(অ্যাপোলজি: অনেক পাঠক-সমর্থক আছেন, যারা আমার লেখালেখি ও কর্মকাণ্ডকে ওভারঅল পছন্দ করেন। কিন্তু জামায়াত করেন না বা জামায়াত পছন্দ করেন না। তাই, জামায়াতে ইসলামীকে নিয়ে ইদানীং আমার আবারো লেখালেখি দেখে তারা বিরক্ত হবেন, এটি বুঝতে পারছি। তৎসত্ত্বেও, স্বীয় দল ও আদর্শের মধ্যকার ভিন্ন মতাবলম্বীদের প্রতি জামায়াত নেতাকর্মীদের মন-মানসিকতা কতটা রূঢ় এবং জামায়াতের সংগঠনবাদী লোকদের বুদ্ধিবৃত্তির স্তর কতটা অপ্রত্যাশিত মানের, সে সম্পর্কে যারা স্বচ্ছ ধারণা পেতে চান, তাদের জন্য এই লেখা। এটি একজন জামায়াত-ডিফেন্ডারের সাথে ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ তারিখে ইনবক্সে বিনিময়কৃত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্যের অবিকল সংকলন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনুমতি নিয়েই এটি প্রকাশ করছি।)
সংশ্লিষ্ট জামায়াত-কর্মী বলেছেন:
আসসালামু আলাইকুম। আপনার লেখা ‘কেন আমি জামায়াতের সংস্কারবাদী নই (পর্ব-৩)’ [সবগুলো পর্ব নিয়ে মূল লেখার লিংক] থেকে আমার একটি কমেন্ট মুছে দিয়েছেন। বেশি কিছু না ঘাটলেও ঐ কমেন্ট মুছে দেয়াটাই প্রমাণ করে যে, আপনার লিখার মধ্যে ভালোই সমস্যা আছে।
আপনার লেখাগুলো পড়ে পরিস্কার বুঝা যায়, চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে টিকে থাকা এবং পদোন্নতি পাওয়ার জন্যই এসব করছেন। আপনার লেখার বিপরীতে লেখার যথেষ্ট উপাদান থাকা সত্ত্বেও শিক্ষক হিসেবে আপনার সম্মানের প্রতি দৃষ্টি রেখে তা থেকে বিরত থাকলাম।
আশা করছি, সম্ভব হলে নিজেকে টিকিয়ে রাখার অন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করা যায় কিনা ভেবে দেখবেন এবং এমন নাজুক পরিস্থিতিতে জামায়াতকে অযৌক্তিক সমালোচনা করে এর কর্মী-সমর্থককে বিভ্রান্ত করা থেকে বিরত থাকবেন। ধন্যবাদ।
আমি বলেছি:
আপনার মূল কমেন্ট এবং এতে আমার মন্তব্যটা ঠিকই তো আছে দেখছি। শুধু প্রতিমন্তব্যটা ডিলিট করেছি। আপনার মন্তব্যের মধ্যে আপনার দাবিকৃত সংশোধনীর বিষয়টি তো এখনও পরিষ্কারভাবে আছে। আমার ভুল তথ্যকে সংশোধন করে এর একটা ক্লারিফিকেশনও আমি দিয়েছি। কোনো মন্তব্য আমি ডিলিট করি না। যা ডিলিট করেছি তা আনডু করার কোনো পদ্ধতি পাচ্ছি না। ভালো মনে করলে আপনি আবার তা কষ্ট করে লিখে দিতে পারেন।
আপনি আমার সম্পর্কে ব্যক্তিভাবে জানেন না। এটি বুঝতে পারছি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘মোজাম্মেল ভাই’ সম্পর্কে জানেন, এমন কাউকে নিশ্চয়ই আপনার আশেপাশে খুঁজে পাবেন। আমার ইন্টগ্রিটি সম্পর্কে জানার চেষ্টা করলে আশা করি আপনার ধারণার অবসান হবে।
আর, লিখুন না! তাতে করে একজন ‘সীমালংঘনকারীর’ কিছুটা ‘সম্মানহানি’ ঘটলেও ‘সত্য’টা তো প্রকাশিত হবে। তাই না?
সংশ্লিষ্ট জামায়াত-কর্মী বলেছেন:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আমার বক্তব্য তথা মনের কথাগুলো আপনাকে সংক্ষেপে বলে দিয়েছি। এটি বলা আমার দায়িত্ব মনে করেছি, তাই বলেছি। এখন বিবেচনা আপনার হাতে। আমি এ বিষয়ে আর কথা বাড়াবো না। মাআসসালামা।
আমি তো এসবি ব্লগ থেকে আপনাকে জানি। তাছাড়া আপনার ব্যাপারে আরো তথ্য নিয়েছি এবং গ্রামের বাড়িও চেনার সুযোগ হয়েছে। কোনো অবস্থাতেই আপনার সম্মানহানিকর কোনো কাজ আমি করবো না। এটা আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন। আমি তো দারোগা-পুলিশ নই, বলতে পারেন আপনার একজন শুভাকাঙ্ক্ষী।
আমি বলেছি:
“চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে টিকে থাকা এবং পদোন্নতি পাওয়ার জন্যই এসব করছেন।” – আপনার বক্তব্যের এই অংশটুকু আমার ওপর নিতান্তই জুলুম ছাড়া আর কিছু নয়, যদি আপনি আমার সম্পর্কে জেনেশুনে এটি বলে থাকেন।
আজ পর্যন্ত কোনো শত্রুও আমার সম্পর্কে এমন মানহানিকর মন্তব্য করেনি। যাদের সাথে আমার চরম শত্রুতার সম্পর্ক ছিলো কিংবা আছে, তাদের কেউই আমার আত্মমর্যাদাবোধ ও ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে এমন নিম্নধারণা পোষণ বা প্রকাশ করে নাই। শত্রু-মিত্র সবার কাছ হতেই আমি সব সময় এক ধরনের উচ্চ মর্যাদাপূর্ণ ব্যবহার পেয়ে এসেছি। আপনার এই মন্তব্যটি এর বিপরীত ও ব্যতিক্রম।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি সবচেয়ে সাহসী ব্যক্তি– এটি আমার দাবি করার অপেক্ষা রাখে না। সংশ্লিষ্টদের কাছে এটি প্রমাণিত ও পুরনো ব্যাপার। হয়তো আপনি সেটা জানেন না। তাই ‘টিকে থাকার’ জন্য এই দুর্দিনে জামায়াতের বিরোধিতা করছি– এমন ধারণা নিতান্তই ভুল ধারণা।
আর দরখাস্ত করা ছাড়া কাউকে যদি পদোন্নতি দেয়া যেতো, তাহলে সম্ভবত দলমত নির্বিশেষে সবাই মিলে আমাকে অন্তত দশ বছর আগেই প্রফেসর বানিয়ে দিতো। আমার মেধাগত অর্জন ও অবস্থান সম্পর্কেও আপনার সঠিক ধারণা নাই। তাই “পদোন্নতি পাওয়ার জন্যই” আমি এসব করছি– এমনটা বলতে চেয়েছেন। সরি, আপনি সম্পূর্ণ ভুল বুঝেছেন।
আমি ধারণা করতে পারছি না, কখনো কেউ আমাকে এভাবে ব্যক্তি-আক্রমণ করে হার্ট করেছে কিনা। আমি ভীষণ মাইন্ড করেছি। আমি যদি আমার অবস্থানটা ক্লিয়ার করতে সক্ষম হই, তাই যথেষ্ট। ভালো থাকুন।
সংশ্লিষ্ট জামায়াত-কর্মী বলেছেন:
দেখুন, আপনার মধ্যে যোগ্যতা আছে বলেই চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটিতে জয়েন করতে পেরেছেন– এ বিষয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই। পেশাগত কারণে আপনাকে অবশ্যই শ্রদ্ধা করি। শিক্ষকতা পেশাকে সম্মান করি বলেই নিজে না পারলেও আমার মেয়েকে ওই পেশায় যাওয়ার জন্য সহযোগিতা করেছি এবং সে একটি প্রাইভেটে এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসেব কাজ করছে, আলহামদুলিল্লাহ।
আপনি আমার প্রিয় দলের সমালোচনা করেছেন এবং করছেন প্রকাশ্যে। এ সমালোচনার কারণে আমার দল অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। দল যদি আমার-আপনার মতো মানুষ হতো, তাহলে আপনি যেমন মাইন্ড করলেন দলও তেমনটি করতো নিঃসন্দেহে।
আমি কিন্তু প্রকাশ্যে আপনার ব্যাপারে এভাবে বলিনি। আপনার ইজ্জতের প্রতি খেয়াল রেখে শুধু আপনাকেই বলেছি, আমি যা ধারণা করেছি তা। এখনো আশা করছি, আমার ধারণা ভুল প্রমাণিত হোক।
দীর্ঘদিন সংগঠনের সাথে থাকার কারণে আপনার বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয় যে, নিকটজনের নিকট থেকে পাওয়া আঘাতের ব্যাথা বেশিই হয়। সুতরাং আপনার নিকট থেকে দল যখন আঘাতপ্রাপ্ত হয়, তখন দলের লোকদের নিকট এর ব্যথা বেশি হবেই। আর এ ব্যথার কারণে কিছু প্রতিক্রিয়াও হওয়ার কথা, যা আমি ব্যক্ত করলাম এবং আরো কেউ করেছে। আমার সাথে সম্পৃক্ত এমন দুয়েকজনকে অবশ্য আমি নিষেধ করেছি, খোলাবাজারে ব্যাপক মন্তব্য না করার জন্য।
আশা করছি, আপনি বুঝতে পেরেছেন যে, আপনাকে হেয়প্রতিপন্ন করার কোনো ইচ্ছে আমার নেই।
বর্তমান কঠিন মুহূর্তে যেখানে সাধারণ সমর্থক পর্যন্ত ইসলাম এবং ইসলামী সংগঠনের পক্ষে জীবন দেয়ার জন্য তৈরি হয়ে আছে, সেখানে আপনার নিকট থেকে উক্তরূপ আচরণের প্রেক্ষিতে আর কী ধারণা জন্মাতে পারে, আপনিই বলুন।
আমি বলেছি:
আপনার প্রদত্ত যুক্তিগুলো বা যৌক্তিক কোনো কিছুই কখনো ব্যক্তি-আক্রমণ ও কুধারণা পোষণকে লেজিটিমেইট করে না। আপনি উদ্ধৃত মন্তব্যাংশে ব্যক্তি-আক্রমণ করেছেন, যা ইসলামী আদবের খেলাফ। আপনি কি সত্যিই মনে করেন যে, আমি ‘টিকে থাকার জন্য’ ও ‘পদোন্নেতি লাভের জন্য’ এসব লিখছি?
যদি তাই মনে করেন, তাহলে যা বলেছি, আমার সম্পর্কে আপনার জানা নাই। তাহলে যেমনটা বলেছি, একটু কষ্ট করে জানার চেষ্টা করুন। আর যদি জেনেশুনেই সংগঠনের প্রতিনিধি বা একজন হিসাবে পাল্টা আক্রমণ হিসাবে এমন বলে থাকেন, তাহলে তা নিতান্তই অনাকাঙ্ক্ষিত। কোনো মানদণ্ডেই এমন বাজে মন্তব্য উত্তীর্ণ নয়। আমি ভেবেছিলাম আপনি ভুল বুঝতে পারবেন।
সংশ্লিষ্ট জামায়াত-কর্মী বলেছেন:
জানতাম “আপনি উদ্ধৃত মন্তব্যাংশে ব্যক্তি-আক্রমণ করেছেন, যা ইসলামী আদবের খেলাফ” বলে আমাকে ঘায়েল করার চেষ্টা করবেন, যা ইতোপূর্বে আপনার পোস্টের সরাসরি মন্তব্যের জবাবে বেশ কয়েকজনকে বলেছেন।
এটা যদি হয় ব্যক্তি-আক্রমণ, সেটা আমি করেছি শুধুই একজনকে। আর আপনি করেছেন আমার প্রিয় দলের প্রতিষ্ঠাতা থেকে শুরু করে পরবর্তী আমীর এবং সমগ্র সংগঠনকে। এখন “আদবের বেশি খেলাফ” কোনটা হলো, তা একটু মাথা খাটালেই সহজে বলা যায়।
যাই হোক, আপনার সাথে আমার কিন্তু আঁড়ি হয়নি। আগামীতেও আপনার লেখায় ভ্রমণ করবো, ইনশাআল্লাহ। এখন না হয় আমার উক্ত ‘ব্যক্তি-আক্রমণ’ স্থগিত রাখলাম। আগামীতে আরো ভালো করে জেনে সেটাকে ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’তে ফেলার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ।
আমি বলেছি:
আমি কোনখানে কাকে ব্যক্তি-আক্রমণ করেছি, তা কি দেখিয়ে দিবেন? এর আগে সমালোচনামূলক পর্যালোচনা (critical review) এবং ব্যক্তি-আক্রমণের (argument ad hominem) পার্থক্যটা বিবেচনায় রাখবেন, আশা করি। আর যদি মনে করেন, ‘সাংগঠনিক বিষয়’ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে কথা বলা ঠিক নয়, তাহলে এমন কথা যারা বলে তাদের সর্বোতভাবে এড়িয়ে যাওয়াই তো যুক্তিসঙ্গত। অথচ, আপনারা এনগেজ হচ্ছেন! এবং আগাগোড়া নেতিবাচক মানসিকতা নিয়ে। সেটি শোভন নয়।
কোনো কথার সব কথাই খারাপ থাকে না। উক্ত দীর্ঘ নোটের এতগুলো পয়েন্টের কোনোটাই আপনার দৃষ্টিতে সঠিক মনে হয়নি, আশ্চর্য! যদি আমি কোনো কথা ঠিক বলে থাকি, তার রিফ্লেকশন থাকার কথা ছিলো। আঁড়ি বা সখ্যতা গড়ে উঠে। তাই আমি ওসব নিয়ে এনগেজ হই না। বিষয়কে বিষয় হিসাবে বিবেচনা করি। ভালো থাকুন।
সংশ্লিষ্ট জামায়াত-কর্মী বলেছেন:
আচ্ছা, আমার বুঝে আসে না যে, কেউ জামায়াতে ইসলামী এবং এর নেতৃবৃন্দের ব্যাপারে সমালোচনা করলে তাকে বলা হয় “সমালোচনামূলক পর্যালোচনা” আবার উক্ত সমালোচনামূলক পর্যালোচকের যদি কেউ “সমালোচনামূলক পর্যালোচনা” করেন, তাহলে তিনি হয়ে যান ‘ব্যক্তি-আক্রমণকারী’। খুবই ইন্ট্রাস্টিং না?
‘সাংগঠনিক বিষয়’ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে কথা বলা ঠিক নয়’– একথা তো কেউ বলেনি! আপনার যেমন বলার অধিকার আছে, তেমনি আপনার বলার প্রেক্ষিতে অন্যদেরও বলার এবং পর্যালোচনার অধিকার আছে। একজন নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি যখন হঠাৎ ওলট মারে, তখন এই ওলট মারার পেছনের সম্ভাব্য কারণ খোঁজা অন্যায় নয়। আশা করি বোঝাতে পেরেছি।
‘আপনার সব পয়েন্ট ভুল’ এমন কথা আমি বলিনি। বরং শুরুতে আপনার লেখাটি ‘গঠনমূলক’ বলেছি। এর মধ্যে অসঙ্গতির দুয়েকটি তুলে ধরেছি মাত্র।
আমি বলেছি:
“হঠাৎ ওলট মারে”– এসব কেমন ভাষা? সম্ভাব্য কেন, স্পেসিফিক কারণ ওই “নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি” বহু আগে হতেই নানাভাবে, রিপিটেডলি এবং বিস্তারিতভাবে বলে আসছেন। হঠাৎ করে ভোল পাল্টানোর মতো কিছু তো তিনি করেন নাই।
যারা আমাকে জানেন, তারা আমার অনুরূপ দৃষ্টিভঙ্গির কথাও জানেন। পার্থক্য এতটুকু যে, আগে আমি ব্যক্তিগত আলাপচারিতা ও সীমিত লেখালেখির পাশাপাশি সক্রিয়ভাবে ‘সাংগঠনিক কাজ’ও পূর্ণমাত্রায় করেছি। এখন করছি না। এমনকি নিজেকে জামায়াত কর্মী হিসাবে স্বীকারও করছি না। সেটি আমি চবির বর্তমান জামায়াত সভাপতি প্রফেসর ড. মো. শামীম উদ্দিন খান ভাইয়ের কাছে ব্যক্তিগতভাবে ও বিস্তারিতভাবে অবহিত ও ব্যাখ্যা করেছি। আমার লাইব্রেরি রুমে উনার সাথে আমার লম্বা কথাবার্তা হয়েছে।
সংক্ষেপে সেসব কথার মূলকথা হলো– আমি শতকরা ১৫ ভাগ নিরপেক্ষ ও তরুণদের মধ্যে স্বাধীন ও স্বতন্ত্রভাবে যুগোপযোগী পন্থায় ইসলামের কাজ করতে চাই। বর্তমানে ‘সমাজ ও সংস্কৃতি অধ্যয়ন কেন্দ্র’র প্লাটফরমে যা আমি করছি। তাই, আমার জামায়াত পরিচয় থাকাটাকে আমি মোটেও উপযোগী মনে করছি না।
এর মানে এই নয় যে, আমি খেয়ে না খেয়ে জামায়াতের বিরুদ্ধে লেগেছি। জামায়াতকে একচ্ছত্রভাবে বিরোধিতা না করে জামায়াতের পক্ষে শক্ত মন্তব্য করার জন্য কিছু পাঠক আামাকে শেষ পর্যন্ত জামায়াত-ই বলেছেন। এমন একজনের মন্তব্যের প্রতিবাদে এবং জামায়াত নেতা-কর্মীদের ফরহাদ মজহার প্রীতির কফিনে শেষ পেরেক ঠোকার জন্য আমি একটা ফলোআপ নোটও লিখেছি।
আপনি আসলে আমার লেখালেখি ও এক্টিভিজমের থিমটাকেই বুঝতে পারছেন না। তাই আপনার সাথে কথা চালিয়ে যাওয়াটাকে অর্থহীন মনে হচ্ছে। ভালো থাকুন। দোয়া করবেন। আল্লাহ হাফেজ।
সংশ্লিষ্ট জামায়াত-কর্মী বলেছেন:
এমতাবস্থায় আপনার সাথে কথা চালিয়ে যাওয়াটাকে আমিও অবশ্য অর্থহীন মনে করছি। কারণ, আমার কথাও আপনাকে বুঝাতে ব্যর্থ হলাম। আপনিও ভালো থাকুন এবং আপনার লেখালেখিতে আল্লাহ বারাকা দান করুন। ফি আমানিল্লাহ্।
ফেইসবুক থেকে নির্বাচিত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য
Md Azizul Haque: আমি জামায়াতের কোনো স্তরের সমর্থকও নই। তবে ইসলামী আন্দোলনকে মৌখিকভাবে স্বীকার করি এবং ভালোবাসি। তাই আপনাদের এ রকম বাড়াবাড়িতে আমরা চরম বিরক্তিবোধ করছি! দলে থাকা অবস্থায় যেখানে কোনো সংস্কার করতে পারেন নাই, তখন দলের বাইরে এসে কিছু করতে পারবেন বলে মনে হচ্ছে না। আপনি দল থেকে বেরিয়ে এসেছেন, এটাকে কেউ খারাপ বলেনি। কিন্তু এখনকার লেখাগুলো বাড়াবাড়ি বলে মনে হচ্ছে। জামায়াতের কর্মীরা আপনাদের এরকম কথাগুলোকে শুধু পাত্তা দিচ্ছে না– তা নয়, বরং এগুলোকে আওয়ামী-বিএনপির মতো অপপ্রচার বলে মনে করছে। আপনারা যদি কোনো নতুন দলই গঠন করবেন, তাহলে করেন। তবে অন্যদের বিপক্ষে কিছু বলে নয়, বরং নিজেদের ভালো দিকগুলো সবার সামনে তুলে ধরে করেন। জাজাকাল্লাহ।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: বিপক্ষে কিছুই না বলা এবং সব সময়ে বিপক্ষে বলা– এই দুই প্রান্তিকতার মাঝামাঝি হচ্ছে ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা বা বাস্তবতা। যেটা আমি মেনে চলি। গত ১০ বছরে আমার লেখার সংখ্যা ছয় শতাধিক। এরমধ্যে জামায়াত সংক্রান্ত লেখা ৫০টির মতো। এবার বুঝেন!
আর হ্যাঁ, আপাতত ক্ষুদ্র পরিসরে ও সীমিত সামর্থ্যের মধ্যে আমি তো একটা কিছু করছি, ‘সমাজ ও সংস্কৃতি অধ্যয়ন কেন্দ্র’ নামে। সেখানে গিয়ে আমাদের লেখাগুলো দেখতে পারেন। এটি একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সামাজিক আন্দোলন।
জামায়াত যেহেতু একটি রাজনৈতিক দল, তাই জামায়াতের বিকল্প কিছু করলে রাজনৈতিক দলই করতে হবে। মজিবুর রহমান মঞ্জুরা যা করার উদ্যোগ নিচ্ছেন। কিন্তু আমরা রাজনীতিতে আগ্রহী নই। জামায়াতে ইসলামী যে একটি ইসলামী আন্দোলন থেকে রাজনৈতিক দলে রূপান্তরিত হয়েছে, সেটি জামায়াতের বিরুদ্ধে আমার অন্যতম ক্ষোভ ও অভিযোগ এবং আমার জামায়াত ত্যাগের অন্যতম কারণ।
Mazharul Islam: আপনার ধৈর্য আছে বটে! এই প্রকার শ্যালো লেভেলের লোকের সাথে এত দীর্ঘ আলাপ করে সময় নষ্ট করলেন মাত্র।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আমি উনার মন্তব্য ডিলিট করে দিয়েছি– সাম্প্রতিক সময়ে তিনি এমন একটা অভিযোগ আমার উপরে তুলেছেন। এবং সেখানে তিনি আমাকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন যে ইনবক্সে তাঁর সাথে আমার এ নিয়ে দীর্ঘ আলাপ হয়েছে। আমি ভুলে গেছিলাম, কিন্তু তিনি বলার পর আমি আবার মেসেঞ্জারে গিয়ে সেগুলো পড়লাম। এরপর আমি এগুলো প্রকাশ করার জন্য উনার সম্মতি চাইলাম। তিনি সায় দেওয়াতে এখানে দিলাম। যাদের চোখ-কান খোলা আছে, তারা এখন বুঝুক যে উনারা কোন লেভেলের মানুষ।
Mohammed Hakim: খুব মন দিয়ে পড়েছি এবং উক্ত জামায়াত কর্মীর পয়েন্টগুলো বেশ জোরালো মনে হয়েছে। আপনার চেষ্টাও কম ছিল না। ?
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: প্রমোশন, পদোন্নতির সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদির জন্য আমি প্রশাসনের দালালি করছি। সে জন্য এগুলো বলছি ও লেখালেখি করছি। – এই ধরনের কথাগুলোকে কি আপনার কাছে ব্যক্তি-আক্রমণমূলক কথা বলে মনে হচ্ছে না? এগুলো কোনো সমস্যার ব্যাপার নয়, এমনটা ভাবছেন কি?
Mohammed Hakim: জনাব, কথোপকথনগুলো দুজন জামায়াত কর্মীর। যা বুঝলাম, একজন তখনও সক্রিয় এবং আপনি সক্রিয়তা থেকে সরে এসেছেন। আপনার বক্তব্য থেকেই বুঝা যাচ্ছে, আপনি শুধু সক্রিয় নয়, বেশ প্রভাবশালীও ছিলেন। সুতরাং, এমন প্রভাবশালী কেউ নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলে প্রাক্তন সমগোত্রীয়রা এমনটি ভাবতে পারেন। এমন বাস্তব উদাহরণও অবশ্য আছে, যদিও আপনার বিষয়ে আপনার ব্যাখ্যা গ্রহণ করা যায়।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আপনি শুধু বলেন, আমাকে এই ধরনের কথাগুলো বলাটা ব্যক্তি-আক্রমণমূলক হয়েছে কিনা। হ্যাঁ অথবা না।
অথবা বলেন, কাউকে ব্যক্তিগতভাবে না জানা সত্ত্বেও তার সম্বন্ধে এই ধরনের অভিযোগ আরোপ করাকে ব্যক্তি-আক্রমণ বলা হবে কিনা। ব্যক্তি-আক্রমণমূলক কথা বলা কি কথাবার্তার সাধারণ গ্রহণযোগ্য প্যাটার্ন? নাকি, গালি?
Nazim Uddin Erbakhan: এটা ব্যক্তি আক্রমণমূলক ধরে নিলাম। বাট এটা তো আপনাদের পার্সোনাল ইনবক্সে একান্ত আলাপচারিতা! হঠাৎ পাবলিক প্লেসে এটা তুলে ধরার তাৎপর্য বুঝতে পারলাম না। যদি একটু বুঝিয়ে দিতেন।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: এটি উনার সম্মতি এবং চাওয়ার ভিত্তিতে হয়েছে। প্রয়োজনে উনার সাথে যোগাযোগ করে আপনি এই বিষয়ে কনফার্ম হতে পারেন।
Nazim Uddin Erbakhan: সরি স্যার, কনফার্ম হওয়া লাগবে না।