টেকসই অর্থাৎ বিতর্কের ঊর্ধ্বে মোটামুটি গ্রহণযোগ্য কোনো শিক্ষনীতি কি আমাদের দেশে আদৌ হবে? মনে হয় না। কারণ, ‘আমরা’ কারা এটা নিয়েই আমাদের যত গণ্ডগোল। মানে আমরা বাঙালী (সেক্যুলার) নাকি বাংলাদেশী (ইসলামপন্থী) – হয় এর ‘সমাধান’ হতে হবে, না হয় এসব প্রশ্ন কোনো এক ‘জাতীয় চেতনায়’ ভেসে যেতে হবে। এক সরকার আসবে, আর একেকটি ‘জাতীয় শিক্ষানীতি’ করবে। যথারীতি পরবর্তী সরকার এসে তা উল্টাবে। আসল সমস্যা হলো আমাদের নজিরবিহীন দলবাজি। নিজ নিজ দলের প্রতি আমাদের আনুগত্য সীমাহীন, প্রায় ধর্মীয় চেতনার কাছাকাছি।
যতই আমরা একমুখী শিক্ষার কথা বলি, মাদ্রাসা ব্যবস্থাকে তুলে দেয়া বিদ্যমান বাস্তবতায় অসম্ভব। মাদ্রাসা শিক্ষার বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়ে একে সংস্কার করা সম্ভব। সরকার চাচ্ছে মাদ্রাসা শিক্ষার অবলুপ্তি, চলমান সংস্কার হচ্ছে আসলে সাইনবোর্ড মাত্র।
মাদ্রাসা শিক্ষার সাথে সম্পর্কিত ব্যক্তিবর্গ অসম্ভব রকমের হীনমন্যতায় ভোগে। তাই তাদেরকে যত নেগেটিভ অ্যাটিচ্যুডে দেখা হবে তারা ততই চেতবে। এদেরকে সামলানো অত্যন্ত কঠিন। যে বীর সরকার জামাত-শিবিরকে ঘরে ঢুকিয়ে দিয়েছে তারাই মাদ্রাসাওয়ালাদের সাথে সমঝোতা করেছে। চট্টগ্রামে হাটহাজারী মাদ্রাসার সাথে গণ্ডগোল, গ্রেফতার এবং একদিনের মধ্যেই সকল বন্দীর মুক্তি দিয়ে মামলা প্রত্যাহারের ঘটনা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে।
যাহোক, আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কেমন হওয়া উচিত? আমাদের দেশ-সমাজ যেমন, ঠিক তেমনি। সমন্বয়ী। যাতে আমাদের স্ব স্ব ধর্মীয় পরিচয় সহকারে আমরা এক উন্নত বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে নিজেদের ভাববো, গড়ে তুলতে চাইবো।