আমি কেমন? কী করতে চাচ্ছি এবং কীভাবে?– সে সম্পর্কে একজন শুভাকাঙ্ক্ষী-সুহৃদের কিছু পরামর্শমূলক মন্তব্য প্রসঙ্গে আমার ক্লারিফিকেশন, কৈফিয়ত ও আত্মপ্রচারমূলক কিছু কথা। উনার অনুমতিক্রমে উক্ত কথোপকথনের কিছু অংশ এখানে উদ্ধৃত করছি। আমাকে যারা বুঝতে চান, আমার ধারণা, এই লেখাটি তাদের জন্য সহায়ক হবে।
১.
তিনি বলেছেন,
“এই লিখা লিখছি দুটি কারণে: ১। আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ করি ২। …”
আমি বলেছি,
কেউ যখন পছন্দ করার কথা বলে, বিশেষ করে তেমন কেউ একজন, তখন তো ভালো লাগবেই। কিন্তু সমস্যা হলো, কেউ যখন কাউকে বলে, ‘পছন্দ করি’ তারমানে এমনও হতে পারে, হয়তোবা কোনো কারণে এ ব্যাপারে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। তাই তিনি পছন্দের বিষয়টাকে রিকনফার্ম করে সন্দেহটাকে নাকচ করতে চাচ্ছেন। এ ব্যাপারে আমার একটা কথা হলো, love grows; it can’t be made. And when it’s gone, nothing can back it again.
২. বড় জাহাজে নাবিকের পদ ছেড়ে ছোট নৌকার মাঝি হলাম কেন
নীতিগত কারণে একটা বড় সংগঠন ছেড়ে দিয়ে একটা ছোট সংগঠন গড়ে তোলার চেষ্টা প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন,
“আপনি বলেছেন, আপনি একটি জাহাজ থেকে নেমে একটি নৌকায় যাত্রা শুরু করেছেন। এটা আপনার জন্য ভালো। আপনার দৃঢ়চেতা মনোভাব, গতিশীল ব্যক্তিত্ব ও পারিবারিক গঠন আপনাকে এ ব্যাপারে সাহায্য করছে। কিন্তু আমি আছি এক অসহায় অবস্থায়। আমার মনে হয়, আমি জাহাজ থেকে নেমে গিয়ে কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থায় পানিতে ভাসছি। বড় জাহাজের উপর আস্থাহীনতা আমাকে আশপাশ দিয়ে যাওয়া জাহাজ বা নৌকায় উঠা সম্পর্কে আরও বেশি আস্থাহীন করে তুলেছে। কৈশোরের সেই আবেগ যেহেতু অনেকটাই অনুপুস্থিত, এখন আর হুট করে কোন আবেগী সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না। সুখের সংসার ভেঙ্গে গেলে চিন্তাশীল মানুষ যেমন হুট করে আরেকটি বিয়ে করতে পারে না বা চায় না, অনেকটা সে রকম।”
আমি বলেছি,
আমার নৌকায় আপনি না উঠলে তাতে আমার তো কিছু করার নাই। আপনাকে সাথে পাবো, ভেবেছিলাম। আশা করবো, আপনি এবং প্রত্যেকেই কিছু না কিছু সিরিয়াসলি করবেন। লেগে থাকবেন। সেদিন বাসার হোয়াইট বোর্ডে এটি লিখেছিলাম: True belief is to do the best in every given situation. হয়তোবা এটি আপনার ভালো লাগবে। আমি এটি বিশ্বাস করি। এবং মেনে চলি। আমার কাছের লোক হিসাবে আপনার প্রতিও এটি আমার অন্যতম পরামর্শ।
৩. আমার কথা বুঝতে কষ্ট হয় কেন
আমার কথাবার্তা দৃশ্যত জটিল, এ মর্মে তিনি বলেছেন,
“বরাবরের মতো গতকালও আপনি অনেক গুছিয়ে আপনার লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের কথা বলেছেন। কিন্ত বরাবরের মতো আমি বুঝতে ব্যর্থ হয়েছি। বিভিন্ন সময়ে আপনার আলোচনা শুনে, লেখালেখি পড়ে ও কাজকর্ম পর্যবেক্ষণ করে আমি স্বচ্ছ কোনো ধারণা পাইনি। … যেহেতু আমার ব্যাপারে আপনার এক ধরনের প্রত্যাশা কাজ করে, আমি অনেক দিন থেকে ভাবছিলাম আপনার ব্যাপারে আমার অবস্থান নিজের কাছে এবং আপনার কাছে পরিষ্কার করতে।”
এ বিষয়ে আমি উনাকে বলেছি,
আপনি আমার অনেক কথাই বুঝেছেন। এখনো বুঝছেন। কেন আপনি ‘বুঝতে ব্যর্থ হয়েছেন’ বলছেন, সেটি আমি বুঝি। এটুকু বলা যায়, আপনি অনেক কিছু বুঝলেও অনেক কিছু বা কিছু কিছু বুঝেন নাই। কিন্তু আপনি সবকিছু বুঝতে চান। তাই মনে হচ্ছে, বোধকরি কিছুই বুঝি নাই।
৪. সিএসসিএস-এর অর্থ-সংস্থান প্রসঙ্গে
তিনি বলেছেন,
“অনুযোগের সুরে আপনি বলেছেন, আপনার সমবয়সী শুভাকাঙ্ক্ষী কেউ আপনাকে ‘আর্থিক অথবা সময় দিয়ে সহযোগিতা করছে না।’ কথাটা যতদূর জানি আংশিক সত্য। আমার জানা মতে, অনেকেই বিভিন্ন সময় আপনাকে বিভিন্ন সহযোগিতা করেছে। সহযোগিতার পরিমাণ হয়ত আপনার প্রত্যাশার তুলনায় খুবই অপ্রতুল। অথবা আপনার ব্যক্তিগত আর্থিক ত্যাগের তুলনায় কিছুই না। কিন্তু আপনি কি কখনো ভেবেছেন, ব্যাপারটা এমন কেন?
আমি যা বুঝি, আপনি যে কাজগুলো করছেন তা আপনার একান্ত ব্যক্তিগত উদ্যোগেই করছেন। আপনার কিছু কিছু কাজ হয়তো কারো ভালো লাগছে। কিন্তু আপনার কাজগুলোকে কেউই সেভাবে নিজের কাজ মনে করছে না। আপনার সাথে বেশিরভাগ লোকের সম্পর্ক প্রেমের। কিন্তু কেউ আপনার সাথে সংসার পাততে আগ্রহী নয়। সুন্দরী মেয়েদের প্রতি মানুষ যেমন দুর্বল থাকে, কিন্তু তাদের চরিত্রের কোনো বিশেষ কারণে কেউ তার সাথে দীর্ঘমেয়াদী প্রণয়-সূত্রে আবদ্ধ হতে চায় না।”
এই পর্যায়ে আমি উনাকে বলেছি,
অন্যদের আর্থিক সহযোগিতা যে আমার কন্ট্রিবিউশনের তুলনায় নগণ্য, সেটা আপনি বলেছেন। এটিই সঠিক। তবে প্রত্যাশা ছিলো, অন্তত কাছের লোকেরা পরিমাণে যা-ই হোক, নিয়মিত কিছু কিছু দিবেন। এখন আর তেমন প্রত্যাশা করছি না। আমার কাজকর্মের আর্থিক সংস্থান কীভাবে হবে সেটা আমি বুঝে গেছি। বাস্তবায়নটি সময়সাপেক্ষ। আপনাদের পক্ষ থেকে দোয়া চাই। আপাতত এতটুকুই যথেষ্ট।
অন্যরা আমাকে সময় না দিক, তাতে সমস্যা কী? ‘দ্বীন হচ্ছে জীবনের উদ্দেশ্য’ এটাকে যারা মনেপ্রাণে বলে, তারা নিজেদের মতো করে এই নীতির দাবি পূরণ করুক, তাই তো যথেষ্ট। নিজের বিবেকের কাছে স্বচ্ছ থাকলেই তো হলো।
৫. কেন আমি এ পর্যন্ত সমবয়সী কাউকে সাথে পাইনি
তিনি বলেছেন,
“সিএসসিএস-এর আদর্শ কী? কর্মসূচি কী? কর্মপদ্ধতি কী? সে সকল কর্মসূচির নতুনত্ব কী? সেগুলো সমাজে কী কী পরিবর্তন আনবে বলে আপনি মনে করেন? গত পাঁচ বছরে আপনি যেখানে আপনার সমবয়সী একজন লোককেও কনভিন্স করতে পারলেন না, সেখানে সমাজ কীভাবে পরিবর্তন করবেন? আপনার অনুপস্থিতিতে আপনার এ সকল কর্মকাণ্ডের ভবিষ্যৎ কী?”
উনার এসব প্রশ্নের উত্তরে আমি বলেছি,
আমরা তো মনে করি, ‘ইসলামী মতাদর্শের আলোকে সামাজিক আন্দোলন’ শীর্ষক লেখা ও সেটির পাওয়ারপয়েন্ট ভার্শন প্রকাশ করার মাধ্যমে ২০১৪ সালেই আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি। আমি তো দেখতে পাচ্ছি, সে মোতাবেকই ঘটনাপ্রবাহ চলছে। এখানে সেটার বিস্তারিত বিবরণ দেয়ার সুযোগ নাই। আগ্রহবোধ করলে কখনো যদি সাক্ষাতে জানতে চান, বুঝিয়ে দিতে পারবো, ইনশাআল্লাহ।
২০০১ হতে, বিশেষ করে ২০১৩ সালে নতুন আঙ্গিকে শুরু করার পর হতে আমার মতো কাউকে এ পর্যন্ত পাইনি, এটি সত্য। কিন্তু যারা আমার টার্গেট পিপল, তাদের মধ্য হতে বহুজনকে পেয়েছি। ডাকলেই যারা আমার কাছে আসে, এ রকম আরো অনেকেই আছে।
সামাজিক আন্দোলনকে আমি মনে করি, দশ হাজার মিটারের দৌড়ের মতো কষ্টদায়ক ও ক্লান্তিকর কাজ। সমাজ পরিবর্তনের কাজ একশ মিটারের স্প্রিন্ট-দৌড় নয়। আমি যাদেরকে তৈরি করেছি তাদেরকে দীর্ঘমেয়াদে কাজে লাগানোর জন্য এখনই তাদেরকে এক্সপোজ করতে চাচ্ছি না। ফলে মনে হচ্ছে, উনার সাথে তেমন কেউ নাই। দেশ-বিদেশে বাংলা ভাষাভাষিদের মধ্যে আমার যে পরিচিতি, ইমেজ ও অবস্থান তৈরি হয়েছে, আমি চাইছি, সেটা ক্রমান্বয়ে বৃহত্তর আস্থা ও দৃঢ়তর কমিটমেন্টে রূপ লাভ করুক।
৬. বুদ্ধিজীবীদের এক্টিভিজম সম্পর্কে
বুদ্ধিজীবীদের এক্টিভিজম সম্পর্কে আমার দৃষ্টিভঙ্গি ও সাম্প্রতিক একটা মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন,
“…এর উদাহরণ দিয়ে আপনি বলেছেন উনি শুধু লেখালেখি নিয়ে আছেন। কোনো এক্টিভিজম নাই। … এতে আমি সমস্যার কিছু দেখি না।”
এ ব্যাপারে আমি বলেছি,
এক্টিভিজম প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে কারো নাম ধরে বলাটা ঠিক হয়নি। স্বীকার করছি। ভবিষ্যতে খেয়াল রাখবো। তবে আমি মনে করি, প্রতিটা মুসলমানের জন্য এক্টিভিজম ইজ আ মাস্ট। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘তোমরা সে কথা কেন বলো যা তোমরা নিজেরা করো না?’ এর আলোকে আমরা বলতে পারি, একদল বলবে আর আরেক দল করবে, এমনটি ইসলাম অনুমোদন করে না। বুদ্ধিজীবীদেরও তাদের মতো করে এক্টিভিজম থাকতে হবে। বুদ্ধিজীবীদের এক্টিভিজম কেমন হবে তা আমরা একটু খেয়াল করলেই বুঝতে পারি। আশেপাশে এর অনেক উদারহরণ আমাদের চোখের সামনে জ্বলজ্বল করছে। বিতর্ক এড়ানোর জন্য এখানে উদাহরণ দেয়া হতে আপাতত বিরত থাকলাম।
৭. কাঙ্ক্ষিত সংগঠনের কাঠামো কেমন হবে
তিনি বলেছেন,
“আপনার কাজকর্ম আমি যতদূর পর্যবেক্ষণ করেছি, আমি দেখেছি, আপনি তালেগোলে একটা কিছু হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস করেন। কিন্তু আমি একেবারে তালেগোলে পছন্দ করি না। তালেগোলে অনেক কিছু করার চাইতে ভালোভাবে একটা কিছু করা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। যদি কিছু নাও করতে পারি সমস্যা নাই।”
এ ব্যাপারে আমি বলেছি,
সামাজিক আন্দোলনের উপযোগী গুচ্ছ পদ্ধতির (multifaceted) সংগঠন ব্যবস্থায় কঠোর সাংগঠনিক কাঠামো করা হবে না। সাংগঠনিক কাঠামো হবে ঢিলেঢালা। আদর্শিক ঐক্য ও কমিটমেন্ট হবে অনেক বেশি। কে নেতৃত্ব দিচ্ছে সেটাকে খুব একটা হাইলাইট করা হবে না। নিছক কাজ চালানোর জন্য একটা হায়ারার্কিক্যাল স্ট্রাকচার করা হবে। ব্যক্তি উদ্যোগ ও ব্যক্তিগত স্বতঃস্ফূর্ততা গড়ে তোলার ওপর সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করা হবে। এ কথাগুলো বুঝানোর জন্য আমি কোথাও তালেগোলে কাজ সারার কথা বলেছি। যা আপনি ভুলভাবে বুঝেছেন।
৮. আমার সামগ্রিক ভাবনা-চিন্তা সম্পর্কে পাঠক-সমর্থকদের অনাগ্রহ প্রসঙ্গে
তিনি পাঠকদের একমুখীনতা সম্পর্কে অনুযোগ করে বলেছেন,
“আপনাকে দেখি ধর্ম, দর্শন, রাজনীতি, সাহিত্য, সমাজ সকল বিষয়ে কথা বলতে, মতামত দিতে। যারা শুধু ধর্মীয় ব্যাপারে আগ্রহী তারা ধর্মীয় বিষয় ছাড়া আপনার অন্যান্য বিষয়ে আগ্রহী হতে দেখি না। কিন্তু আপনি প্রত্যাশা করেন, সবাই আপনার সব বিষয়ের মতামত আগ্রহ সহকারে শুনবে, অংশগ্রহণ করবে।”
এ ব্যাপারে আমি বলেছি,
সবাই আমার কাছ সবকিছু কেন জানতে চাইবে? আমিও বা কেন সবাইকে সবকিছু বুঝাতে যাবো? যদি তেমনটা আমি কখনো করি, তাহলে সেটা আমার ভুল। অথবা, হতে পারে, আমি অডিয়েন্সকে ওভার-এস্টিমেইট করেছি। লোকেরা নিজেকে যেভাবে প্রেজেন্ট করে আমি স্বভাবগত কারণে সেটাকে সঠিক ধরে নিয়ে ইন্টারেক্ট করি। অনেক পরে কখনে কখনো বুঝতে পারি, উক্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টি আসলে চিন্তার দিক থেকে অনেক পিছিয়ে আছে।
৯. আমার মেধা, আবেগ ও বাস্তবতাবোধ প্রসঙ্গে
সবশেষে আমাকে তিনি ওভারঅল মূল্যায়ন করেছেন এভাবে,
“আপনার সম্পর্কে আপনার শুভাকাঙ্ক্ষীরা মনে করে, আপনি একজন মেধাবী মানুষ; যে তার মেধার সঠিক ব্যবহার করছে না। আপনার আবেগ আপনার বাস্তবতাবোধকে ছাপিয়ে যায়।”
এ ব্যাপারে আমার অবস্থান উনাকে আমি এভাবে ব্যাখ্যা করেছি,
… আর হ্যাঁ, আমি মেধাবী। এটি আমার জন্মগত অর্জন। আল্লাহর রহমত। মেধাবী লোকদেরকে আমি পছন্দ করি। তাদের সান্নিধ্যে থাকাকে প্রেফার করি। মেধাবীদেরকে আমার পাশে স্থান দেই। গ্রস ক্যাটাগরির লোকদেরকে আমি পছন্দ করি না। যদিও তাদের সাথে সামাজিক সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলি।
আপনাকেও মেধাবী মনে করি। তাই, আপনার কথাগুলোকে এতটা গুরুত্ব দিচ্ছি। আপনার কাছ হতে অনেক কিছু শিখেছি। আমার মতো তত্ত্ববিদ না হলেও আপনিও আমার মতো জীবনবাদী। আপনার জীবনবোধ আমাকে ঋদ্ধ করেছে। আমরা অনেক বছর সুন্দর সময় কাটিয়েছি।
প্রতিটা সম্পর্কের একটা মেয়াদ থাকে। হয়তো আপনার আমার তেমন ধরনের সম্পর্কের মেয়াদ ফুরিয়ে এলো বলে। এটি হতে পারে। কারণ, প্রত্যেকের চলার গতি, চলার পথ, বাঁক, এগুলো স্বতন্ত্র। কেননা, প্রতিটা মানুষই স্বতন্ত্র। প্রত্যেকের উচিত, নিজের জীবন যাপন করা। এ নিয়ে আমার লেখালেখি আছে। আপনি যেহেতু আমার প্রায় সব লেখাই পড়েছেন, তাই, এটিও না পড়ার কথা নয়।
আর, হ্যাঁ। আমার আবেগ আমার বাস্তবতাবোধকে ছাপিয়ে যায়। এটি নির্ঘাত সত্য। আমি মনে করে বাস্তবতাবোধ বা জ্ঞানের উৎপত্তি ও পরিণতি হলো আবেগ। আমি আবেগবাদী। আবেগ নিয়েও আমার সিরিজ লেখা আছে। আমি মনে করি, emotion is the spawning ground of knowledge. যার আবেগ নাই, তার আদর্শবোধও সত্যিকারের হতে পারে না।
বিবেকের দাবি হলো আবেগ। বাস্তবতাবোধ নিছক একটা সহায়ক টুল। প্রয়োজনে বিবেকের দাবি পূরণ করতে গিয়ে আবেগের বশবর্তী হয়ে মানুষ বাস্তবতাকে অস্বীকার করে। এমনকি জীবন দেয়ার জন্য পর্যন্ত এগিয়ে যায়। আমি তেমনই একজন সাহসী ব্যক্তি। আপনিও তা জানেন।
সৈয়দ আলী আহসানের একটা কবিতা এক সময় পড়েছিলাম। এখন হারিয়ে ফেলেছি। এর কিছু অংশ নিম্নরূপ:
“তোমার যাত্রাপথে কখনো বর্ষা নামবে,
কখনো শীত, কখনো গ্রীষ্ম।
সমগ্র পৃথিবীকে মিত্রের দৃষ্টি দিয়ে দেখবে।
অকষ্মাৎ উদ্ভাসিত চৈতন্যে আবিষ্কার করবে,
তারা তোমার। যেমন তুমি তাদের।
তোমার যাত্রা শুভ হোক।”