আমাদের পরিচয় কী? আমরা মানুষ, এটি কি আমাদের প্রথম পরিচয়? আমাদের ধর্মীয় পরিচয়ই কি চূড়ান্ত? আমরা কি বাংগালী? নাকি, বাংলাদেশী? কেউ কেউ নারী। এটি অর্থাৎ কারো লৈঙ্গিক পরিচয় নিয়ে আমরা কী করবো? আমাদের অর্থনৈতিক শ্রেণীগত যে পরিচয়, তা কি মৌলিক? কখন একজন মানুষ নৈতিক হয়? ভিন্ন আদর্শের কেউ কি নৈতিক হতে পারে? নৈতিকতার সাথে আদর্শগত বা ধর্মীয় পরিচয়গুলো কি সাংঘর্ষিক?
এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে আপনাকে এই ভিডিওটি শুনতে হবে। এরপরও আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে তা নিদ্বির্ধায় করতে পারেন। আমার ধারণা, বক্তব্যটি নাতিদীর্ঘ হলেও কনক্লুসিভ। অর্থাৎ এটি শুনে আপনি অনেক কিছুই ঠাহর করতে পারবেন।
এর মূল বক্তব্য হচ্ছে, আমাদের বহুমাত্রিক সত্তা বা মাল্টিপল আইডেন্টিটি আছে। ১০-এর মান কত? এটি কোনো প্রশ্ন নয়। সঠিক প্রশ্ন হতে পারে, ১০ কে কত দিয়ে কী করা হচ্ছে, তা। ১০ কে যদি গুণ করা হয়, তাহলে কত দিয়ে গুণ করা হচ্ছে তা নির্ণয় করবে ১০-এর মান কত হবে। ১০ কে যদি ভাগ করা হয়, তাহলে কত দিয়ে ভাগ করা হচ্ছে তা-ই নির্ণয় করবে ১০-এর মান কত হবে। একইভাবে, আমাদর পরিচয় কী? এটি একটি অনির্ধারিত প্রশ্ন। প্রশ্নটাকে সুনির্দিষ্ট করতে হবে। বলতে হবে, কোনটিকে আমরা আমাদের পরিচয় হিসেবে নির্ধারণ করছি।
প্রজাতিগতভাবে আমরা মানুষ। সামাজিক দিক থেকে আমরা কেউ ধনী, কেউ গরীব। কেউ নারী, কেউ পুরুষ। সামাজিক পরিচয়ে রয়েছে দুটি বিষয়: অর্থনৈতিক শ্রেণীগত পরিচয় এবং আমাদের লৈঙ্গিক পরিচয়। ভৌগোলিক দিক থেকে আমাদের দুটি পরিচয়: রাজনৈতিক পরিচয় এবং নৃতাত্ত্বিক পরিচয়। আমরা কোনো না কোনো দেশের নাগরিক। বাংলাদেশী হিসাবে আমরা সবাই সমান। বাঙ্গালী, পাহাড়ি, নিবাসী, অনিবাসী-প্রবাসী, সবাই আমরা সমান। কিন্তু নৃতাত্ত্বিক দিক থেকে পশ্চিমবঙ্গের বাংগালীদের সাথে আমাদের আত্মার সম্পর্ক। এই নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের অন্যতম প্রধান উপাদান হলো ভাষা। প্রজাতিগত, সামাজিক ও ভৌগোলিক পরিচয়ের চেয়ে উচ্চতর পরিচয় হলো আমাদের মতাদর্শগত পরিচয়, ধর্মীয় পরিচয় ও নৈতিক পরিচয়। এগুলোর কোনোটা কোনোটার বিকল্প নয়। এর কোনো একটা অন্য কোনোটাকে বাতিল কিংবা অকার্যকর করে না।
আমাদের পরিচিতি হিসাবে এগুলো একই সমতলের বিষয়। এগুলোর পারস্পরিক সম্পর্ক ক্রমসোপানমূলক নয়। একেক সময়ে, একেক ইস্যুতে আমাদের একেকটা পরিচিতি মুখ্য হয়ে উঠে। এ পর্যায়ে একজন ইসলামপন্থী হিসাবে আমি নিজের অবস্থানকে ব্যাখ্যা করেছি। ভিডিওটা দেখলে আশা সেটা আপনারা জানতে পারবেন।
‘সমন্বিত সামাজিক আন্দোলন’ ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটার লিংক: