[২০১২ সালের ১ জুন তখনকার উঠতি সংস্কারবাদীদের একটা নিজস্ব গ্রুপে এই শিরোনামের একটা পোস্টে আমার দেয়া মন্তব্যগুলোর কম্পাইলেশন হলো এই লেখা। লেখাটা পড়ার সময়ে এটি খেয়াল রাখার অনুরোধ করছি। ‘একজন পরাজিতের বিজয় ভাবনা’ শিরোনামে আমার সাম্প্রতিক একটা লেখার বিষয়বস্তুর সাথে সংশ্লিষ্টতা লক্ষ করে এত বছর পরে এটি একটা স্বতন্ত্র রাইটআপ হিসাবে পোস্ট করছি।]
আমি ব্যক্তিগতভাবে ওসব জায়গায় যাওয়া পছন্দ করি না। এমনকি আমি যখন চবিতে একটা হলের সিনিয়র হাউস টিউটর ছিলাম তখন অফিশিয়াল দায়িত্ব থাকা সত্ত্বেও আমি সেখানে যাই নাই। এসব কিছুর পরেও আমাকে বলতেই হচ্ছে, সম্প্রতি ইন্তেকালকারী প্রফেসর ড. আনওয়ারুল হক খতিবী স্যারকে আমি এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তিনি অত্যন্ত দ্বীনদার, তাকওয়াসম্পন্ন, উচ্চমানের গবেষক ও জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন।
চবি শিক্ষক সমিতি লাউঞ্জে আমি উনাকে বললাম, ‘স্যার, শহীদ মিনার ও স্মৃতিসৌধে ফুল দেয়া তো হারাম…’। উনি লাউঞ্জের মাঝামাঝি একটা নির্দিষ্ট সোফায় বসতেন। আমার এ কথা শোনামাত্র স্যার আমার দিকে ঘুরে বসে বললেন, ‘তোমাকে এ কথা কে বলেছে? শহীদ মিনারে ফুল দেয়া হারাম হওয়ার ‘নস’ কী?’ আমি কিছুটা থতমত খেয়ে বললাম, ‘আমি এমনটা ভাবছিলাম।’ যাহোক, এ নিয়ে স্যারের মত জানতে চাইলে স্যার বললেন, ‘এসব কাজ স্রেফ লোকাচার বা উরুফ। এবং এগুলো ফালতু কাজ হিসাবে পরিত্যাজ্য।’ জীবনে এই প্রথম আমি ‘নস’ আর ‘উরুফ’ শব্দ দুটোর সাথে পরিচিত হলাম।
মরহুম খতিবী স্যার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। তিনি মাওলানা মওদূদীর কিছু প্রোগ্রামে উপস্থিত ছিলেন। মাওলানা আবদুর রহীমের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ঢাকা আলীয়ায়। তিনি জ্ঞান গরিমায় ও চালচলনে ছিলেন ড. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর মতো। শিক্ষকসুলভ বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন। স্যার জামায়াত করতেন। কিন্তু রিপোর্ট লিখতেন না। যে কোনো বিষয়ে তিনি ছিলেন অত্যন্ত নিরপেক্ষ ও নির্ভরযোগ্য। ওয়াজ করতেন না। সেমিনার করে বেড়াতেন না। অনেকটা ইনট্রোভার্ট চরিত্রের। দলমত নির্বিশেষে সবাই উনাকে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করতো। আমি সুযোগ পেলেই উনার পাশে বসার ও কথা বলার চেষ্টা করতাম। উনার দৃষ্টিতে ১৯৭১ সালে ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব এককভাবে অধ্যাপক গোলাম আযমের। আমার কোনো এক ব্লগ লেখায় উনার নাম না ধরে আমি এই রেফারেন্স দিয়েছি।
ইসলামী সংস্কৃতি থাকা না-থাকা প্রসঙ্গ:
একটা প্রচলিত পপুলার ধারণা হচ্ছে, সবকিছুর একটা ইসলামী ভার্শন আছে, থাকবে, না থাকলে বানিয়ে নিতে হবে। এর মানে ইসলামী সংস্কৃতি নাই, হতে পারে না – এমন নয়। ইসলাম হলো জীবন ও জগত সম্পর্কে এক বিশেষ চিন্তা ও আচরণগত বৈশিষ্ট্য। ইসলাম কেবল নামমাত্র নয়। একটা স্পেসিফিক প্যাটার্নে গড়ে উঠাটা হলো ইসলাম। শুধুমাত্র ব্যক্তিগতভাবে স্বীয় মতাদর্শগত পরিচয় দেবার সময়ে ‘ইসলাম’ নামের সাথে নিজেকে আইডেন্টিফাই করাটা আবশ্যক। সমাজ বা রাষ্ট্রের নামে ‘ইসলাম’ দেয়ার কোনো বাধ্যবাধকতা নাই, যদিও সেখানকার ল অব দ্য ল্যান্ড ইসলামী শরীয়াহ। সংস্কৃতি বা রাজনীতিতেও ইসলাম ইসলাম করা তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজ নয়। ‘ইসলামী সংস্কৃতি’ কথাটা ‘ইসলামী গণিতের’ মতো শোনায় কিনা ভেবে দেখা দরকার!!
অবশ্য, ‘ইসলামী সংস্কৃতি’ বলতে কিছু নাই, বা হতে পারে না – এসব আমার বক্তব্য নয়। কিছু লোকেরা সবকিছুর ইসলামী ভার্শন দেখতে, বের করতে সুখবোধ করে, ক্ষেত্র বিশেষে মরিয়া হয়ে উঠে – আমি এই মনোভাবের বিরোধিতা করছি মাত্র। মুসলমান যারা, তারা কি আলাদা কোনো মানব প্রজাতি? তা তো নয়। তাই না? বরং তারা আগাগোড়াই মানুষ। কিছু বিশ্বাস ও কর্মগত দিক থেকে তাদের সাথে অপরাপর মানুষের মধ্যে মৌলিক তফাৎ বিদ্যমান। এই যা। আমরা অনেক সময় পার্থক্যটাকেই বড় করে দেখা এবং সার্বক্ষণিকভাবে তুলে ধরতে আগ্রহী হয়ে থাকি। যেটি দাওয়াতী চরিত্রের জন্য ইতিবাচক নয়। মুসলিম পরিচয়ের মতো ইসলামী সংস্কৃতিরও একটা নিজস্ব ও মৌলিক ধরন আছে। যেটি মানবিক ও গণসংস্কৃতির একটা নির্দিষ্ট ধরন বা ভার্শন মাত্র। এর বাইরে নয়।
সংস্কৃতি বুঝার আগেই আমরা ‘ইসলামী সংস্কৃতি’ নিয়ে টানাটানি শুরু করি। সংস্কৃতি না বুঝেই ‘ইসলামী সংস্কৃতি’ প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ি। গণিতের ইসলামীকরণ দরকার হয় না কেন? কারণ এটি নৈর্ব্যক্তিক। সংস্কৃতিরও এমন কিছু সার্বজনীন তথা কমন আসপেক্ট ও ফেনোমেনন আছে। একইসাথে আছে কিছু লোকাল আসপেক্ট ও ফেনোমেনন। আমার খারাপ লাগে, এই কমন ও লোকাল ফেনোমেননগুলোকে না বুঝেই, গণ্য না করেই আমরা ইসলামী সংস্কৃতির একটা কল্পরূপ তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়ি, বিতর্কে লিপ্ত হই। অবশেষে পিউরিটানিক এক্সট্রিমিজমের কোনো ফর্ম বা ফরমেটের কাছে আত্মসমর্পণ করি।
বিদআত প্রসঙ্গ:
শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে এই আলোচনা সংস্কৃতি-কালচারের প্রসঙ্গ ছাড়িয়ে বিদআতে এসে ঠেকে। সুন্নাহ ও বিদআত নিয়ে যারা লিখেছেন তাঁরা ইহতিয়াত বা সতর্কতাবোধের কারণে হোক বা যে কোনো কারণেই হোক, যত্রতত্র বিদআত শব্দটির (অপ)প্রয়োগ করেছেন। এ মুহুর্তে আমার সামনে ড. আহমদ আলীর বিদআতের ২য় খন্ড মওজুদ আছে। এতে তিনি মৃতের কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করাকে সাওয়াবের নিয়তে করা হলে বিদআত, আর সামাজিক প্রথা হিসাবে করা হলে হারাম বলেছেন। সওয়াবের নিয়তে করা হলে বিদআত হওয়াটা স্পষ্ট। সওয়াবের নিয়ত ছাড়া নিছক সামাজিক প্রথা হিসাবে করা হলে হারাম কেন হবে তা বুঝছি না।
আকীদা ও সুন্নাহ সংক্রান্ত বিষয়াদিতে আমাদের দেশে ব্যাপক বিভ্রান্তি রয়েছে – এটি যেমন সত্য, তেমনি আকীদা সংশোধন ও সুন্নাহ প্রতিষ্ঠার জন্য ইদানীং যারা কাজ করছেন তাঁরাও ক্ষেত্রবিশেষে বাড়াবাড়ি করছেন – সেটিও স্পষ্ট। কুফর, হারাম, শিরক, বিদআত – এ ধরনের নেতিবাচক বিষয়গুলোর ফ্রিকোয়েন্ট ব্যবহারকে আমি অত্যন্ত ভয় পাই। এসব থেকে আমাদের বাঁচতে হবে। আমার এই কথাটা স্রোতের সম্পূর্ণ বিপরীতে হলেও এটাই হলো বাস্তব চিত্র। কুফর, হারাম, শিরক ও বিদআত হিসাবে যা কিছু তা আপনাতেই প্রকাশিত হবে। ফরজ ও হকের মতো এসব বিষয় অপ্রতিরোধ্য বা অবভিয়াস। এসব বিষয় যখন এসে যাবে, স্পষ্টতই প্রকাশ পাবে, তখন তা সর্বোতভাবেই বর্জন বা প্রতিরোধ করতে হবে। তাহারাতের মাসয়ালার মতো।
খিলাফে সুন্নত মাত্রই বিদআত নয়:
সুন্নাহ আর বিদআতের মাঝে খিলাফে সুন্নাত আর উরুফ (প্রথা) নামক দুটি বিষয় আছে। মাওলানা আবদুর রহীম থেকে মাওলানা আহমদ আলী, যারাই সুন্নাত ও বিদআত বিষয়ে লিখেছেন তাঁরা বিষয়টাকে একাট্টা বাইনারী সিস্টেমে দেখেছেন। হয় সুন্নত, না হয় বিদআত। অথচ, বিষয়টা এ রকম দ্বি-স্তরের নয়, বরং কমপক্ষে চার স্তরের। ফরজ, হারাম, শিরক, বিদআত, কুফর এই নোশনগুলোর গুরুত্ব ও তাৎপর্য এতটাই বেশি যে, এসব বিষয়কে যতটা সুনির্দিষ্ট ও সীমিত রাখা যায় ততটাই তা নবী করিমের (সা) আচরিত কর্মপন্থার সাথে মিলে। বিশেষ করে এই একবিংশ শতাব্দীতে তা আরও বেশি গুরুত্বের দাবিদার ও তাৎপর্যবহ। তাই আমাদের ঈমান ও ইসলামকে অত্যন্ত মৌলিক ও সীমিত শর্তের মধ্যে ভাবতে হবে। এজন্য দ্বীন ও শরীয়াহর পার্থক্যটা সবসময়ে বিবেচনায় রাখা দরকার।
প্রথা হিসাবে কফিনে পুষ্টস্তবক দেয়াটা হারাম হবে – এই দাবির বিষয়ে ড. আহমদ আলী ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, অন্য ধর্মাবলম্বীদের অনুকরণ করার কারণে তা হারাম হবে। তখন আমি বললাম, মনে করেন নির্দিষ্ট কোনো একটা কাজ অন্য ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় অনুভূতি থেকে ধর্মীয় কাজ হিসাবে করে থাকে। একইসাথে এই কাজটি বিশেষ কোনো ধর্মীয় অনুভূতি ছাড়াই, ধর্মীয় কর্তব্য মনে না করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোকেরা লোকাচার হিসাবে করে থাকে। এমতাবস্থায় এই ধরনের কোনো কাজ মুসলমানদের কেউ যদি সামাজিকতা রক্ষার জন্য করে তাহলে তা কি হারাম হবে? এ প্রশ্নে তিনি কিছুটা ইতস্তত করেন।
তখন আমি বললাম, আমরা যখন ‘বিশ্বব্রহ্মান্ড’ বলি তখন কি আমরা বৈদিক (হিন্দু) ধর্মের অনুকরণ করি? যখন আমরা ‘দায়িত্বশীল’ বলি তখন কি আমরা বৌদ্ধদের পঞ্চশীলকে অনুকরণ করে তা বলি? যখন আমরা সপ্তাহের সাত দিনের ইংরেজি নামসমূহের কোনো একটি বলি, তখন কি আমরা রোমান দেব-দেবীদের কথা স্মরণ করে তা বলি? অথচ, এসবই এসেছে বিধর্মীদের ধর্মগ্রন্থ বা ধর্মের কোনো অনুষঙ্গ হতে। একসময় বলা হতো, প্যান্ট-শার্ট পরা হারাম। এখন কীভাবে তা হালাল হলো? কোনো হারাম কি গণহারে চর্চার কারণে হালাল হতে পারে? এসব উল্টাপাল্টা প্রশ্নের কারণে উনার সাথে এই বিষয়ে আলোচনা আর জমে নাই।
তাই, কোনো কিছু খেলাফে সুন্নাহ হলেই তা খারাপ বা শাস্তিযোগ্য হবে, এমন নয়। উরুফ বা তায়ামুলুন্নাস বা লোকাচারকে বিধর্মীদের কাজ বলে হারামের তালিকায় ফেলে দেয়া এক ধরনের ‘অতি শুদ্ধ ধর্মবাদিতা’ (পিউরিটানিক রিলিজিওনিজম)। এমনকি কোনো কিছুতে নস পাওয়া গেলেই সেটি মেকানিক্যালি ফরজ বা হারাম হয়ে যাবে না। বরং, দেখতে হবে সুন্নাহর সুবিন্যস্ত টাইমলাইনে সেটি কোন পর্যায়ে আছে। অর্থাৎ সবক্ষেত্রেই শরীয়াহ বাস্তবায়নে ক্রমধারার বিষয়টাকে বিবেচনা করতে হবে।
ফরজ ও হারামের সীমিতকরণ জরুরি:
আমার বক্তব্য এতটুকুই যে, ‘আল হালালু বাইয়িনুন ওয়াল হারামু বাইয়িনুন’, অর্থাৎ যা হারাম তা স্পষ্ট, যা হালাল তা স্পষ্ট। লোকাচার মাত্রই হারাম নয়। নাজায়েয মাত্রই হারাম নয়। কোনো কিছু না করা বা করাটা মর্যাদার পরিপন্থী মনে করা আর সেটা হারাম হওয়ার মধ্যে পার্থক্য আছে। হারামের সীমা সীমিত। ফরজের সীমাও সীমিত। এতদুভয়কে যতটা সীমিত রাখা যায় ততটাই মঙ্গল। ইচ্ছাকৃতভাবে তাকওয়ার দাবি মনে করে সহজতার পথ রুদ্ধ করে কাঠিন্য আরোপ করা মোটেও উচিত নয়। যে কোনো আদর্শ বা তত্ত্বকে প্রায়োগিক দিক থেকে এর অতি-অবশ্য করণীয় ও অতি-অবশ্য বর্জনীয়কে যতটা কমানো যাবে, সেই মত ও আদর্শ তত বেশি টেকসই হবে। ইসলামী শরীয়াহর মধ্যে কোনটি অতি-অবশ্য করণীয় আর কোন কোনটি অতি-অবশ্যই বর্জনীয় তা কোরআন ও হাদীস হতে আমরা জানতে পারি। এ ব্যাপারে কারো মধ্যে কোনো বিতর্ক নাই।
হারাম ও ফরজ সংক্রান্ত বিষয়গুলো আমরা প্রত্যক্ষ ও অতি স্পষ্ট বর্ণনার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখবো, নাকি যৌক্তিক অনুমানের [সিলোজিজম] আশ্রয় নিবো, তা নিয়ে বিভ্রান্তি থাকাই হলো এ বিষয়ে মেইন প্রবলেম। ইজতিহাদ এক ধরনের সিলোজিজম বটে। যা কোনোক্রমেই করা যাবে না, আর যা অবশ্যই করতে হবে অর্থাৎ হারাম ও ফরজের বেলায় আমরা একে যথাসম্ভব সীমিত রাখতে চাইবো। কোরআন ও হাদীসে বার বার বলা হয়েছে, তোমরা সহজ করো, কঠিন করো না। যেটি সবচেয়ে সহজ, রাসূল (সা) সেটি করতেন।
আমার এতসব কথার উদ্দেশ্য শহীদ মিনার বা কফিনে পুষ্পস্তবক দেয়াকে জায়েয প্রমাণ করা নয়। তবে যারা এটিকে হারাম বা শিরক বলতে চাচ্ছেন, তাঁদেরকে সতর্ক করাটা দায়িত্ব মনে করছি। উলু ধ্বনি দেয়াটা আমাদের দেশে সঙ্গত কারণেই নাজায়েয মনে করা হয়। অথচ আরব দেশসমূহে এখনো তা সম্পূর্ণ জায়েয মনে করা হয়। তাহলে কি তা আমাদের দেশের জন্য হারাম আর আরব দেশের জন্য হালাল হবে? লোকাচার হারাম নয়, যদিও ইসলাম-বহির্ভূত উৎস হতে সাধারণত সেসব এসে থাকে। দেখতে হবে, সংশ্লিষ্ট বিষয়টা সমাজে বিধর্মীদের পরিচয় বা নিদর্শন হিসাবে আচরিত হয় কি-না। যদি ৩০ ভাগ লোক কোনো কাজকে ধর্মীয় সেন্সে করে; আর ৭০ ভাগ লোক সে কাজ করে, তবে ধর্মীয় অনুভূতি বা বাধ্যবাধকতাবোধ নিয়ে করে না। এই কাজটি কেউ যদি লোকাচার হিসাবে করে, সেটি নিষিদ্ধ কেন হবে? এভাবে শিরক-হারাম খুঁজতে থাকলে সমাজ অচল হয়ে যাবে। সুন্নাহ হলো সহজতা অবলম্বন, কাঠিন্য আরোপ নয়। কাণ্ডজ্ঞান [সিলোজিজম] দিয়ে অনুমোদন ও শিথিলতা খোঁজা হবে। নিষেধের জন্য অতি স্পষ্ট দলীল লাগবে। এ-ই হচ্ছে তাকওয়ার দাবি তথা ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থা।