ছবি তুলেছে বাচ্চাটার মা। চবি দর্শন বিভাগে ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী। বিয়ে করেছে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষার আগে। এটি ওর ৩য় সন্তান। আমি আর্লি মেরেজের পক্ষে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সিস্টেমটাই এমন যেন মেয়েরা পড়াশোনা করা অবস্থায় বিয়ে না করে। ‘বিয়ে করা যাবে না’ এমন কোনো আইন না থাকলেও পুরো ব্যবস্থাটাই মাতৃত্বের জন্য চরম বিরূপ ও প্রতিকূল। পড়াশোনার অজুহাতে এখানকার মেয়েরা পারিবারিক জীবন ও মাতৃত্ব হতে মাহরুম থাকতে বাধ্য হয়।

‘পড়াশোনার অজুহাতে’ কথাটা এভাবে বলার কারণ হলো, কী পড়া হচ্ছে, কেন পড়া হচ্ছে, ন্যূনতম মানে হলেও হক আদায় করে পড়া হচ্ছে কিনা, শিক্ষা সমাপনান্তে কী হবে, এসবের কোনো ঠিক-ঠিকানা নাই। ‘চলছে গাড়ি যাত্রাবাড়ি’ টাইপে চলছে পুরো উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থা।

আমাদের কন্যাদেরকে আমরা একটা নির্দয় ও চরম অনুচিত বিকল্পের মুখোমুখি করি। তা হলো, ‘শিক্ষা অথবা পারিবারিক জীবন’ এ দু’টার মধ্য থেকে যে কোনো একটাকে বেছে নাও। নানাবিধ কারণে মেয়েরা শিক্ষা নামক এই লোকাল ট্রেনে উঠে বসে। বয়স ২৫/২৬ হওয়ার আগ পর্যন্ত এর থেকে নামার সুযোগ নাই।

আফসোস আমার কন্যাদের জন্য…! (সঙ্গলাভ, পরিবার গঠন ও মাতৃত্বের সহজাত প্রবৃত্তি পূরণের জন্য) জীবনের সবচেয়ে উপযোগী সময়ে তারা থাকে অবিবাহিত। বিয়ের পর তারা (অধিকাংশ ক্ষেত্রে) চেষ্টা করে মাতৃত্বকে ঠেকানো বা বিলম্বিত করার জন্য। এরপর তিরিশের কাছাকাছি গিয়ে যখন তারা মা হওয়ার চেষ্টা করে তখন তাদের জন্য তা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ ও কষ্টকর কাজ।

কোনোমতে একটা বাচ্চা হওয়ার পর দ্বিতীয়টা হওয়ার ক্ষেত্রে তাদের খবর হয়ে যায়। এটি কোনো প্রকার রাখঢাক বা সংকোচের ব্যাপার নয়। এই ক্যাম্পাসের অনেক শিক্ষক সম্পর্কেই জানি, তারা একটা বাচ্চা হওয়ার পরে গ্যাপ দিয়েছেন। এরপরে যখন বাচ্চা নিতে চাচ্ছে তখন আর বাচ্চা হচ্ছেই না।

সোশালি ইনকারেক্ট এ’সব কথা বলার হিম্মত বা নৈতিক বল আমার সহকর্মীদের দেখছি না। আমার প্রশ্ন, কেন নয় শিক্ষা ও পারিবারিক জীবন একসাথে? কেন আমাদের মেয়েদেরকে একটার বিনিময়ে আরেকটাকে সেক্রিফাইস করতে হবে?

বয়ফ্রেন্ড রাখা যাবে, লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে প্রকাশ্যে ব্রেকআপের ঘোষণা দেয়া যাবে, জাস্টফ্রেন্ডদের সাথে জুটি বেধে এখানে-ওখানে বেড়াতে যাওয়া যাবে, কাউকে পছন্দ হলে বা পরিবেশ পেলে ‘মেইক আউট’ করা যাবে, নিদেনপক্ষে ‘ভালো মেয়ে’ হওয়ার কারণে সপ্তাহে নিয়ম করে মাস্টারবেইট করা যাবে, মাতৃস্নেহে বিড়াল পালা যাবে, কিন্তু কোনোক্রমেই বিয়ে করা যাবে না।

বিয়ে করতে হলে বহুকিছু লাগবে, কিন্তু বিয়ে বহির্ভূত সব ইয়ে করার জন্য কিছুই লাগবে না। সম্মতিই যথেষ্ট।

ছি! থুতু মারি এই সমাজের মুখে। পদাঘাত করি এই সামাজিক অপব্যবস্থার বুকে। ওয়েস্টের হাইস্কুল ও কলেজ ক্যাম্পাসগুলোতে প্রচলিত হুকআপ কালচার এখানেও চলে আসতে আর বাকী নেই — না, কথাটা আমি এমনভাবে বলতে পারছি না। অলরেডি এখানে সেক্স রেভুলেশান সফট কোরে শুরু হয়ে গেছে। বৃহত্তর সমাজ যদি অনেকবেশি রক্ষণশীল না হতো, ফেয়ার ভর্তি পরীক্ষার কারণে অধিকাংশ স্টুডেন্ট যদি গ্রাম থেকে উঠে না আসতো, তাহলে কী হতো তা খুব দূরে নয়, দিল্লির জেএনইউ’র খবর নিলেই আপনারা বুঝে যেতেন।

এই দুর্নিবার যৌন বিপ্লব ঠেকাবার একমাত্র পথ ‘সহজ বিয়ে’র ব্যাপক প্রচলন। পারিবারিকভাবে করা সরকারী বিয়ে হোক অথবা নিজেরা নিজেরা সেরে ফেলা বেসরকারী বিয়ে হোক, যারাই বিয়ে করে নেয় তাদেরকে আমি সর্বোতভাবে সহযোগিতা করি। বিয়েটাকে আমি নিচের দিক থেকে দেখি। যেনার উত্তম বিকল্প হিসেবে দেখি। তাই বিয়ে নিয়ে আমার এক্সপেক্টেশান মিনিমাম, ফ্যাসিনেশান ম্যাক্সিমাম।

আমরা একটা প্যারাডিগমেটিক কনফ্লিক্টের মধ্যে আছি। অলরেডি লুজার পজিশনে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতি নামক জাইগান্টিক রেপটাইলের কামড় অলরেডি আমরা খেয়ে ফেলেছি। ওর চোয়ালের নিচে আমাদের মুখ। আমাদের মাথাটা প্রায় অসাড় হয়ে গেছে। এই সমূহ বিপদ থেকে বাঁচার একমাত্র পথ হলো কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া এই তরুণ প্রজন্মকে সহজ বিয়ের ভেন্টিলেশান দেয়া। প্রসঙ্গ আসলেই বলি, কতোবার কতো জায়গায় কতো জনকে বলেছি এই কথাটা, ventilation prevents explosion।

ভাবতে পারেন, হাজার-হাজার মানুষ, কিন্তু নাই কোনো সেনিটারি টয়লেট? যে যেখানে যেভাবে পারে কাজ সারছে ….! কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইয়থফুলনেস নিয়ে এটাই হচ্ছে। সাংস্কৃতিকভাবে চরম উস্কানীমূলক পরিবেশে এখানকার হাজার-হাজার নর-নারী আজ অসহায়। রাজনৈতিক স্বৈরাচারের চেয়েও বড় নিপীড়ক হলো বিদ্যমান সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অপব্যবস্থা। এখানে স্বাভাবিক পন্থায় সহজাত প্রবৃত্তি পূরণের কোনো ব্যবস্থা নাই। এর বিপরীতে আছে আমাদের ঐতিহ্যবাহী পারিবারিক মূল্যবোধ ও ব্যবস্থাকে ভেংগে ফেলার সব ব্যবস্থা। অস্বাভাবিক যত পদ্ধতি হতে পারে তার সবকিছুর পথ এখানে দিবারাত্রি অবারিত। নানাভাবে। অস্বাভাবিকতাই এখানে স্বাভাবিকতা। স্বাভাবিকতা এখানে অবমাননাকর ও অগৌরবের বিষয়।

কথা একটাই, শিক্ষা সংস্কার ছাড়া সমাজ ও রাষ্ট্র সংস্কার অসম্ভব। এক শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কারের মাধ্যমে সহজেই সাধিত হতে পারে আমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের টেকসই উন্নয়ন ও সংস্কার।

দোয়া রইলো ছোট্ট সোনামণি ‘দোয়া’র জন্য। হ্যাঁ, বাচ্চাটার নাম ‘দোয়া’। ক্লাসটা ছিল ‌‘ফিলসফি অব এআই’ এর ওপরে। আজকের বিষয় ছিল সায়েন্স ফিকশান মুভি ‌‘টার্মিনেটর টু’ এর রিভিউ।

আমার জানা মতে, আজকের এই ক্লাসেই আরো কয়েকজন ছাত্রী ছিল যারা বিবাহিত। ‌‘দোয়া’র মা ক্লাসের পরে আমাকে বলেছে, ওদের আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে বেশ কয়েকজন আছে যারা বিয়ের পরেও পড়ছে। আমি আশাবাদী। নিশ্চয়ই পরিস্থিতির পরিবর্তন হবে। শীঘ্রই এমন দিন আসবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর পরই মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাবে। দাম্পত্য জীবনের সুরক্ষার মধ্যে থেকেই তারা পড়ালেখা কন্টিনিউ করবে।

ভাবতে পারেন, এতবড় বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ডে কেয়ারের ব্যবস্থা নাই?

পুরাতন কলাভবন ৩৪১ নং রুম হতে ক্লাস নিয়ে বের হওয়ার পর বারান্দাতে দেখলাম একটা বাচ্চাকে। একটা হাতলওয়ালা চেয়ারে শোয়ানো। পাশে একজন বয়ষ্ক মহিলা। বাচ্চাটার দাদী অথাব নানী। জিজ্ঞাসা করে জানলাম, বাচ্চাটার মা পাশের একটা ডিপার্টমেন্টের ছাত্রী। সে ক্লাসে আছে। শুরুতেই বলেছি, বাচ্চা নিয়ে পড়াশোনা করা এখানে অত্যন্ত কঠিন। এখানকার সকল ব্যবস্থা পাশ্চাত্য ধাঁচের, কেবল ডে কেয়ারের ব্যবস্থা ছাড়া। প্রমথ চৌধুরী অনেক আগেই বলেছেন, ‍“ব্যাধিই সংক্রামক, স্বাস্থ্য নহে।”

চাই, বিবাহিত ছাত্রীদের মাতৃত্বজনিত ‘ছুটির’ ব্যবস্থা। চাই, শাটল ট্রেনে বাচ্চা নিয়ে আসা ছাত্রীদের জন্য আলাদা বগি ও সিট প্রাপ্তির নিশ্চয়তা। তাদের জন্য চাই হলে আবাসনের নিশ্চয়তা। প্রতিটা ফ্যাকাল্টি বিল্ডিংয়ে চাই ব্রেস্ট ফিডিং কর্ণার। অত্যন্ত জরুরী হলো ক্যাম্পাসব্যাপী মানসম্পন্ন ডে কেয়ার সিস্টেম চালু করা।

বিয়ে ব্যবস্থারই বিরোধী, আমার এমন সহকর্মীরা আমার এ’সব প্রস্তাবের ঘোরতর বিরোধিতা করবে, এটি নিশ্চিত। মেয়েরা অনেক সময় ক্লাসে আলাদাভাবে বসে, এতেই তাদের প্রবল আপত্তি। ক্লাসে কেউ বাচ্চা নিয়ে আসবে, এটি তাদের কাছে অকল্পনীয়। বিবাহিত, বিশেষ করে মা হয়েছে এমন, ছাত্রীদের হেনস্থা করার কাজে তারা অত্যুৎসাহী। ভুক্তভোগীরা জানে স্যারদের চেয়ে ম্যাডামরা এ’ নিপীড়নমূলক কাজে অগ্রণী।

এখানে একটা কথা ক্লিয়ার করা দরকার। চবি দর্শন বিভাগের সকল শিক্ষক অনেক বেশি স্টুডেন্ট-ফ্রেন্ডলি। আমাদের ডিপার্টমেন্টে ছাত্র-ছাত্রীদের পারস্পরিক সম্পর্কও অত্যন্ত ভালো। পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি মশহুর। উপরের প্যাারায় আমি যা বলেছি তা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক প্রেক্ষাপটকে সামনে রেখেই বলেছি।

এগেইন, দোয়ার জন্য এবং ওর মায়ের জন্য এবং এ ধরনের সব মা’দের জন্য আপনারা দোয়া করতে ভুলবেন না। ভালো থাকেন।

মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

Faridul Alam: প্রেম করা যাবে, বিয়ে করা যাবে না। বিয়ে করা যাবে, বাচ্চা নেয়া যাবেনা। তাই প্রেমই কর, বিয়ের ধারে কাছেও যাবেনা। বিয়ের স্বাদ বিয়ে ছাড়াই যদি পাওয়া যায়, গরু না কিনে, লালন-পালনের ঝুঁকি না নিয়ে যদি দুধ খাওয়া যায়, গরু কিনার ঝুঁকি নেব কেন, স্যার? পরিবার নামক জিনিসটা পাশ্চাত্যে যাদুঘরে যাচ্ছে এখন। বাচ্চা-কাচ্চা পোলট্রি, ডেইরি ফার্মের মত করে লালিত হবে। অসুবিধা কী, স্যার?

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: পরিবারবিচ্ছিন্ন মানুষ দীর্ঘমেয়াদে অসুখী হয়ে থাকে। আঠারো লক্ষ বছরের মানব ইতিহাস কয়েক দশকে অকার্যকর হয়ে যায় না। এই আর কি।

Dilara Khan Sadia: প্রতিটা মেয়ের বাবা-মা’ই চায় মেয়েকে স্টুডেন্ট অবস্থায় বিয়ে দিতে। কারণ যে প্রস্তাব একটা মেয়ের অনার্সে পড়াকালীন সময়ে আসে, পাশ করার পর তা আর আসে না। এজন্য প্রতিটি বাবা-মা’ই চান বিয়ে দিয়ে দিতে। কিন্তু শ্বশুর বাড়ি একটা বিভীষিকাময় জায়গা, যেখানে একটা মেয়েকে পড়ার সুযোগ দেয়া হয়না বললেই চলে।

আমি একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করেছি। তখন আমার যতো বিয়ের প্রস্তাব আসতো, তারা সবাই বলতো, আমার বাবা যেন খরচ করে পড়াশোনা শেষ করেন।

একটা মেয়ে কখনও চায়না সে প্রেম করে ঘুরে বেড়াবে। সে চায় সে তার পছন্দের মানুষকে বিয়ে করে তার হাত ধরে পড়তে আসবে কিন্তু সমাজ তাকে এসব থেকে বঞ্চিত করে।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আপনার বক্তব্যের সাথে জোরালোভাবে একমত। স্বল্পমেয়াদী সম্পর্ক ছেলেরা যে কারণে করে মেয়েরা সেই কারণে করে না। ইদানীং মেইটিং মার্কেট নিয়ে ইউবিসি’র একটা কন্টেন্ট নিয়ে আমরা কাজ করছি। সেখানে ব্যাপারটাকে সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। আমার পর্যবেক্ষণের সাথেও তা মেলে।

এগেইন, থ্যাঙ্কস ফর দ্যা থটফুল কমেন্ট। স্টে কানেকটেড প্লিজ।

Mohammad Al-Mamun: আমার কাছে আপনার লিখার বিপরীতটাও সত্যি মনে হয়। আমাদের সমাজ মেয়েদের পড়াশুনাবান্ধব না। সমস্যাটা একপাক্ষিক না, দ্বিপাক্ষিক। আর্লি বিয়ের পরে অনেক শ্বশুর-শাশুড়ীই পড়তে দেয় না। অনেক মা-বাবাও মেয়েদের সংসারকেই সবচেয়ে বড় ক্যারিয়ার মনে করতে বলেন। অনেকেই এতে পড়াশুনার ইতি ঘটান। অন্যদিকে, শিক্ষিত মা-বাবারা সন্তানকে শিক্ষিত করতে চাইবেন যেটা স্বাভাবিক। মেয়েকে অর্ধমূর্খ রাখতে চাইবে না বলেই আর্লি বিয়ে দেন না। তাই বিয়েতে দেরীই হয়ে যায়।

আবার অনার্স পর্যন্ত ২০ বছরে শেষ করা গেলে অনেক সমস্যারই সুন্দর সমাধান হয়। পাশ্চাত্য রীতিতে প্লে, নার্সারি, কেজির নলেজ না দিয়ে ক্লাশ হিসেব করলে কিছু অহেতুক বার্ডেন ছেটে ফেলা যায়।

সন্তান নিয়ে পড়াশুনা অনেক কষ্টের। যে করে শুধু সেই জানে কত কষ্ট। এতো কষ্ট করে প্রোডাক্টিভিটি বের করা আরো কঠিন। কাজেই আর্লি ম্যারেজের জন্য গ্রাজুয়েশন পর্যন্ত সময়টাকে সংক্ষিপ্ত করাটাই বেশী যুক্তিযুক্ত মনে হয়।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আমি বিতর্ক এড়িয়ে চলি। তাই শুধু এটুকু বলতে চাইছি, আর্লি মেরেজের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে একমত হয়েছেন এবং একটা সুন্দর সমাধানের পথ বাতলিয়ে দিয়েছেন, যা আমিও আমার লেখায় বলেছি (শিক্ষা সংস্কার), সে জন্য ধন্যবাদ। ভালো থাকেন। যদি দোয়ায় বিশ্বাস করেন তাহলে আমার জন্য দোয়া করবেন।

আর হ্যাঁ, আমি সবার কাছেই দোয়া চাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে দোয়ায় বিশ্বাসী ভীষণ রকমের। আপনার কাছে দোয়া চাওয়াটা সেই অর্থে। আপনাকে খানিকটা বিদ্রুপ করা অর্থে নয় মোটেও।

যেখানে ভুল বুঝাবুঝির অবকাশ থাকে সেখানে সংশ্লিষ্ট পক্ষের দায়িত্ব হলো আগেভাগে প্রপার ক্লারিফেকেশন দেয়া।

Mohammad Al-Mamun: আপনার লিখার প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখেই বলছি, ব্যাপারটা আসলে আর্লি ম্যারেজ নয়, ব্যাপারটা হলো উপযুক্ত বয়সে বিয়ে। কিছু সমস্যার সমাধান করা গেলে ৯০% মানুষই উপযুক্ত বয়সে বিয়ে করতে পারবে। বিজ্ঞান বলে ৩০ এর পরে প্রেগনেন্সি মানেই বিশাল জটিলতা। অটিজম থেকে শুরু করে যত জন্মগত সমস্যা সব তখনই মূলত হয়। কাজেই বাচ্চাকাচ্চার ব্যাপারগুলো আগে হয়ে গেলে এই সমস্যার অনেক ভালো সমাধান হয়। ধন্যবাদ আপনাকে।

Jannatul Naima: শাটলে ‍দোয়া’কে নিয়ে আপুর অনেক কষ্ট হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে ষোলশহর অব্দি মেয়েটি কান্না করেই গেছে। আপু-ভাইয়া কেউ কান্না থামাতে পারেনি! আশেপাশের সবাই সহানুভূতির দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে ছিল দোয়ার দিকে। বিবাহিত আপুদের জন্য আলাদা বগি হওয়া উচিত। কিন্তু বগির এত অভাব যে স্টুডেন্টদের ভীড়ে প্রতিটা বগি ওভেনের মত হয়ে যায়।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আমার লেখাতেই যেটা বলেছি, আমাদের পুরো সিস্টেমটাই হচ্ছে বান্ধবী-বান্ধব। মাতৃত্ব এখানে কার্যত অবাঞ্ছিত। যার কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্ট এন্ড কালচারাল স্ট্রাকচারটা ফ্রি মিক্সিং কালচার হিসেবে গড়ে উঠেছে।

Mustafizur Rahman: স্যার, আমি চবিয়ান। দর্শন বিভাগের ছাত্র। আমি বিয়ে করি ২০১৩ সালের অক্টোবরে। অর্থাৎ আমি যখন অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র। আমি বিয়ে করার সময় আমাকে অনেকে অনেক কথাই বলেছিল। বলেছিল তোর ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাবে। আবার বলেছিল তোর দিয়ে কিছুই হবে না। কিন্তু আল্লাহর রহমতে একহাতে সংসার, অন্যদিকে পড়ালেখা করে জীবন অতিক্রম করেছি। যদিও সাময়িক সময় কষ্ট হয়েছে কিন্তু মহান আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। তাছাড়া আমার ছেলে এখন ক্লাস প্লে তে পড়ে। আমি মনে করি বিয়ে করলে ক্যারিয়ার শেষ হয় না বরং দায়িত্বশীল হতে শেখায়। এবং জীবনের প্রকৃত রুপ পাওয়া যায়। যারা বিয়েটাকে বোঝা মনে করে তাদের জীবনটাই সারা জীবন বোঝা হয়েই থাকবে। এবং যারা দেরিতে বিয়ে করবে তাদের চলার পথ বন্ধুর হবে। আমার অনেক বন্ধু এখনো বিয়েই করিনি। তারা অযুহাত দেখায় আগে প্রতিষ্ঠিত হই তারপর বিয়ে। তাদের উদ্দেশ্যে একটি পরামর্শ বিয়েটা সময়মত না করলে সময়মত ছেলে-মেয়েও মানুষের মত মানুষ হবে না। তাই আমি মনে করি একজন ছেলের বয়স ২২-২৩ হলেই এবং মেয়েদের ১৮-২০ বছর হলেই পারিবারিকভাবে বিয়ে দেওয়া উচিত। ধন্যবাদ সবাইকে।

Fariya Hoque Roity: আমাদের বর্তমান সমাজ ব্যাবস্থায় বিয়ের পর মেয়েকে শ্বশুর বাড়ির মানুষ পড়তে দিবে, বিনা সংকোচে, এই সিউরিটি দিতে পারলে ছাত্রাবস্থায়ই সব মেয়ে বিয়ে করত। বিয়ের পর সংসার আগে, পরে পড়া এই থিওরির জন্যই অনেকে আগে পড়া শেষ করতে চায়। যারা ছাত্রাবস্থায় বিয়ে করে সেসব মেয়ে না পারে ফুল কন্সেন্ট্রেশন পড়ায় দিতে না পারে সংসারে দিতে। দুই দিকই ঝুলানো থাকে। খুব কম ফ্যামিলি আছে যারা সংসারের চিন্তা ছেড়ে শুধু পড়ার জন্য ঘরের বউকে এপ্রেশিয়েট করে। অথচ নিজেকে সংযত রাখার জন্য এর চেয়ে উত্তম উপায় নেই।

তার উপর জীবনসঙ্গী যে সাপোর্টিভ হবে এমন কথা নেই। আমার অনেক বান্ধবীর এসএসসির পর বিয়ে হয়েছে। ওদের রেজাল্ট ভাল ছিল। হাজবেন্ড এর ফ্যামিলি চায় না পড়ুক, এজন্য পড়া বন্ধ হয়ে গেছে। একটা ফ্রেন্ড ফ্যামিলি নিয়ে স্ট্রাগল করে পড়ছে। অন্যদিকে এক্সামের ভাইবা বোর্ডে আর্লি ম্যারেজ, বেবি নিয়ে কটাক্ষ হচ্ছে। সবার ভাগ্য ভাল না। একটা মেয়ে বাবা মায়ের কাছে যতটা কম্ফোর্ট ফিল করে পড়ার জন্য, শ্বশুর বাড়িতে সে পরিবেশ নাও থাকতে পারে। এসব কারণে পড়া অবস্থায় বিয়ে থেকে বিমুখ হচ্ছে। সহজ বিয়ের সুযোগ করে দিতে হবে।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: তুমি যা বললে সেটা আমাদের সমাজের তিক্ত বাস্তবতা। আই এগ্রি। এওয়েরনেস ডেভেলপ করা ছাড়া গত্যন্তর নাই।

Fariya Hoque Roity: সাথে সাথে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষকদের সহায়তা কিন্তু অনেকাংশে বিবাহিত ছাত্রীদের চাপমুক্ত রাখে। বিশেষ করে একাডেমিক ক্ষেত্রে।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আনফরচুনেটলি অধিকাংশ ক্ষেত্রে শিক্ষকরা খুব সংকীর্ণমনা এবং এগ্রেসিভ হয়ে থাকে। বিশেষ করে ফিমেল টিচাররা মেরিড ফিমেল স্টুডেন্টদের ব্যাপারে সাধারণত নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। খুব অপ্রিয় হলেও এটি সত্য। অথচ হওয়ার কথা ছিল তার উল্টা।

Safayet Sakib: আপনার এই প্রস্তাব বা ভাবনা চিন্তা কাদের কাছে ভালো লাগবে বা কারা সাপোর্ট করবে সেটা বিষয় না। আপনি যা বলেছেন, তা বর্তমান সমাজের জন্য খুবই জরুরী। আপনার অবস্থান থেকে যদি এ বিষয়ে বারবার বলে যান, আমরা আশাবাদী একসময় তা বাস্তবে রুপ নেবে, আপনার হাজার হাজার সন্তান তুল্য শিক্ষার্থীরা এটা বাস্তবে করে দেখাবে ইনশাআল্লাহ।

Farhana Afrin Rumpa: অনেক চমৎকার একটা পয়েন্ট তুলে ধরেছেন স্যার। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দেয়ার পরপরই বিয়ে হয়। বিয়ের পর সাংসারিক দায়িত্ব পালন করে ক্লাস করতে পারবোনা – সেই কারণ দেখিয়ে আমার নিজের মা-বাবাই আমাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারে মহসিন কলেজে ভর্তি করিয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে সাক্ষাৎকারও দিয়ে এসেছিলাম। তখন আব্বু-আম্মুর উপর অনেক রাগ হলেও পরে বুঝেছি বাচ্চা নিয়ে পড়াশোনা অনেক টাফ। মহসিন কলেজে ম্যানেজম্যান্টে পড়াশোনা, গ্রামের শ্বশুর বাড়ি, ঢাকায় স্বামী, আর ছোট একটা বাচ্চা নিয়ে কী যে কষ্ট হয়েছে নিজে জানি। পরীক্ষা দেয়ার আগে সবাই হুলুস্থুল পড়ে, আর আমি মা বাচ্চার খাবারের জন্য ব্রেস্টমিল্ক স্টোর করতে ব্যস্ত। কেননা পরীক্ষা ৪ ঘন্টা, আসা যাওয়া ১.৩০ ঘন্টা এতক্ষণ বাচ্চা কী খেয়ে থাকবে? এভাবে করতে করতে এমবিএ করেছি। এটাই শুকরিয়া, অনেক মেয়েরা এই যুদ্ধটা শেষ করারও সুযোগ পায় না। যদি ক্লাসে এবং জবে বাচ্চা নিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে তবে মেয়েরা বেস্ট থেকে বেস্ট জায়গায় যাওয়ার সুযোগ পাবে। সাথে সংসারও করতে পারবে।

এখন ২ সন্তানের মা, এমবিএ সার্টিফিকেটধারী। নিজ ইচ্ছায় চাকরী করছি না, কারণ বাচ্চা দেখাশোনার জন্য কেউ নেই। আব্বু-আম্মুরও বয়স হয়েছে।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: You are a great lady, an ideal model or example for rest of the people. MashaAllah

Life is stressful. There is no easy meal. And conceding without a fight and being a failure is more stressful and disgraceful to me.

AbūSamīhah Sirājul-Islām: আমেরিকাতে অনেক ক্যাথলিকরা তাদের ছেলেমেয়েদের হাইস্কুলে (১১স-১২শ শ্রেণিতে) পড়া অবস্থায় বিয়ে দিয়ে দেয়।

Abu Hamid Mohammad Ashiqullah: অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ভালো বলেছেন স্যার। جزاكم الله خيرا

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: তোমার বাবা একদিন আমাকে বললেল, মোজাম্মেল সাহেব, নাঈমের জন্য একটা বউ আনবো। মেয়ে দেখেন। আমি বললাম, ওতো এখনো পড়ছে। উনি বললেন, তাতে কী? আমার কি টাকাপয়সার অভাব আছে? ছেলের সাথে একটা মেয়েও পালবো। অসুবিধা কী?

সত্যিই তোমরা খুব লাকি। অসাধারণ তোমাদের বাবা। আমি উনাকে সব সময়ে বলতাম, আপনাকে ডিপার্টমেন্টে বেশি মানাতো। আপনার উচিত ছিল ডিপার্টমেন্টে জয়েন করা।

তোমার বাবার সাথে আমার অনেক অনেক স্মৃতি। উনার দোয়া নিতে একদিন যাবো তোমাদের বাসায়, ইনশাআল্লাহ।

Shamim Noor: হুকআপ কালচার সম্পর্কে যা জেনেছি তা রীতিমতো ভয়াবহ। আর এটির সবচেয়ে মারাত্মক চ্যলেঞ্জের মুখোমুখি হয় মাইগ্রেট হওয়া পরিবারগুলোর মা-বাবারা। রিসেন্টলি আমি কানাডা আর ইউএসের কিছু কেইস শুনেছি। আমার ব্যাচমেট এক বন্ধু তার হাইস্কুল পড়ুয়া মেয়ে সন্তানকে নিয়ে রীতিমতো বাহিরে স্ট্রাগল করছে এসব কালচারের বিরুদ্ধে। তাদের মনে অন্য আতঙ্কও আছে, সন্তানকে বেশি চাপ দিলে আবার সেইফ হোম নিয়ে যাওয়ারও একটা বিষয় আছে। চোখের সামনে সন্তানের এমন ভিনদেশী কালচারে অভ্যস্ত হওয়া দেখে মা বাবারা রীতিমতো ডিপ্রেশনে চলে যাচ্ছেন। যে সন্তানের জন্য তথাকথিত উন্নত জীবন নিশ্চিতকরণে মা বাবারা সব ছেড়ে বাহিরে চলে যাচ্ছে, দিন শেষে হয়তো তাদের অনেককেই এসবকিছু চোখ বুজে সহ্য করা লাগে। সো পেথেটিক। স্যার, আপনার লেখাটি কয়েকটি এঙ্গেল থেকে বেশ প্রাসঙ্গিক ও যৌক্তিক।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: মেয়েদের আভিজাত্য ও পাশ্চাত্যপ্রীতি খুব মশহুর ঘটনা। সে এক আশ্চর্য বিষয়। যাহোক, সেইটা অন্য সময়ে আলাপের ব্যাপার।

Shamim Noor: That would be a nice discussion in the arena of migration psychology, sir. Indeed, it’s true… In most cases, male members having less educational background possesses good knowledge about the ultimate consequences (good, bad, challenges, etc.) of migration. Whereas, female members are a bit indifferent and not well informed about the pathologies of migration (not from a judgment viewpoint). Sometimes dependency nature pushes them into a more fragile and vulnerable situation in the post-migration situation. Except for legal migrant workers, women who have a sound background also make some gross mistakes in their decision of migration, and it seems like just a physical shift (যেকোনো উপায়ে দেশ ছাড়া দৃষ্টিভঙ্গি) without any forms of cost-benefit analysis. To explore such psychology from gender perspectives, Oliva Espin’s research is good enough, sir.

Fakhira Binte Ishak: মেয়েদের বিয়ে করতে না চাওয়া বা বিয়ে হতে বিমুখী হবার অন্যতম কারণ হলো বিয়ের পরে পড়াশোনা করার সময় পাওয়া যাবে না। সংসারে সকাল থেকে রাত অবধি সবার সেবাযত্ন করার পর নিজের পড়ার দিকে নজর দেবার সময় কোথায়? তার উপর শ্বশুরবাড়িতে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন খোঁটা, আবদার পূরণ তো আছেই। আর এদেশে বেশিরভাগ পরিবারই বাড়ির বউকে সাহায্য করার চেয়ে তার উপর চেপে দেয়াটা বেশি প্রাধান্য দেয়। সেই অবস্থায় যখন একটা বাচ্চা আসে তখন তো আরো সমস্যা। আমার নিজের দেখা এমন অনেক মেয়েকে দেখেছি সংসার আর বাচ্চা দুটোই তাকে একা সামলাতে হচ্ছে। তাকে কেউ কোনো সাহায্য করছে না। তার স্বামীও না। এমতাবস্থায় সে পড়ার কথা তো মাথায়ই আনতে পারবে না।

ব্যতিক্রমী পরিবার কিছু আছে। ব্যতিক্রমও আমি দেখেছি। কিন্তু গতানুগতিক পরিবারগুলো বউকে সাহায্য করার বিপক্ষেই থাকে। আমি নিজেও কখনো নিজেকে শিউর করতে পারি না যে আমার ভাগ্যে সেই ব্যতিক্রম পরিবারটাই পড়বে। এজন্য বিয়ে অথবা পড়াশোনা এই দুইটা অপশনে পড়াশোনা টাকে বেছে নিয়ে আছি।

Tahmina Akter: আলহামদুলিল্লাহ, স্যার, অনেক ভাল লাগলো আপনার এতো সুন্দর ভাবনাগুলো শুনে। আপনার মতো মানসিকতার টিচার অনেক বেশি প্রয়োজন আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে, অনেক, অনেক। আমি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের একজন স্টুডেন্ট। বিবিএ ৩য় বর্ষে আমার বিয়ে হয়। এখন আমার ছেলের বয়স ৮ মাস। আমি যখন বিবিএ চতুর্থ বর্ষের ২ সেমিস্টার ফাইনাল এক্সাম দেই আলহামদুলিল্লাহ তখন আমার ছেলের জন্ম হয়। আমি আল্লাহর রহমতে আমার স্বামী এবং শিক্ষকদের সহোযোগিতায় বিবিএ কমপ্লিট করি। এরপর ‍“তুমি তো আর এমবিএ করবা না, তাই না!” এরকম কত শত প্রশ্নের সম্মুখীন যে হয়েছি আর চুপে চুপে কেঁদেছি সেটা শুধু আমি, আর আল্লাহ জানি। অতঃপর আল্লাহর রহমতে স্বামীর সহযোগিতায় ৪৬ দিনের বেবিকে নিয়ে অসুস্থ মাকে সাথে নিয়ে শুরু হয় আমার এমবিএ এর সংগ্রাম। আমার হাজব্যান্ড উনার জবের কারণে ময়মনসিংহে থাকে, যার কারণে সে চাইলেও আমাকে সাথে থেকে কোনো হেল্প করতে পারেনি। আলহামদুলিল্লাহ আমি এমবিএ কমপ্লিট করলাম ২৬ জুন ২০২২, রিসার্চ সাবমিট + ডিফেন্স কমপ্লিটের মাধ্যমে। বাট আমার এই সংগ্রাম কোনো দিনও ভুলার মতো না। তবে আলহামদুলিল্লাহ আমার স্যার, ম্যাম উনারা আমাকে অনেক বেশি সহযোগিতা করেছেন। এমনও হয়েছে শেষের কিছুদিন বেবি নিয়ে রংপুরে একা থেকে রিসার্চ কমপ্লিট করে ভাইভা দিয়ে বাসায় এসেছি আলহামদুলিল্লাহ। তবে, আমার যে কী পরিমাণ কষ্ট হয়েছে তা আসলে আমি কাউকে বলে বুঝাতে পারবোনা। সামাজিক, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ আমাকে অনেক বেশি আঘাত করেছে। আমাদের দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের বেবি নিয়ে পড়ালেখার সহযোগী মনোভাব + পরিবেশ অত্যন্ত প্রয়োজন। আমি এই ১ বছরে অনেক বেশি ফিল করেছি যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে ডে- কেয়ার, ব্রেস্ট ফিডিং রুম, মায়েদের আলাদা কমনরুম অনেক, অনেক, অনেক বেশি প্রয়োজন, অনেক বেশি। এগুলা থাকলে আমার + আমার মতো মায়েদের কষ্ট অনেক কম হতো। এখনো আশা রাখি যেন সব বিশ্ববিদ্যালয়ে এগুলোর ব্যাবস্থা হয়, আর ফিউচার স্টুডেন্ট মায়েরা একটু শান্তিতে পড়ালেখা কমপ্লিট করতে পারে। আল্লাহ সব সহজ করুন। সর্বশেষ বলবো, দ্রুত বিয়ে সত্যিই অনেক কল্যাণকর, প্রশান্তির আলহামদুলিল্লাহ।

Tanvir Mahtab Fahim: চবি দর্শন বিভাগের সকল শিক্ষক অনেক বেশি স্টুডেন্ট-ফ্রেন্ডলি। আমাদের ডিপার্টমেন্টে ছাত্র-ছাত্রীদের পারস্পরিক সম্পর্কও অত্যন্ত ভালো। একদম সত্য স্যার।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: পারস্পরিক সুসম্পর্কের দিক থেকে আমার মনে হয় বাংলাদেশে আমরা সেরা।

Tanvir Mahtab Fahim: আমার ফ্রেন্ড বাচ্চা জন্ম দেওয়ার ২য় দিনে, সে অর্নাসের ভাইবা দিতে আসে বেবিসহ ‍“কার” নিয়ে। আমি ভাইবা বোর্ডে থাকা স্যারদের কাছে গিয়ে এই বিষয়ে বলেছিলাম। বলার সাথে সাথে তিনজন স্যার তিনতলা থেকে নিচে নেমে, তার ভাইবা নিয়েছিলো। এমনকি তাকে কষ্ট করে ‍“কার” থেকেও নামতে হয়নি।

আমরা মাস্টার্স পরীক্ষা দিয়ে এইবার ডিপার্টমেন্ট থেকে বিদায় নিবো। কিন্তু আপনাদের এই জিনিসগুলো আমাদের সারাজীবন মনে থাকবে এবং গর্ব সহকারেও বলতে পারবো। এখনো এইসব বিষয় গুলো নিয়ে অন্য ডেপ্টের ফ্রেন্ডদের সাথে যখন কথা বলি – তখন তারা এইভাবে ডিপার্টমেন্ট থেকে সার্পোট পাওয়ার কথা চিন্তা করতেও পারে না!

আর মাস্টার্সে আপনার ক্লাস না থাকায় আপনাকে মিস করছি স্যার!

ইমন আলী: ধন্যবাদ স্যার! কিন্তু সমাজে বিয়ে বিষয়টা কঠিন হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে বেকারত্ব! ছাত্রজীবনে তা আরো প্রকটভাবে প্রতীয়মান! যদি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি উপার্জন করার পর্যাপ্ত সু্যোগ-সুবিধা থাকতো তবে বাংলাদেশের সংস্কৃতি অনুযায়ী সামাজিক স্বীকৃত বিয়ের সংখ্যাটা বাড়তে পারতো বলে ধারণা করছি স্যার!

Md Nayeem Watto: কথা আগেরটাই — বিয়ে যত কঠিন হবে যেনা-ব্যভিচার-ধর্ষণ তত সহজ হবে।

Akhi Eyerin: আবার এই মেয়েরাই চাকরি আর সংসার একসাথে করার জন্য অনেক struggle করে, কিন্তু পড়াশোনা আর সংসার একসাথে করতে চায়না।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: ছোট বোনটা আমার, ইউ আর এন এগজাম্পল অব ফেমেলি ভেলূজ, মা-শাআল্লাহ!

Akhi Eyerin: Thank you so much brother. আপনার স্নেহ আমার জন্য দোয়া স্বরূপ।

Sanzida Sahrin: কিছুদিন আগে এক ছাত্রীকে হলে বাচ্চা কেন নিয়ে আসছে সেজন্য প্রভোস্ট তাকে ডেকে পাঠাইছেন, জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন। মেয়েদের হলে নাকি বাচ্চা আনা নিষেধ।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: সংশ্লিষ্ট প্রভোস্ট কি পুরুষ শিক্ষক, নাকি নারী শিক্ষক?

Sanzida Sahrin: প্রীতিলতা হল। নারী প্রভোস্ট। নাম: পারভীন সুলতানা ম্যাম।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আমি এটাই আশঙ্কা করছিলাম। দিনশেষে কিন্তু নারীরাই নারীদের শত্রু। খুব দুঃখজনক। ক্লাসে, ভাইভাতে, হলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব জায়গাতে নারী শিক্ষকদের হাতে নারী শিক্ষার্থীরা বেশি নাজেহাল হয়, এটা দেখেছি দীর্ঘ তিন দশক শিক্ষকতার অভিজ্ঞতায়। ভেরি স্যাড!

হলে ম্যরিড মেয়েদের রাখা যাবে না, এই নিয়ম কতটুকু যুক্তিসংগত, এই প্রশ্ন না তুললেও এটি তো জিজ্ঞাসা করা যায়, হল চালানোর অন্য সব নিয়ম কি যথাযথভাবে প্রতিপালিত হয়? সন্ধ্যার সময়ে রোল কল করা? সন্ধ্যায় গেট বন্ধ করা? পলিটিকেল ছাত্রীদের পোদ্দারির মুখে প্রভোস্ট মহোদয় কতটুকু নির্ভীক ও ন্যায়পরায়ণ? খুব জানতে ইচ্ছা করে …!

Sanzida Sahrin: এগুলো নিয়ে কথা বলা নিষেধ। নিষ্ক্রিয় দর্শকের মতো তাকিয়ে থাকতে হবে। ন্যায্য দাবী/অধিকারের কথা বললেই কতকিছুর ট্যাগ লাগিয়ে দিবে!

ওইদিন শামসুন্নাহার হলে বান্ধবীর সাথে রাতের ১/১.৩০ টায় গল্প করছিলাম। হঠাৎ দেখি দারোয়ানের সাথে বাগবিতণ্ডা হচ্ছিল ৫/৬ জন মেয়ের। ওরা খালেদা জিয়া হল থেকে ফুটবল খেলা দেখার জন্য ঢুকতে চাচ্ছিল শামসুন্নাহারে! দারোয়ান বাধা দেয়ার চেষ্টা করায় ওনাকে একহাত নিল! দারোয়ান হাজিরা খাতায় সই করতে বললেও তারা তাতে রাজি হয়নি। এই হলো অবস্থা!

শেষের কবিতা: বিশেষ করে কলেজে কোনো ছাত্রী বাচ্চা নিয়ে গেলে ম্যাডামরাই খারাপ ব্যবহার করে। আমার ভালোই মনে আছে, আমার এক সহপাঠীকে বলা হয়ছিল, ‍“বিয়ে হয়ে গিয়েছে, বাচ্চা হয়েছে তাহলে এতো পড়াশুনা করার কী দরকার বুঝিনা।” সবার পরিবেশ-পরিস্থিতি তো সবসময় এক থাকে না। তাহলে কেন আমরা আমাদের বিবেক-বিবেচনাকে বির্সাজন দিয়ে মানুষের সাথে খারাপ ব্যাবহার করি?

Rafia Jannat: এসবের পাশাপাশি আমাদের দেশীয় কালচারে বিবাহিত নারীর পরিবারে ‌‘নানা মেইনটেইন্যান্স’ দেখানোর জন্যও যে চাপটা থাকে, সেটাও রেগুলার ক্লাস, পড়াশোনা করে সামাল দেয়াটা খুব কষ্ট হয়ে যায়৷

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: ‌‘নানা মেইনটেইন্যান্স’ বলতে কী বুঝাচ্ছো, বুঝি নাই। একটু ব্যাখ্যা করে বলো।

Rafia Jannat: শ্বশুরবাড়ির বিভিন্ন দিক সামলানো, আবার বউ হিসেবেও কিছু এক্সট্রা নিয়মনীতি।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: শ্বশুরবাড়ির লোকেরা যদি বউকে আপন করে নিতে না পারে, তাহলে তো সমস্যা। অনেকক্ষেত্রে তারা তা পারে না। অনেক সময়ে পারে। আমি দু’ধরনের দেখেছি। তবে বউকে ঝি বানিয়ে রাখার টেনডেনসি চট্টগ্রামে বেশি। এই কাজে শ্বশুরবাড়ির নারী সদস্যরা বেশি একটিভ। এই দৃষ্টিতে নারীর শত্রু নারী, কথাটা সত্যি বটে।

Rafia Jannat: আপন করে নিলেও এতটা ফ্রি মাইন্ড হতে পারাটাও দুষ্কর। আবার বলতে পারছিনা যে শ্বশুরবাড়ির একজন ফ্যামিলি মেম্বার হিসেবে তার দায়িত্বও নেই কোনো৷ আর চট্টগ্রামে বউ এর নিয়মনীতি, দশকথা অন্যান্য এলাকার চেও বেশি।

Hasan Ibn Faruk Khan: স্যার, বাস্তবতায় আসলেই কি বিয়ে করে ভালো করে পড়াশোনা করা সম্ভব? আমি আমার এক মেয়ে ক্লাসমেটকে দেখেছি, প্রেগনেন্সির কারণে ইয়ার ড্রপ দিয়েছে। অথচ স্যার, সে ক্লাসে খুব ভালো স্টুডেন্ট ছিলো। এ ব্যাপারে একটু বলবেন স্যার?

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: কর্মজীবী নারীদের যদি মাতৃত্বজনিত ছুটি থাকে তাহলে উচ্চশিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত নারীদের কেন তেমন ধরনের কোনো সুযোগ বা সুবিধা থাকবে না?

Hasan Ibn Faruk Khan: এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন নীতিমান প্রণয়ন হয় নাই। যারা ফেমিনিজম দাবি করেন, তারাও এ বিষয়ে নিশ্চুপ!

Moinul Islam Nishat: স্যার, আমিও আর্লি ম্যারিজের পক্ষে। দু’জনে যদি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের হয় তাহলে বিবাহিতদের জন্যে কাপল হলের সার্পোট।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: বেচেলর টিচারদের জন্য বেচেলর ডর্ম থাকতে পারে (দক্ষিণ ক্যাম্পাসে আছে) তাহলে একটা রুম উইথ এটাচড বাথরুম, একটা ছোট্ট কিচেন ও একটা বারান্দা, এইভাবে এক একটা ইউনিট, এই ধরনের মেরিড স্টুডেন্টস ডর্ম থাকতে অসুবিধা তো নাই।

Moinul Islam Nishat: স্যার, আপনার ইতিবাচক চিন্তাগুলো যদি বাস্তবায়িত হতো তাহলে পৃথিবী হতো সুন্দর। মহান রাব্বুল আলামিন আপনাকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।

Farjana Dolon: কত কষ্ট করেছি বাচ্চা নিয়ে। জরিমানা দিয়ে সেমিস্টার ফাইনাল দিতে হয়েছে ৬০% এটেন্ডেন্স ছিলো না। [লেখাটা] অনেক ভালো লাগলো।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: গার্মেন্টসে চাকুরী করাকে হেয় প্রতিপন্ন করছি না, কথার কথা হিসেবে বলছি, একজন নারী গার্মেন্টস শ্রমিক যদি মাতৃত্বের জন্য নগদ অর্থ ও ছুটির সুবিধা পেতে পারে একজন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী কেন মাতৃত্বজনিত কারণে কোনো সুবিধা পাবে না? আমার বুঝে আসে না।

সুস্মিতা ফাল্গুনী: সহমত স্যার🙏। আমিও বর্তমানে দর্শন বিভাগে ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী, ৬ মাস বয়সী আমার কন্যা সন্তানকে নিয়ে ক্যাম্পাসে একাই থাকি, কখনো কখনো মেয়েকে বাধ্য হয়ে ক্লাসে নিয়ে যেতে হয়। আমাদের ডিপার্টমেন্ট তথা অন্য সব ডিপার্টমেন্টেও এমন বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মায়েদের দেখা মেলে, কিন্তু আমাদের এমন চরম দুর্ভাগ্য যে, বাচ্চাকে খাওয়ানোর মতো কোনো পরিবেশ পরিস্থিতি বা এমন কোনো নির্দিষ্ট স্থান নেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে, দেখা যায় বাচ্চাকে একটু খাওয়াতে গিয়ে আমাদের এমন সব অভাগা মায়েদের চরম ইতস্ততার সম্মুখীন হতে হয়।

Shah Tareq: স্যার, আমি মনে করি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কলোনিয়ালদের সফট ফোর্ট।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: ট্রু ইন আ সেন্স…

Shah Tareq: স্যার, ট্রু ইন দ্যা ইনার সেন্স হলে বেশি উপযুক্ততা পাবে বলে মনে করছি।

Jannatul Mawa Nancy: মনের সব কথাই তো স্যার বলে দিলেন। আপনার চিন্তাধারার জন্যই আপনাকে পছন্দ করি। আপনি যেসব ব্যবস্থার কথা বলেছেন, আশা করি আমি না পেলেও আমার পরে যারা আসবে তারা যেন এ সুবিধাগুলো পায়। আপনি একজন তো অন্তত আওয়াজ তুললেন। ভালো কিছু হবে আশা করি। আমার ফ্যামিলির জন্য দোয়া করবেন স্যার এবং ম্যাম।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: দেখো, তোমার মেয়ের ছবি হিট …! মাশাআল্লাহ …!! মাহমুদকে আমার সালাম জানাইয়ো।

Sultana Salma: স্যার, একজন ছেলে/মেয়ে গড়পড়তা ১৬ বছরে এসএসসি, ১৮ বছরে ইন্টারিমিডিয়েট পাস করে ফেলে। কোনো রকম সেশন জট যদি না থাকতো তবে ২৩/২৪ বছর বয়সেই অনার্স কমপ্লিট হয়ে যেতো। একটা ছেলে ইজিলি কোনো জবে ঢুকে যেতে পারতো, সাথে বিয়ে করে দায়-দায়িত্ব নিতে পারতো। আর মেয়েদের বিয়েতো একটু আগেই হয়, ইজিলি ২১/২২ এ বিয়ে হলেও খুব একটা টেনশন থাকতো না।

স্যার, গাইনোকলজিস্ট এর চেম্বারে গেলেই বোঝা যায় পরিস্থিতি দিন দিন জটিল হয়ে যাচ্ছে। PCOS, THYROID এত অল্প বয়সে মেয়েদের হয়ে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। অনেক গাইনি ম্যামরাই এখন দ্রুত বিয়ে করতে বলছেন মেয়েদের।

Sumaiya Binte Kamrul: বাবুসহ ক্যাম্পাসে আসছিলাম ২:৫০ এর শাটলে শহর থেক। ট্রেন ক্যাম্পাসে এসে থামার আগেই শিক্ষার্থীদের কী হুড়োহুড়ি! কার আগে কে উঠবে এমন। একটা ফ্রেন্ড বাবুকে নিয়ে এগিয়ে গেলো তাড়াতাড়ি নামবে বলে, ট্রেন থামার আগেই বাবুকে ধাক্কা দিয়েই একজন উঠে যায়। ধাক্কা দিছে কেন জিজ্ঞেস করায় ছেলেটি বললো, ‍“এত বেশি সমস্যা হলে পার্সোনালি গাড়ি আছে ওইগুলোতে আসেন!” কে ধরে ধরে বলবে যে আমরাও ভার্সিটির শিক্ষার্থী! 😪

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: সামগ্রিকভাবে এইটা অর্থাৎ বাচ্চার মাদেরকে অগ্রাধিকার না দেয়ার মানসিকতা, এইটা আমাদের সামাজিক সংস্কৃতির একটা বিরাট ত্রুটি। দেখা যাক, আমার ধারণায় আলাপ-আলোচনা, দাবী উত্থাপন ইত্যাদির মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি সাপেক্ষে এই ধরনের মাতৃত্ব-বিদ্বেষের অবসান ঘটবে ইনশাআল্লাহ।

Riahul Zannat: স্যার, খুব সুন্দর লিখেছেন। কিন্তু আরেকটা ব্যাপার নিয়ে যদি লিখতেন একটু। চবির অহেতুক সেশনজটের কবলে শিক্ষার্থীরা না পড়লে, আপনার মতে উপযুক্ত বয়সেই, ২২-২৩ বছরেই সব শেষ করে সবাই বিয়ে করতে পারতো। এই বয়সটা মেডিকেল সায়েন্সে উপযুক্ত বয়স সন্তান জন্মদানের, সবচেয়ে সুস্থ মা, সুস্থ সন্তান এই বয়সে হয়। আর গ্র‍্যাজুয়েশন শেষে বিয়ে করলে জীবনে পড়ালেখার আর তেমন প্যারা থাকবেনা, এতে সন্তান গঠনে মা আরো বেশি সময় দিতে পারবে। বাচ্চাও সুন্দর মায়ের কাছেই থাকবে।

চবিতে কয়েকটি ডিপার্টমেন্ট ছাড়া প্রায় সব ডিপার্টমেন্টেই অহেতুক কয়েকটি সোনালি বছর জীবন থেকে কেড়ে নেয়। বছরের পর বছর যায় এটার কোনো উন্নতি নাই।

আপনার সব ঠিক, শতভাগ একমত। কিন্তু সমাজের মানসিকতা তো আর সহজে পরিবর্তন করা যায় না। বিয়ের পরে একটা মেয়ে ঝরে পড়ে অহরহ। এরচেয়ে বিয়ের আগেই একটা ভার্সিটির পরিবেশ পাল্টে যদি আগে বের করার ব্যবস্থা করা হয়, ব্যাপারটাও মন্দ হয় না!

Sumaiya Tina: খুবই সুন্দর কথা বলেছেন স্যার। আমরা দিন দিন মুক্তমনা জাতিতে পরিণত হচ্ছি, কিন্তু বিয়ে, সংসার, সন্তান এসবের ক্ষেত্রেই আমাদের মন আর মুক্ত থাকে না। আর্লি বিয়ের কথা শুনলেই বাবা-মা, সমাজ যেন আঁতকে ওঠে। যেন এটাই বড় পাপ। বাবা-মা, ধর্মীয় শিক্ষা দেয়, ব্যভিচার করতে নিষেধ করে, কিন্তু কিছুতেই বিয়ের কথা শুনতে চায় না। আপনার মতো এতো সুন্দর করে যদি সকল অভিভাবকরাই বুঝতে পারতো!

Faijul Islam Fahim: স্যার, তৃতীয় বর্ষ পরীক্ষার আগে আমার পারিবারিকভাবেই বিয়ে হয়। এটা আমার চেয়ে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক স্যারের ইগোতে বেশি লাগে। সে আমাকে এমনসব কথা বলেছে সবার সামনে যেটা আমাকে এমনটি ভাবতে বাধ্য করে— বিয়ে করে ভুল করলাম কিনা? এমনকি তিনি আমার ব্যাচমেটের কাছেও বলেছেন বিয়ে করে নাকি আমার ক্যারিয়ার শেষ। উল্লেখ্য, বিয়ে করেছি আমার আম্মার পছন্দে। দিনশেষে পিতৃতুল্য শিক্ষকদের সব অপমান, কথা দিয়ে আক্রমণ, ছোট করা এসব মেনে নিই, ভাবী তিনি তো আমার শিক্ষক বলতেই পারেন এসব। কিন্ত, তবু, অথচ সবকিছুর পরও একটা কিন্ত থাকে, সবার সামনে তার কথা দিয়ে করা অপমানই আমাকে ভাবিয়ে তোলে। সবার জীবন সুন্দর হোক, শিক্ষক মহোদয়গণও মানবিক হোক। প্রতিটি শিক্ষকের সাথে আমাদের সম্পর্ক জ্ঞানার্জনের, ব্যক্তিগত বিষয়ে হস্তক্ষেপ কোনো শিক্ষক মহোদয় অবশ্যই রাখেন না।

Foysal Ahmed: আসসালামু আলাইকুম স্যার। ইন্টারে পড়ালেখায় চরম ঢিলেমির কারণে এলাকায় তুখোড় ছাত্র হিসেবে পরিচিতি পাওয়া আমার পরীক্ষায় খারাপ করা; যার কারণে সবার উপহাসে হতাশা, উদ্দেশ্যহীন ঘুরাঘুরি এবং এর অনিবার্য ফল হিসেবে পড়ালেখার ট্র্যাক থেকেই ছিটকে পড়ি। তাপর ১৯৯৭ সালে, ইন্টার লাইফের চার বছর পর, মাত্র বাইশ বছর বয়সে বিয়ে করি। আমার মরহুম শিক্ষক বাবা কী মনে করেছিলেন আল্লাহই জানেন, বলেছিলেন — আমার অনেক কৃতী ছাত্রের চেয়ে তুমি ব্যতিক্রম, আমার বিশ্বাস এবং দোয়া আছে যে তুমি আবারো পড়ালেখা শুরু করলে ভালোভাবে পারবে।

আল্লাহর রহমত, বাবা-মায়ের দোয়া, বউয়ের ভালোবাসায় হতাশাগ্রস্ত ভবঘুরে জীবন থেকে ফিরে আবার পড়ার টেবিলে বসি, একটা দায়িত্ববোধের তাগিদ থেকে অল্পস্বল্প আয়-ইনকামেও মনোযোগী হই। ইন্টার, ডিগ্রি, মাস্টার্স পাশ করি ভালোমতোই। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারার আফসোসও মিটে যায় পোস্টগ্রাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি ও উত্তীর্ণ হবার মাধ্যমে।

কথিত অল্প বয়সে বিয়েটাই আমার জীবনের টার্ণিং পয়েন্ট, আল্লাহ বিয়ের বরকতে আমার প্রতি রহম করেছেন। আপনার লেখার সাথে একাত্মতা পোষণ করছি স্যার। বিরক্ত হলে ক্ষমা করবেন স্যার। আমার বকবকানির একটা কারণ আছে – আমি আপনার বিষয়ের নগণ্য ছাত্র।

বিয়ে মানুষের নিজের প্রতি, পরিবারের প্রতি, সমাজের প্রতি দায়িত্বশীলতার সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। উপযুক্ত বয়সে স্ত্রী/স্বামীবিহীন জীবন — নিঃসঙ্গ জীবন।

Sajeda Banu: Assalamualaikum. খুব ভালো লাগলো আপনার লিখনি। আমাদের এখানে (USA) দেখেছি University গুলোতে Daycare এর ব্যবস্থা আছে। Daycare গুলোতে Students-রাই part time কাজ করে। varsity থেকেই তাদেরকে pay করা হয়। সেটাকে Work study বলে। এতে কর্ম সংস্থানটা হয়। school এ( pre K to 5thGrade) পর্যন্ত students-দের জন্য school ছুটির পর ৬টা পর্যন্ত school administration বাচ্চাদের রাখে। এতে যেসব বাবা মায়েরা কাজ করে তাদের জন্য সুবিধা। তবে school এর After school সুবিধাটা সব State-এ আছে কিনা আমি Sure না, তবে New York-এ আছে। অনেক official job-এও Daycare সুবিধা আছে এখানে। Summer-এ School ছুটির সময়টাতে মেয়েদের সাথেই নিয়ে যেতাম। আমার বস এতো ভালো ছিলেন পুরো summer-এ office-এর একটা room-এ উনার বাচ্চাদের সাথে আমার মেয়েরাও থাকতো। room-এ ওদের যাবতীয় খেলনা, টিভি, বেড সবকিছু। Boss আর Employee-র সন্তান এমন কোন ভেদাভেদ এ দেশে কোনোদিন অনুভব করিনি। এই দেশে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্কটাও অনেক সুন্দর!

Nishi Akter: স্যার, পোস্টটা ২ বার পড়লাম, সমাজের বাস্তব চিত্রটা যেন চোখের সামনে দেখতে পেলাম। যেনাটাকে মানুষ কত সহজভাবে দেখছে, অথচ শিক্ষার্থী অবস্থায় বিয়ে করলে তা যেন কারো সহ্যই হয়না। সমাজ, পরিবার, আত্মীয় যে যেভাবে পারে কথা শোনায়। এসব দেখার পর অনেকে নিজের ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও পরিবারকে জানাতে পারেনা বিয়ে দেওয়ার/করানোর কথা। অনেক গণ্যমান্য লোকদের সাথে এড আছি, কাউকে কোনোদিন এই বিষয়টা নিয়ে লিখতে দেখলাম না। মনের ভিতর ছিলো আপনার বলা কথাগুলো। স্যার, সবাই যদি আপনার মতো করে ভাবতো! 😪

Khan Muhammad Rifat Billah: আমি যদি পাঁচ বছর বয়সে ক্লাস টু’তে ভর্তি হই, তাহলে এসএসসি দিতে গিয়ে ১৫/১৬, এইচএসসি দিতে ১৭/১৮ বছর বয়স। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় পাস (শুধু অনার্স) করতে আমার ২২/২৩ বছর লাগার কথা। বাস্তবতা এমনটা হইলে এই সমস্যা অনেকক্ষেত্রে পড়তেই হয় না। উল্টো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি এমন বিভাগও দেখেছি যারা রেজাল্ট দিতে ১০ মাসও সময় নেয়! একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন এই অহেতুক দীর্ঘ না করলে এই আলাপ আজ বোধহয় তুলতে হতো না।

Hassan Al-Razi Chayan: আমি ও আমার স্ত্রী টুকটাক গবেষণা করি। বিয়ের পরে আমাদের গবেষণা পত্রের সংখ্যা কমেনি, বরং বেড়েছে। আমাদের মেয়েটা হবার পর ওকে পিঠে বেঁধে দুজনে ছুটে বেড়িয়েছি বনের ভিতরে। গবেষণা থেমে থাকেনি, মেয়েকে সাথে নিয়েই ব্যাঙের দুটো নতুন প্রজাতি আবিষ্কার করেছি। বিয়ে অথবা বাচ্চা ক্যারিয়ারের পথে বাধা হতে পারে এইটা আসলে একটা ফাঁকিবাজি কথা।

Habiba Bristy: প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এরূপ মনোভাবের হওয়া উচিত। অনেক মেয়েরাই আর্লি ম্যারেজের জন্য শিক্ষকদের কাছে কথা শুনতে হয়। উনাদের এক কথা, ‍“হয় বিয়ে কর না হয় পড়াশুনা। দুটা একসাথে করা যাবে না।” আমি বুঝি না এমন কথা শিক্ষিত সমাজের মুখে কী করে আসে..!

Tahura A Meem: ZR Rupa, আপনার লেখা আমি পড়ি। বেশ যুক্তি দিয়ে লিখেন, বা লেখাগুলো শেয়ার করেন।

আমার মনে হয় যার জীবনের যা মোটিভ, সে অনুযায়ী নির্ভর করে আগে বিয়ে করবে নাকি পরে। আপনার কি মনে হয় একটা জাতির একমাত্র উদ্দেশ্য যেখানে বাচ্চা পয়দাই শুধু, এটা কতটা যুক্তিসঙ্গত?

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: Tahura A Meem, বাচ্চা পয়দা জীবনের উদ্দেশ্য হতে পারে না কিছুতেই। তবে নারীদের সব ধরনের গঠন মাতৃত্বকে কেন্দ্র করেই। মানুষের নানা ধরনের পরিচয় আছে। প্রত্যেকের উচিত বিশেষ ধরনের সব পরিচয় তথা দায়িত্বকে সেই বিশেষ ক্ষেত্রে পূর্ণ করার চেষ্টা করা। মানুষের পরিচয় নিয়ে আমার কিছু পোষ্টার শেয়ার করছি: ১। মানুষ: বিভিন্ন ধরনের পরিচয়, ২। মানবিক পরিচয়ের স্তরবিন্যাস

ZR Rupa: Tahura A Meem, কে কখন বিয়ে করবে, বাচ্চা জন্ম দিবে বা বিয়ে করবে না, বাচ্চা জন্ম দিবে না সেটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার ।

Tahura A Meem: মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, thank you. ami nijeo esb niye kono conclusion e aste parina. tai jara esb noye alap koren, tader kotha suni.

Tahura A Meem: ZR Rupa, এই যে একজনের জীবনে অন্যজনের এতো ইন্টারফেয়ার, এসবে অতিষ্ট হয়ে অনেকে দেশ ছাড়ছে।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: ZR Rupa, সামাজিক বিষয়গুলোকে দেখতে হয় হলিস্টিক এপ্রোচে বা সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ হতে। পার্টিকুলারলি কারো জন্য কোনো কিছু ওয়ার্কিং, সুইটেবল ও ট্রু হলে সমাজের বাদবাকী সবার জন্যই তা ঠিক তাই হবে, এমন নয়। সেজন্য ‍“কে কখন বিয়ে করবে, বাচ্চা জন্ম দিবে বা বিয়ে করবে না, বাচ্চা জন্ম দিবে না সেটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।” – এই কথাটা স্পেসিফিকেলি কারো জন্য বা অল্প সংখ্যক মানুষের জন্য সত্যি হতে পারে। এই অল্পকিছু ব্যতিক্রমকে একোমোডেইট করা বাদবাকী বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর দায়িত্ব।

ইমানুয়েল কান্টের মতে, যা অনুরূপ সবার জন্য তুমি অনুমোদন করতে পারবে না তা তুমি নিজের জন্য সঠিক হিসেবে নিতে পারো না।

তো, সব মেয়েরা যদি ‍“কে কখন বিয়ে করবে, বাচ্চা জন্ম দিবে বা বিয়ে করবে না, বাচ্চা জন্ম দিবে না সেটা একান্তই তার ব্যক্তিগত ব্যাপার” – এই নীতি ফলো করে তাহলে মানব সমাজ বিলুপ্ত হবে। যদি অধিকাংশ এটাকে অনুসরণ করে তাহলেও উক্ত সমাজ প্রতিদ্বন্দ্বী সমাজের কাছে পরাভূত হবে। আই থিংক ইউ হেভ গট দ্যা পয়েন্ট। থ্যাঙ্কস।

ZR Rupa: মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, মানব সমাজ বিলুপ্ত হবার প্রশ্নই আসে না। কারণ কারো ইচ্ছা আছে বিয়ে করার, বাচ্চা জন্ম দেয়ার, আবার ঠিক সেরকম কারো ইচ্ছে আছে বিয়ে না করার, বাচ্চা জন্ম না দেয়ার। যারা বিয়ে করছে, করবে, বাচ্চা জন্ম দিচ্ছে, দিবে, তাদের জন্যই তো মানব সমাজ বিলুপ্ত হবে না। বাচ্চা জন্ম দেবার অধিকারটা শুধুমাত্র যার শরীর তার নিজের।

Firoz Alam: একটা আর্নিং সোর্স থাকাটা জরুরী ৷

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আয় থাকাটা জরুরী না, আয়ের উপায় অনুসন্ধান করাটা জরুরী। আল্লাহর ওয়াদা, এ ধরনের ক্ষেত্রে তিনি বরকত দান করবেন।

Asiful Islam: মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, স্যার, আফসোসের বিষয় – মহান আল্লাহ কর্তৃক এই ওয়াদায় মানুষের বিশ্বাস ও আমল একেবারেই ঠুনকো, নেই বললেও বোধহয় ভুল হবেনা।

Muhammad Ariful Haider: স্যার, আপনার প্রতি অনেক দু’আ রইল৷ যুবতীদের ২০ এর মধ্যে বিয়ে নিয়ে ভাবা উচিত, ছেলেদের ২৩ এর মধ্যে৷ উভয়টাই ক্যারিয়ারের জন্য কল্যাণকর৷

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: দা আর্লি দা বেটার।

Muhammad Akram Hossen: স্যার, আমি উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করার পর্যায়ে পারিবারিকভাবেই বিয়ে করি! কিন্তু সামাজিকভাবে অনেকের নিকট হেয় হতে হয়েছে।

এখন আমরা দুজনেই পড়াশোনা করি, আমি এলএলবি করছি, সে বাহিরের (কানাডা) যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা একসাথেই চলে যাবো।

কিন্তু সমাজ আসলে মন্দ ও নোংরামিকে ভালোভাবেই মেনে নিতে পারে, কিন্তু ভালো জিনিসটাকে সহজে মানে না। আপনার মতোই আমার কলেজের অধ্যক্ষ মহোদয় আমাদের সাহস দিয়েছিলেন, বিয়ে করায় ওনি খুব খুশিও হয়েছিলেন! আপনাদের মতো শিক্ষক খুব দরকার স্যার!

বিয়ে মানেই ক্যারিয়ার শেষ এমন ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: তোমাদের জন্য দোয়া করি, নিশ্চয়ই তোমরা সুখী ও সফল হবে।

Hasibur Rahman: কয়েকদিন আগে না মাভাবিপ্রবি’র মাথামোটা প্রশাসন বিবাহিত মেয়েদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছিল!

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: সো প্যাথেটিক। বিবাহিত ছাত্রীদের ওপর যারা ক্র্যাকডাউন করে তারা সাইকোপ্যাথ। মানসিকভাবে অসুস্থ। নির্বোধ। শিক্ষক নামের কলঙ্ক। হলে সন্ধ্যার পর রোল কল করার নিয়ম। সেজন্য সহকারী প্রভোস্টদেরকে বলা হয় হাউজ টিউটর। কই, তারা কি সেটা করে? পারে পলিটিকেল ছাত্রীদের দৌরাত্ম্য ঠেকাতে? সূর্যাস্ত নিয়ম কি প্রতিপালিত হয়? আজব !

Mehedi Hasan Niloy: Naeem Hasan, আর্লি ম্যারিজের পক্ষে দুই-চার লাইন বললে মানুষ অসামাজিক, খ্যাত, সেকালের মানুষদের মতো মন-মানসিকতা ইত্যাদি ট্যাগ লাগিয়ে দেয়! 😅

Naeem Hasan: Mehedi Hasan Niloy, স্টাবলিশমেন্টের বিরুদ্ধে যাইতে হবে। স্টাবলিশমেন্টের বিরুদ্ধে যাওয়াটাই বিপ্লব, জেহাদ।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: Naeem Hasan, যদি স্টাবলিশমেন্টটা খারাপ ও ক্ষতিকর হয়। স্ট্যাবলিশমেন্ট ভালোও হতে পারে, খারাপও হতে পারে। এই জন্য একটাকে আমরা বলি সংস্কৃতি ও অপরটাকে বলি অপসংস্কৃতি।

Ruhul Amin: স্যার, ছেলেদের বিবাহের পারফেক্ট বয়স কোনটি হতে পারে?

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: এট দেয়ার লেইট টিন এইজ, আইডিয়েলি।

Tomal Khandakar: মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, sorry for interruption, but লেইট টিন এজ কি স্যার একটু বেশি তাড়াতাড়ি হয়ে যায় না?

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: ‌‘প্রাপ্তবয়ষ্ক’ বা বালেগ হওয়ার মানে কী, তা যদি কেউ বোঝে, তাহলে সে নিজেই বুঝে যাবে কখন কী করার সময়। যার ‌‘ঘুম’ ভেঙ্গে গেছে সে উঠে পড়বে এবং প্রাতঃরাশ গ্রহণ করে কর্মতৎপর হবে। যার এখনো ‌‘ঘুম’ ভাঙ্গে নাই সে যখন ‌‘জাগ্রত’ হবে তখন থেকে তার দিবস শুরু হবে। আশা করি বুঝতে পেরেছো।

কোনো সমাজ যদি এই স্বাভাবিকতার জন্য উপযুক্ত না হয় তাহলে সমাজ সংস্কারকদের কাজ হবে উক্ত সমাজকে সংস্কার করার জন্য সচেষ্ট হওয়া।

লেখাটির ফেইসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *