১. কোনো এস্টাবলিশমেন্ট নিজেকে এতটা পরিবর্তন করতে চায় না, যেটি ব্যাপকতার দিক থেকে অত্যন্ত গভীর। যেটিকে আমরা বিপ্লব বলে থাকি।
২. ইসলামী আন্দোলন হিসাবে জামায়াতে ইসলামীতে ব্যাপক সংস্কার দরকার। এ সংস্কারগুলো জামায়াতের কর্মসূচি ও ধারার মধ্যে নাই– এমন নয়। জামায়াতকে জামায়াতের লালিত ও প্রচারিত ইসলামী আন্দোলনের মৌলিক বৈশিষ্ট্যে পুনর্প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।
৩. অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে আদর্শ প্রতিষ্ঠার স্ববিরোধী নীতি, বৃহত্তর জোট গঠনের জন্য ইসলামী আদর্শপন্থীদের চেয়েও শক্তিমান সেক্যুলার শক্তিকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে সেটির রাজনৈতিক ছাতার নিচে নিজেকে অস্তিত্বহীন করার প্রক্রিয়ায় ফেলে অন্ধ পথ চলা, আন্তর্জাতিক নীতিতে ঘৃণিত মার্কিনপন্থায় সমর্পিত হয়ে থাকা, পপুলার ইসলামের বিপজ্জনক তাবলীগীয় পন্থাকে অঘোষিত নীতি হিসাবে মেনে চলা, প্রচলিত ইসলামপন্থীদের নারীবিরোধী কার্যক্রমকে সাংগঠনিক নীতি হিসাবে গ্রহণ করা, সমাজ সংস্কারমূলক ও হতদরিদ্রদের জন্য উল্লেখ করার মতো কার্যক্রম দৃশ্যমান না থাকা– এসব কারণে এই সংগঠন এখন আর সমাজ বিপ্লবের আন্দোলন নয়; একটা গণতান্ত্রিক ইসলামপন্থী সংগঠন মাত্র।
৪. বিরাটত্বের অহংকার, জামায়াতে ইসলামীর দায়িত্বশীলেরা যা সবসময় করে থাকেন, শুধুমাত্র সাইনবোর্ডধারী বোকাদেরই শোভা পায়। একজন ব্যক্তি-মুমিনের বৈশিষ্ট্য ইসলামী সমাজ বিপ্লবে অঙ্গীকারাবদ্ধ একটা সংগঠনে থাকতে হবে। স্পষ্ট দৃশ্যমানভাবে থাকতে হবে। বাজারে প্রাপ্ত ছাগলের মালিকের সন্ধানে দেয়া এলানের মতো উঁচু-নিচু স্বরে বলার মতো হলে হবে না!
৫. আমার ধারণা এবং অভিজ্ঞতায় জামায়াত টিকে থাকবে, ভালোভাবে টিকে থাকবে, একটা সহযোগী ধর্মীয়, সামাজিক ও রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে। যেমন টিকে থাকবে ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি লাভ করবে তাবলীগ জামায়াত, মাদ্রাসাসহ অপরাপর ইসলামী প্রতিষ্ঠানসমূহ। পীরবাদীদের মুরিদের সংখ্যা বৃদ্ধির মতো জামায়াতের রিক্রুটও বাড়বে। পুকুরে মাছ এত বেশি যে ফাঁটা জাল ফেললেও অনেক মাছ উঠে! অর্থাৎ বাংলাদেশে মানুষ এত বেশি ও বিভ্রান্ত যে, সব ছাতার নিচেই বিগশটরা আছেন, থাকেন।
৬. আমার ধারণায় জামায়াত সমাজের মেইনস্ট্রিম হতে অলরেডি পিছিয়ে এসেছে। ভিক্ষা করার কাজে খাটানোর জন্য কারা যেন সুস্থ বাচ্চাদের পঙ্গু করে দেয়! তেমনি জামায়াতে ইসলামী এ দেশে বিপ্লবের সম্ভাবনার যে বীজ, ইসলামী ছাত্রশিবির, তার পিঠে জামায়াতের সিল লাগিয়ে স্বীয় কায়েমী স্বার্থ হাসিল করে যাচ্ছে। কথাটা কঠোর কিন্তু সত্যি। সত্য কথা বিপরীত স্রোতে বলার লোক হিসাবে আমার জন্ম। যারা চিনেন, তারা জানেন। সত্যকে পাবার জন্যই এ আন্দোলনে এসেছি। ছাত্র ছিলাম বলে জামায়াতে সরাসরি যোগ দিতে পারি নাই।
৭. ছাত্রশিবিরের সাথে জামায়াতের কনফ্লিক্ট পর্যালোচনা করলেই জামায়াতকে বোঝা সম্ভব। ছাত্রশিবিরের সাথে জামায়াতের বার বার যেসব মতবিরোধ হয়েছে তার কোনোটাই ছাত্রশিবিরের আদর্শগত ত্রুটির কারণে ছিল না। সহযোগী সংগঠন সংক্রান্ত জামায়াতের থিসিসটাই ভুল। বড় গাছের নিচে ঝোপ-জঙ্গল পর্যন্ত হয় না। আমার ধারণায় ইসলামী সংগঠনের কলামগুলো থাকবে সম্পূর্ণ আলাদা আলাদা। আন্ডারগ্রাউন্ড কলামে সেগুলো পরস্পর যুক্ত থাকবে। এ বিষয়ে আমার পোস্ট আছে।
৮. জামায়াতের সংস্কার আমার বিবেচনায় এজন্যই সম্ভব নয় যে, পরিবর্তন যা দরকার, আদর্শের নিরিখে তা সম্ভব, বরং সম্ভব হওয়ার কথা হলেও জামায়াতের সাংগঠনিক বর্তমান এস্টাবলিশমেন্টের প্রেক্ষিতে এটি অসম্ভব-প্রায়। এক্সট্রা-অর্ডিনারি ঈমানদার না হলে নিজেকে তো আর কেউ রিফিউট করে না, হদের জন্য নিজেকে পেশ করে না! এখন সবার দৃষ্টি টাকা বানানো, পজিশন বাগানো, ইলেকশন করা (এটি নাকি জিহাদ!?)। ‘আমি বলেছি’, ‘আমরাও ভাবছি’ টাইপের কথা বলে গা বাঁচানো ও পেছনে সমালোচনা করায় নিয়োজিত দায়িত্বশীলদের একটাই জিগির– রুকন হন না কেন? কিন্তু মানুষ হিসাবে কেমন, পেশাগত দায়িত্ব ঠিক মতো পালন করেন কিনা– এসব কথা কদাচিৎ বলা হয়। জিজ্ঞাসার মূল বিষয় হলো রিপোর্ট রাখেন কি না ইত্যাদি। আচ্ছা, এতগুলো রুকন কী করেন? সব কিছুতেই সিস্টেমের দোহাই। সিস্টেম গড়ে উঠার পরে যা করণীয় তা দিয়ে সিস্টেম কায়েম হয় না। যেখানে সিস্টেম আছে সেখানে যথাযথ স্থানে পরামর্শ পৌঁছানোই যথেষ্ট হয়। সিস্টেম কায়েম করতে গিয়ে প্রচলিত সিস্টেমকে আন-সিস্টেমেটিক্যালি ভাংগতে হয়! জিহাদ আর ফিতনার পার্থক্য বোঝার ক্ষেত্রে আমাদের মৌলিক গ্যাপ আছে।
৯. টিকে থাকার এক অদম্য নেশা, নামের এক অর্থহীন আবেগ, ব্যক্তির অপরিহার্য্তার এক অলীক ধারণা জামায়াতকে পেয়ে বসেছে। ফলে পরামর্শ গ্রহণ করার স্বাভাবিক অবস্থা এটি হারিয়ে ফেলেছে। পরামর্শের ক্ষেত্রে দেখতে হয়, পরামর্শটা কতটা ওজনদার। আর উনারা দেখেন, পরামর্শটা কে দিয়েছে। তবুও যদি উপযুক্তদের কথা শোনা হতো…!? অমুক তমুক কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীলরা শুনি, বলেন, ব্রেইনস্টর্মিং দরকার, রিথিংক করা দরকার, নারীনীতি ভুল হচ্ছে, শিবিরকে আলাদা রাখাই ভালো। কই, তাঁরা কেন অন্যদের বোঝাতে পারছেন না!? উনারা হয়তো সংখ্যাগরিষ্ঠতার যাঁতাকলে পিষ্ট হচ্ছেন! ইসলামী সংগঠন কি মেজরিটি অপিনিয়ন দিয়ে চলা উচিত, নাকি যুক্তির সামঞ্জস্যতায় চলা উচিত? আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে নবী আপনি যদি অধিকাংশ লোকের কথায় চলেন, তাহলে আপনি বিভ্রান্ত হবেন। আর জামায়াত নাকি গণতন্ত্র দিয়ে ইসলামী সমাজ কায়েম করবে!?
১০. পীরানী সিলসিলায় যেমন আপনি সবই করতে পারবেন পীর ও সিলসিলার সমালোচনা করা ছাড়া, তেমনি জামায়াতে আপনি সবই করতে পারবেন দায়িত্বশীল ও কেন্দ্রীয় পলিসির সমালোচনা করা ছাড়া। আমাদের এক দায়িত্বশীল চবি দক্ষিণ ক্যাম্পাস মসজিদের সামনের স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিংয়ে অপর একজনকে এই বলে ধমকালেন, ‘আপনি রুকন হয়ে ফোরামের বাহিরে সংগঠনের কার্যক্রম ও স্ট্যান্ডিং পলিসির সাথে দ্বিমত পোষণ করে কথা বলতে পারেন না!’ জামায়াত থিঙ্কট্যাঙ্ক সিস্টেমে কার্যত বিশ্বাস করে না, যদিও তাদের ইউনিভার্সিটি ডেস্ক, বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ, আদর্শ শিক্ষক পরিষদ নামীয় কিছু বুদ্ধিজীবী-দায়িত্বশীল পুনর্বাসন কেন্দ্র আছে!? জামায়াত ইউনিভার্সিটির টিচারদেরকে দুই পয়সার পাত্তা দেয় না। যতই তারা ডেডিকেটেড হোন, যতই তারা বিশেষজ্ঞ হোন। সংগঠন করলে আপনাকে ফোঁসফাঁস করে চুপচাপ বসে থাকতে হবে। কারণ হলো, জামায়াত নিজেকে বাংলাদেশে অঘোষিতভাবে আল-জামায়াত মনে করে। জামায়াত সকল দিক থেকে অনেক বেটার, নো ডাউট। বাট ইট ইজ নট দ্য অনলি অপশন, আল জামায়াত বলতে যা বোঝায়। যে কারো চেয়ে ভালো হওয়া আর একমাত্র হওয়া এক নয়। এখানে আমার কনসেপ্ট গ্রুপের আইডিয়া যাদের কাছে পরিষ্কার নয়, তারা কিছুটা ভুল বুঝবেন। আমাকে ফোন করতে পারেন। যে কেউ। ব্যস্ততার ফাঁকে অবশ্যই রেসপন্স করবো। আসুন না, ঢাকা চিটাগাংয়ে যারা আছেন, আমরা একত্রিত হই? সামনাসামনি যা-ই বলুন না কেন, কিছু মনে করবো না। এসব বিষয়ে আলোচনা করার জন্য আমাকে ইনভাইট করলে, ইনশাআল্লাহ, যাবো।
বি. দ্র.: জামায়াত স্বীয় গঠনতান্ত্রিক তথা নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় নিজেকে সংস্কার করবে না, করতে পারবে না– কেন আমি এমনটা মনে করছি তা জানতে চেয়ে একজন জানতে চাইলে উনাকে হুবহু উক্ত বক্তব্য সম্বলিত একটা মেইল এইমাত্র করলাম। ভাবলাম, ব্লগে দেই। মন্তব্যের উত্তর দেব না ভাবছি। অনেক সময় ব্যয় হয়। রুকন হতে হলে তো এসব সময়কে সাংগঠনিক সময় হিসাবে দেখানো যাবে না, তাই না!? অবশ্য আমার এমনিতেই নিয়মিত কিছু সাংগঠনিক সময় ব্যয় হয়ে যায়, সহযোগী দায়িত্বশীল ও জনশক্তির কারণে!?
এসবি ব্লগ থেকে নির্বাচিত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য
বিরুদ্ধবাদী: সংগঠন ছাড়া আর চলে না, তাই বলছি কোনো সংগঠন করা উচিত। এটা তো নিশ্চিত, জামাত আর কখনই নিজেদের সংশোধন করবে না।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: একটা জনপদে ইসলামী শাসন কর্তৃত্ব একটাই থাকবে। কিন্তু ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার ধারা একটাই থাকতে হবে বা কেউ একজন শুধুমাত্র একটা ধারাতেই একাত্ম হবে, একই সাথে একাধিক ইসলাম প্রতিষ্ঠাকামী ধারায় থাকতে পারবে না– এসব ভুল ধারণা। তাই, ছাত্র হলে শিবির করুন, না হয় আমার মতো মন দিয়ে জামায়াত করুন। ইনএকটিভ হবেন না। সমালোচনা করা মানে ইনএকটিভ হওয়া নয়। সমালোচকদের আরো বেশি একটিভ হতে হবে। সকল ভালো কাজে সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
যদিও বলেছিলাম মন্তব্য নয়, তবুও ‘উত্তর’ দিলাম। ধন্যবাদ।
তারাচাঁদ: মোজাম্মেল ভাই, ওই লোকগুলো কেন ধীরে ধীরে বিচ্যুত হয়ে যাচ্ছে, অর্থাৎ তাদের mode of deviation-টা কী, এ সংকট উত্তোরণের উপায় কী, এ পয়েন্টগুলো ভালোভাবে নোট করুন এবং প্রিন্ট করুন। বড় নেতা, ছোট নেতা, সবাইকে ধরে এনে ভালোভাবে বুঝাতে থাকুন। এদের কাউকে ছাড়বেন না, যতক্ষণ না পুরোপুরি সংশোধন হয়। তারা ভালোভাবে বুঝুক যে তারা ভুলের ঊর্ধ্বে নয়।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: যারা বুঝতে চান না, তাদের বুঝাবার জন্য আমি কী করতে পারি? এসব কথা আমি বিভিন্ন ফোরামেও বলেছি। এখনও বলি। কিন্তু কথার পেছনে তো আর জীবন কাটাতে পারি না। আমি এক্টিভিজমের লোক। নেতৃত্ব না পেয়ে হতাশ হয়ে কথা বলার প্রসঙ্গটি আমার জন্য শত্রুও এলাউ করবে না। এটুকু আত্মবিশ্বাস আমার আছে। আমি কর্মের শক্তিতে বিশ্বাসী। কিন্তু অন্ধ পথ চলায় আমার আপত্তি। বক্তব্যকে পরিষ্কার করার জন্য আর একটা পোস্ট দিচ্ছি। ধন্যবাদ।
এম এন হাসান: আমি আরেকটু সংযোগ করব কি করব না ভাবছি। আপনি যে সমস্ত পয়েন্ট তুলে ধরেছেন, সেগুলো এতটাই ভ্যালিড যে, যারা জামায়াত সম্পর্কে কিছু স্টাডি করে বা ভেতরের খবর রাখে তারা একে অস্বীকার করলেও ইগনোর করতে পারবে না।
কিছুদিন আগে লন্ডনে একটি সেমিনারের জন্য আমাকে বলা হয়েছিল একটা প্রেজেন্টেশন রেডি করার জন্য। আমি ‘স্ট্র্যাটেজিক এনালাইসিস অফ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী’ শিরোনামে একটি প্রেজেন্টেশন তৈরি করেছিলাম। আপনার বলা অনেক কথাই আরো একটু সফট ভাষায় তুলে ধরেছিলাম। যাই হউক, সেই প্রেজেন্টেশন জায়গামত পৌঁছালেও প্রোগ্রামে প্রেজেন্ট করা হয়নি!?
আপাতত, নো মোর ডিটেইলস। দেখি প্রো-স্ট্যাবলিশবাদী ভাইয়েরা কী যুক্তি নিয়ে আসেন।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: উনারা মাইনাস দিয়েই খালাস! যুক্তি নাই। অবশ্য সত্যের পক্ষে লোক কমই থাকে। অধিকাংশ লোক তো সত্যপন্থী হওয়ার কথা নয়।
ইবনে বতুতা: খুব গুছিয়ে অতি সত্য কথাগুলো উপস্থাপন করেছেন। আপনার কলমকে আল্লাহ আরো শক্তিশালী করুন।
দোয়া করি, জামায়াতে এমন নেতৃত্ব আসুক, যারা বাস্তব যুক্তির নিরিখে তাদের কাজের ধারা সংশোধন করাকে ফরয ভাববেন।
পান-চিবানো, ঝিমিয়ে পড়াদের দিয়ে কি করে বিপ্লব হবে? আসুন, আধমরাদের ঘা মেরে বাঁচাই…।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: থ্যাঙ্কস! উই হ্যাভ টু বি কশাস অ্যাবাউট নিফাক, আনইনফ্লুয়েন্সড বাই অ্যানি এপ্রিসিয়েশন, আনডিটার্ড বাই ক্রিটিসিজম। মে আল্লাহ গাইড আস অ্যান্ড ফরগিভ আস…
আরিফ: আপনার এই লেখা আরও একবার চিন্তার সাগরে ডুবিয়ে দিল। আমি আজ পর্যন্ত কোনো দ্বায়িত্বশীল হতে পঞ্চম দফার বাস্তবায়ন সম্পর্কে একক ব্যাখা পাই নাই। সবাই নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করে। আর চতুর্থ দফা নিয়া সংগঠনের নিষ্ক্রিয়তার সাক্ষী তো আপনি নিজেই। আসলে পুরো সংগঠন আজ চিন্তার বন্ধ্যাত্বের শিকার। আপনাদের উপর তাই অনেক আশা আমাদের।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: পাকিস্তান আমলে শিখা গোষ্ঠী গঠন করেছিলো ইসলামপন্থীরাই। অথচ সেটিকে তারা এগিয়ে নিতে পারেন নাই। বামপন্থা যেটিকে পরে কব্জা করে, যে ঘোরপ্যাঁচ হতে এখনও আমরা বের হতে পারিনি। উচ্চশিক্ষা ও বুদ্ধিবৃত্তিতে বামধারার আধিপত্যই চলছে। তাই না?
যাররিনের বাবা: আপনার লেখার ভক্ত হয়ে গেলাম। এই ব্লগে এম এন হাসানের জামায়াত সংক্রান্ত সিরিজ লেখায় আপনার মন্তব্য পড়েছি, এবং ক্ষেত্রবিশেষে জবাবও দিয়েছি। আপনার চাঁচাছোলা সমালোচনার ধার অতিশয় তীক্ষ্ণ থাকায় কিছু ক্ষেত্রে তার তিক্ততা নিয়ে অভিযোগও করেছি। নিজের জ্ঞানের দুর্বলতা এবং কর্মের নিষ্ক্রিয়তার ব্যাপারে পূর্ণমাত্রায় সচেতন আছি, তাই এ লেখার ডিসেকশন করা আমার আওতার বাইরে। কিন্তু সমালোচক এবং কর্মীর ডায়ালেক্টিক অবস্থান আপনি আত্মস্থ করেছেন বলে আপনার জন্য অকুণ্ঠ স্তুতি।
দুটো ক্লারিফিকেশন চাইছি। একটা হলো ‘আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে নবী আপনি যদি অধিকাংশ লোকের কথায় চলেন, তাহলে আপনি বিভ্রান্ত হবেন।’ অনুগ্রহ করে যদি আয়াত নং অথবা আরবীটা দিতে পারেন খুশি হবো।
দ্বিতীয়টি অবশ্য অনুযোগ। একজন ব্যক্তি অধ্যাপক গোলাম আযমের নাম উল্লেখ করাটা কি খুবই জরুরি ছিলো? তাও আবার সম্ভাবনার অনুসঙ্গ যুক্ত করে? ব্যক্তির নামে কোনো কিছু অ্যাট্রিবিউট করা হলে তার ওজন কমে, সমালোচনার এবং সমালোচকেরও ক্রেডিবিলিটি ক্ষুণ্ন হয় বলে আমি মনে করি। জিনিসটা ভেবে দেখবেন আশা করি।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: সূরা আনআম ১১৬ নং আয়াত।
নাম না ধরাই ভালো, সাধারণত। নাম না ধরে কথা বলা মাইক্রোফোন দিয়ে বলা বা হ্যান্ড-গ্লোবস পরে ধরার মতো। তবে, কখনো কখনো সামনাসামনি বলতে হয় বা খালি হাতেই ধরতে হয়। এসবের মাত্রা (ডাইমেনশন) আছে। ভুলকে ভুল বলা যদি ঠিক হয়, ব্যক্তি যেই হোক, তার নাম কেন ধরা যাবে না? ঠিক আছে, আর নাম নিবো না। তবে যতই বলি অমুকের মা, অমুকের বাপ, বা ওগো ইত্যাদি, সংশোধনের জন্য এখন কোরামিনই লাগবে। এন্টিবায়োটিকে ধরবে না। অবশ্য আমি প্রচলিত ধারার সংশোধন আশা করি না। আমার বক্তব্য হলো, তাই বলে ভালো কাজে (যেমন– বাতিলকে মোকাবিলা, ব্যক্তিগত তাযকিয়া, সামাজিক দায়িত্ব ইত্যাদি) সহযোগিতা করতে তো অসুবিধা নাই। দ্বিমত আছে বলে তো বসে থাকতে পারি না। আল্লাহ তো বলেছেন, তোমরা তীব্র গতিতে ছুটে চল…।