. We have to live with this contradiction. You can call it a dilemma or a paradox.
Emotion is the spawning ground of knowledge.
ফেসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য
Sarwar Kamal: হ্যাঁ, আবেগের নিজস্ব যুক্তিপ্রবণতা আছে, এক ধরনের অন্তর্নিহিত যুক্তি থেকেই আবেগিক অভিব্যক্তির প্রকাশ ঘটে যার বাহ্যমান রূপ আমাদের কাছে অসংগত মনে হয়। কিন্তু আমাদের অবচেতনেই আবেগ নিজস্ব যুক্তি দ্বারা, ভাষাতীত কাঠামোতেই ব্যাখ্যা দাঁড় করায়, বাস্তবতার মোকাবেলায় যখন আমাদের প্রচলিত পদ্ধতি ও সূত্র মার খায়, তখন আবেগই নতুন চিন্তার সূত্রপাত করে, নব নব সূত্র ও বক্তব্যধর্মী অভিব্যক্তির উৎস যোগান দেয়। একমাত্র বেদনা ও আবেগিক সংঘাতই আমাদের অগোচরে থাকা, অবচেতনে থাকা বক্তব্যকে গোছিয়ে এনে আর্টিকুলেট করতে সাহায্য করে।
বিবেক মানুষের জ্ঞানেন্দ্রিয়গুলোকে বায়াস/ঝোঁক থেকে রক্ষা করে, ফলে জ্ঞান তৈরির জন্য মন নিরপেক্ষ হয় ও বৈধ যৌক্তিক পদ্ধতি অবলম্বনের পথে বাধাগুলো, সংস্কারগুলো দূর হয়। এপিস্টেমিক জাস্টিস নিশ্চিত করা সম্ভব হয়।
Mohammad Mozammel Hoque: Thanks a lot. I agree with your analysis.
Nazamul Hoque: Emotion is the part of life but it is not authentic identity. Of course, knowledge, sense, and emotion all are interrelated and interdependent. For example,
Allah has ordered us for acquiring knowledge and He also commands to use our brain or sense while doing anything. In this case, we become emotional for acquiring knowledge and using our brain. Since Allah has ordered us. But, this emotion does not act first.
Mohammad Mozammel Hoque: Our sense of existence starts with what? Knowledge? No. Intuitive knowledge of our self-existence is emotive in its primary form. Conscience is a form of that primary emotion. Got it?
Abdur Rahim: এটা বুঝতে পারলাম– বিবেক মানুষের শুদ্ধতম পরিচয়, কিন্তু দ্বিতীয় বাক্য উল্টো করলে সঠিক মনে হয়, তৃতীয় বাক্য মোটেই সঠিক মনে হয়নি।
আমার উপলব্ধি প্রকাশ করলাম। আপনার উপলব্ধির সাথে সরল রেখায় অবস্থান করতে সহায়তা করলে একনিষ্ঠ পাঠক হিসেবে কৃতজ্ঞ থাকব।
Mohammad Mozammel Hoque: অস্তিত্ব আগে, নাকি জ্ঞান আগে? জ্ঞান আগে, নাকি সঠিক জ্ঞান আগে? দেখবেন, অস্তিত্ব আগে। এরপর জ্ঞান। এরপর বিদ্যমান বা অর্জিত জ্ঞানের মধ্য হতে বাছাই করে আমরা পাই সঠিক জ্ঞান। বুঝতেই পারছেন, গুরুত্বের দিক থেকে বিবেকের স্থান সবার আগে বা উপরে। কিন্তু গঠনগত দিক থেকে অস্তিত্ব আগে। এরপর জ্ঞান। এরপর সঠিক জ্ঞান বা বিবেচনাবোধ যাকে আমরা বিবেক হিসাবে বলে থাকি। তো, এই অস্তিত্বের বোধটাই হলো আবেগ। আবেগের পরিশীলিত রূপ হলো বিবেক। যা আমাদেরকে সঠিক জ্ঞান দেয়।
পাশ্চাত্য দর্শন আবেগকে জ্ঞানগত আলোচনায় স্থান দিতে নারাজ। তারা সরাসরি জ্ঞান দিয়ে শুরু করে। যার ফলে অস্তিত্বের সাথে তা কনফ্লিক্ট করে। এই কনট্রাডিকশনের কারণে গত শতাব্দীতে পাশ্চাত্য দর্শন মহাদেশীয় ধারা ও বিশ্লেষণী ধারায় বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ইংরেজী ভাষা ভাষীরা বিশ্লেষণী ধারার অনুসারী। তারা সরাসরি জ্ঞান দিয়ে শুরু করে। বাদবাকীরা অস্তিত্বকে ওভার ফোকাস করে। এরা মহাদেশীয় ধারা হিসাবে পরিচিত।
Abdur Rahim: প্রথম অস্তিত্ব, তার সাথে জড়িত আবেগ। যে কোনো ঘটনায় অস্তিত্বের সাড়া দেয়ার পদ্ধতি এবং যোগ্যতাই আবেগ।
সঠিক জ্ঞান বা বিবেচনাবোধ এবং পরিশীলিত আবেগ কে আপনি বিবেক বলেছেন।
প্রশ্ন হচ্ছে, জ্ঞান কিভাবে ‘সঠিক জ্ঞান’-এ পৌঁছায় এবং আবেগ কিভাবে ‘পরিশীলিত আবেগ’ হয়।
সকল জ্ঞান থেকে ঐশী নির্দেষনা এবং যুক্তির আলোকে ‘সঠিক জ্ঞান’ বাছাই করে নেয়া যায়। এই ‘সঠিক জ্ঞান’ বা সঠিক জ্ঞানের আলোকে অন্যকোন গুন আবেগকে শাসন করে পরিশীলিত করে। তাহলে, এখানে বিবেক আবেগকে শাসন করে। আবেগ থেকে কিভাবে বিবেক উৎসারিত হয়?
Mohammad Mozammel Hoque: বিবেক আবেগকে শাসন করে সম্ভাব্য জ্ঞান-উপাত্তগুলো হতে সঠিক জ্ঞান বের করে আনে। এটি বিবেকের সুপেরিওরিটি। আমি বলতে চাচ্ছি, কার্যকর গুরুত্বের তালিকায় উপরে থাকা মানে সেটি উৎপত্তিগত দিক থেকেও আগে, এমনটা নয়। I mean, superiority in a seriality of importance, is not necessarily superiority of entity or becoming.
আপনার একান্ত আপনাকে আপনি খুঁজে পান আপনার শুদ্ধ আবেগের জায়গায়। বিবেকের শাসন মানা দরকার, এটি আপনার-আমার অনেক ভুল ও অপরিণত আবেগের অন্যতম একটা আবেগ। প্রায়োগিক দিক থেকে সব কমিটমেন্টই এক ধরনের আবেগ। বিশেষত: যেগুলো ততটা আইনগত ব্যাপার নয়। অর্থাৎ, নৈতিকতার ধারণাটাই এক মতে, এক ধরনের আবেগ-উদ্ভূত ব্যাপার। এই দৃষ্টিতে, বিবেকের দাবীকে অগ্রাধিকার দেয়ার মনোভাব বা সিরিয়াসনেস হলো এক ধরনের গঠনমূলক শুদ্ধ আবেগ।
জনাব Jahangir Alam এর কমেন্টে দেয়া উত্তরটাও এরসাথে মিলিয়ে পড়ার জন্য অনুরোধ করছি।
Jahangir Alam: it is tough for me to understand the philosophical discourse on “emotion” (in my view emotion don’t reach us to wisdom but intellectual emotion do)
Mohammad Mozammel Hoque: If you try to find yourself, I think, you will fail to identify yourself with knowledge, wisdom, norms or conscience. In the deepest feeling of you, is the real you. Rest of all are socio-physical-cultural construct.
Remember please, I do not mean our day to day ordinary silly emotions, when I’ve told “Emotion is the spawning ground of knowledge.”
Furthermore, as fish eggs are not fishes, so is the case with our deep routed existential feelings which I called emotions. .Emotions is itself for nothing until it is developed and guided by our conscience.
Emotions guided by conscience give knowledge.
আসসালামু আলাইকুম ওয়া .. …. বারাকাতুহ
বিনীত প্রশ্ন-
সূর ও বাদ্যযন্ত্র প্রায় অবিচ্ছেদ্য বলা যায়! ইসলামী শরীয়াহর আলোকে এ দুটোকে পৃথক করার উপায় কী?
যদি পৃথকীকরণ সম্ভব না হয় তবে শরীয়াহর সাথে সমন্বয়ের উপায় কী?
যেমন আপনি এখন মূল কাজের সাথে সেতারও শুনছেন, শরীয়াহর আলোকে এই শোনাটা কিভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে?
“ভালো-মন্দকে সব সময়ে আইনের ফুট-ইঞ্চি দিয়ে পরিমাপ করতে চাওয়াটা ভুল” – এ কথাটি কি শরীয়াহর ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবার সুযোগ আছে?
নাকি এ উপসংহারই শেষ কথা-
We have to live with this contradiction. You can call it a dilemma or a paradox.