পরিবারে ক্যাচাল লাগানোর ব্যাপারে বউদের ভূমিকা

পরিবারে একজন নারী যখন বউ হিসেবে আসে তখন তাকে তার যোগ্য স্থান ছেড়ে দিতে হবে। মানলাম। বউ মানে দাসী-বাঁদী কেউ নয়। তাও মানলাম। যা আমার জন্য শকিং, আমার মতো টিপিকাল গোবেচারা মধ্যবিত্ত মন-মানসিকতাসম্পন্ন লোকের জন্য যা মানা কঠিন তা হলো, টিপিকাল চিটাগনিয়ান ফ্যামিলি ছাড়া উচ্চশিক্ষিত সব পরিবারে বউয়েরাই পুরো ফ্যামিলিকে নিয়ন্ত্রণ করে। পুত্রবধূর মনমেজাজের ওপর নির্ভর করে এনটায়ার পারিবারিক সেটআপ। সবকিছু।

মধ্যবিত্ত, উচ্চমধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত পরিবারে ব্যতিক্রম বাদে পুত্রবধূরা আবির্ভূত হয় নিবর্তকের ভূমিকায়। নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তে ব্যাপারটা সিক্সটি-ফর্টি। নিম্নমধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত স্তরের বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পুত্রবঁধূরা নির্যাতিত। কিছু কিছু ক্ষেত্রে হিসেবটা এর উল্টো। বিশেষ করে, যে পরিবারে উক্ত পুত্রবধূর স্বামীপ্রবর যখন পরিবারের মূল উপার্জনকারী সদস্য।

আমার এক ছাত্রী। বেশ স্মার্ট, সুন্দর এবং মেধাবী। অথচ লেখাপড়ায় সে কেন জানি ততটা মনোযোগী নয়। খোঁজ নিয়ে জানলাম, ও থাকে বহদ্দারহাট এলাকায়। শহরে টিউশনি করার সুবিধার জন্য। তার বাবা সবটুকু সামর্থ্য দিয়ে একমাত্র ছেলেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। বিয়ের আগ পর্যন্ত ভাইয়া তাকে খরচ দিতো। ভাবী আসার পরে বাবা-মাকে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে গ্রামের বাড়িতে। আর ওর স্থান হয়েছে কর্মজীবী মহিলা হোস্টেলে।

দেখা গেল, ছেলেটাকে অনেক টাকাপয়সা খরচ করে ফ্যামিলির পক্ষ থেকে বিদেশে পাঠানো হলো। ছেলের সূত্রে আর্থিক স্বচ্ছলতা আসলো পরিবারে। একসময়ে ছেলেটাকে বিয়ে করানো হলো। অতঃপর …? বুঝতেই পারছেন, পুত্রবধূ এসে ঠেলাঠেলি শুরু করে দিলো সবার সাথে। ‘আমার জামাই তো আপনাদেরকে কম টাকা দেয় নাই’ – সেদিনকার মেয়েটা মুখের ওপর এমন কথা নির্দ্বিধায় বলে দিল তার শ্বাশুড়িকে।

তার জামাই নামক পরিবারের এই সদস্যটিকে লালনপালন করা, লেখাপড়া শেখানো, প্রতিষ্ঠিত হতে সহযোগিতা করা, পুরো ব্যাপারটাকে বউটা দেখে টাকাপয়সার হিসেবনিকেশের দৃষ্টিতে। কতটা প্যাথেটিক, ভাবতে পারেন? আচ্ছা, বউ হিসেবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে মেয়েরা এমন কেন? এটি কি উচিত? আপনি ইনসিকিউরিটির কথা বলতে পারেন। তো? ইনসিকিউরিটিতে ভোগার একটা লিমিট থাকা উচিত নয় কি? আপনার কী মনে হয়?

বলতে পারেন, মেয়েটি ওই পরিবারের স্ট্রাগলগুলো দেখে নাই। তাতে কী? সে যে ফ্যামিলি থেকে সে এসেছে সেখানে কি স্ট্রাগল ছিল না? তার ভাইয়ের কাছ হতে সে কী আশা করে?

বিয়ের পরেও বড় ভাই বা বড় আপা বাবা-মার পরিবারে কন্ট্রিবিউট করে, বড় ছোট পরিবারের সদস্যদেরকে প্রোভাইড করে, এমনটাও দেখা যায়। এর পুরো কৃতিত্ব কিন্তু ভাইয়ের চেয়ে ভাবীর বেশি, আপার চেয়ে বোন জামাইয়ের।

কোনো পুত্রবধূ দাবী করতে পারে, আমি ভাল। আপনি কতটুকু ভাল তা বোঝা যেত, আপনি যদি যৌথ পরিবারে থাকতেন কিম্বা আপনার স্বামী বাবা-মা’র পরিবারে যদি বিগ এমাউন্ট কন্ট্রিবিউট করতেন। আরব দেশের সামাজিক প্রথা যাই হোক না কেন, ইসলামী শরীয়াহ নির্দেশিত উত্তরাধিকার সম্পত্তির বন্টণব্যবস্থা হতে এটি অকাট্যভাবে প্রমাণিত, ইসলাম যৌথপরিবার ব্যবস্থাকে প্রেফার করে।

ইসলামী শরীয়াহ প্রেফার করে এমন যৌথপরিবার ব্যবস্থাকে আমার দৃষ্টিতে অর্গানাইজড এক্সটেন্ডেড ফ্যামিলি সিস্টেম। অর্থাৎ একছাদের নিচে হোক কিম্বা পৃথক গৃহে, রিসোর্চ ভাগাভাগি করে এবং হাইয়ার্কি মেনে বসবাস করা।

পর্দার অজুহাতে যারা একক পরিবারের কথা বলে তারা ইসলামী নারীবাদী। পেশাগত প্রয়োজনে একক পরিবারে বসবাস ইসলামের দৃষ্টিতে বড়জোর অনুমোদিত। এরসাথে পর্দা কোনো সম্পর্ক নাই।

প্রসঙ্গত, উল্লেখ্য, পারিবারিক ব্যবস্থা যাই হোক না কেন, পারসোনাল প্রাইভেসির ব্যাপারে শরিয়তের বিধান অত্যন্ত কঠিন। একশ’ ভাগ আপসহীন। ব্যক্তিগত গোপনীয়তা আর পারিবারিক ব্যবস্থাপনা, দু’টা আলাদা বিষয়। একটার জন্য অপরটা লংঘন বা ক্ষতিগ্রস্ত করা যাবে না। অন্য পরিসরে এ’নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে।

এখনকার হতবুদ্ধি, হীনমণ্য এলিট বাবা-মায়েরা নির্লজ্জভাবে ওল্ডহোম প্রথার পক্ষে বলে। আমার খুব খারাপ লাগে। সুরা আনকাবুতের শুরুতে আছে, আল্লাহ তায়ালা বলছেন, নীতিগত কারণে বাবা-মা’র সাথে দ্বিমত করা যাবে। বরং করতেই হবে। তাছাড়া তাদের সাথে বিন্দুমাত্র অসম্মানজনক আচরণ করা যাবে না। এমনকি ‘উহ’ শব্দটাও বলা যাবে না।

হ্যাঁ ঠিক এই ‘উহ’ শব্দটাই কোরআনে আছে। বাবা-মা কাছেই যদি না থাকলেন, ‘উহ’ বলে বিরক্তিপ্রকাশ করবেন কীভাবে? টাকাপয়সা তো প্রিয়জনের সঙ্গসুখের বিকল্প হতে পারে না।

উপযুক্ত ছেলেসন্তান যে কারণে বাবা-মাকে নিজের কাছে রাখতে পারে না সে কারণটি হলো তার বউ। সরাসরি না করে মেয়েরা স্নিকি বেহেভিয়ার করে। ঘরের মধ্যে বাবা-মা এবং ক্ষেত্রবিশেষে ইন-ল’জকে মুভমেন্ট কোর্স এবং এরিয়া ঠিক করে দেয়। এইটা এখানেই রাখতে হবে। ওইটা ওখানেই রাখতে হবে। এই টাইমে এইটা হবে। ওই টাইমে ওইটা ঠিক ওভাবেই হবে। ইত্যাদি।

এ’সব কিছু সে করে সংসারের কর্তৃত্ব তার হাতে আছে এটি সম্পর্কে এশিউরড হওয়ার জন্য। এমনিতে সব মানুষ টেরিটোরিয়াল। মেয়েরা বিশেষ করে। এই সেন্স বউয়ের মধ্যে যতটুকু কাজ করে তারচেয়ে কিছুমাত্র কম কাজ করে না ছেলের মায়ের মধ্যে। বউয়ের সংসারে সে শোপিসের মতো থাকতে চায় না।

একসাথে থাকতে হলে টেরিটোরিয়াল কম্প্রোমাইজ করতে হয়। যারা পারে তাদের শহরের বাসাতেও বাবা-মা থাকতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। যারা পারে না, তারা নিজ নিজ অনুদারতা স্বীকার করার পরিবর্তে নানা ধরনের অজুহাত তৈরী করে। পর্দারক্ষার অজুহাত এর একটা উদাহরণ।

আমি সমস্যার ওপরে ফোকাস করলাম। আপনারা সমাধানের কথা বলেন। ভাল থাকেন।

মন্তব্য – প্রতিমন্তব্য

Sultana Salma: আপনার লেখা ভাল লাগে। তবে এ লিখাটা পড়ে মনে হল, আপনি নারীদের পর্দা নিয়ে তেমন সচেতন নন। আপনার কাছে পর্দা খুব হালকা ব্যাপার মনে হয়।

Mohammad Mozammel Hoque: পর্দা আর পর্দার অজুহাত দুইটা আলাদা জিনিস। নারীদের পর্দা চেতনার একটা লাইফ সাইকেল আছে। সেইটা আমি তো অনেক দেখেছি। তাতে করে মনে হয়, পর্দার অজুহাতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ওয়েস্টার্ন লাইফস্টাইল মেইনটেইন করতে চায়। লিবারেলিজম এবং ইনডিভিজুয়াল চেতনা থেকে পর্দা করা আর ইসলামের সামগ্রিক জীবন দৃষ্টির আলোকে পর্দা করা, দুইটা আলাদা জিনিস। এই যে বললাম ‘পর্দার লাইফসাইকেল’ এইটা ইসলামী নারীবাদীদেরকে বোঝানো মুশকিল।

Sultana Salma: পর্দার লাইফ সাইকেল কথাটা খুবই অবমাননাকর। একজন নারী দ্বীনের বুঝ পাবার পর হয়তো পর্দা সম্পর্কে সচেতন হয়। আল্লাহ একেক জনকে একেক সময় বুঝ দিয়ে থাকেন। আবার যে কেউ যেকোন সময় ইসলাম থেকে ছিটকে যেতে পারে। আমাকে মাফ করবেন স্যার। আপনার লিখার থিমটা হিন্দুয়ানি কালচারের সাথে মিলে যায়।

Maimana Akter Tohfa: আপনার কথাটা একদিক দিয়ে যুক্তিসঙ্গত। এখন যেমন দাড়ি রাখা স্টাইলে পরিণত হয়েছে, আর বলে নবীর সুন্নত পালন করছি ঠিক তেমনি পর্দাও একটা স্টাইলে পরিণত হয়েছে । একটা প্রবাদ আছে “বাহিরে ফিটফাট ভিতরে সদরঘাট” ঠিক সেরকম।

Mohammad Mozammel Hoque: আমার ইচ্ছা, আমার স্বাধীনতা। আমি আমার মতো করে পোশাক পরবো। সেটা হতে পারে স্বল্পদৈর্ঘ্যের কিংবা পূর্ণদৈর্ঘৈর, এই মানসিকতা থেকে কেউ যখন পর্দা করে, তখন পর্দা করা সত্ত্বেও আসলে সে ইসলামবিরোধী আচরণই করল। সেজন্য পাশ্চাত্য লিবারেল দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে যারা হিজাব পড়ে, তাদের হিজাব পড়া না পড়া সমান কথা।

আমরা যা কিছু করি তা সব আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই করি, আল্লাহর বান্দা হিসেবেই করি, তিনি হুকুম করেছেন নিছক সেজন্যই করি। যুক্তি বুদ্ধি এবং সুবিধাসমূহ এই আমলের পক্ষে, এজন্য আমরা কোনো কিছু করি না। এই মানসিকতা থাকাটা জরুরী।

Faruk Ferdous: ইসলাম যৌথ পরিবার ব্যবস্থা প্রেফার করে এটা কোত্থেকে বললেন? দলিল কী বা সূত্র কী? আপনি যে আয়াতের কথা বলেছেন, ওই আয়াতে আল্লাহ বার্ধক্যে উপনীত বাবা মায়ের সাথে সুন্দর আচরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন, তাড়িয়ে দিতে নিষেধ করেছেন। পড়ুন ‘ইম্মা য়াবলুগান্না ইনদাকাল কিবারা’। বাবা মা যখন বার্ধক্যে উপনীত হয়ে অক্ষম হয়ে যান, তখন তাদের প্রয়োজন পড়ে ছেলে বা মেয়ের আশ্রয়ের। ওই পরিস্থিতিতে সন্তানদের অবশ্যই তাদের দেখাশোনার দায়িত্ব নিতে হবে সেটা যেভাবেই হোক।

কিন্তু আমাদের সমাজে যৌথ ফ্যামেলির নামে যা হয়, পূর্ণ সক্ষম বাবা-মায়ের সংসারে পুত্রবধু আশ্রয় পায়, সারাক্ষণ খবরদারি, শাসনের মধ্যে থাকতে হয় এবং এটা একটা প্রত্যাশা হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছু মায়েদের, বাবাদের যে এতদিন তারা ছেলে লালনপালন করেছেন বলে পুত্রবধু এসে তাদের গোটা সংসারের সব কাজকর্মের দায়িত্ব নিয়ে নেবেন, তাদেরকে খেদমতের ওপরে রাখবেন, এটা ইসলামি পরিবার ব্যবস্থা নয়। ফকিহরা সুকনার হকের যে ধারণা দিয়েছেন, তাও পূরণ হয় না এই ব্যবস্থায়। স্ত্রী থাকবে তার স্বামীর কর্তৃত্বে, স্বামীর বাবা মায়ের পুত্রবধুর ওপর কোনো রকম শাসন, কতৃত্ব ইসলাম স্বীকার করে না।

Mohammad Mozammel Hoque: আপনি এত বড় একটা মন্তব্য লেখলেন, কিন্তু যে পয়েন্টটাতে আমি কথা বলেছি সেই পয়েন্টে আমি আমার কথার পক্ষে যে যুক্তি দিয়েছি সেটার ব্যাপারে কিছুই বললেন না। অবাক কান্ড!

এমনকি, আমার ধারণা, ‘অর্গানাইজড জয়েন্ট ফ্যামিলি’ বলতে আমি কী বুঝিয়েছি সেটা আপনি ধরতেই পারেন নাই! জানতেও চান নাই।

ওয়ানস এগেইন, সম্পত্তি বন্টন ব্যবস্থাকে আমি পারিবারিক ব্যবস্থার ভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করেছি। সেদিক থেকে দেখলে মনে হয়, ইসলাম একক পরিবারের চেয়ে যৌথ পরিবার ব্যবস্থাকে প্রেফার করেছে। প্রয়োজন সাপেক্ষে একক পরিবার ব্যবস্থাকে অনুমোদন দিয়েছে।

যৌথ পরিবারের যে নেগেটিভ চিত্র আপনার চোখে ভাসছে সেটা দুর্ভাগ্যজনক। সামাজিক যে কোনো কিছুর মধ্যে কিছু বিরুদ্ধ উদাহরণ বা বিপরীত ঘটনা থাকে। তাতে করে সমাজের মূলধারা নন-একজিসটেন্ট এবং ইরিলেভেন্ট হয়ে পড়ে না।

আমার দৃষ্টিতে আপনি একজন ইসলামি নারীবাদী। আমি নারীবাদবিরোধী। অতএব আপনার উচিত আমাকে এড়িয়ে চলা। আপনার এই মন্তব্যটাও থাকুক, আমার এই মন্তব্যটাও থাকুক। আমি চাচ্ছি আপনি আমাকে আনফ্রেন্ড এবং আনফলো করেন।

আমার কথাবার্তা ও কার্যক্রমের মধ্যে যেগুলোকে আপনি ভুল মনে করেন সেগুলো নিয়ে আপনার ওয়ালে আপনি আপনার মত করে লিখেন। আমার নাম ধরে, যদি সঙ্গত মনে করেন গালি দিয়েও, লিখতে পারেন। আমার আপত্তি নাই।

আশা করি যা বলেছি বুঝবেন। ভুল বুঝবেন না। আমার জন্য দোয়া করবেন। ভালো থাকেন।

Fareda Munmun: স্যার, আপনার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা।

সত্যি বলতে – শিক্ষিত, ভালো চাকরি করা স্বামী ও পারিবারিক ভাবে বউকে কি অমানুষিক নির্যাতন করে, হাতে, ভাতে না বরং কথা, আচরণ দিয়ে। আমি, আমার জীবন তার সুস্পষ্ট দলিল। এমন লক্ষ লক্ষ নারীর হয়ে কয়েক জন হয়তো কন্ট্রোলিং পাওয়ার নিজের হাতে নিতে চায়, তবে তাদের স্বামী যদি তাকে সাপোর্ট করে বা তার বাবার বাড়ির টাকার গরম থাকে।

আপনি যেভাবে বললেন বউ ঝগড়াঝাটি লাগায় ভাই ও বাবামার মধ্যে। আরও খবর নিন, প্লিজ। স্যার সমাজের নারীদের প্রতি সামান্য দ্বায়িত্ব তো আপনাদেরও আছে। দয়া করে অত্যাধিক অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করে সংসার করা মেয়েটার কথাও বলুন। ছেলের বাবা মা কষ্ট করে মানুষ করে দিয়েছেন, মেয়ে কে হয়তো নদী থেকে কুড়িয়ে এনে দাসীবৃত্তির জন্য শ্বশুর বাড়িতে রেখে গেছেন। প্লিজ স্যার গড়পড়তা নেগেটিভ ভাবে না বলে আমার মতো কারো কারো কথা শুনুন। বিচার করুন। ন্যায় এর পক্ষে কথা লিখুন। আমি জানি আমার মতো শুধু সন্তানের জন্য লক্ষ নারী স্বামীর অমানবিক নির্যাতন সহ্য করছে। যাঁরা এক ছাদের নিচে থাকে, তাঁরা অর্ধমৃত, হয়তো বেঁচে নেই। প্লিজ স্যার।

Mohammad Mozammel Hoque: আমি তো নিছক একপক্ষে কোন কথা বলিনি। যা বাস্তবতা সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। সমস্যাটা নারী-পুরুষের সম্পর্কগত সমস্যা নয়। বরং নারীদের কর্তৃত্বগত সমস্যা।

Md Faruk Hossain: ১০০% এগ্রিড। তবে বউদের এধরনের বিহেভিয়ারের পেছনে তাদের মায়েদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা আছে। অধিকাংশ বউদের মা তাদের এ ধরনের কর্মকান্ড প্রশমনের চেষ্টা না করে উল্টো উস্কে দেয়।

Mohammad Mozammel Hoque: আমার মায়ের পলিসি ছিল এর ঠিক উল্টা। ছেলে এবং ছেলের বউয়ের দ্বন্দ্বে তিনি সবসময় থাকতেন বউয়ের পক্ষে। মেয়ে এবং মেয়ের জামাইয়ের দ্বন্দ্বে উনি সবসময় থাকতেন জামাইয়ের পক্ষে। ছেলেমেয়েদের দাম্পত্য কলহ নিয়ে বিচার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই উনার উপর্যুক্ত নীতি অনুসারে রায় লেখা হয়ে যেত এবং নির্দয়ভাবে তিনি সেটা বাস্তবায়ন করতেন…!

Babui Pakhi: Mohammad Mozammel Hoque, আপনার মা যদি আপনাদের স্বামী স্ত্রীর বিবাদে আপনার পক্ষে যেতেন আর নিয়মিত আপনাকে উস্কানি দিয়ে বিবাদ আরো বাড়িয়ে দিতেন তাহলে আপনি কি করতেন? আর আপনার স্ত্রীর প্রতিক্রিয়া কি হতো? জানালে ভালো হতো! আপনার মা খুব বুদ্ধিমতি মহিলা তাই তিনি সবকিছুই ঠিক সামলে নিয়েছেন! কিন্তু তিনি যদি আর দশজন শাশুড়িদের মতো হতেন তাহলে কি করতেন? পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করবেন।

Mohammad Mozammel Hoque: Babui Pakhi, কোনোকিছু রং করার সময়ে আমাদেরকে প্রথমে কিনারাগুলোতে খুব সতর্কভাবে রং লাগাতে হয়। তারপরে মাঝখানের অংশ সহজে পেইন্টিং করে ফেলা যায়।

এমন করে যে কোন সম্পর্কের ক্ষেত্রে পেরিফেরিতে যে বা যারা থাকে তাদের অধিকারগুলো সবার আগে দেখতে হয়। উপযুক্ত সালিশ করার ক্ষেত্রে নিজের লোকদের দোষ যথাসম্ভব প্রকাশ করে অন্যদের দোষ যথাসম্ভব লুকাতে হয়।

এটা হল ন্যায়য়ের দাবি।

আমার বাবা আর এক চাচা। আমার দাদি যখন লাকড়ি, পুকুরের মাছ ইত্যাদি ভাগ করতেন তিনি উনার এক বউকে বলতেন, ‘তুমি ভাগ বসাও’, আরেক বউকে বলতেন, ‘তুমি ভাগ উঠাও’। আমাদের পরিবার থেকে আমরা এরকম শিক্ষাই পেয়েছি। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

Atik Ullah Aman: এক আত্মীয়ের বাসায় গিয়েছিলাম,আন্টি পুত্রবধূকে উনার ছোট ছেলে এবং আমার জন্য চা-নাস্তা দিতে বললেন। পুত্রবধূ জবাব দিলেন “দেবরের জন্য চা-নাস্তা বানানোর জন্য শরিয়তে বাধ্যবাধকতা নেই”!। প্রতিউত্তরে আমার বন্ধু বললো “দেবরকে দিয়ে মাসের পর মাস বাজার করানোর ফতোয়া কোন ***র ফুয়া দিছে”! পরে এ নিয়ে বিশাল কান্ডকারখানা!!

Mohammad Mozammel Hoque: চরম উত্তর। আতিক, আমি নারীবাদের ওপরে অসম্ভব ত্যক্ত বিরক্ত। তাই এটাকে পলিসি হিসেবে গ্রহণ করেছি, নারীবাদকে খোলাখুলি সরাসরিভাবে অ্যাটাক করতে হবে, নিজের আত্মমর্যাদাবোধ এবং অপরের অধিকারের সীমানা বজায় রেখে।

নারীবাদ যতটুকু টক্সিক, তারচেয়ে বেশি টক্সিক হল ইসলামী নারীবাদ। এ এক অদ্ভুত জিনিস।

Adnan Shafee: আজকাল শরীয়ার দোহাই দিয়ে অনেক ছেলে বৃদ্ধ বয়সে বাবা মা কে বৃদ্ধাশ্রমে যেতে বাধ্য করছে।  দেবর নাকি আগুন সদৃশ। কিন্তু বাইরে পরপুরুষের সাথে সারাদিন অফিস করতে তাদের আবার আপত্তি নেই। তথা কথিত সো কোল্ড মডার্ণ নব্য ধার্মিক মহিলারা এটা নিয়ে হাইপ তুলছে!

Mohammad Mozammel Hoque: সার্বিকভাবে নারীবাদকে, বিশেষভাবে ইসলামী নারীবাদকে দেখাতে হবে রেড কার্ড। বিগ নো। নারীবাদী হিসেবে কাউকে আইডেন্টিফাই করা গেলে তাকে সতর্ক করতে হবে এবং সে নিজেকে সংশোধন না করলে তাকে উত্তম পন্থায় বিদায় করতে হবে। এইটা এক বিষবাষ্প। নাস্তিকতার চেয়েও নারীবাদ অধিকতর ক্ষতিকর। কেননা, নাস্তিকতাকে সহজে আইডেন্টিফাই করা যায়, কিন্তু নারীবাদ হাজির হয় ইসলামের মোড়কে। রিক্সটা ঠিক এখানে।

Kai Kaus: এখানে বউ, জামাই, শ্বশুর, শাশুড়ি, ননদ, দেবর সব আছে শুধু মানুষটাই নাই। অনেকটা ‘ড্রাইভারের জাতটাই এমন’ টাইপ কথা। পেশা আর পারিবারিক সম্পর্কের নিরিখে স্বতন্ত্র মানুষ হিসেবে কাউকে নাই করে দেয়া। কেন বলা যাবে না আমার ভাবী চমৎকার একজন মানুষ কিংবা আমার শাশুড়ি অসাধারণ একজন মহিলা বা আমার বোনটা একটু ঝগড়াটে টাইপ বা আমার ফুফু খুবই পরহেজগার, আমার বাবা খুব একটা সামাজিক না বা আমার মা খুব কঠোর হাতে সবার ভালো-মন্দের দিকে খেয়াল রাখেন ইত্যাদি? পরিবার সমাজের একক ইউনিট না, ব্যক্তিই সমাজের একক ইউনিট তাই সব পারিবারিক বা সামাজিক সম্পর্কের ভালো-মন্দ নির্ভর করে ব্যক্তির ওপর, কে সম্পর্কের কোন স্তরে আছে তার ওপর না। একান্তই ব্যক্তিগত অভিমত।

Mohammad Mozammel Hoque: এই পোস্টে করা সবচেয়ে ভালো কমেন্টগুলোর একটা। অর, দ্যা বেস্ট ওয়ান।

Shajahan Shamim: মেয়েলোকের উপরে দোষ চাপানো সোজা। বাংলাদেশে বৌয়েরা বিগড়ে যায় তার শাশুড়ির কারণে। বেশির ভাগ শাশুড়ি মনে করে ছেলেকে বিয়ে করিয়ে একটা কাজের বেটি রহিমা এনেছে। এবার সংসারের সব কাজ কাজের বেটি রহিমাকে দিয়ে নিজে আরাম করবে। আসলে তো ছেলের বৌ কাজের বেটি রহিমা না। অন্য দিকে, ছেলে কী করে? ছেলে তার স্ত্রীর উপর হওয়া অন্যায়গুলোর ক্ষেত্রে চোখ বন্ধ করে থাকে। সে পক্ষান্তরে জুলুমকে সমর্থন করে। এই কারণেই বেশির ভাগ ছেলের বৌ জুলুম সহ্য করতে করতে এক সময় বিগড়ে যায়। যৌথ পরিবারগুলো এই অন্যায় ও জুলুমের কারণেই ভেঙ্গে যায়।

Mohammad Mozammel Hoque: বরাবরের মতো আপনার এই মন্তব্যটিও নিতান্তই একপেশে।

Shajahan Shamim: আরেকটু একপেশে করা যাক বিষয়টা। বৃদ্ধাশ্রমে যারা যায়, তারা নিজের আমলনামার কারণেই যায়। শাশুড়ি ছেলের বৌয়ের উপর অত্যাচার করে। এক সময় শ্বশুর ইন্তেকাল করে। ছেলেরা আলাদা আলাদা হয়। অন্য দিকে বৌয়ের একের অধিক সন্তান হয়। তার সংসারে শেকড় গজায়। ক্ষমতাও বাড়ে। এখন শাশুড়ি অসহায়। তখনই ছেলের বৌ আর শাশুড়ির দায়িত্ব নেয় না। তাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠায়।

Mohammad Mozammel Hoque: ভাই, আপনার দৃষ্টিভঙ্গি নারীবাদী দৃষ্টিভঙ্গি। আমি বরং নারীবাদী পুরুষ এবং নারীদের সংশ্রব থেকে মুক্ত হতে চাই। সবচেয়ে ভালো হয়, আপনি যদি আমাকে আনফ্রেন্ড করে দেন। আশা করি ভুল বুঝবেন না।

আমার এই দৃষ্টিভঙ্গি অসহিষ্ণুতা নয়। নারীবাদ সম্পর্কে আমার আদ্যপান্ত জানা আছে। সেজন্য নারীবাদীদের সাথে থেকে নারীবাদের নতুন কোনো সবক নেওয়ার প্রয়োজন বোধ করছি না।

আমরা একটা নারীবাদী যুগে বসবাস করছি। চাই বা না চাই, নারীবাদ আমাদের রন্ধে রন্ধে ঢুকে গেছে। একে ঠেকানো অসম্ভব। এইটা যে আমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, সেই বোধটুকু নিজে বজায় রাখা এবং অন্যদেরকে এই বিষয়ে ইন্টেলেকচুয়ালি হেল্প করা। এইটা হল আমাদের জন্য এ বিষয়ে সম্ভবপর কাজ।

Nayeema Binte Shafique: ইসলাম ছাড়া সমাধান নাই। ইসলামই সম্পর্কের ব্যালান্স ঠিক করতে পারে। ইসলামে সবার অধিকার + হকের বন্টন করা আছে। স্ত্রীদের জানতে হবে স্বামীর প্রতি তার কি দায়িত্ব, স্বামীদের জানতে হবে স্ত্রীদের প্রতি তাদের কি দায়িত্ব।

সংসারের কর্তৃত্ব থাকবে স্বামীর হাতে। স্ত্রী স্বামীর অধিনস্ত। এটা স্বামীর বাড়ি। বাড়িতে কে থাকবে, কে থাকবে এটা স্বামীর কর্তৃত্বে থাকবে। স্ত্রীকে সব বিষয়ে একসেস দেয়া যাবে না। স্বামী স্ত্রী দুজনের প্রতি দুজনের সম্মান, বন্ধুত্ব, যত্ন, কৃতজ্ঞতাবোধ থাকতে হবে।

একটা ঘটনা শেয়ার করি। এক বিবাহিত দম্পতি, বাসর রাতে/বিয়ের ৭ দিনের মধ্যে স্বামী তার স্ত্রীকে জানিয়েছে, “আমার সবকিছু তোমার আর আমাদের সন্তানদের জন্য। তুমি এই সংসারের সবকিছু। মনের মতো করে সংসারটা সাজিয়ে নিবা, আপন করে নিবা, যা মন চায় করবা। কিন্তু আমার বাবা মা ভাই বোন যতদিন জীবিত আছে, তারা বছরে কিছুদিন আমাদের সাথে থাকবে, বেড়াতে আসবে, তাদের যেন কখনো অযত্ন অবহেলা না হয়। তাদের খোঁজ খবর নিবো, খেয়াল রাখব এ বিষয়ে তুমি কোন বাধা বিতে পারবা না। তাদের অবহেলা করতে পারবা না। আমি সেটা সহ্য করব না।

এই সংসারে প্রতিটা মানুষের সাথে বউ এর সম্পর্ক ভালো। বউ শাশুড়িকে ভালোবাসে, শাশুড়ি বউকে ভালোবাসে।

আমার নিজের কনসেপ্ট হলো, (১) আমার হাজবেন্ডের মতো এই অসাধারণ মানুষটা যার পেট থেকে হইছে তিনি তো অসাধারণ মা৷ তার প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ৷ তাকে অবহেলা করা অসম্ভব। (২) আমার কাছে সুখ মানে সবাইকে নিয়ে ভালো থাকা। নিজে নিজে টাকা আর স্বামী সন্তান নিয়ে আলাদা থাকা, সবার সাথে সম্পর্ক নষ্ট করে দূরে থাকা এর মধ্যে আমি কোন সুখ খুঁজে পাইনা।

Mohammad Mozammel Hoque: দুইটা জরায়ুর প্রতি আমাদেরকে মর্যাদাশীল হতে হবে। একটা জরায়ু যেখানে আমার জন্ম হয়েছে। আরেকটা জরায়ু যেখানে আমার সন্তান জন্মগ্রহণ করেছে। অবশ্যই সিনিয়রিটি হায়ারার্কির দৃষ্টিতে আমার জন্ম অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। কারণ আমি না হলে আমার সন্তান হতো না।

Maimana Akter Tohfa: জয়েন্ট ফ্যামিলিতে বসবাস করার মন মানসিকতা না থাকলে, পর্দার অজুহাত দেখালে ছেলের পরিবার তখন তো পারে পর্দায় থাকার মতো পরিবেশ করে দিতে। তাহলে তো এরকম অজুহাত দেখাতে পারবে না। সব ছেলে বউয়ের কথায় উঠে বসে না। শশুর শাশুড়িকে অবহেলা করার ক্ষেত্রে মেয়ের পরিবারই দায়ী থাকে। পরিবার থেকে ভালো শিক্ষা পায় না । শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, ধৈর্য্য, সহনশীলতা পরিবার থেকে শেখায়। আর যে ছেলেকে বাবা মা বড় করে, সে ছেলে যখন বাবা মায়ের দেখভাল করে না বউকে ভয় পায় সে ছেলে তো কাপুরুষ।

Mohammad Mozammel Hoque: নারীদের ব্যাপারে মাওলানা মওদুদীর অবস্থান ছিল রক্ষণশীল। উনার বইপত্র এবং সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে আমরা সেটা দেখতে পাই। তৎসত্ত্বেও পর্দা সংক্রান্ত আয়াতগুলোর ব্যাখ্যায় ‘তাফহীমুল কোরআনে’ উনি যেই কথাগুলো বলেছেন সে অংশগুলো যদি আমরা ভালো করে অধ্যয়ন করি তাহলে আমরা বুঝতে পারি, পারিবারিক জীবনে পর্দার নামে বাড়াবাড়ি করাকে উনি পছন্দ করতেন না। আমি উনার এই অবস্থানটাকে সঠিক বলে মনে করি।

Maimana Akter Tohfa: আমি আপনার ওয়েবসাইটে এ নিয়ে লেখা পড়েছি। এমনও ঘটনা হয়েছে দেবর ভাবীর সাথে পরকীয়া বা ভাবীকে বিয়ে করেছে এক্ষেত্রেও কি আপনি একই ধারণা পোষণ করবেন? হাদীসেও বলা হয়েছে দেবর ভাবীর জন্য সীসা ঢালা পর্দাস্বরূপ।

Mohammad Mozammel Hoque: তুমি এবং তোমার মত উচ্চশিক্ষিত ইয়াং মেয়েরা একটা লাইফ সাইকেলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছ। আমাদের জীবনের বিস্তীর্ণ অভিজ্ঞতার নিরিখে এটা খুব বুঝতে পারি, তুমি এবং তোমাদের ক্যাটাগরির মানুষজনের এই মন মানসিকতা, এইটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। আমি নিশ্চিত, ২ দশক পরে তোমার মন মানসিকতায় অনেক চেঞ্জ হবে। তুমি অনেক বেশি ম্যাচিউরড হবে। তবে তোমার সিনসিয়ারিটি এবং সেন্টিমেন্টকে আমি সম্মান করি। ভালো থাকো।

দ্বীন হচ্ছে কল্যাণ কামনা – আল হাদিস।

Jobyda Khanam: আসসালামু আলাইকুম। স্যার, সমাধানের বিষয় আরও পরে। বউদের যে চিত্র তুলে ধরেছেন সেটা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এখনো কদাচিৎ দেখা যায়। আমি বিবাহিত, শিক্ষক, একজন মা, যৌথ পরিবার এর একজন বউ হিসেবে বলছি, স্যার আলোচ্য সমস্যা খুবই সন্নিকট।

তবে এখনো এটা সমস্যার পর্যায়ে পৌঁছায়নি। আমার মতে কিছু সময় পর অন্তত প্রত্যেকের আলাদা সংসার করার সুযোগ দেওয়া উচিত। কারণ শাশুড়ির সংসারে কি দিয়ে কি রান্না হবে সেইটা পর্যন্ত মেনে চলতে চলতে একসময় হাঁপিয়ে উঠে প্রত্যেকটা মেয়ে। সব মেয়েই চায় তার নিজের একটা কিচেন হউক অন্তত।

Mohammad Mozammel Hoque: তেমন করে প্রত্যেকটা মা-ই চায় তার জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তার ছেলেমেয়েদের সংসারে মধ্যমণি হয়ে থাকতে। আমি যতটুকু বুঝেছি এই সেক্রিফাইসটুকু করাটা হচ্ছে সূরা আনকাবুতের যে আয়াতের কথা আমি বলেছি, সেটার দাবি। বউ শাশুড়ির এই যে কর্তৃত্বের দ্বন্দ্ব এইটাকে এড়ানোর জন্য আমি মনে করি উভয়পক্ষের দায় আছে। এই দায়িত্ববোধ reciprocal।

Fahim Shahriar Reza: আপনি কি দয়া করে বলবেন যৌথ পরিবারে নন মাহরম ভাই, ভাবী, চাচাতো ভাইবোনের ভেতর পর্দা কেমন করে করবে? এইটা পাশ কাটিয়ে যাওয়া উচিত হয়নি। নিচে একটা আয়াত দিলাম। দেখুন। তোমরা স্ত্রীদের জন্য তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী নিজেদের ঘরে বাসস্থানের ব্যবস্থা করো।’ (সুরা: তালাক, আয়াত ছয়।

আশা করছি কিছু বলবেন।

Mohammad Mozammel Hoque: এই আয়াতের মানে হলো স্ত্রীর জন্য একটা স্বতন্ত্র এবং নিরাপদ শয়ন কক্ষ থাকা জরুরী। সেই কক্ষের দরজা না থাকলেও, সেখানে একটা পর্দা অবশ্যই ঝুলানো থাকতে হবে। যেমন ছিল উম্মুল মুমিনদের ঘরে। যথাযথ অনুমতি ব্যতিরেকে সেই পর্দা কেউ লংঘন করতে পারবে না। এটাই ইসলামী শরীয়তের বিধান। পোস্টে এ নিয়ে কথা বলেছি। প্রাইভেসি ইজ এ মাস্ট ইন ইসলাম।

Ayesha Khanam Tinu: স্যার, ইসলাম যৌথ পরিবারকে প্রেফার করে এই বিষয় রেফারেন্স সহ একটা লিখা লিখবেন৷ প্লিজ, স্যার।

Mohammad Mozammel Hoque: রেফারেন্স তো দিয়েছি। ইসলামের উত্তরাধিকার সম্পদ বন্টনের চেয়ে নীতিমালা সেটা তো খুব সুস্পষ্ট। একটা ছোট্ট উদাহরণ, ছেলে সন্তান না থাকলে চাচা সম্পদের উত্তরাধিকারী হয়। পারিবারিক ব্যবস্থার ভিত্তি হল সম্পদ আহরণ এবং এর বন্টন ব্যবস্থা। ইসলামসহ যেকোনো পারিবারিক ও সামাজিক কাঠামোর জন্য এটি সমানভাবে প্রযোজ্য।

Mohammad Abdul Hannan: প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বের প্রতি সচেতন থাকলে কোন সমস্যা হয় না। যখনই শুধু নিজের অধিকারের কথা চিন্তা করে অন্যের অধিকারের কথা চিন্তা করে না তখনই সমস্যা তৈরি হয়।

Mohammad Mozammel Hoque: হ্যাঁ কথা সঠিক। আমরা পারিবারিক ব্যবস্থার মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের সীমা জানিও না, মানিও না। অথচ এটি অত্যন্ত জরুরী।

Meherin Moon: Assalamualaikum. Sir. First, I am sorry if my constructive criticism creates any negative impact. Most of cases this is the familiar situation in our families.

Few criticisms…

1. It is role of husband to present his family to his wife and groom her. Relationship of wife and in laws depends on it. Traditionally the concept of our husband and others is that newlywed girl will understand everything of in laws and take care of everything. So, the starting journey of girl mostly depends how she thinks herself about her in laws without any brief of husband’s family.

2. Our culture and society teach our girls that after marriage your husband is everything for you. Many girls even do not get their share of property of their parents. So naturally girls also know that everything of her husband is her. In that point the conflict starts with in laws. So, it’s not the fault of girls. It is fault of us in upbringing our girls. One knows tells them to earn themselves and enjoy their lives themselves.

3. Economic conditions has also impact in relation between daughter in laws with parents in laws. In a family that daughter in laws will be privileged whose husband contribution more in family. As her parents are bias to that son who is contributing more.

4. Lucky, we don’t have the tradition of groom going and staying in his in laws after marriage as non-earnings member.

So, we never experienced acts of a boy with his in laws staying with them.

If it was possible, only then we can say about the reactions of girls with them in laws.

5. We are parents of both girls and boys, first we have to change ourselves.

Sorry again for criticism.

Mohammad Mozammel Hoque: My dear daughter, I agree with all your points. But there are more things to add to this phenomenon, such as, the agency of the young wife in an extended family.

She is an adult person, a fully grown human being. Where is her personality and agency?

If we say like, it’s husband’s duty, it’s due to social cultural and norms, it’s the economy…, everything she is doing is actually imposed on her, and she has to behave like a puppet. How come? Where is her conscience?

Even if all these things, all the adversaries and negative things that are imposed on her are true, still I am not answered. question of her personality and agency is still there.

We know, social things do not happen in a situation of 1-to-1 relation. so many factors contribute in the making of the thing which we call a situation or an event or a kind of behaviour.

So, we should consider things critically and holistically. I always say this, identification of the problem is half of the solution.

my writing is to focus on the problem and the issue, not on the solution. My learned readers are exposing the problem in more details and suggesting possible solutions. That’s fine to see.

so many thanks for your concern and well thought comments.

Mohammad Mozammel Hoque: এটি একজন গৃহবধূর মন্তব্য। তিনি আমাকে ইনবক্সে এটি পাঠিয়েছেন। উনার অনুমতি নিয়ে এখানে মন্তব্য হিসেবে দিচ্ছি-

“আসসালামু আলাইকুম স্যার।

আমি …. অঞ্চলের পরিচিত একটা পরিবারের বড় বউ। শ্বশুর ইন্তেকাল করেছেন বর যখন আলিম পাস করেছেন তখন। ৮ ভাইবোনের মধে ওনি ২য়। বড় বউ হিসেবে এই পরিবারে আজ ২৮ বছর চলছে।

আলহামদুলিল্লাহ। সব দেবরের বিয়ে শেষ। আমরা ৫ বউ। আবারও আলহামদুলিল্লাহ বলি যে, আমাদের বউদের মধ্যে কখনো কোনদিনই কোন উচ্চবাচ্য হয়নি। আমরা প্রতিটা বউ শ্বাশুড়ীকে বাঘের মতো ভয় পাই। যে ভয়ের মধ্যে আছে আন্তরিকতা, শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা।

আমার কাছে এর কারন হিসেবে মনে হয়, আমার বরেরা ৫ ভাই। সবাই মাকে মাথায় তুলে রাখে। ওনার কোন অসন্মান হবে, এটা কেউই মেনে নিবে না। আর ওরা ভাইয়েরা প্রতিজ্ঞা করেছে, নিজেরা কখনো বউদের কথায় সম্পর্ক নষ্ট করবে না। আর এজন্য আমরা ভালো আছি। সুন্দর সামাজিক বন্ধন নিয়ে সমাজে অনুকরণীয় হয়ে আছি।

আলহামদুলিল্লাহ। একজন পুরুষের সবদিক ব্যালেন্স করতে হয়। বউয়ের দিকেও বেশি ঝুঁকে পড়া যাবে না। আবার মা -বোনদের দিকেও বেশি সাইড নেয়া যাবে না।

অলওভার প্রতিটা মেয়েই সুযোগ পেলে খারাপ। এতক্ষণ শ্বশুর বাড়ীর কথা বললাম। এবার বলি বাবার বাড়ীর কথা।

আমার তিনভাই। মানুষ হিসেবে খুবই ভালো, সবাই সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত। ১০জনের কাছে সন্মানীত। কিন্তু…… ছেলে হিসেবে ব্যর্থ।

আমার মা আর ভাইয়েরা খুবই নরম প্রকৃতির। আর শাশুড়ি কঠোর প্রকৃতির। আর আমার ভাবীরা এক কথায় বেয়াদপ। ভাইয়েরা ভাবীদের সামলাতে পারেন না। সবকিছু মিলিয়ে আমি আমার জীবন থেকে যা শিখলাম, তা হলো, পুরুষ যদি শক্ত আর বুদ্ধিদীপ্ত হয়, তাহলে সংসারে ক্যাচাল লাগার সম্ভাবনা কম।

ভালো মানুষ হওয়া আর সাংসারিক জ্ঞান সম্পন্ন হওয়া এক জিনিস না। আমার ভাইয়েরা ভালো মানুষ। কিন্তু সাংসারিক জ্ঞান নেই। আবার দেবরেরা যথেষ্ট সাংসারিক জ্ঞান নিয়ে চলে।”

Rehana Ali Foraji: Mohammad Mozammel Hoque, এজন্যই শায়েখ আহমদুউল্লাহ হুজুর বলছে, ব্যক্তিত্ববান পুরুষকে বিয়ে করুন। ব্যক্তিত্ববান পুরুষ উভয়পক্ষকেই ভালো রাখে। কিন্তু দুঃখজনক সবার ভাগ্যে জোটে না।

Mohammad Mozammel Hoque: Rehana Ali Foraji, ব্যক্তিত্ববান পুরুষ হলে তাকে নানাভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়। পুরুষের ব্যক্তিত্বকে নারীবাদের দৃষ্টিতে টক্সিক মাস্কিউলিনিটি হিসেবে দেখা হয়। অব্যাহত-প্রচারণা এবং ম্যানুফ্যাকচার্ড সোশ্যাল সেটআপ এর কারণে এখনকার গড়পরতা পুরুষ হচ্ছে এফিমিনেইট মেইল। সমস্যার এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ।

মেয়েরা যতই সমতার কথা বলুক, কোঅপারেটিং পার্টনারশিপের কথা বলুক, একজন পুরুষের মধ্যে সে একটা স্ট্রং লিডারকে দেখতে চায়। সমতা এবং নেতৃত্ব, এই দুইটা যে বিরোধপূর্ণ প্রত্যাশা, এইটা তারা বুঝতে পারে না। এটাও সমস্যা আর একটা কারণ।

Rashida Yeasmin: সমস্যাটা মেয়েদের নিয়ে নয়। সমস্যাটা ছেলেদের। তারা এত সহজ সরল হওয়াতেই আসল গণ্ডগোল। মানে দেখুন এত সরল যে দুদিনের বউ এসে তাদের পরিবার থেকে আলাদা করে দেই। কিছু বুঝতেই পারে না বেচারার যে কিভাবে কি হলো। ছেলেদের আরো চালাক চতুর হতে হবে।তবেই যৌথ পরিবার বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে।

Mohammad Mozammel Hoque: আসলেই। মেয়েদের এবং সমাজ সংসারের সব সমস্যার সব গন্ডগোলের মূলে হচ্ছে ছেলেদের অযোগ্যতা এবং অদক্ষতা…!

Anamul Haque Humaid: দায়িত্বের কথা না বলে যে কেউ প্রথমেই অধিকারের কথা বলে, সে আসলে ভিতরে ভিতরে মুনাফিক। যে মোড়কেই এই অধিকারের নাম দিক না কেন। আর হায়ারার্কি ছাড়া পরিবার চলে না। সেক্ষেত্রে মুরুব্বিদের মেনে চলে ধীরে ধীরে দায়িত্ব শিখলে ন্যাচারালি এক সময় দক্ষদের হাতে লিডারশিপ চলে আসে। কিন্তু মাঝের এই দায়িত্বের পথ অধিকাংশের ভালো লাগে না। অধিকারের নামে গ্যাঞ্জাম লাগায়ে জামাইয়ের টাকা নিয়া আলাদা হও – এই সূত্র ধরে মুনাফিক লোভীরা চলে।

Mohammad Mozammel Hoque: সেদিন একটা বক্তৃতা শুনতেছিলাম। একজন স্কলার বলছিলেন, কথাটা অনেকটা এরকম, we speak for the Statue of Liberty, without mentioning any statue of responsibility।

Tripti Barua: যে বউটার কথা বললেন, সে বউয়ের স্বামী নামের যে পুরুষটি, সে পুরুষ নামের কলঙ্ক। তার না আছে বাবা মা ভাই বোনের প্রতি স্নেহ মমতা শ্রদ্ধাবোধ দায়িত্ব কর্তব্যবোধ, না আছে নিজের প্রতি আত্মসম্মানবোধ, না আছে ব্যক্তিত্ববোধ। এই লোকের মাথা সব সময় নিচু হয়ে থাকে। এক সময় সে নিজের সমস্ত ব্যর্থতার দায় বউটির উপর চাপিয়ে দিয়ে পরিবারের পরিবেশকে নরক বানায়।

Mohammad Mozammel Hoque: বর্তমান ফেমিনাইজড কালচারে পুরুষ শক্ত হাতে সংসারের হালধরা ডমিনেন্ট ক্যারেক্টারের হলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়, সে রিপ্রেসিভ এন্ড অপ্রেসিভ টক্সিক মেইল পারসন। আর মেন্দামার্কা পেসিভ ক্যারেক্টরের এবসেন্টি পারসন হলে তাকে সোশ্যালি এপ্রিশিয়েট করা হয়। বিশেষ করে নাটক সিনেমা সাহিত্য এবং মিডিয়াতে এইটা লক্ষ করা যায়। এর রিফ্লেকশন পরে বাস্তব সমাজ ও জীবনে।

এইটা সমস্যার অন্যতম কারণ।

Tripti Barua: পুরুষের ডমিনেন্ট হওয়ার দরকার কী?

মেয়েরা শ্বশুরবাড়িতে শারীরিক ও মানসিক সহিংসতার শিকার হয়, আবার বউটিও শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে কোণঠাসা করে, এর মূলে রয়েছে শিক্ষার ঘাটতি, মানসিক প্রতিবন্ধকতা। এ এক অবিচ্ছেদ্য চক্র। তবে পুরুষ শাসিত সমাজ এবং পরিবারে এ সবকিছুর জন্য দায়িত্বটা পুরুষের উপর বর্তায় বলে মনে হয়।

Mohammad Mozammel Hoque: ‘মেয়েরা শ্বশুরবাড়িতে শারীরিক মানসিক সহিংসতার স্বীকার হয়’ এইটা একটা ঢালাও মন্তব্য। মুখস্ত কথা। এ ব্যাপারে পোস্টে সংক্ষিপ্ত ও সুস্পষ্ট বর্ণনা এবং ব্যাখ্যা দেয়া আছে।

লেখাটির ফেইসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *