ক’দিন আগে এক জায়গায় মন্তব্য করেছিলাম: এই জনপদে ইসলামের আদি প্রচারকারীরা ছিলেন অনেক বেশি সহনশীল, সামাজিক চরিত্রের, আধ্যাত্মিক ও নৈতিক উৎকর্ষতাসম্পন্ন। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল positive, inclusionist and accommodative। এখনকার ইসলামপন্থীরা ইসলামের প্রচারক নন, বরং নিজেদের মতো করে তারা ইসলামের সোল এজেন্ট বা রক্ষক। যার কারণে এখনকার ইসলামপন্থীদের কাছে ইসলাম ততটা দাওয়াতের বিষয় নয়। বরং অনেকখানি কায়েমের বিষয়। স্বাভাবিকভাবেই তারা পূর্ববর্তীদের বিপরীতে অনেক বেশি negative, intolerant and seclusionist।

যার কথার উত্তরে এই মন্তব্য করেছিলাম তিনি এর উত্তরে বলেছেন, “‘ইসলাম কায়েমের বিষয়’ কি ইসলাম কায়েম নাই এমন অনুমানের ওপর নির্ভরশীল না? আমি তো এই নোশন সাবস্ক্রাইভ করি না। কলোনিয়াল শাসনের প্রেক্ষাপটে এই অনুমানের কিছুটা ভিত্তি থাকলেও এখন এই নোশনকে আমি সঠিক মনে করি না।”

সেখানে আমি আর কথা বাড়াই নাই। সম্প্রতি আমি “একজন পরাজিতের বিজয় ভাবনা” শিরোনামে একটা লেখা শেয়ার করেছি যাতে ইসলাম কায়েমের বিষয়ে প্রসঙ্গক্রমে বলেছি:

দুনিয়ার মধ্যে একজন ঈমানদার থাকা মানেই হলো ইসলাম (ন‍্যূনতম মানে) কায়েম আছে। দুনিয়ার বুকে একজন কাফের থাকা মানে ইসলাম (সর্বোচ্চ মানে) কায়েম নাই। ইসলাম কায়েম করার চেষ্টা হলো একটি ধারাবাহিক ও নিরন্তর কার্যক্রমের ব‍্যাপার। এমনকি দুনিয়ার সব মানুষ মুমিন-মুসলমান হয়ে গেলেও বলা যাবে না, ইসলাম (পরিপূর্ণভাবে) কায়েম হয়েছে, যদি সব মুসলমানেরা ‘নফসে মুতমাইন্না’ বা এহসানের স্তরে উন্নীত না হয়।

দুনিয়াতে মানুষকে পাঠানো হয়েছে ইসলাম কায়েম করার জন্য। আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব করা মানে আল্লাহর হুকুম কায়েম করা। ইসলাম কায়েম করা, আল্লাহ তায়ালার প্রতিনিধিত্ব করা, আল্লাহর হুকুম কায়েম করা, দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা তথা একামতে দ্বীন, এইসব পরিভাষার সবগুলোই হচ্ছে সমার্থক কথাবার্তা বা synonymous rhetoric।

ব্যক্তি থেকে শুরু করে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, বিশ্ব, বিশ্বব্যবস্থা, এক কথায়, কোনো কিছুই ইসলাম কায়েমের আওতামুক্ত নয়। তবে কথা হলো, এই কাজে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও ব্যক্তিবর্গের ঐকান্তিক ও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা হলো সফলতার শর্ত। বাস্তব তথা বস্তুগত সফলতা কতটুকু পাওয়া গেলো তার উপর প্রচেষ্টাকারী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সফলতা নির্ভর করবে না।

ইসলাম যদি কায়েমের বিষয় না হয় তাহলে what Islam actually has come for? কোনো মানুষের জীবনে এমন কোনো ক্ষেত্র নাই, যা ইসলাম কায়েমের আওতাবহির্ভূত। একইভাবে, ইসলাম তথা ইসলামের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও ব্যবস্থাপনা কায়েম করা, এর উৎকর্ষতা সাধন এবং দ্বীন বা জীবনব্যবস্থা হিসেবে একে অক্ষুন্ন রাখার অপরিহার্যতা নাই, এমন কোনো সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা বিশ্ব হতে পারে না।

এ বিষয়ে কয়েকদিন আগে এই সাদামাটা ভিডিওটা বানিয়েছি। আনএডিটেড। মোবাইলে রেকর্ড করা। ফেইসবুক টাইমলাইনে দেয়ার আগে কোনো ভিডিও দেখতে চাইলে কিংবা ফেইসবুকে শেয়ার করি না এমন ভিডিওগুলো দেখতে চাইলে “সামাজিক আন্দোলন” চ্যানেলটা সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারেন।

পোস্টটির ফেইসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *