অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে “knowledge and reality” শিরোনামে একটা কোর্স আছে। সেটার ‘নলেজ’ অংশ এ বছরের মতো পড়ানো শেষ হলো গত সপ্তাহে। প্রসঙ্গক্রমে লাস্ট ক্লাসে ফিলোসফি নিয়ে স্টুডেন্টদেরকে তিনটা ‘হেদায়েতের’ কথা বললাম। কথাগুলো আমার নিজের কাছেই বেশ চমৎকার মনে হয়েছে। দেখেন, আপনার কাছে কেমন মনে হয়:
১। Never take anything for granted.
২। Accept the truth.
৩। Never close the door.
প্রথম কথাটার মানে হল, যাচাই করা ছাড়া কোন কিছুকে সত্য বা গেয়ান হিসেবে গ্রহণ না করা। অর্থাৎ যে কোন কিছুকে প্রথমত নিছক সম্ভাবনা হিসাবে গ্রহণ করা। অন্যকথায়, সবকিছুকে প্রাথমিকভাবে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা। যাচাইয়ের উর্ধ্বে কোন কিছু নয়, সব সময় এটি মনে রাখা। বিশেষ করে, কোন উত্তর বা প্রশ্নের অন্তরালে যে ‘গৃহীত সত্য’ থাকে সেটাকে find out করে যাচাইয়ের আওতায় নিয়ে আসা। এই কাজে নিজের বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতার ওপর আস্থা রাখা। এটি epistemic capacity’র সাথে রিলেটেড।
দ্বিতীয় কথাটার মানে হল, সন্দেহকে পরিণতি হিসেবে গ্রহণ না করে পদ্ধতি হিসেবে অনুসরণ করা। সাধ্য মোতাবেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই এর পরে যেটা সত্য হিসেবে ভেসে উঠবে সেটাকে নির্দ্বিধায় গ্রহণ করে নেয়া। এটি epistemic honesty’র সাথে রিলেটেড। সমালোচনার জন্য সমালোচনা নয়। বরং সত্যকে বের করে নিয়ে আসার জন্য সমালোচনা। জ্ঞান নির্মাণের জন্য দরকার সমালোচনা। যাচাই-বাছাইয়ের অংশ হিসাবে প্রয়োজনীয় সন্দেহ ও সমালোচনা করা বিলকুল জায়েয। বরং, জরুরি।
কিছু লোককে দেখা যায় যারা যে কোনো কিছুর ক্ষেত্রে বিরতিহীনভাবে প্রশ্ন উত্থাপন করতে থাকে। convinced হওয়ার মত পর্যাপ্ত এভিডেন্স বা যুক্তি থাকা সত্বেও কোনো কিছুকে তারা সত্য হিসেবে গ্রহণ করতে চায় না। উল্টো, নেতিবাচক মন-মানসিকতার কারণে সন্দেহবাতিকগ্রস্ততাকে তারা বুদ্ধিজীবী হয়ে উঠার লক্ষণ বলে মনে করে। নিজেদের অন্তর্গত বুদ্ধিশূণ্যতাকে ঢাকার জন্য তারা কথায় কথায় রেফারেন্সের ফুলঝুড়ি ছড়ায়।
অথচ, আসল কথা হলো, সারা দিন আপনি যেদিকে যান আর যা-ই করেন না কেন, দিনশেষে আপনাকে কোনো একটা কিছু নিয়েই তবে ফিরতে হবে। কোন খাতে যা ফিট হয় না তা বিবিধ খাতের বিষয়, আমরা জানি। এবার আপনি নিজেই ঠিক করেন, আপনি বেটার কোনো খাতে তথা পক্ষে নিজেকে অন্তর্ভূক্ত করবেন, নাকি ফাঁপা বুদ্ধিজীবীতার worthless বিবিধ খাতে পড়ে থাকবেন। মনে রাখবেন, যে অনুসন্ধানের শেষে নেই কোনো সুনির্দিষ্ট প্রাপ্তি, তা অর্থহীন, ব্যর্থ ও মারাত্মক ক্ষতিকর (fatal) একটা এনগেইজমেন্ট। যার জীবনে কোনো অর্জিত সত্য নাই তার জীবনে ব্যর্থতাই একমাত্র অর্জন, বাহ্যিকভাবে ওই লোকের ক্যারিয়ার যতই চোখ ধাঁধাঁনো হোক না কেন।
হ্যাঁ, যেই জ্ঞানই হোক না কেন, নিজের মতো করে জ্ঞানকে অর্জন করতে হয়। জ্ঞান একইসাথে ব্যক্তিনির্ভর ও বস্তুনিষ্ঠ ফেনোমেনা। knowledge is a normative phenomenon। Given or taken knowledge is not knowledge at all, even though that are true। So, knowledge can’t be, what I say, flexi-loaded। It must be achieved or acquired।
যাহোক, তৃতীয় কথাটার মানে হল, সবসময়ে যাচাই ও জানার প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা। জ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তি চর্চার ক্ষেত্রে মনের দরজা সব সময় খোলা রাখা। কেউ নতুন কিছু বলে কিনা বা অন্যরা সংশ্লিষ্ট বিষয়টাকে কিভাবে দেখে, আপনার অবস্থানের পক্ষে নতুন কোনো যুক্তি আছে কিনা, আপনার বিপক্ষে আরো কী কী যুক্তি আছে, এগুলো জানার জন্য, এমনকি যে বিষয়ে আপনি ইতোমধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেছেন এমন বিষয়েও, যে কারো সাথে খোলামেলা আলাপ-আলোচনা করার মত মন-মানসিকতা পোষণ করা।
যদি এ ধরনের epistemic generosity মেনে চলতে পারেন তাহলে আপাত (superficial) কোনো বিষয়কে চূড়ান্ত (fully correct) হিসেবে গ্রহণ করার বিপদ থেকে আপনি বেঁচে যাবেন। এর পাশাপাশি পাবেন, প্রাপ্ত সত্যকে নতুন করে উপলব্ধি করার সুযোগ ও অনুভবের গভীরতা।
তাই আসুন, আমার, আপনার ও প্রত্যেকের জীবন পথ চলার জন্য জরুরি এই হেদায়েতগুলো আবারো একটুখানি ভিন্ন ল্যাঙ্গুয়েজে রপ্ত করে নেই:
হেদায়েত নম্বর ১: Check the argument for any claim to know.
হেদায়েত নম্বর ২: Don’t be a critic, but a truth seeker.
হেদায়েত নম্বর ৩: Be an accessible person, not a dogmatic one.