১. খানিকটা মিথ্যা কথা বললেই কেউ মিথ্যাবাদী হয়ে যায় না। মিথ্যাবাদী হওয়া না হওয়াটা পরিমাণগত ব্যাপার নয়, বরং গুণগত ব্যাপার।

২. বড় ধরনের ঝামেলা হতে বাঁচার জন্য খানিকটা মিথ্যা কথা বলাটা বরং ভালো। বিশেষ করে সামাজিক সম্পর্ক ও মূল‍্যবোধ রক্ষা করতে গিয়ে আমরা হরহামেশা এটি করে থাকি।

৩. আমাদের প্রকৃত আকাঙ্ক্ষাকে চাপা দিয়ে জুঁতসই কৃত্রিম মনোভাব প্রকাশ করা হলো সভ্যতা ও ভব্যতা তথা নৈতিকতার লক্ষণ বা পরিচয় কিংবা দাবি।

৪. সব সময় প্রাকৃতিক হওয়াটা ভালো নয়। মাঝে মাঝে প্রকৃতিকে ম্যানিপুলেট করতে হয়। সভ্যতা হলো প্রকৃত আর কৃত্রিমের সংমিশ্রন।

৫. খানিকটা মিথ্যা কথা না বললে মানুষ সভ্য হয়ে ওঠে না।

৬. ক্ষেত্রবিশেষে মিথ্যা কথা বলা জায়েজ শুধু নয়, কর্তব্যও বটে।

এত কথা বলার কারণ হচ্ছে, মিথ্যাবাদী বলতে কাদেরকে বুঝবো, তা নির্ণয় করা।

৭. মিথ্যাবাদী হলো এমন ব্যক্তি যে কিনা তুচ্ছ কারণে মিথ্যা কথা বলতে অভ্যস্ত।

৮. বুঝতেই পারছেন, ‘সদা সত্য কথা বলা’ কতটা problematic proposition। সদা সত্য কথা বলার এই maxim বা প্রতিজ্ঞা, ৩ থেকে ৬ নম্বর প্রপোজিশনগুলোর সাথে সাংঘর্ষিক।

বরং আমাদের উচিত, সবসময়ই যথার্থ কথা বলা।

৯. যারা সত্যবাদী তারা এজন্য সত্যবাদী নয় যে তারা কোনো সময়ে মিথ্যা কথা বলে নাই, কিংবা বলবে না, বা বলতে পারে না। বরং তারা এজন্য সত্যবাদী যে তারা তুচ্ছ কারণে মিথ্যা কথা বলতে অভ্যস্ত নয়।

১০. তাহলে এ পর্যায়ে এসে এটাও বুঝতে পারছেন যে সত্য-মিথ্যা এক জিনিস, আর সত্যবাদিতা ও মিথ্যাবাদিতা ভিন্ন জিনিস।

ডি-মোটিভেশনাল এইসব উল্টাপাল্টা কথাবার্তা শুনে আপনার কেমন লাগলো তা জানি না। ভালো লাগলে ভালো। আর না লাগলে, আপনার সময়টুকু নষ্ট হওয়ার জন্য দুঃখিত। আসলে এসব কথা “knowledge factory”তে বসে বসে এইমাত্র আমি নিজেই নিজেকে বলেছি। অটোসাজেশন বলতে পারেন।

বলতে বলতে ভয়েস কমান্ড অন করে, দাড়ি কমা বসিয়ে একটা লেখা হিসেবে তৈরি করে ফেললাম। এরপর ভাবলাম, একটা কিছু লেখা যখন হয়েছেই, তখন অন্যদেরকেও সেইটা পড়তে দেই। এই আর কি…!

যা কিছু লিখি আসলে তা প্রথমত নিজের জন্যই লিখে থাকি। আমার প্রতিটা লেখা, বলতে পারেন, এক ধরনের খণ্ড খণ্ড আত্মজৈবনিক ব্যাপার-স্যাপার।

ভালো থাকেন।

ফেসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

ড. জাকির হাওলাদার: পয়েন্টগুলোর সাথে কিছু রেফারেন্স দিলে ভালো হতো

Mohammad Mozammel Hoque: এগুলো তো আমি প্রমোট করছি না বা প্রমাণ করতে চাচ্ছি না যে রেফারেন্স দিতে হবে। বরং এগুলো হলো আমার self-realization। If you do not agree, you have full freedom to do so.

ড. জাকির হাওলাদার: আপনার সাথে সহমত স্যার। এগুলো তো বাস্তব। আমি বলতে চাচ্ছি বড় রকমের একটা উপকার করতে গিয়ে ছোট একটা অপরাধ করে ফেলেছে এরকম কোনো উপমা দেয়া।

উপযোগবাদ অনুসারে সর্বাধিক সংখ্যক মানুষের সুখ কামনাই নৈতিক। যেমন: একজন বড়লোকের একটা গরু চুরি করে এনে শতাধিক ক্ষুধার্তকে খাওয়ানো। এখানে একজনের ক্ষতি হলো কিন্তু শতাধিক মানুষের উপকার হলো।

Mohammad Mozammel Hoque: উপযোগবাদ তো একটা নীতি। এছাড়া তো আরো বহু নীতি বা নৈতিক মানদন্ড আছে। তাই না?

Asif Shibgat Bhuiyan: স্যার, আপনার এই লেখার সাথে আমি একমত এবং এটার পেছনে আপনার যে আত্মজিজ্ঞাসা সেটাও আমি টের পাচ্ছি। এটাকে বাড়িয়ে একটা পূর্ণাঙ্গ লেখায় পরিণত করার অনুরোধ করি। যেখানে আপনি এর একটি নৈতিক ফিলোসফিকাল মাপকাঠি খাড়া করবেন। ইসলামিক সোর্স থেকেও অনেক রসদ পাবেন, অনুমান করতে পারি সেগুলো আপনার জানাই আছে।

Mohammad Mozammel Hoque: এত বড় বড় শায়েখদের সমর্থন পেলে কিছুটা মনের জোর পাই। দোয়াপ্রার্থী।

Asif Shibgat Bhuiyan: হাসালেন এবং লজ্জা দিলেন স্যার। আপনি হলেন বাংলাদেশে গুটিকয়েক মানুষের একজন যার কাজ দেখে জ্ঞানগত কোনও ইন্সপিরেশন পাই। আপনার সাথে শিঘ্রই দেখা করার ইচ্ছা আছে এবং আপনিও আমার জন্য দু’আ করবেন।

Rakibul Islam: সবাই সুযোগ সুবিধার জন্যই তো মিথ্যা বলে। অন্যায় করে বিপদে পড়ি, তো সেই বিপদ থেকে বাঁচতে মিথ্যা বলি। এটাকে কিভাবে জায়েজ বলা যায়??

Mohammad Mozammel Hoque: এটি তো জায়েজ নাজায়েজ বলার পোস্ট না। You are missing the point, perhaps. please, read the points again.

Never mind for the suggestion.

Jubairul Hasan Arif: যাহা বলিব যথার্থ বলিব।

Mohammad Mozammel Hoque: Always speak the appropriate. জ্ঞানতাত্ত্বিক যাচাইকরণের অন‍্যতম তত্ত্ব হিসাবে এটাকে বলা হয় deontological justification.

Md Mashiur Rahman: Appropriate is an undefined concept to me. Which is appropriate to me now, it may become inappropriate later on. Which is appropriate to me, it is certainly inappropriate to my counter-part.

Mohammad Mozammel Hoque: this sort of inappropriateness is also equally applicable on “truthness”. Truth is truth but that truth is an ideal truth or transcendental truth. When we locate truth, we actually make our own truth but claim to relate it to or extract from the ultimate truth.

পোস্টটির ফেসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *