একটু আগে খেয়াল করলাম, একজন দৃশ্যত আবেগী পাঠক/দর্শক আমার ইউটিউব চ্যানেল “যুক্তি ও জীবন”-এর কমেন্ট সেকশনে লিখেছেন,

“Sir, assalamu alykum, how are you??? I think you are well by the grace of Allah. My name is … I am from Gopalgong. Sir, I am following your lecture, though am not a student of philosophy. However, I want to know about a matter, that what is the deference between আবেগ and বিবেক. Please sir, give us a lecture about it. please, please, please…!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!”

ত্যানা পেচানো আজাইরা প্রশ্ন নিয়ে আমি এনগেইজ না হলেও সহজ সরলভাবে করা যে কারো যে কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্যে আমি সাধারণত রেসপন্স করি। সে হিসাবে সেখানে আমি তাৎক্ষণিকভাবে লিখেছি:

আবেগ ও বিবেক উভয়ই এক ধরনের প্রত্যক্ষ, অব্যবহিত ও গভীর একান্ত অনুভূতি। আবেগ আমাদেরকে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু করার জন্য বলে না। কিন্তু বিবেক তা বলে।

তাহলে ব্যাপারটা এই দাঁড়ালো, আমাদের যে ধরনের একান্ত ব্যক্তিগত গভীর অনুভূতি, করণীয় বা কর্তব্য সম্পর্কে কিছু বলে না, যা শুধুই অনুভবের ব্যাপার, তা হলো আবেগ। পক্ষান্তরে আমাদের যেসব স্বজ্ঞাত, প্রত্যক্ষ ও গভীরতম বোধ আমাদেরকে সুনির্দিষ্ট পন্থায় সুনির্দিষ্ট কিছু কর্মের জন্য আমাদেরকে আমাদের অস্তিত্বের ভিতর থেকে উদ্বুদ্ধ করে তা হলো বিবেক।

একই জিনিসের তলার দিকটা আবেগ। উপরের দিকটা বিবেক। অথচ মনে হয় যেন এ দুটি আলাদা জিনিস। না, আবেগ ও বিবেকের সম্পর্ক বিপরীত নয়। বরং নেসেসারি। এগুলো মিউচুয়্যালি এক্সক্লুসিভ নয়। মানে, একটা অপরটাকে নাকচ করে না। বরং আবেগ ও বিবেকের কোনো একটি না থাকলে অপরটিও থাকবে না। আবেগ হলো আমাদের অস্তিত্বের, সত্তার, চেতনার একেবারে গোড়ার বিষয়। আর, বিবেক হলো আমাদের এই ভাষাতীত আবেগ ও বোধের শুদ্ধতম বহিঃপ্রকাশ।

আমার মতো যারা আবেগবাদী তাদের কাছে আবেগ নিয়ে লেখা আমার এই লেখাগুলোও ভালো লাগবে। আশা করি।

১। আবেগই হলো মানুষের শুদ্ধ পরিচয়

২। আবেগ হচ্ছে জীবনের বহিঃপ্রকাশ, আত্মার পরিচয়

৩। আবেগ হলো মানবিক সম্পর্কের ভিত্তি

৪। আবেগের শিকড় আর ভালোবাসার রসায়ন প্রসঙ্গে বস্তুবাদের ব্যবচ্ছেদ

ফেইসবুক থেকে নির্বাচিত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

Mahfujur Rahaman: ‘বিবেক হলো আবেগের শুদ্ধতম বহিঃপ্রকাশ’

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: হ্যাঁ, ঠিক তাই। লোকেরা মনে করে, আবেগ যেন খুব একটা কাজের জিনিস নয়। বা খারাপ বা বাহুল্য কিছু। অথচ, আবেগ আছে বলেই বিবেক আছে। বিশ্বাস আছে। সত্যের জন্য আছে জীবন দেয়া। মিথ্যার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। আবেগহীন মানুষ আদৌ প্রকৃত আদর্শবাদী হতে পারে না। আদর্শবোধটাই আবেগ-উৎসরিত। প্রেরণার ব্যাপার। আবেগের পরিশীলিত বহিঃপ্রকাশ হলো তা, যাকে আমরা বিবেক বলে জানি।

আবেগহীন মানুষ আসলে বিবেকহীন। নিষ্প্রাণ। দেখবেন, এ ধরনের মানুষেরা আইনের খণ্ডিত প্রয়োগ নিয়ে খুব উৎসাহী হয়। সামগ্রিকভাবে কোনো কিছুকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গিটা তাদের থাকে না। সে জন্য ভালো মানুষ হতে ভালো মানের আবেগ লাগবে।

উত্তর ভুল-শুদ্ধ যা-ই হোক, আমাদের অস্তিত্ববাদী মৌলিক প্রশ্নগুলো আমাদের বিশুদ্ধ আবেগ থেকে উৎসরিত হয়। যার মধ্যে আবেগের বিপুলতা নাই, সে হবে শুষ্ক আচরণবাদী। আইনের উদ্দেশ্যকে বাদ দিয়ে সে বিশেষ কোনো আইন নিয়ে টানাটানি করবে। এ ধরনের মেকি আদর্শবাদীদের সমর্থনের ভার হতে নিজেকে মুক্ত করার জন্য এ ধরনের লেখালেখি।

লেখাটির ফেইসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *