“কোনো একটা নির্দিষ্ট বিষয়ে বিভিন্ন আলেম-হুজুররা বিভিন্ন মত প্রদান করেন। এ নিয়ে সাধারণ জনগণ বিভ্রান্তিতে পড়ে এবং সিদ্ধান্ত নিতে পারে না, কার মত অনুযায়ী আমল করবে। এমতাবস্থায় করণীয় কী? যে কোনো একজনের মত মেনে নিয়ে আমল করে গেলে ঐ মত যদি ভুলও হয় (এটা যে ভুল যদি আমি না জানি বা নির্ণয় করতে না পারি), তবে আমার কর্মের জন্য কি আমি দায়ী থাকব? অথবা হুজুর? নাকি কেউই নয়?”– একজনের প্রশ্ন।

প্রশ্নকর্তাকে আমি বলেছি,

প্রত্যেকে নিজের কাজের জন্য দায়ী থাকবে। অন্য কথায়, কারো দায় কেউ গ্রহণ করবে না। আমাদের সমাজে একটা প্রচলিত ধারণা হলো, আমি যদি না জানি এবং এক্ষেত্রে কোনো একজন আলেম বা ফকীহর মতকে যদি অনুসরণ করি, তাহলে আমি আল্লাহর কাছে বলতে পারবো– ‘হে আল্লাহ! আমি জানতাম না। অমুক আমাকে ভুল বলেছে। তাই, আমি এই ভুল বা অন্যায় কাজটি করেছি।’

না, এই ধরনের ফাউল কথা বলে আল্লাহর বিচার থেকে কেউ পার পেয়ে যাবে না। এ বিষয়ে কোরআনের আয়াতগুলো অত্যন্ত পরিষ্কার। আমাদের সমাজে গেড়ে বসা priest-class system-এর সমর্থনে এই ধরনের ভুল ধারণা গড়ে উঠেছে। বরং নিজেদের পাপ থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য পাপীরা এ ধরনের অজুহাত পেশ করবে, এই কথাই কোরআন শরীফে বলা আছে। এবং এটাও বলা আছে, এই ধরনের ওজর-অজুহাতকে কোনোক্রমেই গ্রহণ করা হবে না।

কাউকে আল্লাহ এমন কোনো করণীয় চাপিয়ে দেন নাই, যা জানা ও মানার ক্ষমতা আল্লাহ তাকে দেন নাই। তারমানে, যা আমাদের করণীয়, সম্পন্ন করার জন্য যা দরকার, তা আমাদের সাধ্যের মধ্যেই আছে। আত্মনির্ভরশীল ও সচেষ্ট হলেই তা আমরা অর্জন করতে পারি।

আমাদের সমাজে লোকেরা জ্ঞানলাভ করতে চায় না। তারা আমল করতে চায়। দিনরাত তাদেরকে আমলের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়। শুদ্ধ আমলের অপরিহার্য শর্ত হিসাবে সঠিক জ্ঞান অর্জনের কথা সাধারণত বলা হয় না। আমাদের ধর্মীয় পরিমণ্ডলের এটি একটি মৌলিক ত্রুটি। অথচ আমরা জানি, সঠিক জ্ঞান লাভ করা হলো সবচেয়ে বড় আমল!

ইজতেহাদ

জীবনে সঠিকভাবে চলার জন্য যা কিছু ভালো, তা জানতে হবে এবং মানতে হবে। আমরা যা জানতে পারি না বা মানতে পারি না, সেই জন্য আল্লাহ আমাদেরকে দায়ী করবেন না। ক্ষমা করবেন। এটি আমরা আশা করতে পারি। শর্ত হচ্ছে, আমাদেরকে যথাসম্ভব জানা ও মানার চেষ্টা করতে হবে। আমার সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে জানতে গিয়ে এবং সে মোতাবেক চলতে গিয়ে আমি যদি ভুল করে ফেলি, তাহলে সেটা আমার মানবিক সীমাবদ্ধতা। এটি হতেই পারে। এই ধরনের অক্ষমতা আল্লাহর দৃষ্টিতে ক্ষমার যোগ্য। এমনকি অনিচ্ছাকৃত ভুল ইজতেহাদের জন্য এক গুণ সওয়াবের কথাও বলা হয়েছে।

মনে করা হয়, ইজতেহাদ শুধু তেমন এক্সপার্টরাই করতে পারবেন। তাই সাধারণ লোকেরা ইজতেহাদ করতে পারবে না বলে ধরে নেয়া হয়। এই ধারণা অর্ধ-সত্য। উচ্চমানের ইজতেহাদ উচ্চমানের লোকেরাই করতে পারবে। এটিই স্বাভাবিক। সাধারণ মানের লোকেরা করবে সাধারণ মানের ইজতেহাদ। ইজতেহাদ কিন্তু সবাইকেই করতে হয়। যদি তাই হয়, তাহলে বলতে হয়, এক অর্থে প্রত্যেকেই মুজতাহিদ। এবং একইসাথে প্রত্যেকেই অনুসরণকারী। কে, কোন বিষয়ে ইজতেহাদ বা অনুসরণ করছেন, সেটা ভিন্ন বিষয়।

অসাধারণ লোকদেরকে অসাধারণ হিসাবে চিনতে পারার মতো কোয়ালিটি ও ক্যাপাসিটি যদি সাধারণ লোকদের না থাকে, তাহলে সাধারণ লোকেরা কীসের ভিত্তিতে অসাধারণ লোকদেরকে অসাধারণ হিসাবে চিনতে পারবে, স্বীকৃতি দিবে ও তাদের কাছ হতে ফায়সালা গ্রহণ করবে? তারমানে হলো, কখনো আমরা সরাসরি যাচাই করি। কখনো আমরা ব্যক্তিগতভাবে যাচাই না করে যারা সংশ্লিষ্ট বিষয়টিকে ভালোভাবে যাচাই করেছে, তাদের ফাইন্ডিংসকে মেনে নেই। উভয় ক্ষেত্রেই সত্য-মিথ্যা যাচাই করার একটা বেসিক ক্রাইটেরিয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে ক্রিয়াশীল থাকে।

ধর্মগুরু ব্যবস্থা

সব ধর্মে‌ই আছে ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ বা ধর্মগুরু ব্যবস্থাপনা। উপরে যেটাকে আমি priest-class system হিসেবে বলেছি। ধর্মগুরুরাই মানুষকে যা কিছু বলার বলে এবং তাদের পাপ মোচনের ব্যবস্থা করে। মানুষ ধর্মগুরুদেরকে বিনাবাক্যে মেনে চলে এবং এই অন্ধ-আনুগত্যশীলতাকে নিজের জন্য রক্ষাকবচ বলে মনে করে। ইসলামের দৃষ্টিতে এটি এক ধরনের শির্ক। এ ব্যাপারে সূরা তওবার ৩১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আল্লাহকে বাদ দিয়ে তারা তাদের আলেম ও দরবেশদেরকে রব বানিয়ে নিয়েছে।’ (ইবনে কাসীরের অনুবাদ)

আলেম সমাজ যতটুকু জ্ঞানী সম্প্রদায়, ততটুকু তারা শ্রদ্ধেয় এবং অপরিহার্য। আর তারা যতটুকু ধর্মগুরু সম্প্রদায়, ততটুকু ক্ষতিকর এবং পরিত্যাজ্য। ইসলামকে যেসব কারণে ধর্ম বলাটা মুশকিল তার একটা হলো এই ইস্যুটা। এমনকি গডকে স্বীকার করা ছাড়াও ধর্ম হতে পারে। কিন্তু ধর্মগুরু তথা priest-class system ছাড়া কোনো ধর্ম হতে পারে না। জনগণ সরাসরি গডের সাথে সংযুক্ত হতে পারে, এমন কোনো ধর্ম নাই।

তাই, আলেম-ওলামাদেরকে যদি আল্লাহ ও জনগণের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী তথা অন্যান্য ধর্মের priest-class system-এর মতো একটা ধর্মগুরু শ্রেণী হিসেবে দেখা হয়, তাহলে সেটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “আমার কোনো বান্দা যখন তোমাকে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে (তুমি তাকে বলে দিও), আমি তার অতি নিকটেই আছি, আমি আহ্বানকারীর ডাকে সাড়া দেই যখন সে আমাকে ডাকে, তাই তাদেরও উচিত আমার আহ্বানে সাড়া দেয়া এবং আমার ওপরই ঈমান আনা। আশা করা যায় তারা সঠিক পথের সন্ধান পাবে।” (সূরা বাকারা: ১৮৬)

আমাদের এখনকার আলোচনা যেহেতু priest-class system নিয়ে নয়, তাই এ বিষয়ে বিস্তারিত কথা বলছি না। শুধু এতটুকু মনে রাখতে হবে, ইসলাম মানুষকে ধর্মগুরু-ব্যবস্থার যাঁতাকল থেকে মুক্ত করে সরাসরি তাকে তার প্রভুর সাথে কানেক্ট করে। ধর্মগুরু বা ব্রাহ্মণ্যবাদী ব্যবস্থা অনৈসলামী ব্যবস্থা। এটি পরবর্তীতে সংযোজিত ও ভারসাম্যহীন সমাজব্যবস্থার ফলশ্রুতি। এর পাশাপাশি মনে রাখতে হবে, ইসলামে জ্ঞান, গুণ ও পাণ্ডিত্যকে দেয়া হয়েছে উচ্চমর্যাদা। জ্ঞানীদের কাছ থেকে সব সময় উপকৃত হওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে কোরআন ও হাদীস অধ্যায়ন করে আমি যা বুঝেছি সেই মোতাবেক আমি এই কথাগুলো বললাম। সঙ্গত কারণেই এখানে বিস্তারিত রেফারেন্স দেয়া হলো না, বা দেয়া সম্ভব হলো না।

মাযহাব মানা, না মানা

আমাদের প্রচলিত ধর্মীয় কাঠামোর অন্যতম প্রধান সীমাবদ্ধতা হচ্ছে তারা মানুষকে অন্ধ আনুগত্যের কথা বলে। বলা হচ্ছে, কোনো একটি মাযহাবকে আমি যদি অনুসরণ করি তাতে কোনো সমস্যা নাই। কিন্তু আমি কোন মাযহাবকে অনুসরণ করবো? যেটি আমার এলাকায় প্রচলিত, সেটাকে? নাকি যেটাকে আমার কাছে অধিকতর সঠিক মনে হয়, সেটাকে? হতে পারে একটা মাযহাবের সবগুলো মাসয়ালাকে আমার কাছে অন্য মাযহাবের সংশ্লিষ্ট মাসয়ালাগুলোর তুলনায় বেটার মনে নাও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমি কি একেক ইস্যুতে একেক মাযহাবকে অনুসরণ করতে পারব?

প্রচলিত মাযহাব ব্যবস্থাপনায় এই প্রশ্নগুলোর সঠিক সদুত্তর নাই। তাই, প্রচলিত মাযহাবের বাইরে যাওয়া যাবে না, এই ধারণাটি আমার দৃষ্টিতে ভুল। আবার, ‘মাযহাব অনুসরণ করা যাবে না’ এটিও আমার কাছে একটি নতুন মানহাজ বা মাযহাব-সদৃশ কিছু একটা বলে মনে হয়। অনেকটা জোট-নিরপেক্ষ জোটের মতো। চিন্তা থাকলে চিন্তা-গোষ্ঠীও থাকবে। এটিই স্বাভাবিক। বলাবাহুল্য, মাযহাব হলো এক ধরনের সমচিন্তার গোষ্ঠী বা স্কুল অব থট।

আসল কথা হলো, এ জীবন ও জগতে আমাদেরকে চলতে হবে বিবেক-বুদ্ধির পথ ধরে। নিজের দায়িত্ব নিতে হবে নিজেকেই। নীতি, নৈতিকতা ও আদর্শের ব্যাপারে অন্য কারো উপর ভরসা করা যাবে না। সত্যের ব্যাপারে করা যাবে না অন্ধ আনুগত্য।

তাই, সব সময় আমরা প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করার যথাসাধ্য চেষ্টা করব। যা আমরা জানি না, সেটা যারা জানে, তাদের কাছ থেকে জেনে নিবো। তারা ঠিক মতো বলছে কিনা তা সাধ্যমতো যাচাই করবো। কোনো অবস্থাতেই নিজের বর্তমান ও অনন্ত ভবিষ্যতকে কারো হাতে সঁপে দিবো না। আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান ও বিবেকবোধকে কাজে লাগিয়ে চলবো আপন আলোয়। এগুলো নিতান্তই সহজ সরল কথা এবং দিনশেষে এগুলোই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা।

ফেসবুক থেকে নির্বাচিত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

Amdadur Rahman: আমরা যারা দ্বীন-দুনিয়া সম্পর্কে কিছুটা পড়েছি, তারা সত্যাসত্য যাচাই করতে পারি। কিন্তু একেবারে যারা পড়ালেখার বাইরে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এমন মানুষ আছে, যাদের যাচাই-বাছাই করার কোনো সুযোগ নেই, তাদের ক্ষেত্রে আপনার পরামর্শ কী?

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: ডাক্তার বা এ ধরনের বিশেষজ্ঞের দরকার পড়লে লোকেরা কী করে? নিজের নৈতিক জীবন ও আদর্শের ক্ষেত্রেও তাদের উচিত তা-ই করা।

Amdadur Rahman: তারা কার কাছে যাবে? কারণ সকল ডাক্তারই বলছে, আমি সহীহ আকীদা। আগেই বলছি, রোগী নিজে যাচাই-বাছাই করার মতো সামর্থবান নয়।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: ওই তো উত্তর একটাই। ডাক্তারি না জানলেও সহীহ ডাক্তার চেনা চাই। এ যে জীবন-মরণের ব্যাপার। অজ্ঞতা হলো বিষতুল্য। তা গ্রামের মানুষ কিংবা শহরের মানুষ, কাউকেই রেহাই দেয় না। এ ছাড়া আর কী বলা যায়!

Amdadur Rahman: সত্যি কথা হলো মানুষ প্রচণ্ড রকমের বিভ্রান্তির মধ্যে আছে। আমার মনে হয়, এই ক্ষেত্রে আমরা একটু সহজভাবে চিন্তা করতে পারি। আর এখনকার সময়ের বিভ্রান্তিগুলো ফরজ-ওয়াজিবকেন্দ্রিক নয়, বরং বেশির ভাগ সুন্নত, নফল, মুস্তাহাব নিয়ে। তাই যে যা করে তাই করুক। ঈমান, হালাল, হারাম, আর ফরজ-ওয়াজিব বাদে বাকি বিষয়ে কড়াকড়ি না করলেও চলে।

Didar Khasru: মানতে হবে, জানতেও হবে। যা মানব, তা কী, কোথা থেকে, কীভাবে এসেছে, তা অবশ্যই জানার চেষ্টা থাকতে হবে।

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: পোস্টেই বলেছি, কর্মের মূল অংশ হলো যথার্থ জ্ঞান। এখানে এর সম্পূরক কথাটা বলছি।

জ্ঞানের মূল অংশ হলো স্বচ্ছ চিন্তা। সরল চিন্তাও বলতে পারেন। অধ্যয়ন বা পড়া কিন্তু জ্ঞানের মূল অংশ নয়। সহায়ক। অধ্যয়ন ছাড়াও সঠিক জ্ঞান অর্জন হতে পারে। কিন্তু স্বচ্ছ ও সরল চিন্তা ও অনুসন্ধিৎসু মনন ছাড়া সঠিক জ্ঞান অর্জন অসম্ভব।

আমাদের হুজুরেরা মানুষকে ফায়সালাটা বলে। প্রক্রিয়াটা বলে না। হয়তোবা জানেও না। ফিকাহর কিতাবে পড়েছে। তাই মুখস্ত বুলি ছাড়ে। কেউ কেউ আবার আন্দাজেও গুল মারে। দরকার হলো মানুষকে ক্রমে ক্রমে শিক্ষিত করে তোলা। চিন্তাশীল করে তোলা। জানতে চাওয়াকে উৎসাহিত করা। প্রশ্ন করাকে নিরুৎসাহিত না করা। সোজা কথায়, মাছ খাওয়ান বা না খাওয়ান, পুকুরটা চিনিয়ে দেয়া।

সাধারণ মানুষকে হুজুরেরা যতটা বেকুব মনে করে, তারা ততটা বেবুঝ-বেকুব নন। বরং, তাদেরকে এমন ধারণা দেয়া হয়, তোমাদের কাজ হলো কেবল আমাদের কথা শোনা। তোমরা খালি আমল করো।

যেমনটা পোস্টে বলেছি, জ্ঞান অর্জন হলো সবচেয়ে বড় আমল। ছোটখাটো কত আমল নিয়ে কত দৌড়ঝাঁপ। অথচ, জ্ঞান অর্জনের মতো সবচেয়ে বড় আমল নিয়ে লোকদেরকে তেমনভাবে উদ্বুদ্ধ করা হয় না। অবশ্য, লোকদেরকে সরাসরি ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে থাকলে সঙ্গত কারণেই ধারণা করা যায়, এখনকার ইসলামজীবী হুজুরদের ধর্ম-ব্যবসার এই পেশাটাই এক পর্যায়ে বন্ধ বা অকার্যকর হয়ে যাবে।

এ পর্যায়ে কেউ বলতে পারে, আপনার এই এগ্রেসিভ কথা দিয়ে তো চলবে না। আপনার দৃষ্টিতে যেটা ধর্মব্যবসা সেটা বন্ধ হলে মানুষ কীভাবে ধর্মকর্ম করবে? হুজুরেরা খাবে, চলবে কীভাবে?

অনাকাংখিত কোনো পেশায় নিয়োজিত লোকেরা সেই পেশা ছেড়ে দিলে খাবে কী, চলবে কীভাবে– এটি যদি সেই পেশাকে টিকিয়ে রাখার যুক্তি হয়, তাহলে তো যে কোনো খারাপ পেশায় নিয়োজিতদের জন্যও এটি প্রযোজ্য হবে। এক্ষণে কোন কোন পেশা উদাহরণ হিসাবে খারাপ, তা আর নাইবা বললাম।

আমার এ কথাগুলো নিছকই হক কথা বলার খাতিরে বলা। কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য নয়। দয়া করে ভুল বুঝবেন না।

Amdadur Rahman: ধন্যবাদ। আপনার কিংবা আমার কিংবা আমাদের উদ্দেশ্য এক। আর তা হলো উম্মাহ। মতপার্থক্য থাকতেই পারে।

আক্কাস আলী: What do you think about the theory that naturally most of the people in a society are Followers, Non-thinkers, and Ignorant? Does Pluto’s Allegory of the Cave support the theory?

To be honest, I don’t see how priest/clergy system can be countered in a society where most of the people are ignorant and non-thinkers. There will be always people in majority who will blindly follow their religious and political leaders.

মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আপনি যেটা বলেছেন সেটা সত্য। তৎসত্ত্বেও একটা সুন্দর সমাজ গঠন করার জন্য যত বেশি পরিমাণ লোককে চিন্তাশীল করা যাবে ততই মঙ্গল। সমাজ গঠন ও এর পুনঃনির্মাণ তো একটা চলমান প্রক্রিয়া। আদর্শকে স্থানীয় মান ও বিদ্যমান সমাজব্যবস্থার যতটা সম্ভব কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। অন্ততপক্ষে এতটুকু পরিষ্কার করতে হবে যে এটি হচ্ছে সঠিক এবং এটি হচ্ছে ভুল।

সমাজব্যবস্থার মধ্যে কোনো অসঙ্গতি থাকাটা যতটা ক্ষতিকর, তারচেয়ে বেশি ক্ষতিকর হলো সেই অসঙ্গতিটা যে অসঙ্গতি, সেটি যে ভুল, অন্যায়, খারাপ ও পরিত্যাজ্য, সেই ধারণাটাই না থাকা। আমাদের আলোচ্য বিষয়টিসহ নানা বিষয়ে বর্তমানে যা হচ্ছে।

লেখাটির ফেসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *