খালকূলে বাড়ি। আমাদের বাড়ির পূর্ব দিকে। শতায়ু মফজল চাচা। জীবনে মাত্র দু’বার চিকিৎসা নিয়েছেন। তাও একবার শুধু প্যারাসিটামল। আমরা ছোটবেলা হতেই দেখেছি, উনারা আমাদের কিছু জমি চাষ করেন। উনার এক ছেলে এখনো আমাদেরকে কিছু বাৎসরিক ধান দেন। অর্ধশত বছর উনারা জমিগুলোতে চাষাবাদ করেছেন। অথচ, মালিকানা আমাদের। কেমন অদ্ভূত ব্যাপার!
আমি ছাড়া আমাদের অন্য ভাইবোনেরা জমিগুলো চিনেও না। মাঝে মাঝে ভাবি, এহেন ভূমি বণ্টননীতি ও মালিকানা ব্যবস্থা কতটুকু যৌক্তিক, কতটুকু ন্যায্য। কিংবা, আদৌ কি এটি ইসলামিক? আমি শরীয়াহ বিশেষজ্ঞ নই। কিন্তু ধান-চাল নিতে গেলে এক ধরনের কুণ্ঠা, বলতে পারেন গোপন-অপরাধবোধে ভুগি…!
আল্লাহ উনাকে এবং উনার মতো সত্যিকারের এসব মাটির মানুষকে রহম করুন…! উনাকে আরও হায়াত দারাজ করুন।
ফেসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য
Abdus Salam Azadi: আমার সাথে এতো মিল! আলহামদুলিল্লাহ।
Mohammad Mozammel Hoque: সালাম আজাদী ভাই, যুগ যুগ ধরে জমির সাথে কোনো সম্পর্ক নাই। অথচ মালিক। এটি কেমন কথা? নিজে চাষ না করে কাউকে দিয়ে চাষ করানোর প্রচলিত পদ্ধতিতে মালিকের সাথে চাষীর একটা সম্পর্ক থাকে। এখানে মালিক-চাষী সম্পর্কটা আছে অথচ মূল যে বিষয় সেই জমির সাথে মালিক পক্ষের কোনো সম্পর্ক নাই। এমনকি মালিকেরা জমির অবস্থানও জানে না। কীভাবে তারা মালিক থাকে? এটি কি ন্যায্যতার নীতির বরখেলাফ নয়?
Abdus Salam Azadi: হা হা। ভাইজান, আব্বুকে বলে এসেছি আমার ভাগেরটা ভাইবোনদের দিয়ে দাও। ফাও নাম রেখে লাভ কী?
Mohammad Mozammel Hoque: আপনি না হয় নিজের জন্য এক রকম দায়মোচনের ব্যবস্থা করলেন। অথচ বাংলাদেশে এটি অন্যতম সামাজিক সমস্যা। যার শেকড় ধর্ম, অর্থনীতি ও নীতিবোধের গভীরে প্রোথিত।
Abdus Salam Azadi: ঠিক বলেছেন।
M.m. Hoque:
শব্দটি তাঁর বক্ষে বিঁধিল
ঠিক বর্ষার মতো,
এই জমিটুকু আমার হইলে
কার কিবা ক্ষতি হতো ।
কাঁতর কণ্ঠে বঁধুটি সুধালো:
আচ্ছা ফুলীর বাপ,
আমাগো একটু জমিন অবে না?
জমিন চাওয়া কি পাপ ?
খোদার জমিন ধনীর দখলে,
গেছে আইনের জোরে,
আমাগো জমিন অইব যেদিন
আইনের চাকা ঘুরে ।
অসহায় বঁধু জানে না নিয়ম
কানুন কাহারে বলে-;
স্বামীর কথায় আঁখি দুটি তাঁর
সূর্যের মতো জ্বলে ।
বলদে ঘোড়ায় গাড়ির চাক্কা,
নারীর চাক্কা স্বামী-;
আইনের চাক্কা আমারে দেখাও
সে-চাক্কা ঘুরামু আমি ।
[ক্ষেত মজুরের কাব্য/নির্মলেন্দু গুণ]
Mohammad Mozammel Hoque: যে জমিতে মালিক পক্ষ কোনোদিন দাঁড়ায় নাই। কীভাবে ফসল ফলে তা জানে না। কতটুকু ফসল হলো, তাও জানে না। মালিক পক্ষের পক্ষ হতে নির্ধারিত অর্থাৎ দিতেই হবে এমন পরিমাণ ফসলের কোনো প্রাপ্যতার দাবীও নাই। তার মানে, প্রচলিত ধরনে কোনো ‘শোষণ’ ‘জুলুম’ও নাই। কতো বছর নিজেরা চাষ বা ব্যবহার না করা সত্বেও মালিকানা বহাল থাকবে? এ ধরনের ‘মালিক থাকা’ জমি সম্ভাব্য কোনো ‘ইসলামী সরকার’ কি চাষী বা চাষীদের কাছে দিয়ে দিতে পারে? সবচেয়ে বড় কথা, জমির মালিক আল্লাহ। তাতো বুঝা গেলো। এরপরে এর মালিক কি সরকার? নাকি, ভূমি মালিক? নাকি, প্রকৃত ভূমি চাষী?
Shaheed Ullah: According to practice of 2nd khalif Umar (ra), 10 years uncultivated land to be distributed to cultivator. So, as you have not cultivated the land for 50 years; so this land owned to Mofjol chacha. On the other hand, as the land belongs to you family and Mofjol chacha alloed to cultivate on payment of paddy/ product and nobody make a question on ownership and distribution for a long time, so it is unanimously owned to your family and Mofjol chacha is cultivator. You have a substitute option to hand over the land to him legally by you on humanitarian ground. You will be rewarded hereafter. ameen
Mohammad Mozammel Hoque: আপনার কথাটা পরিস্কার হয় নাই। ভূমিগুলো uncultivated নয়।
Shaheed Ullah: I did not said it uncultivated. I have bring the example as instance. Actually Mofjol chacha is a farmer, farming on your land for long time without any question. He know it is owned by your family and you know he is a farmer/sharecropper. So, as per mutual understanding it is legal. But, if you feel that; as he is farming for long time and you know nothing about farming of the land and also you are not dependent on it, so you may donate the same to Mofjol chacha. Which will benefitted him and you will be rewarded by Allah subhanu wa ta’ala. This is what I like to say.
Mohammad Mozammel Hoque: একটা হলো আইনগত ব্যাপার। আর একটা হলো নৈতিক ব্যাপার। সাদাকাহ হলো নৈতিক ব্যাপার। আমি আইনগত দিক থেকে বিষয়টা জানতে চাচ্ছি।
Shaheed Ullah: there is no legal system in this issue.
Mohammad Mozammel Hoque: আইন এবং নৈতিকতার এখানেই দ্বন্দ্ব। দিনশেষে ইসলাম নৈতিকতাকেই অগ্রাধিকার দেয়। বস্তুত যে কোনো আইনগত ব্যবস্থারই কোনো না কোনো ধরনের নৈতিক ভিত্তি থাকে।
Jalal Uddin: আমাদের ভাইবোনদের কিছু পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া জমি আছে। যার কিছু পরিমাণ ভিটা ও কিছু পতিত জমি। ভিটা জমিতে আমার ভাইয়েরা যারা গ্রামে বাস করে তারা বাড়ি দালান তৈরি করে বাস করে। আমার বাবাও জমিগুলি আামার দাদা থেকে পৈত্রিক সূত্রেই পেয়েছেন। কিছু উনি আমাদের ৪ ভাই ও তিন বোনসহ সংসারের প্রয়োজনে বিক্রিও করেছেন। দাদার জমি আমার বাবা ও চাচাদের মধ্যে ইসলামিক বিধিবিধান মতো বিলিবন্টন করার পরও জমির অবস্থান এবং কে রাস্তার ধারে, কে পিছনে, এ নিয়ে আমার ভাইবোনদের সাথে অন্যান্য চাচাত ভাইদের বিরোধ চলছেই। যেটার সমাধান কবে নাগাদ হবে আমরা কেউ জানি না। যদিও আমার অন্যান্য চাচাত ভাইবোনরা বেশ শিক্ষিত কিন্তু জমিজমা নিয়ে বেশ উচ্চকণ্ঠ। ভাবখানা এই রূপ যে তাদের সাথে বিলিবন্টন করার সময় অন্যায় করা হয়েছে। মাঝে মাঝে ভাবি আমি বা আমার বাবা তো এ জমিজমা ক্রয় বা অর্জন করেন নাই। আমি তাদের ঘরে জন্মেছি বলেই মালিকানার দাবিদার ও পেয়েছি। যেটা আমার নিজের কর্ম দিয়ে অর্জন করি নাই। তা নিয়ে এত বিরোধ কেন? বিষয়টি এই দৃষ্টিতে দেখলে সহজেই সমাধান করা যায়। কিন্তু গ্রামে জমিজমার বিরোধ সহজে সমাধান হওয়ার নয়।
আল্লাহ আমাদের সমাধান করার তৌফিক দিক।
Mazharul Islam: শুনেছি, একসময় এদেশের সকল জমিই ছিল ‘খাস-জমি’। যার যতটা ইচ্ছা নিজের দখলে নিতে পারত। সেকালে যারা ইচ্ছামত জমি দখলে নিয়েছে এবং যারা নেয়নি উভয়ের তো সমান অধিকার ছিল। তাহলে দখলকারীরা কিভাবে ‘বৈধ মালিক’ বনে গেল? গোড়ায় গলদ আছে।
Mohammad Mozammel Hoque: আমি যে সমস্যার কথা প্রসংগক্রমে বললাম তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের জমিগুলো অনাবাদী নয়। জমি অনাবাদী রাখা হলে তা বাজেয়াপ্ত করে চাষীদের মধ্যে বণ্টন করা যেতো। এগুলোর কাগুজে মালিকানা আছে। যদি তা না থাকতো তাহলে তা খাস হিসাবে বণ্টন করা যেতো।
আমার কথা হলো, জমি মালিকানায় নেয়ার কোনো বৈধ উপায়ে কেউ কখনো কোনো জমির মালিক হলেই কি সেটি যুগ যুগ ধরে তার মালিকানাতেই থেকে যাবে? যদিও সেই মালিক জমিটার কোন ধার ধারেন না।
একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ কতটুকু পরিমাণ জমির মালিক হতে পারবে, তার কি কোনো লোকাল সিলিং থাকতে পারে? এ ধরনের পরিমাণ নির্ধারণ কি শরীয়াহ বিরোধী?
ভূমিহীন ও ভূস্বামীদের মধ্যে সমন্বয়করণের ব্যাপারে শরীয়াহর নির্দেশ ও নির্দেশনা কী? অর্থাৎ সরকার যদি ভূস্বামীদের কাছ হতে কিছু জমি নিয়ে ভূমিহীনদের মধ্যে বণ্টন করে দেয়, তাহলে কি তা ইসলামসম্মত হবে?
এ প্রসংগে “হালাল হলেই কি ইসলামিক হবে? ইসলামী নৈতিক চেতনার গুরুত্ব” নিবন্ধটি যদি একটু খেয়াল করেন ও মতামত দেন…
Tofail Ahmed: A scholarly article, it helps to understand the inner/core meaning of Islam.
Mohammad Mozammel Hoque: স্যার, আপনাদের মতো জাতীয় ব্যক্তিত্ব ও সর্বজন শ্রদ্ধেয় সুধীজনের পক্ষ থেকে পাওয়া মূল্যবান সমর্থন ও দোয়া আমাদের পাথেয়। আমি চাচ্ছি সমাজে সমন্বয়ধর্মী এক নতুন ধারা তৈরি করতে। ইসলাম এর গাইডিং আইডিওলজি।
Farid A Reza: I have read Banna’s article in English longtime ago. It makes sense what he said.