সামাজিক আন্দোলন তত্ত্ব অনেকভাবেই জামায়াতের ব্যর্থতার ব্যাখ্যা দিতে পারে। প্রথমত, রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্খার জন্য যে প্রতিযোগিতামূলক রাজনৈতিক কাঠামোর ভেতর জামায়াত প্রবেশ করেছিল তার ভিতর থেকে একটি সফল সামাজিক আন্দোলন চালানো সম্ভব ছিল না। পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গন কখনোই জামায়াতের জন্য তেমন সুবিধার হয়নি।

দ্বিতীয়ত, জামায়াতকে জামায়াত প্রণীত মূল রূপরেখা অনুসরণ না করার জন্য দোষারোপ করা যায়। মূল রূপরেখা অনুযায়ী কথা ছিল, জামায়াত একদল মানুষকে প্রশিক্ষণ দেবে যারা সঠিকভাবে ইসলামকে তুলে ধরতে সক্ষম হবে এবং সমগ্র জনগণকে ইসলামের শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলবে। দেশের জনগণ ইসলামের সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছে এমন পর্যায়ে পৌছলেই কেবল জামায়াত রাষ্ট্রের ক্ষমতা অধিগ্রহণের জন্য কাজ শুরু করবে। যদিও জামায়াত কিছু মসজিদ মাদ্রাসা নির্মাণ করেছিল এবং ইসলামের শিক্ষায় একদল মানুষকে প্রশিক্ষিত করতে পেরেছিল, কিন্তু দেশের আপামর জনসাধারণকে ইসলামের শিক্ষিত করার কাজ তখনও ছিলো অনেক বাকি।

তৃতীয়ত, রাজনীতিতে জামায়াতের অংশগ্রহণের সিদ্ধান্তকে একটি চরম ভুল হিসাবে বলা যায়। কোনো সামাজিক আন্দোলন যখন রাজনীতি শুরু করে তখন তারা তাদের মূল লক্ষ্য থেকে সরে যেতে বাধ্য। কারণ রাজনীতি মানেই দেন-দরবার আর আপসকামিতার রাজনীতি। যখনই জামায়াত রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলো তখনই তারা প্রকারান্তরে গতানুগতিক ব্যবস্থাকে মেনে নিয়ে একে এক ধরনের স্বীকৃতি দিয়ে দিলো। সমাজসংস্কার ও বুদ্ধিবৃত্তিক পরিবর্তনের চেয়ে প্রাধান্য পেলো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। সরকার যতটুকু ছাড় দিতে রাজি ততটুকুতেই সন্তুষ্ট থাকতে হলো জামায়াতকে। যেহেতু জামায়াত বেশি ভোট কখনো পায় নাই, তাই জোর গলায় দাবি আদায়ের রাস্তাও ছিলো তাদের জন্য বন্ধ। রাজনীতিতে অংশগ্রহণ না করলে বড় গলায় কথা বলার অবকাশ থাকতো তাদের।

চতুর্থত, সামাজিক আন্দোলনের জন্য তৃণমূল পর্যায়ে গণভিত্তি ও সমর্থন যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। জামায়াতের সমর্থন সীমাবদ্ধ হয়ে পরে বড় বড় শহরের শিক্ষিত মধ্যবিত্তদের মাঝে। মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ গ্রামীণ জনগোষ্ঠী জামায়াতের আওতার বাইরেই থেকে যায়।

রাজনৈতিক সাংস্কৃতিতে পবির্তনের কারণে কোনো দলের মাস্টারফ্রেম বা মূল কর্মপন্থা স্তিমিত হয়ে যেতে পারে। ১৯৭০-এর নির্বাচনের ফলাফল পর্যালোচনা করে জামায়াত বুঝতে পেরেছিলো যে ধার্মিকতা, সততা এবং নিষ্ঠা– এগুলো সবই প্রশংসাযোগ্য গুণাবলি। কিন্তু এর কোনোটিই মানুষের ভোট পাবার জন্য যথেষ্ট নয়।

সামাজিক আন্দোলনের সফলতার জন্য যোগাযোগ মাধ্যমের কার্যকারিতা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। জামায়াত নেতৃবৃন্দ সাধারণ জনগণের সাথে তাদের বোধগম্য ভাষায় কথা বলতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন না। নির্বাচনী বা জ্বালাময়ী বক্তৃতা দেয়ার ক্ষেত্রেও তাদের নেতৃবৃন্দ ছিলেন একেবারেই অপারঙ্গম। অথচ মুজিব এবং ভুট্টো উভয়ই ছিলেন তুখোড় বক্তা। তাদের বক্তব্য ছিল পরিষ্কার এবং সাধারণ মানুষের কাছে সহজবোধ্য। আর জামায়াতের বক্তব্য ছিল ইসলামী রাষ্ট্র নিয়ে, যার ধরন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের তেমন স্বচ্ছ ধারণা ছিলো না। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, আর ছয় দফা দাবির কথা মানুষকে বোঝানো যত সহজ; জনগণের মাঝে একটি কল্যাণধর্মী ইসলামী রাষ্ট্রের ধারণা পৌঁছানো ছিলো তারচেয়ে অনেক কঠিন। স্বভাবতই এ কারণে জামায়াতের নির্বাচনী বার্তা মার খেয়ে যায়।

শেষোক্ত যে কারণকে জামায়াতের ব্যর্থতার জন্য দায়ী করা যায় তা হলো, মওদূদী পুরোপুরি ইসলামী রক্ষণশীলও হতে পারছিলেন না, আবার উদারপন্থীও হতে পারছিলেন না। তাই তার দল সম্পর্কে জনগণের মাঝে একটি মিশ্র এবং ঘোলাটে ধারণা তৈরি হয়। ১৯৬৫-এর নির্বাচনে তিনি ফাতিমা জিন্নাহকে সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অথচ তখনকার সবগুলো ইসলামী দল নারী নেতৃত্বের বিপক্ষে ছিলো। এতে জামায়াতের সমর্থনে ভাটা পরে এবং জনগণ এই প্রথম মওদূদীকে ইসলামী আন্দোলনের নেতার পরিবর্তে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে দেখতে শুরু করে।

১৯৭০-এর নির্বাচনে এ বিষয়টি আরো পরিষ্কারভাবে বোঝা যায়। জামায়াত সারা পাকিস্তানে মাত্র ৪টি প্রাদেশিক আসন পায়। জামায়াত যদি এককভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে ইসলামী দলগুলোর সাথে জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করতো তাহলে ইসলামপন্থীদের ভোটগুলো ভাগ হয়ে যেতো না। যদিও জমিয়তে ইসলামের নেতা মাওলানা এহতেশামুল হক থানভী ইসলামী দলগুলোর জোটবদ্ধ নির্বাচনের চেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু জামায়াতের ‘একলা চলো’ নীতির কারণে তা পণ্ড হয়ে যায়।

উপসংহারে বলা যায়, জামায়াত শুরু হয়েছিলো একটি সামাজিক আন্দোলন হিসেবে। কিন্তু তা ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে এগিয়ে গেছে বিভিন্ন সময়ে স্বৈরাচারী শক্তির উত্থান, মূল কর্মপন্থা অনুসরণে ব্যর্থতা এবং তাদের বক্তব্যকে জনগণের কাছে সহজ ও হৃদয়গ্রাহী হিসাবে উপস্থাপন করতে না পারার কারণে। ভালি রেজা নাসের কর্তৃক উদ্বৃত মওদূদীর একটি কথা দিয়ে শেষ করতে চাই, “আমার যদি সময় ও সুযোগ থাকতো তাহলে আবার শুরু থেকেই সবকিছু শুরু করতাম।”

সংগ্রহ সূত্র: সামাজিক আন্দোলন তত্ত্বের আলোকে জামায়াতে ইসলামীর উত্থান-পতন (শেষ পর্ব), মূল: ড. মুজতবা ইসানী, অনুবাদ: হাসান ইকবাল। ভাষাগত পরিমার্জনা সহকারে কিছুটা সংক্ষেপিত। দ্যা জবান ডটকম এ ২২/০২/২০১৯ তারিখে প্রকাশিত।

ফেসবুক থেকে নির্বাচিত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

Murtaza Hasan Fuad: জামায়াত কীভাবে সফল হবে? চার/পাঁচটা পয়েন্ট চাই।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আপনি যে বিষয়ে জানতে চেয়েছেন সে বিষয়ে আমার কয়েক শত পৃষ্ঠা লেখালেখি আছে। অন্তত দশ বছর থেকে এ বিষয়ে আমি লেখালেখি করছি। সেগুলো আপনি আমার বিভিন্ন সাইটে পাবেন। ‘সমাজ ও সংস্কৃতি অধ্যয়ন কেন্দ্র‘র সাইটসহ আমার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন সংক্রান্ত লেখাগুলো দেখতে পারেন।

Mohebbur Rahman: আমার কাছে বিষয়টা খুবই বিস্ময়কর লাগছে যে এত ব্যর্থ একটা দলের পেছনে দেশি-বিদেশি, রাম-বাম, কওমী-সালাফী, সুন্নি-কাদিয়ানী, সেক্যুলার-গণতন্ত্রী, সবাই দল বেধে লাগার কারণ কী? কারো কাছে কি জবাব আছে?

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: দিন-রাত লোকেরা পথে-হাটে-ঘাটে-মাঠে অনবরত আওয়ামী লীগের সমালোচনা করছে। ফেইসবুকের চিপায়-চুপায়, সামনে-পিছনে বিএনপিকে ধুয়ে দিচ্ছে। এসব জামায়াতের লোকদের চোখে পড়ে না। ভীরু পায়ে পথ চলা গ্রাম্য কিশোরীর মতো তারা সব সময় মনে করে, ‘লোকেরা কেন শুধু আমাকেই দেখছে!’

Md Mahdi Hasan: “১৯৬৫-এর নির্বাচনে তিনি ফাতিমা জিন্নাহকে সমর্থন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। অথচ তখনকার সবগুলো ইসলামী দল নারী নেতৃত্বের বিপক্ষে ছিলো।”

এটা সম্পূর্ণ ভুল তথ্য। বরং তখনকার সবগুলো ফেরকা (শিয়া, সুন্নী, দেওবন্দী, বেরেলভী, আহলে হাদীস, জামায়াতে ইসলামী ইত্যাদি) মিলেই ইজতিহাদী ইজমার মাধ্যমে আইয়ুব খানের বিপক্ষে ফাতেমা জিন্নাহকে বৈধতা দেয়। তাদের কিয়াসের মূল বিষয় ছিল ইসলাম বড় বড় বিপর্যয় ঠেকাতে ছোট ক্ষতি বেছে নেওয়ার অনুমতি প্রদান করে।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আপনার দেয়া তথ্য সঠিক হতে পারে। ইতিহাসের বিষয়ে আমি আপনার সাথে তর্কে লিপ্ত হবো না। তাছাড়া লেখাটা তো আমার নয়। আমি শুধুমাত্র কিছুটা এডিট করে উদ্ধৃত করেছি। তবে এ দেশের মূলধারার ইসলামী ঘরানার লোকেরা জামায়াতে ইসলামীকে নারী নেতৃত্ব সমর্থন করার জন্য বরাবরই দায়ী করে এসেছে। দেখেছি। এর ঐতিহাসিক কারণ কী, সেটা ইতিহাস যারা ভালো জানেন তারাই ভালো বলতে পারবেন।

ব্যক্তিগতভাবে আমি নারী নেতৃত্বে বিরোধী নই। এ নিয়ে আমার এই লেখাটা পড়তে পারেন– নারী অধিকার প্রসঙ্গে শরীয়াহর নির্দেশ বনাম নির্দেশনা

Md Mahdi Hasan: হ্যাঁ, আপনি তো তথ্যসূত্র উল্লেখ করেছেন। আমি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সঠিক তথ্য তুলে ধরেছি।

আসলে এই দায়ী করার পেছনে আমার দুইটি কারণ মনে হয়েছে (যেহেতু আমি কওমি অঙ্গন থেকে বড় হওয়া)। একটি হচ্ছে বিরোধিতার জন্যই বিরোধিতা, আরেকটি হচ্ছে সঠিক ইতিহাস না জানা।

একটি উদাহরণ দেই। আমি ছোটকাল থেকেই দেখে এসেছি, আমার দেওবন্দী ওস্তাদগণের পাশাপাশি আহলে হাদীসের ভাইয়েরা মাওলানাকে বা জামায়াতে ইসলামীকে ইসমতে আম্বিয়া (নবী-রাসূলদের নিষ্পাপতা) অস্বীকারকারী এবং মাওলানার ‘খেলাফাত ওয়া মুলুকিয়াত’ বইটির জন্য সাহাবী বিদ্বেষী বলে সবসময় ট্যাগ লাগিয়েছে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে মাওলানার জন্মের আগেই তাদের ফেরকাগুলোর সম্মানিত ওস্তাদগণ আরো জঘন্যভাবে এই একই কথাগুলো বলে গিয়েছেন।

Sultan Uddin: হযরত নুহ (আ.) ৯৫০ বছর দাওয়াত দিয়ে মাত্র ৮০ জনকে দাওয়াত কবুল করাতে সক্ষম হয়েছিলেন! জনাব, হযরত নুহ (আ.) কি ব্যর্থ হয়েছিলেন! কেন ব্যর্থ হয়েছিলেন বলবেন কি?

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: প্রশ্ন যখন আপনি করেছেন তখন উত্তরটাও আপনার জানা থাকার কথা। ধারণা করছি, আপনি উত্তর পাওয়ার জন্য প্রশ্ন করেননি। বরং এক ধরনের ডিফেন্স দেয়ার জন্যই আপনি পাল্টা প্রশ্ন করেছেন। অথবা, উত্তর দেয়ার জন্য প্রশ্ন করেছেন। অতএব, উত্তরটা আপনি নিজেই দিতে পারেন।

সাথে আপনি আমার একটা সম্পূরক প্রশ্নেরও উত্তর দিতে পারেন। সেটা হলো, প্রফেট মুহাম্মদ (সা) মাত্র ২৩ বছরে বিরাট সফলতা পেয়েছিলেন। কেন ও কীভাবে তা তিনি পেয়েছিলেন, জানেন?

Sultan Uddin: নবী/আম্বিয়া (আ.) কি ব্যর্থ হন? আমি তো মনে করি সব দাঈ ইলাল্লাহই সফল।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: নবী-আম্বিয়াগণ (আ.) ব্যর্থ হন না– এই কথাটা জামায়াতে ইসলামী বা মাওলানা মওদূদী সংক্রান্ত আলোচনায় কীভাবে প্রাসঙ্গিক হয়, বুঝতে পারছি না। জামায়াত বা মওদূদী কি নবীদের সমতুল্য?

বৃহত্তর অর্থে সব মুসলমানই তো দাঈ ইলাল্লাহ বা আল্লাহর পথে আহবানকারী। তাহলে কি বলতে হবে সব মুসলমানই সফল? তাদের কোনো ব্যর্থতা নাই? কোনো দায়-দায়িত্ব নাই? তাদের কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনার কোনো দরকার নাই? শেখার কিছু নাই? সতর্ক হওয়ার কিছু নাই? কী আশ্চর্য কথা!

Sultan Uddin: জনাব, এ উপমহাদেশে সাইয়েদ আহমদ বেরলভির আন্দোলন এবং বালাকোটের যুদ্ধ সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আমার কাছ থেকে এতকিছু সম্পর্কে জানতে চাইলে তো ভাই অসুবিধা। আমি তো সব বিষয়ের এক্সপার্ট নই। যদিও আমার আগ্রহের সব বিষয়ে আমার সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি আছে। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আপনার কথাটা আপনি যদি ক্লিয়ারলি পজিটিভ সেন্সে বলে দেন, তাহলে তো হয়ে গেল। তা না করে নিজের কথাটা ভিতরে রেখে নানাবিধ প্রাসঙ্গিক বিষয়ে প্রশ্ন করতে থাকার যে প্র্যাকটিস আপনি করছেন, আমার মনে হয় আপনার এই মেথডলজিটাই ঠিক নয়।

Mohammed Abdullah Faruque: সবাই শুধু ব্যর্থতা খোঁজেন অথচ আমরা নিজেরাই কেউ সফল নই। ইসলামী অন্যান্য সকল দল, গোষ্ঠী, শায়েখ, মাওলানা, মুজাহিদিন, মুজাহিদ, মুজাদ্দেদ, প্রফেসর, অধ্যাপক– সবাই ব্যর্থ; কিন্তু জামায়াত ছাড়া ভিন্ন কারো কথা কেউ কখনোই বলেন না যে ওরা বা তারা ব্যর্থ!!

আমি নিজে ব্যাপারটা অন্যভাবে পর্যবেক্ষণ করি। এ দেশে ইসলামী সব দলগুলির মধ্যে শুধুমাত্র জামায়াতই একমাত্র সফল। যদি সফল না হতো তবে সরকারসহ সবাই কেন এই দলের সমালোচনা এবং অন্যায় অত্যাচারে এতো সময় ব্যয় করে।

Sabuj Kabir: উপমহাদেশের সামাজিক পরিস্থিতি এমনই যে আমার মনে হয় না রাজনীতি ছাড়া শুধু সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমে কোনো পরিবর্তন হওয়া সম্ভব। বৌদ্ধ ধর্ম এই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করেছিল রাজনৈতিক শক্তি অর্জন করেই। তেমনিভাবে হিন্দু ও ইসলাম ধর্মও বিস্তৃত হয়েছিল রাজনৈতিক কারণেই। যেটা খৃষ্টধর্মের ক্ষেত্রে হয়নি। কিন্তু খ্রিষ্টধর্মের প্রভাবগুলি রাজনৈতিকভাবেই আমাদের জীবনযাত্রায় মিশে গেছে। আমাদের সামাজিক কাঠামো অনেক বেশি অথরিটারিয়ান ছিল এবং আছে। যার কারণে এখানে কখনও কোনো সমাজ সংস্কার আন্দোলন বিশেষ সাফল্য পায়নি। সেটা শ্রী চৈতন্য হোক কিংবা হাজী শরীয়তুল্লাহ। একসময় মিশে গেছে রাজনীতির সাথে।

আক্কাস আলী: কিন্তু স্যার, ১৯৪১ সালে জামাত তো রাজনৈতিক দল হিসেবেই শুরু করেছিল। এমনকি জামাত প্রতিষ্ঠার আগেও জনাব মওদূদী ইসলামের রাজনীতিকরণের পক্ষে মাদ্রাসায় লেকচার দিয়েছেন এবং রাজনীতিতে ‘ধার্মিক’ মুসলিমদের সংখ্যা বাড়ানোর পক্ষে ছিলেন। তার চিন্তাধারা কখনো সামাজিক আন্দোলনের অংশ বলে মনে হয়নি; বরং সামাজিক আন্দোলনকে ইসলামীকরণের বাজে ও বিধ্বংসী পরিকল্পনা মনে হয়েছে। আরো পরিষ্কার করে বলতে গেলে, যেসব রাষ্ট্রে ইসলামিক একনায়কতান্ত্রিক ব্যবস্থা (শারিয়া আইন) কায়েম সম্ভব নয় এবং গণতন্ত্রের মাধ্যমেই ক্ষমতায় যাওয়ার একমাত্র পথ, সেসব রাষ্ট্রকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ভিতরে থেকে কীভাবে ইসলামীকরণ করা যাবে, তার সমাধানই ছিল জামায়াতে ইসলামী।

যেমন, মওদূদীর মতে:

“Islam is a system encompassing all fields of living. Islam means politics, economics, legislation, science, humanism, health, psychology and sociology.”

এবং

“Of all these aspects of Islam, Mawdudi was primarily interested in culture like preserving Islamic dress, language and customs, from what he believed were the DANGERS of women’s emancipation, secularism, nationalism, etc.” (Mawdudi and the Making of Islamic Revivalism, p. 49)

তাছাড়া নারীদের নিয়ে মওদুদীর চিন্তাধারা ছিল অপমানজনক এবং সমাজবিরোধী। তার মতে:

“Women’s visibility in the bazaar, colleges, theatres, restaurants as the greatest threat to morality. Art, literature, music, film, dance, use of makeup by women: all were shrieking signs of immorality.”

যদি ধরে নেই যে ফার্স্ট জেনারেশন জামাতিরা জনাব মওদুদীর এসব চিন্তাধারার লালন করতো, তাহলে তাদের ক্ষমতায় না আসা ছিল এ অঞ্চলের মানুষদের সৌভাগ্য!

Tofael Ahmed: জামাত সফল হতো যদি সরকার প্রকৃত গণতন্ত্র চর্চা করতো। তবে প্রকৃত গণতন্ত্র পৃথিবীর কোথাও সঠিকভাবে চলে কিনা, জানা নাই আমার। জামাত-শিবিরকে আলোচনা সভা করতে না দিয়ে দমিয়ে রাখা হয়েছে। তারা যদি সমাজ বা রাষ্ট্রে খোলাখুলি জনগণের কাছে আলোচনার সুযোগ পেতো, তাহলে আমার বিশ্বাস তাদের আর্দশের কাছে সব রাজনৈতিক দল ও রাজনীতির বাহিরের সব ইসলামিক দল পরাজিত হতো। রাজনৈতিক দলগুলো কেন জামাত-শিবিরকে কোনঠাসা করে রেখেছে? কারণ, অন্যসব রাজনৈতিক দল জামাত-শিবিরের আদর্শের কাছে পরাজিত। জামাতের আদর্শ প্রদর্শন করলে তাদের আলো নিভে যায়। অথচ আপনারা মনে করেন, জামাত-শিবির যদি এ পথে না চলে অন্য পথে চলতো তাহলে তাদের সমস্যা হতো না! এ কথাটি আমি সঠিক বলে মনে করি না। জামাত যদি অন্য পথেও এই আদর্শের উপর চলতো তাহলেও তাদের বাধা প্রদান করা হতো ১০০%।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: ‘প্রকৃত গণতন্ত্র’ বলে কোনো কিছু নাই। যা আছে তা হলো ‘তালেগোলে গণতন্ত্র’। সুতরাং এই ঠেলা ধাক্কা থেকে যে যেভাবে জিততে পারে, সেটাই বড় কথা। কেউ ভালো খেলেছে, সেটা বড় কথা নয়। বড় কথা হলো, সে শেষ পর্যন্ত জিততে পেরেছে কিনা। ভালো খেলার জন্য সে কোনো পুরস্কার পেতে পারে। তাতে করে সে বিজয়ী হয়েছে, এটা বলা যায় না। পরাজয় পরাজয়ই। বাস্তব বিষয়ে অবাস্তব প্রত্যাশা ও উচ্চতর নৈতিকতার কথা বলে appeal to emotion or pity’র দোহাই দেয়া এক ধরনের বুদ্ধিহীনতার পরিচয়।

Sohel Khan: জামায়াত ব্যর্থ নয়, অবশ্যই সফল। কিন্তু মূল্যায়‌নের মাপকা‌ঠি একেক জ‌নের একেক রকম।

Javeed Ahsan: এই ধারণা আপনার একার নয়। নেতাদের অনেকেই এই ধারণা পোষণ করেন। তাই যে কোনো সংস্কারের চেষ্টা তারা কঠিন হাতে রুখে দেন। ব্যর্থ নাকি স্বার্থক, তা বিবেচনা করার জন্য জানতে হবে– ২০ বছরে জামায়াত কি শক্তিশালী হলো নাকি দুর্বল হলো, এখন জামায়াত একা নির্বাচন করলে কয়টা সিট পাবে, সমর্থন কি বাড়ছে না কমছে, বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের কাছে, লিডারশিপে কে আছে, মিডিয়া উপস্থিতি কেমন, সারাদেশে কয়টা অফিস কার্যকর আছে, নেতাকর্মীদের নৈতিক অবক্ষয় হচ্ছে নাকি উন্নতি হচ্ছে ইত্যাদি। তারা রিসার্চ করুক এইসব প্রশ্ন নিয়ে। তারপর সিদ্ধান্ত নিক। শুধু সফল সফল বললে তো আর সফল হয় না!

আমার ধারণা, এই মুহূর্তে জামায়াত একা নির্বাচন করলে এবং সুষ্ঠু ভোট হলে সারা দেশে একটা সিটেও জিতবে না। চট্টগ্রাম-১৫ আসনেও নয়! অবশ্য আমার ধারণা ভুলও হতে পারে।

আখতার হোসেন: ইসলামী রাষ্ট্রের সঠিক ধারণা জামায়েতে ইসলামীর অনেক রুকনের মধ্যে নাই। তারা জনগনকে বুঝাবে কীভাবে? মাসে যতগুলো মিটিং ও সাংগঠনিক কাজ করে, তার তুলনায় দাওয়াতী কাজ নেই বললেই চলে। মানে তারা নিজেরা নিজেরা মিটিং করে ইসলামী রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখে। তারা যেহেতু বিপ্লবে নয়, ভোটে ক্ষমতায় যেতে চায়, তাই জনসমর্থন ছাড়া এটা আদৌ সম্ভব নয়। দাওয়াতী কাজ এর জন্য উত্তম পন্থা। যেটা তাবলীগ জামাত করে, তাদের যদি কিছু ভুল থাকে সেটা ভিন্ন বিষয়।

Sufian Abu: দাওয়াত ছাড়া লক্ষ লক্ষ জামায়াত কর্মী কি আসমান থেকে নাযিল হয়েছে?

আখতার হোসেন: লক্ষ লক্ষ হলে চলবে না। এতে তুষ্ট হওয়ার কিছু নাই। ইসলামী রাষ্ট্র করতে হলে কোটি কোটি লাগবে। এটা প্রায় ১৭ কোটি মানুষের দেশ ভাইজান।

Sufian Abu: গুড। তবে মনে হয়, আপনি জেনে থাকবেন যে কোরআনে ‘কম সংখ্যক’ পজেটিভ অর্থে আর ‘বেশি সংখ্যক’ নেগেটিভ অর্থে নির্দেশ করা হয়েছে

আখতার হোসেন: বর্তমান চিন্তার সাথে কুরআনকে আনা যথাযথ নয়। এটা মুসলিম-কাফিরের দন্দ্ব নয়। এখানে পক্ষ-বিপক্ষ সবাই মুসলমান। সবাই কুরআন-হাদীস বিশ্বাস করে। শুধু, আমল এবং রাষ্ট্রকল্যাণ চিন্তাটা ভিন্ন। ভিন্ন চিন্তার মানুষের সংখ্যাটা অনেক বেশি। ৭০ বছর রাজেনীতি করে এটা পরিবর্তন করতে না পারাটা ব্যর্থতা।

ফারুক আজিজ: বর্তমানে যারা এই দলের সাথে সম্পৃক্ত, বিশেষ করে এই বাংলার; তারা হয়ত জানেনও না যে জামায়াতে ইসলামীর সূচনা সামাজিক আন্দোলন দিয়ে। তাদের এতো বেশি রাজনীতিকরণ হয়ে গেছে যে ঐ জাল হতে বের হওয়া অসম্ভব।

সবচেয়ে সুন্দর বিশ্লেষণ হলো, তারা দলকে পূর্ণ ইসলামীকরণও করতে পারেনি, আবার উদারমনাও করতে পারেনি।

Rasul Sena: মোজাম্মেল ভাই, তর্ক করলে কেয়ামত পর্যন্ত করা যাবে। তাই তর্ক না করে শুধু বলবো, মুসলমানের সফলতা বলতে যেটা বোঝায় সেটা আপনি বুঝতে ভুল করছেন। আপনার কথা মেনে নিলে তো এটাও মেনে নিতে হবে যারা দ্বীন কায়েমের জন্য এ পর্যন্ত শহীদ হয়েছে তারা সবাই ব্যর্থ।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হলো, তারা আখেরাতের সফলতাকে দুনিয়াবী সফলতা-ব্যর্থতার মাপকাঠি হিসেবে নিয়ে আসেন। আখেরাতের সফলতা-ব্যর্থতা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে শুধুমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালার দয়া ও অনুগ্রহের ওপর। আল্লাহ তায়ালা দুনিয়াটাকে সৃষ্টি করেছেন কিছু নিয়ম এবং কানুনের ভিত্তিতে। দুনিয়াটা চলে একটা নির্দিষ্ট সিস্টেমে। এই প্র্যাক্টিক্যাল সিস্টেমে কারো কোনো কার্যক্রম সঠিক হয়েছে, না ভুল হয়েছে– সেটা পর্যালোচনা আমাদের দিক থেকে এই দুনিয়াবি সিস্টেমেই হতে হবে।

দুনিয়ার সব কিছুকে আল্লাহ তায়ালা তাঁর মতো করে দেখবেন, যাচাই করবেন, পুরস্কার বা শাস্তি দিবেন। তো, সেই প্রসঙ্গটাকে দুনিয়াবী কোনো কার্যক্রমের ভালো-মন্দ, ভুল-শুদ্ধতা কিংবা সঠিকত্ব বা ভ্রান্তি নির্ণয়ের আলোচনাতে নিয়ে এসে তালগোল পাকিয়ে ফেলা নিতান্তই অসঙ্গত। অথচ ঠিক এই অযৌক্তিক কাজটাই ইসলামপন্থী ব্যক্তি ও দলগুলো সাধারণভাবে করে যাচ্ছে।

রাজনীতিকে ধর্মের মাপকাঠিতে বিচার করার এই কাজটি হচ্ছে একটা ভুল পদ্ধতি। এমনকি, আমার এই কথাটাকেও যে কেউ ভুল বুঝতে পারে। ভাবতে বা বলতে পারে, আমি ধর্মকে আন্ডারমাইন করছি বা বাদ দেয়ার কথা বলছি। ধর্মকে বাদ দেয়া বা কম গুরুত্ব দেয়ার কথা আমি বলছি না। বরং আমার কথা হলো, ধর্ম থাকবে ধর্মের জায়গায়; রাজনীতি থাকবে রাজনীতির জায়গায়। ধর্ম, রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা, বুদ্ধিবৃত্তি, সংস্কৃতি– এক কথায়, মানবজীবনের জন্য অপরিহার্য সবকিছু নিয়েই হচ্ছে সামগ্রিকভাবে একটি জীবনাদর্শ। এর কোনো একটি অন্য কোনোটির বিকল্প নয়। এগুলো অভিন্ন বা আইডেন্টিকাল নয়। বরং এগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক হলো অপরিহার্য সম্পর্ক বলতে আমরা যা বুঝি, সেটাই।

জানি না, আমার এই কথাগুলো আপনি কতটুকু বুঝতে পারবেন। আপনার ছদ্মনামের আইডিতে আমার মন্তব্য করাটাই হয়তো ভুল হচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত না হলে আমি এ ধরনের ইমপার্সোনাল আইডিতে সাধারণত এক্সক্লুসিভ মন্তব্য করি না। তারপরও কিছুটা বলার চেষ্টা করলাম। এ নিয়ে যদি আপনি তর্ক করতে চান তাহলে এটি আপনার কমেন্টের উত্তরে আমার সর্বশেষ কথা। আর যদি আমার এ কথাগুলোর অধিকতর ক্লারিফিকেশন চান তাহলে এ সংক্রান্ত আমার লেখাগুলো পড়তে পারেন।

এনিওয়ে, ভালো থাকেন। আর আমার হেদায়েতের জন্য দোয়া করেন। অসুবিধা নাই। হেদায়েতের জন্য দোয়া হেদায়েতের ওপর থাকলেও করা যায়, না থাকলেও করা যায়। উভয় অবস্থাতেই তা ফলপ্রসূ ও কার্যকরী।

Mohammad Abu Tayeb: Jamaat didn’t do any political mistake till now. Those who are not at the real field, only they are seeing jamaats faults.

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আপনি কি জামায়াত করেন? করলে জামায়াতে আপনার পজিশন কী? যারা জামায়াতের মাইন্ডসেট সম্পর্কে জানতে চান, তাদের জন্য আপনার এই মন্তব্যটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও অর্থবহ।

Kazi Nahidul Hoque: মোজাম্মেল স্যারকে বলবো একটি ইসলামী দল খোলার! স্যারকে বলবো যোগ্যতা, শ্রম, মেধা সর্বোচ্চটা দিয়ে একটা দল খোলেন! দেখি কত দিনে এটলিস্ট একটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হওয়ার যোগ্যতা অর্জনের সক্ষমতা বা হ্যাডাম আপনার দল অর্জন করে। অথবা একটা ইসলামিক সংস্কৃতিক সংগঠন করুন, যার বিস্তৃতি ও প্রভাব সাইমুম বাদ দেন, পারাবার অথবা পাঞ্জেরীর মতো হলেও হবে। অথবা একটা ইসলামী ব্যাংক খুলে দেখান, যেটা ইসলামী ব্যাংকের মতো না হলেও পারার একটা সমিতির মতো হলেও হবে। প্লিজ, কিছু একটা করে দেখান। চেয়ারে বসে বসে থিওরি কপচানো খুব সহজ, কিছু একটা করে দেখান। শহীদ নিজামী, শহীদ মুজাহিদ, শহীদ কামরুজ্জামান, শহীদ কাদের মোল্লা– এরা ইতিহাস সৃষ্টি করে গেছেন শুধু আল্লাহকে ভয় করে।

হয়তোবা স্যার, দুনিয়ার লোভে পরে, জালিম সরকারের ভয়ে নিজের ভোল পাল্টালো রাজ্জাক স্যারের মতো…। দেশে অনেক ইস্যু আছে, যদি পারেন সেগুলোর ব্যাপারে বলুন। একটি কথা মনে রাখবেন ইসলামী আন্দোলন কোনো এক ব্যক্তির উপর নির্ভর করে না, সেটি আল্লাহ চালিয়ে নিয়ে যাবে। সেদিন বেশি দূরে নয় ইসলামের জয় অবশ্যম্ভাবী।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: যা এখনই দেখা যায় তা স্থূল কিছু একটা হবে। সুদূরপ্রসারী কোনো কিছু সম্পর্কে জানার জন্য খানিকটা অপেক্ষা করতে হয়। কিংবা থাকতে হয় তেমন বিশ্লেষণী ক্ষমতা।

‘মোজাম্মেল স্যার’ কী করেছেন বা করতে যাচ্ছেন তা বর্তমান ও ভবিষ্যতের ইতিহাসই সঠিক বলতে পারবে। তবে এটুকু নিশ্চিত বলা যায়, তিনি ব্যতিক্রমী মানুষ। জামায়াত-শিবিরের অপরাপর ভিন্নমত পোষণকারীদের মতো তিনি সমালোচনানির্ভর কিংবা ভীরু চরিত্রের মানুষ নন। তিনি অকপট চরিত্রের সাহসী, দৃঢ় প্রতিজ্ঞ, আশাবাদী ও প্রো-একটিভ মানুষ। অতীতের মতো এখনো তিনি অ্যাক্টিভিস্ট-লিডার। সদা সক্রিয়। নিছক তত্ত্ববিদ নন তিনি।

গত ১০ বছরে তিনি প্রায় ছয় শত প্রবন্ধ ও নিবন্ধ লিখেছেন। এর মধ্যে ‘জামায়াত’ শব্দটার উল্লেখ আছে অনধিক পঞ্চাশটির মতো লেখায়। mozammelhq.com সাইটে উনার লেখাগুলো কিংবা লেখাগুলোর লিংক পাওয়া যাবে। যাচাই করে দেখতে পারেন।

উনি যদি বেঁচে থাকেন এবং আল্লাহ যদি তাকে তৌফিক দেন তাহলে আগামী ১০ বছরে এ দেশে ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের ভিন্নতর মাত্রা ও নবতর এক ইতিহাস নির্মিত হবে। (এগেইন, ইনশাআল্লাহ) আসন্ন ভবিষ্যতে নতুন ধারার এই ইসলামী আন্দোলনে আপনাদের মতো সিনসিয়ার ও কমিটেড সব বর্তমান বিপ্লবীদের স্বাগতম।

কাজের এই নতুন ধারা সম্পর্কে খানিকটা স্বচ্ছ ধারণা লাভের আগ্রহ থাকলে ‘সমাজ ও সংস্কৃতি অধ্যয়ন কেন্দ্র’ (সিএসসিএস)-এর ওয়েবসাইট হতে ‘ইসলামী মতাদর্শের আলোকে সামাজিক আন্দোলন’ শিরোনামের লেখাটা পড়ে দেখতে পারেন।

লেখাটির ফেসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *