কেউ যখন বলে, “I always try to focus on reason and rationality when it comes to religious beliefs.” তখন আমি এটিকে সমর্থন না করে পারি না। কেননা আমার বক্তব্য হলো:
যুক্তির বাইরে কিছু নাই।
হতে পারে না কিছু
কাণ্ডজ্ঞানের বিপরীত।
সত্যের কোনো বিকল্প নাই।
হতে পারে না ন্যায়ের
কিছুমাত্র অন্যথা।
বুদ্ধির অনুকূলে আমরা
নিঃসংকোচ নির্ভয় সর্বদা।
আমি বরং বলতে চাই শুধুমাত্র ধর্মীয় জ্ঞানের বিষয়ে কেন, বরঞ্চ সব বিষয়ই যুক্তি, বুদ্ধি ও জ্ঞানের আওতাভুক্ত। কিন্তু কেউ যখন কথাটা এভাবে বলেন, “To me, the concept, nature, characteristics and decisions of God have to always passed the test of reason.” তখন কথাটা খানিকটা ব্যাখ্যাসাপেক্ষ এবং অবশেষে অগ্রহণযোগ্য হয়ে দাঁড়ায়।
আমার cognitive centrality তত্ত্বের আলোকে বলতে হয়, আমাদের সব জ্ঞানই হচ্ছে আমাদের, তথা আমার, মানে আমার যুক্তি-বুদ্ধি ও বুঝজ্ঞান হতে উৎসরিত বা আমার যুক্তি, বুদ্ধি ও কাণ্ডজ্ঞান দ্বারা জাস্টিফায়েড। আমি যেটা বুঝি সেটা তো আমি বুঝি। যেটা আমি বুঝি না, সেটা যে আমি বুঝি না, অন্তত সেটুকু তো আমি বুঝি। তা না হলে, নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে ‘আমি বুঝি না’ কীভাবে বুঝি বা বলি? তার মানে, আমার সকল জ্ঞান, জানা হিসেবে সব জ্ঞান কিংবা অজানা হিসেবে যত জ্ঞান, এসব কিছু হচ্ছে দিনশেষে আমারই। ‘অজানা জ্ঞানের’ মতো করে আমার আছে নেতিবাচক জ্ঞান। ইতিবাচক জ্ঞানের মতো নেতিবাচক জ্ঞানও এক ধরনের জ্ঞান বটে। যেমন করে, একদৃষ্টিতে অতীত হচ্ছে বিশেষ ধরনের বর্তমান।
তাহলে দেখা যাচ্ছে, অন্টোলজিক্যালি, আমরা কেউ আল্টিমেইটলি আমাদের জ্ঞানপরিধির বাইরে যেতে পারি না। যেটা আমরা জানি না, সেটা আমাদের কাছে ‘অজানা’ হিসেবে (আইডেন্টিফিকেশন অর্থে) জানা হয়ে থাকে। এটি আমাদের জন্য এক প্রকার epistemic paradox কিংবা এক ধরনের জ্ঞানগত উভয় সংকট তৈরি করে। একে আমারা epistemic predicament কিংবা dilemmaও বলতে পারি।
এতক্ষণ পর্যন্ত আমরা মানবীয় যুক্তি-বুদ্ধির সক্ষমতা নিয়ে কথা বললাম। অবশ্য কথার ধাঁচে বিচক্ষণ পাঠক বুঝে গেছেন, যুক্তি, বুদ্ধি ও জ্ঞানের সক্ষমতার পাশাপাশি রয়েছে আমাদের অধিকতর জ্ঞানগত সীমাবদ্ধতা। প্রত্যেক সত্তা বা এন্টিটির যুক্তিবোধ, তার বুদ্ধির গুণ ও ব্যাপ্তিসহ সংশ্লিষ্ট বিয়িং বা সত্তার জ্ঞানগত সকল সক্ষমতার ভিত্তি হলো তার বিশেষ বৈশিষ্ট্যপূর্ণ শারীরিক অবয়ব ও ক্ষমতা। প্রত্যেক প্রাণীই স্বীয় আকার ও বৈশিষ্ট্যের সুবিধা ও অসুবিধা, দুটোই এনজয় করে। আমরা যতটুকু শুনি, সেটি আমাদের সক্ষমতা। যতটুকু শুনি না, সেটা আমাদের অক্ষমতা। শারীরিক সক্ষমতা ও অক্ষমতার সাথে জ্ঞানগত সক্ষমতা ও অক্ষমতার অপরিহার্য সম্পর্ক। এর প্রথমটি দ্বিতীয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করে। একটি অপরটির সাথে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার অনিবার্য সম্পর্কে আবদ্ধ।
আমরা কী জানি? কতটুকু জানি? এসব প্রশ্নের পূর্ব-অনুমান হচ্ছে আমরা কিছু না কিছু জানি। আমরা জানি যে, আমরা জানি। আমরা এটাও জানি যে, সঠিক পদ্ধতিতে চেষ্টার মাধ্যমে আমরা আমাদের জ্ঞানকে বাড়িয়ে নিতে পারি। ভুলকে শুদ্ধ করতে পারি। চেতনার মাধ্যমে চেতনার স্বরূপ অনুসন্ধানের মতো, ঈশ্বর বা প্রকৃতি প্রদত্ত মৌলিক জ্ঞানের ওপর দাঁড়িয়ে, ঈশ্বর বা প্রকৃতি প্রদত্ত জ্ঞানগত কাঠামো ও পদ্ধতির ভিত্তিতে আমরা যুক্তি, বুদ্ধি ও জ্ঞানের চর্চা করে থাকি। তারমানে হলো, প্রকৃতি বা ঈশ্বর নির্ধারণ করে দিয়েছে– আমরা কী জানবো, কতটুকু জানবো এবং কীভাবে জানবো।
যা ভাবে আছে, ভাষার মাধ্যমে সেটার বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে। ভাষার পিছনে ভাব থাকবেই। কিন্তু, ভাব সবসময় ও পূর্ণভাবে ভাষায় রূপ লাভ করে না। এক্সপ্রেশনের পিছনে করসপন্ডিং আইডিয়া থাকবেই। এর বিপরীতে, আইডিয়া থাকলেও সেটার করসপন্ডিং এক্সপ্রেশান নাও থাকতে পারে। তাই, ভাষায় না থাকলেও ভাব থাকতে পারে। যা বাস্তবে ঘটে তার পিছনে তত্ত্ব থাকবেই। তবে তত্ত্বে থাকলেই তা বাস্তবেও থাকবে, এমনটা নয়। এসব কথার মানে হলো, কোনো কিছুর মধ্যে তা-ই actualized হয়, যা সেটার মধ্যে অলরেডি potentially থাকে। যা পটেনশিয়ালি থাকে না, তা কখনো একচুয়েলাইজড হতে পারে না।
সুতরাং, আমরা যা জানি, তা জানা আমাদের জন্য সম্ভবপর বিধায় যথাযথভাবে সচেষ্ট হওয়া সাপেক্ষে আমরা তা জানতে পারি। যা জানা আমাদের জন্য beyond our potentiality বা capacity, তা আমরা কোনোক্রমেই জানতে পারি না। এমনকি আমাদের তথা যে কোনো সত্তারই ভাবনা-চিন্তা ও কল্পনারও একটা সীমা, চৌহদ্দি বা প্যাটার্ন আছে। সবকিছু আমরা জানতে পারি না। কেননা, আমরা আদৌ জানি না, এই ‘সবকিছু’ মানে আসলে কী? মানুষের মতো সসীম কোনো সত্তার ‘সবকিছু’ তার জন্যই শুধু সবকিছু। সত্যিকারের সবকিছু নয়। সত্যিকারের সবকিছু আছে সবটুকু নিয়ে। কোনো সসীম সত্তা তো সবটুকু বা absolute হতে পারে না। তাই, সে সবটুকু জানতেও পারে না।
ধর্মীয় অর্থে ঈশ্বর এবং বস্তুবাদী অর্থে প্রকৃতি – যেভাবেই বলা হোক না কেন, এই ‘উপরিসত্তা’, মানে ঈশ্বর বা প্রকৃতি আমাদেরকে যে জ্ঞানগত সক্ষমতা দিয়েছে, তা দিয়ে আমরা এতটুকু নিশ্চিত বুঝতে পারি– আমরা সসীম। তাই আমাদের জ্ঞানও সসীম। আমাদের জ্ঞানগত সক্ষমতার এটি অনন্যতা যে, আমরা বুঝতে পারি, ‘সবটুকু’ বা ‘সবকিছু’ বুঝা আমাদের ক্যাপাসিটির বাইরে। আমাদের ক্যাপাসিটির বাইরে যে আরো আরো অজানা অনেক কিছু রয়ে গেছে, সেই আরো আরো অনেক কিছু যে শেষ পর্যন্ত অশেষ, তা আমরা সহজেই বুঝতে পারি। মানবীয় জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে মানুষের এই যে উপলব্ধি, এটি অনন্য। আমাদের বুদ্ধি দিয়ে আমরা আমাদের বুদ্ধির সীমাবদ্ধতা বুঝতে পারি। তো, বুদ্ধির সক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন থাকা ও একে কাজে লাগানোর পাশাপাশি বুদ্ধির সীমাবদ্ধতা নিয়ে সচেতন থাকা ও তা স্বীকার করাও জরুরি। এটি বরং আমাদের নৈতিকতারই দাবি।
“মানুষ একদিন বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে সবকিছু জানতে পারবে, সব explanatory gap-কে অতিক্রম করতে পারবে” – এটি যুক্তিবিরোধী বা logically inconsistent কথা। এটি নাস্তিক, বস্তুবাদী ও বিজ্ঞানপূজারী বিজ্ঞানবাদীদের কথা। সসীম কোনো সত্তা যে অসীমকে কখনোই জানতে পারবে না, তা বলাই বাহুল্য। আমার constant gap theory অনুসারে মানুষের জানা যত বাড়বে, সমহারে দিগন্ত রেখার পশ্চাদপসারণের মতো মানুষের অজানাও তত বাড়তে থাকবে। কখনোই মানুষ ‘সবকিছু’ জানতে পারবে না। এমনকি, এই গ্যাপটা কখনো কমেও আসবে না। কনস্ট্যান্টই থেকে যাবে। জানার সাথে পাল্লা দিয়ে অজানা নতুন নতুন জগত ও ক্ষেত্র বের হয়ে পড়বে।
সবচেয়ে বড় কথা হলো, ‘সবকিছু’ ‘যথাযথভাবে’ জানার এই দাবি একটা open-ended class-কে ইনভলভ করে। অথচ, আমরা কেবল close-ended শ্রেণীভুক্ত কোনো কিছু জানতে পারি। একটা এরিয়া ঠিক করে আমরা সেটার আওতাভুক্ত কোনো কিছু জানতে পারি। জানার চেষ্টা করতে পারি। এটি প্লজিবল। যেমন– এই রুমের মধ্যে কী কী আছে তা জানা সম্ভবপর। কিন্তু, এ রুমের মধ্যে কী কী নাই, তা জানা অসম্ভব। কেননা, এ ধরনের অনির্দিষ্ট অনুসন্ধান শিফটিং গোল পোস্ট সম্পন্ন মাঠে খেলার মতো করে আমাদেরকে open-ended class-এ ফেলে দেয়।
অতএব, বুঝতেই পারছেন, ঈশ্বরের সিদ্ধান্ত, কার্যপ্রণালী, প্রকৃতি ও ধারণাকে মানবীয় যুক্তি, বুদ্ধি ও জ্ঞানের মানদণ্ডে যাচাই করার ব্যাপারটা, মানুষের যুক্তি, বুদ্ধি ও জ্ঞানের যে দাবি, সেটার সাথে সাংঘর্ষিক। এ ধরনের দাবি নিতান্তই অতিশয়োক্তি ও স্ববিরোধমূলক, অগ্রহণযোগ্য এবং অযৌক্তিক কথাবার্তা। এই পর্যায়ে এসে আমার ঐশী অজ্ঞেয়বাদ (divine agnosticism) তত্ত্বকে মানতে হবে।
অজ্ঞেয়বাদ হচ্ছে যা আমরা জানতে পারি না, তাকে অজানা হিসাবে জানা তথা মেনে নেয়া। এ নিয়ে আর বাড়াবাড়ি না করা। সেটাকে জানার পণ্ডশ্রম না করা। এ হিসাবে ঐশী অজ্ঞেয়বাদ তত্ত্বানুসারে, ঐশী বিষয়গুলো স্বরূপত ওপেন-এন্ডেড ক্লাস তথা endlessness-কে রিকোয়্যার করে। তাই, আল্লাহকে আমরা যতটুকু যা জানি, তা তিনি যে আছেন, সেটুকু জানার ব্যাপার শুধুমাত্র। তিনি আমাদেরকে যা বলেছেন, তার বাইরে আমরা ‘সঠিকভাবে’ কোনো কিছু জানতে পারি না।
কেন তিনি জগত সৃষ্টি করেছেন, এভাবেই কেন করেছেন, অন্যভাবে করলেন না কেন, কেন সবাইকে সবকিছু দিলেন না, তিনি একা থাকলে কী অসুবিধা হতো, ইত্যাদি বিষয়গুলো আল্লাহর সত্তা বা জাতের সাথে সম্পর্কিত বিষয়। সসীম সত্তা হিসাবে কোন্ যুক্তির বলে সেগুলো আমরা ‘ঠিক মতো’ জানার দাবি করছি? অংক ও যুক্তির নিয়ম বলে, সসীম ও অসীম সম্পর্কের দিক থেকে এ ধরনের জ্ঞানগত সমকক্ষতার দাবি ভুল। এটি অযৌক্তিক। স্ববিরোধী। নিজেকে সসীম হিসাবে স্বীকার করার পরে একমাত্র যুক্তিসংগত কথা হলো নিজের কল্যাণের জন্য প্রাপ্ত সুযোগ ও সামর্থের সদ্ব্যবহার করা এবং শেষ পর্যন্ত ‘উপযুক্ত অসীমত্বের’ কাছে সারেন্ডার করা। সসীম কখনো অসীমের সাথে সম্পর্কিত কোনো কিছুকে ‘স্বাধীনভাবে’ জানতে তথা যাচাই করতে পারে না। পারার কথাও নয়।
একজন মুসলিম হিসাবে আমি সে কাজটাই করছি। আল্লাহর মহান সত্তার সমীপে আত্মসমর্পণ করেছি। সসীম ব্যক্তিমানুষ হিসাবে কোনো না কোনো সুপ্রিম অথরিটির কাছে আমাদের আত্মসমর্পণ অনিবার্য। তো, সারেন্ডার করার জন্য কারো কাছে ‘উপযুক্ত অথরিটি’ হলো প্রকৃতি নামক এক অনির্দিষ্ট ও কল্পিত প্রপঞ্চ বা ফেনোমেনা। আমার মতে, কারো কাছে আত্মসমর্পণ করার জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ হচ্ছেন প্রকৃতির স্রষ্টা হিসাবে আল্লাহ। to me, God is the embodiment of laws of nature. He is the embodiment of the rules of physics. He is the embodiment of the principles of philosophy, logic and rationality. He is embodiment in the sense of creating and generating all these things, out of nothing. তাই, আমার কাছে ঈশ্বর হচ্ছেন অসীম বা অসীমত্বের, বিমূর্ত হিসেবে একক এক মূর্তমান রূপ। from world to God, খণ্ডিতভাবে আমরা কিছু জানলেও অনেক অনেকখানি অজ্ঞেয় হিসাবে তিনি জ্ঞেয় বা জ্ঞাত। তাঁর দিক থেকে তিনি কেমন, তা আমি জানি না। কখনোই যে জানবো না, তাও নিশ্চিত।
তাই, কখনোই আমি একথা বলার দুঃসাহস করবো না, “To me, the concept, nature, characteristics and decisions of God have to always passed the test of reason.” সসীম সত্তার সীমাবদ্ধতা নিয়ে অসীম সত্তার কর্মকাণ্ডকে যাচাই করার দম্ভ হলো ইসলামের পরিভাষায় শির্ক। এটি জ্ঞানগত শির্ক বা ঐশী অংশীদারিত্ব। যুক্তির নিয়মানুসারেই অসীমকে সসীমের সাথে তুলনা করা যায় না। সসীমের মানদণ্ডে যাচাই করা যায় না। এটি পটেনশিয়াল অসম্ভবকে সম্ভব করতে চাওয়ার মতো অন্যায্য ও অসম্ভব দুঃসাহস। অবিশ্বাসীরা যা করে। কিছু কিছু অবুঝ বিশ্বাসীও দেখছি এমন ভুল করছেন। দুঃখজনক।
ঈশ্বর আছে কিনা, সেটা ভিন্ন প্রশ্ন। ঈশ্বর যদি থেকে থাকেন, তাহলে তাঁর কার্যকলাপকে চ্যালেঞ্জ করতে না যাওয়া, যেভাবে আছে বা চলছে তা মেনে নেয়াই যে যুক্তি-বুদ্ধির দাবি, তা যে কোনো নাস্তিকও মানবেন, যদি তিনি যুক্তিবিদ্যার নিয়ম মানেন। এ রকম পরম, অসীম, একক ব্যক্তিসত্তা হিসাবে ঈশ্বর আছেন কিনা তা নিয়ে তর্ককে পাশে রেখে যদি আমরা ধরে নেই যে, ঈশ্বর আছেন, তাহলে তাঁর সাথে আমাদের একমাত্র লজিক্যাল রিলেশন হতে পারে মাস্টার-স্লেভ রিলেশন। অসীম-সসীম সম্পর্কের অন্টোলজি বা লজিক অন্তত তা-ই বলে। এ ধরনের সম্ভাব্য একচ্ছত্র কর্তৃপক্ষ ও অধীনস্ত সম্পর্কের ক্ষেত্রে অধীনস্তের শোভা পায় না, কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা। এ ধরনের একচ্ছত্র কর্তৃপক্ষের কোনো সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা জানতে চাওয়া বা কোনো কাজের ভালোমন্দ যাচাই করতে যাওয়াটা নিছকই বোকামী ও বিদ্রোহমূলক কাজ।
বিশ্বাসীদের তকদীর নিয়ে ঘাটাঘাটি করার জন্য কেন নিষেধ করা হয়েছে, তা এই ব্যাখ্যার আলোকে না বুঝার কথা নয়।
ফেইসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য
শামীম সৈকত: উইক্লিডের প্রথম ল হচ্ছে, পূর্ণতা অংশের চেয়ে বড়।
আমি যদি আমাকে জানতে চাই বা বুঝতে চাই তাহলে ‘আমার’ থেকে ‘আমার’ দূরত্বটা কতটুকু, সেটা ভাবার বিষয়। আমরা এই জগতের একটা অংশ মাত্র। তাহলে অংশ হয়ে কীভাবে পূর্ণতাকে বিচার করি?
স্যার, আপনার লেখাটা এতো বেশি ভালো লাগলো। লিখে প্রকাশ করছি না। জাস্ট ভালোবাসা জানবেন।
আক্কাস আলী: Sir, thank you for your detailed response to my claim that Everything about Allah has to pass the test of reason. If I’m not wrong, your main argument was that Allah is an infinite being; therefore, we should stop thinking, reasoning and questioning him about everything in Quran.
I really don’t know where to start on this topic. But to be honest, these arguments enrage me. I have seen most of the blind Muslims put efforts in defining Allah as dualist, sadist, anti-reason, anti-thinkers, magician and so on. Unfortunately, your claim that Allah will consider all non-Muslims sinner/bad ‘by default’ was one of those efforts. I think defining Allah by such negative characteristics is an insult to him. You can also call it a shirk and blasphemy to some extent. Allah is not a binary thinker that he will judge us on a predetermined MCQ question as you have claimed.
And, I also ‘strongly disagree’ with your definition of Shirk. Simple Questions like ‘how will someone become a Muslim without judging the decisions of Allah and definition of Allah in Quran?’ makes your definition of shirk completely invalid and illogical. Funny thing is– Wahabi/Salafis who say that Allah has hands, legs, literal throne and others weird things, will call you a Mushrik for sure. To them, Allah is more like a heavenly father, who has body parts, his আরশ shakes when people sin, and he travels around heavens during special occasions of Islam. hahaha
Moreover, I am not judging the physical attributes of God. To do that, we have to use ‘logic’, not reason. We can apply the ‘divine agnosticism’ concept where we need scientific ‘logic’, because we are finite being, and we have limitations. I completely agree with you there. But we should judge everything else base on ‘reason’.
Finally, we can claim that Allah is infinite, although we don’t really understand what infinity is outside of mathematics. That’s a different discussion. But, The argument– Allah knows everything, therefore whatever is written in Quran like– killing and befriending non-believers, beating women, cursing Jews, and so called superstitious stories in Quran are all above reason and critical thinking of humans, – is a recipe of a disaster. Only through reasoning and critical thinking we can understand that not everything in Quran is for all humans of all times. And, also there are no superstitious stories and miracles in Quran that goes against reason and natural law. Now, if you block humans from thinking, you will have ISIS, Hijbut Tahrir and other terrorists.
Anyway, I am still waiting for a better explanation of your claim that Allah will consider ALL non-believers bad/sinful, and ignore their journey, struggle, research, and socially good activities on this world.
Mohammad Mozammel Hoque: ইসলামের দৃষ্টিতে ঈমানের বিষয় হিসেবে আল্লাহ তায়ালা এবং তাঁর নাযিলকৃত কিতাব, এ দুটো আলাদা বিষয়, ঈমানের ছয়টি বিষয়ের অন্যতম। এরমধ্যে আল্লাহ তায়ালার উপর ঈমান এক নম্বরে এবং কিতাবের উপর ঈমান তিন নম্বরে। তাই আল্লাহর সত্তা সম্পর্কিত আলোচনা হতে তাঁর কিতাব সম্পর্কিত আলোচনাকে পৃথকভাবে আলোচনা করতে হবে।
আল্লাহকে আমরা আমাদের দিক থেকে যেভাবে জানি, সেটা হলো আল্লাহ আমাদেরকে যেভাবে জানার সুযোগ করে দিয়েছেন এবং যেভাবে তাঁর সম্পর্কে আমাদের কাছে বলেছেন। এর বাইরে আল্লাহ সম্পর্কে আমাদের ‘সত্যিকারের’ কোনো জ্ঞান অসম্ভব। সেটার যুক্তি আমি আমার আলোচনাতে দিয়েছি।
আর কোরআন নিজেই নিজের ব্যাপারে বলে, এর কিছু অংশ হচ্ছে দ্ব্যর্থহীন ও সুস্পষ্ট অর্থবোধক। সেগুলো হচ্ছে এই কিতাবের মূল অংশ। আর কিছু অংশ হচ্ছে দ্ব্যর্থবোধক। সেগুলোর চূড়ান্ত অর্থ আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না। যারা জ্ঞানী ব্যক্তি তারা সেগুলো সম্পর্কে মনে করেন– এগুলো মহান আল্লাহ তায়ালা নাযিল করেছেন। এই ধরনের রূপক অর্থবোধক আয়াতসমূহের প্রকৃত তাৎপর্য বের করার জন্য তারা খুব সিরিয়াসলি এনগেইজ হন না। সূরা আলে ইমরানের শুরুর দিকে কথাগুলো আছে।
আমার মনে হয় ইসলামের মৌলিক আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের দিক থেকে আপনার সাথে আমার কিছু মতদ্বৈততা বিদ্যমান। তাই এসব বিষয়ে আর না আগানোই ভালো মনে করি।
সর্বোপরি আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন।
Mohammad Mozammel Hoque: আক্কাস আলী, সালাম নিবেন। একটা কথা আপনাকে যদি আমি বুঝাতে পারি তাহলে আমি মনে করবো আপনাকে আমি যা কিছু বলার ছিল তার সব বলতে পেরেছি।
সেটা হলো, পার্টিকুলার এন্টিটি হিসেবে আমরা অ্যাবসলিউট এন্টিটি তথা সৃষ্টি হিসেবে আমরা স্রষ্টাকে ততটুকু জানতে পারি যতুটুকু আমাদের সীমাবদ্ধ ক্ষমতা অনুমোদন করে। যিনি সুপেরিয়র বা অ্যাবসলিউট তিনি ইনফেরিয়র বা পার্টিকুলারকে সম্পূর্ণভাবে জানবেন, এটিই তো স্বাভাবিক। আর যিনি পার্টিকুলার বা ইনফেরিয়র তিনি সুপেরিয়র বা অ্যাবসলিউট অথরিটি যে আছে, শুধু সেটুকুই জানতে পারবেন। অ্যাবসলিউট অথরিটিকে সম্পূর্ণভাবে জানতে পারেন না।
সেজন্য আল্লাহ তায়ালাকে নিজের যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে যাচাই করতে যাওয়াটা যুক্তিবিরোধী ও নির্বুদ্ধিতা।
এই কথার আলোকে যদি আমরা বুঝতে চেষ্টা করি তাহলে বুঝবো– আমাদের যুক্তি-বুদ্ধির দৃষ্টিতে কোনো বিষয়কে অযৌক্তিক কিংবা বুদ্ধিবিরোধী বলে মনে করা সত্ত্বেও আমরা যদি নিশ্চিতভাবে জানি যে– এটা সেই হায়ার বা সুপ্রিম অথরিটি থেকেই এসেছে, তাহলে যুক্তি-বুদ্ধির দাবি হচ্ছে, সেই হায়ার বা সুপ্রিম অথরিটির দাবিকে মেনে নিয়ে আমাদের আপাত প্রতীয়মান কন্ট্রাডিক্টরি জ্ঞানগত অবস্থানকে ক্যানসেল করে দেওয়া।
আপনি হয়তো জানেন, জ্ঞানবিদ্যার দৃষ্টিতে টেস্টিমনি এবং অথরিটি এই দুটি হচ্ছে জ্ঞানের অন্যতম উৎস। যেমন করে অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধি হচ্ছে জ্ঞানের উৎস। বরং অভিজ্ঞতা ও বুদ্ধি, এই দুটি প্রধান উৎস, টেস্টিমনি এবং অথরিটি ছাড়া চলতে পারে না। যাহোক, সেগুলো ফিলোসফিক্যাল ডিসকাশন। সে নিয়ে আরেকদিন কথা হতে পারে।