যুক্তিবুদ্ধির সাথে ইসলামী শরীয়াহর সম্পর্ক কী? রিজন-রেভিলেশনের প্রচলিত এই তথাকথিত ডিলেমা সম্পর্ক, বিশেষ করে এ সংক্রান্ত আমার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে এই কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনেন। যুক্তিবুদ্ধির সম্ভাব্যতা ও সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে আপনার এতদিনকার ভুল ধারণা কেটে যাবে। আশা করি।

সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকজন আগ্রহী অংশগ্রহণকারীর সাথে আমি কতিপয় সমকালীন ইস্যু নিয়ে এক্সক্লুসিভলি কথা বলেছি। ঘরোয়া আড্ডা। দিনব্যাপী। দুইটা আলোচনা পাবেন ‘যুক্তি ও জীবন’-এই ইউটিউব চ্যানেলে। একটা আলোচনা পাবেন ‘সামাজিক আন্দোলন’-এই চ্যানেলে। আলোচনার টাইটেলগুলো হচ্ছে:

১. বেহেশতে খোদাকে দেখার তাৎপর্য

২. বিপ্লব, গণতন্ত্র, খেলাফত ও ইসলামী রাষ্ট্র

৩. বিবর্তনবাদ, নাস্তিকতা ও ইসলাম

ফেসবুক থেকে নির্বাচিত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

Mohibbur Rahman Sumon: ভালো লাগলো স্যার, যাঝাকাল্লাহু খাইরান। তবে ইসলামের সবকিছু যে ফিলোসফিভিত্তিক হতে হবে, তা কিন্তু নয়। বরং ইতিহাস সাক্ষী, যখনই কেউ ইসলামের কোনোকিছু ফিলোসফির সাহায্যে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছে, বিশেষ করে আল্লাহর সীফাত সংক্রান্ত বিষয়গুলো, সেক্ষেত্রে সালাফদের নীতি থেকে সরে এসেছে। আর ইসলামের প্রতিটি শাখা ব্যাপক। সুতরাং এর স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে হলে ব্যাপক পড়াশোনা প্রয়োজন, যেমন প্রয়োজন একজন মানুষকে ফিলোসফি নিয়ে কথা বলতে হলে।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: জীবন ও জগত সম্পর্কিত কোনো বিষয় ফিলোসফির বাইরে হতে পারে না।

ইসলাম হলো ফিলোসফির একটি আউটকাম। আমিসহ অনেকের দৃষ্টিতে ইসলামই হচ্ছে জীবন ও জগতের মৌলিক প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর ও সমাধান।

ফিলোসফির দুটি দিক:

(১) জীবন ও জগতের মৌলিক প্রশ্নগুলোকে যুক্তি দিয়ে ডিল বা মোকাবেলা করার পদ্ধতি।

(২) জীবন ও জগতের মৌলিক প্রশ্নগুলো উন্মুক্ত যুক্তিভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে বিশেষ কোনো সমাধানে উপনীত হওয়া।

এর প্রথমটি হচ্ছে ফিলোসফির মূল জায়গা। যুক্তির গঠন-কাঠামো, যাকে আমরা বিবেক-বুদ্ধি হিসেবে বলি তা সবার জন্যই সমান। খোদা বা প্রকৃতি প্রদত্ত। যদিও সবাই এটিকে সমানভাবে কাজে লাগায় না।

দ্বিতীয়টি হচ্ছে এর পরিণতি বা আউটকাম। যুক্তিকে যে যেভাবে কাজে লাগায় সে সেই ধরনেরই এক্সপেক্টেড আউটকাম বা পরিণতিতে পৌঁছায়।

ইসলাম ছাড়াও জীবন ও জগতের মৌলিক প্রশ্নগুলোর যুক্তিসঙ্গত উত্তর আরো অনেক কিছু হতে পারে। যেগুলো হলো ইসলামের প্রতিদ্বন্দ্বী মতাদর্শ।

মূলত সমান হওয়া সত্ত্বেও সব যুক্তি সবার কাছে সমানভাবে গ্রহণযোগ্য মনে হয় না। তাই প্রত্যেকে একই ফিলোসফিক্যাল ওয়েতে তথা একই ধরনের যুক্তিসঙ্গত পদ্ধতিতে বিচার বিবেচনা করার পরও যার যার দৃষ্টিভঙ্গি অনুসারে আমরা এক একটি বিশেষ মত, পথ ও তত্ত্বকে অপরটি তুলনায় প্রাধান্য দিয়ে থাকি। অবশেষে সেটাকেই একমাত্র সঠিক বলে গ্রহণ করি। নিজের কাছে গ্রহণযোগ্য যুক্তিকে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করি।

ভিন্ন ভিন্ন মাত্রা ও দৃষ্টিভঙ্গি হতে প্রয়োগের কারণে একই যুক্তি-পদ্ধতির ফলাফল বিভিন্ন রকমের হওয়াটা আমাদের জীবনবোধ তথা meta-theory or paradigm of life-এর উপর নির্ভর করে।

লেখাটির ফেসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *