[বলতে গেলে সবাই-ই সুস্থ যৌন সম্পর্ক তথা স্বভাবসম্মত যৌন নৈতিকতার পক্ষে। বিশেষ করে ইসলামপন্থীরা চায়, বিয়ে হোক সহজতর। অথচ এই সামাজিক মূলনীতির অপরিহার্য যেসব ফেনোমেনা, তা মানতে তারা একেবারেই নারাজ। ব্যভিচার, আত্মরতি ও অস্বাভাবিক যৌনতার অনুষঙ্গগুলোকে যথাসম্ভব কমিয়ে আনতে চাইলে বিবাহবিচ্ছেদের ব্যাপকতাকে মানতে হবে। স্বাভাবিক হিসাবে গ্রহণ করতে হবে বিধবা ও তালাকপ্রাপ্ত বিবাহের বাস্তবতাকে। প্রচলন করতে হবে ছাত্রজীবনে বিয়ে করার সামাজিক রীতি। সর্বোপরি, খোলা মনে মানতে হবে পুরুষের বহুবিবাহের প্রয়োজনীয়তাকে।

সেন্সেটিভ হওয়া সত্ত্বেও বিষয়টার গুরুত্ব বিবেচনায় শেয়ার করলাম। কারো লেখা সরাসরি শেয়ার করার বিপদ হলো, লেখক কোনো কারণে স্ট্যাটাস বা নোটটা ডিলিট করে দিলে আপনার শেয়ারটাও হাওয়া হয়ে যাবে। তাই কপি করে দিলাম। লেখক জনাব Humayun Kabir Nayanকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।]

*****

“তালাকপ্রাপ্তা বা বিধবা নারীকে বিয়ে করা যেমন একটা সুন্নাহ। তেমনি বহুবিবাহ করা এটাও আরেকটা সুন্নাহ। কিন্তু আমাদের সমাজে এই দুটো সুন্নাহকেই আজ অবহেলিত ও দৃষ্টিকটু হিসেবে দেখা হয়।

কারণটা কী?

এটা খুবই সহজ সমীকরণ যে, প্রথমটা যেমন দ্বিতীয়টা দ্বারা প্রভাবিত, দ্বিতীয়টাও প্রথমটা দ্বারা প্রভাবিত। ভাইস ভার্সা ফ্যাক্ট আর কি। আর এটাও খুব সহজ সমীকরণ যে, যে সমাজে বহুবিবাহকে কঠিন করা হয়, সেই সমাজের পুরুষদের মাঝে তালাকপ্রাপ্তা বা বিধবা নারীদেরকে বিয়ে না করার মানসিকতা এমনিতেই তৈরি হয়ে যায়। এর কারণ বুঝার বা বুঝানোর জন্য কোনো যুক্তি প্রয়োগের প্রয়োজন পড়ে না। এই মানসিকতা সমাজই তৈরি করছে।

এখন এই সমস্যার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী কে? নারী? নাকি পুরুষ? আমার জানামতে, ডিভোর্সি বা বিপত্নীক পুরুষদের পরবর্তী বিয়ের ক্ষেত্রে তেমন কোনো সমস্যা ফেইস করতে হয় না। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এখানে আসল ভুক্তভোগী হন তালাকপ্রাপ্তা বা বিধবা নারীরা। কারণ, পুরুষদের মাঝে তালাকপ্রাপ্তা বা বিধবা নারীদেরকে বিয়ে না করার যে মানসিকতা তা আলরেডি তৈরি হয়ে আছে।

আর বহুবিবাহের ক্ষেত্রে নারীদেরকে দেখা যায় একেবারে আপসহীন। এই নারীদেরই কেউ যদি আবার অল্প বয়সে বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত হন, তখন অবিবাহিত পুরুষেরা তো এগিয়ে আসেই না, আর বিবাহিত পুরুষেরা এগিয়ে আসতে চাইলে তারা আবার তাদের স্ত্রী কর্তৃক বাধার সম্মুখীন হয়। ফলাফল কী? এক শ্রেণীর নারী সুবিধাভোগী, আর আরেক শ্রেণীর নারী ভুক্তভোগী। বলতে গেলে এক শ্রেণীর নারীদের কারণে আরেক শ্রেণীর নারীরা ভোগান্তির শিকার।

যদিও এটা স্বাভাবিক যে, কোনো নারীর জন্য তার স্বামীর দ্বিতীয় বিবাহ মেনে নেয়াটা কঠিন, কিন্তু সমাজের সার্বিক দিক বিবেচনা করলে মেনে না নেয়ার ক্ষতির প্রভাবটা মেনে নেয়ার কষ্টের চাইতে বেশি।তাই সমাজ ও সেই ভুক্তভোগী নারীদের কথা বিবেচনা করে মেনে নেয়াটা উচিত। এই ক্ষেত্রে একজনের কিছুটা আত্মত্যাগই হয় আরেকজনের জন্য করুণা। আবার কোন অবিবাহিত পুরুষও যদি এই ক্ষেত্রে এগিয়ে আসে, তার ক্ষেত্রে প্রথমোক্ত বাধা না থাকলেও সে আবার তার পরিবারের নারী বিশেষ করে মা-বোন-ভাবীদের বাধার সম্মুখীন হয়।

আমার পরিচিত একজনের ঘটনা জানি। অল্প বয়সে বিধবা হয়ে যাওয়া এক মেয়ের বিয়ের ব্যাপারে সে এগিয়েছিলো। কিন্তু তার পরিবারের কাছে সে এই প্রস্তাব তুলতেই তার মা, বোন ‘রে, রে’ করে উঠলো। আর ভাবীরা তো সাথে সাথেই টিটকারী– ‘ছিঃ! এই তোর রুচিবোধ! এত মেয়ে থাকতে তুই একটা বিধবা মেয়েকে বিয়ে করবি!’ ‘সেকেন্ড হ্যান্ড’ বলে কী যেন একটা টিটকারী আছে, সেটা দিতেও বাদ রাখলো না তার পরিবারের ঠাট্টা সম্পর্কের মহিলারা। বেচারা শেষ পর্যন্ত আর পারলো না। কিন্তু অপর ভুক্তভোগী মেয়েকে আরও কষ্টের স্বীকার হতে হলো আরেক শ্রেণীর নারীদের কারণে। যারা আজ টিটকারী দিলো, তারাই যদি আবার এই সমস্যায় পড়ে তখন তারা আবার অপর আরেক শ্রেণীর হাতে ভোগান্তির শিকার হয়। এভাবেই চলতে থাকে ভোগান্তির দুষ্টচক্র।

তাহলে সমাধান কী? সমাধান আল্লাহ তায়ালা অনেক আগেই দিয়ে রেখেছেন। আমরা এটাকে কঠিন বানিয়ে ফেলেছি। অথচ প্রত্যেকের অবস্থান থেকে একটু ছাড় আর একটু ত্যাগ স্বীকার করলেই এত বড় সমস্যা মিটে যায়। একজন মেয়ে হয়তো ভাবতে পারে, আমি কেন আমার স্বামীকে দ্বিতীয় বিয়ে করতে দেবো? একজন অবিবাহিত ছেলে হয়তো ভাবতে পারে, আমি অবিবাহিত ছেলে হয়ে এত এত অবিবাহিত মেয়ে থাকতে কেন একটা ডিভোর্সি বা বিধবা মেয়েকে বিয়ে করতে যাবো? একজন মা হয়তো ভাবতে পারেন, আমার অবিবাহিত ছেলেকে কেন একটা ডিভোর্সি বা বিধবা মেয়ের সাথে বিয়ে করাবো? একজন বোন ভাবতে পারে, আমার অবিবাহিত ভাইটিকে কেন এক ডিভোর্সি বা বিধবা মেয়ের সাথে বিয়ে করাবো? সবাই আজ এভাবে ভেবেই যাচ্ছে। কিন্তু সমাধান আসছে না। বরং বিষয়টা কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে, আর ভুক্তভোগীদের ভোগান্তি বাড়ছে।

আমাদের ভাবা দরকার ছিলো, এই দুনিয়া সবার জন্য পরীক্ষা। কেউ পরীক্ষা থেকে মুক্ত নয়। একজন নারীর জন্য স্বামীর দ্বিতীয় বিবাহ মেনে নেওয়াটা যেমন পরীক্ষা, তেমনি একজন পুরুষের জন্য একাধিক স্ত্রীর মাঝে ইনসাফ, আদল করাটাও পরীক্ষা। সাধারণত পুরুষের চাইতে নারীদের সংখ্যা বেশি থাকে। মুসলিম সমাজে মেয়েশিশু ভ্রূণ হত্যা (Abortion) এখনো অনেক কম পর্যায়ে আছে, যেমনটা ভারতে বা অন্যান্য দেশে অন্য ধর্মাবলম্বীদের মাঝে দেখা যায়। আর তাছাড়া এটা সুস্পষ্ট হারাম কাজ। এই জঘন্য কাজ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের মাঝে না থাকলে সেখানেও নারীদের সংখ্যাই বেশি হত। বর্ধিত নারীদের দায়িত্ব নেওয়া পুরুষদেরই কর্তব্য, আর নারীদের তা বুঝা উচিত।

সমাজের সবারই যে বহুবিবাহ করতে হবে বিষয়টা এমন নয়। নারী পুরুষের অনুপাত যেখানে যেমন সেটার উপর ভিত্তি করে কয়েকজন সামর্থ্যবান পুরুষ এই ব্যাপারে এগিয়ে আসলেই সমাধান হয়ে যায়। আর অতিরিক্ত এই নারীদের দায়িত্ব নেওয়াটাও পুরুষদের কর্তব্য এবং নারীদেরও সেটা বুঝা উচিত। কারণ এখানে ভুক্তভোগী পুরুষেরা নয়, বরং আসল ভুক্তভোগী হল এই পরিস্থিতির শিকার নারীরাই। অথচ আজ আমরা এটাকে কঠিন বানিয়ে ফেলেছি। আজ যেই নারী তার স্বামীকে বিয়েতে বাধা দিচ্ছে, আল্লাহ না করুন, তার স্বামী মারা গেলে কাল সে ভুক্তভোগী। কাল তার বিয়ে নির্ভর করছে অন্য কোনো পুরুষের স্ত্রীর ইচ্ছার উপর বা তার মা-বোনের সম্মতির উপর। আজ যে বোন সে তার ভাইকে বিয়েতে বাধা দিচ্ছে, আল্লাহ না করুন, সে বিধবা বা ডিভোর্সড হলে কাল সে ভুক্তভোগী। কাল তার বিয়ে নির্ভর করছে অন্য কোনো পুরুষের স্ত্রীর ইচ্ছার উপর বা তার মা-বোনের সম্মতির উপর। আজ যেই মা তার ছেলেকে এই বিয়েতে বাধা দিচ্ছে, আল্লাহ না করুন, কাল তার মেয়ের স্বামী মারা গেলে বা ডিভোর্সড হলে তখন সেও ভুক্তভোগী। কাল তার মেয়ের বিয়ে নির্ভর করছে অন্য কোনো পুরুষের স্ত্রীর ইচ্ছার উপর বা তার মা-বোনের সম্মতির উপর। তারমানে বুঝা যাচ্ছে, আজ যে সুবিধাবাদী, কাল সে ভুক্তভোগী।

তাই আসুন। প্রত্যেকেই প্রত্যেকের অবস্থান থেকে সেক্রিফাইস করি। বিধবা বিবাহ, তালাকপ্রাপ্তা মেয়েদের বিবাহ, বহুবিবাহ সবগুলোকেই সমান্তরালভাবে সহজ করি। সবগুলোতেই সমানভাবে জোর দিতে হবে। একটাকে কঠিন করলে বাকীগুলো কঠিন হয়ে যাবে। আর একটাকে সহজ করলে বাকিগুলোও সহজ হয়ে যাবে।”

ফেসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

Md Sohrab Hossain: স্যার, পুরুষের বহুবিবাহের প্রয়োজনীয়তা বললেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে নারী পুরুষ উভয়ই মানুষ! তাহলে নারীর ক্ষেত্রে বহুবিবাহকে সমর্থন কেন দিলেন না? আই মিন এক নারী একই সময়ে একাধিক পুরুষের সংসার করবে!! যদি পুরুষের বহুবিবাহকে সমর্থন দেন তাহলে নারীকেও কেন নয়?

নোট: আমি ব্যক্তিগতভাবে একজন স্ত্রী থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ের বিপক্ষে। যদি কোন কারণে স্ত্রী মারা যায় তাহলে বিশেষ বিবেচনায় দ্বিতীয় বিয়ে করা যেতে পারে। নারীর ক্ষেত্রে ও সেইম নিয়ম।

আপনার যুক্তি: অসহায় বিধবা নারীকে বাচানোর জন্য বহুবিবাহ!!! সেক্ষেত্রে বলব যে, প্রকৃতি সবসময় ব্যালেন্স মেইনটেইন করে চলে, তা না হলে প্রাকৃতিকভাবেই নারী পুরুষের রেশিও এভাবে সমান হত না, খুব সামান্য সংখ্যায় পার্থক্য আছে যার কারন হচ্ছে যে বেশি বয়সি পুরুষ কম বয়সী নারীকে বিবাহ করার কারনে যখন তারা বয়স্ক/ষাটোর্ধ হয় তখন পুরুষ কয়েক বছর আগে মারা যায়, কিন্তু এই বয়সের বিয়ের কথা নিশ্চয় আপনি বলছেন না। বিধবা নারী যেমন আছে ঠিক তেমন সমাজে বিপত্নীক পুরুষও আছে। বিপত্নীক পুরুষ বিধবা মহিলাকে বিয়ে করুক, তবুও একটির বেশি স্ত্রী মোটেও নয়।

Mohammad Mozammel Hoque: নারীর একইসাথে বহুবিবাহ তাদের শারীরিক ও মানসিক প্রকৃতি এবং প্রকৃতিরাজ্যের স্বাভাবিক আচরণের সাথে সাংঘর্ষিক।

সমতা হলো নৈতিক ও আদর্শিক। বস্তুগত সমতা প্রকৃতিবিরুদ্ধ ও অযৌক্তিক। ইকোয়ালিটি ইজ ইন দ্যা সেন্স অব ইকুইটি।

আইন করা হয় সাধারণ প্র্যাকটিস বা অবস্থার প্রেক্ষিতে। ব্যতিক্রম ব্যতিক্রমই। আশা করি বুঝবেন। অত্যন্ত সংক্ষেপে বললাম। ভালো থাকুন। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।

Md Sohrab Hossain: স্যার, আমি নারীর বহুবিবাহের সমর্থন মোটেও চাইছি না। পুরুষের বহুবিবাহের বিপক্ষে বলতে গিয়ে এই হাইপোথিটিক্যাল প্রসংগ এনেছি। বলে রাখি, টোডা উপজাতির নারীরা বহুবিবাহ করে, একই সাথে একাধিক পুরুষের সংসার করে এবং তাদের সমাজে এটা বৈধ। তাছাড়া আমাদের বাংলাদেশেও পতিতালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কতৃক অনুমোদিত। সুতরাং সেখানেও নারী একই সাথে একাধিক পুরুষকে গ্রহন করতে পারছে!!  স্যার, দিনশেষে আমরা তো ভালোবাসায় পরিপূর্ণ একটা সংসার/সমাজ চাই, তাই না?? বহুবিবাহের পক্ষের কোনো যুক্তিই আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয় না।

Mohammad Mozammel Hoque: ভাই, ও রকম কোনো উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর উদাহরণ দিতে পারবেন। কোনো বিষয়ে ‘এটা প্রকৃতিসম্মত’ বলার মানে হলো প্রকৃতির সাধারণ (কমন অর্থে) উদাহরণ বা নিয়ম বা আচরণ। ব্যতিক্রমকে বৈধতার ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করটাকে ‘ন্যাচারিল্টিক ফ্যালাসি’ বলে।

দ্বিতীয়ত, বাস্তব বিষয়ে হাইপোথেটিকেল প্রসংগ নিয়ে আসাও ভুল। যদি বলি, ‘নারী-পুরুষ সম্পর্ক’ ধরনে না হয়ে মানুষের প্রজাতি বৃদ্ধি অযৌন জনন পদ্ধতির বা উভযৌন জনন পদ্ধতির হলে মানব সমাজ কেমন হতো বা কী হতে পারে বা পারতো? – এই ধরনের প্রশ্নগুলো বুদ্ধিবৃত্তির অপচয় ও অপব্যবহার মাত্র। যা প্রকৃত তা মেনে নেয়াই প্রকৃতির দাবি। তাই না?

Md Sohrab Hossain: সৃষ্টিকর্তা পুরুষকে একটিমাত্র জননেন্দ্রিয় দিয়েছেন, নারীকেও ঠিক একটি। এর চাইতে বেশি প্রাকৃতিক উদাহরণ আর সম্ভব নয়। তাছাড়া বাস্তবিক পক্ষে একজন পুরুষের একাধিক স্ত্রী থাকলে সে সংসারে শান্তি সম্ভব নয়। হ্যা, শান্তি আছে এমন উদাহরণ দেখাতে পারবেন। আমিও জানি হযরত মুহাম্মদ স: এর সংসারে শান্তি ছিল। কিন্তু ওভারওল এটাও একটা ব্যতিক্রম ঘটনা। আসলে আজকের সমাজে ওরকম পরিস্থিতিতে শান্তি সম্ভব না এবং আমরা সবাই শান্তি চাই ভালোবাসায় পরিপূর্ণ একটা সংসার চাই।

Mohammad Mozammel Hoque: আমি তো বিস্তারিত যেতে চাচ্ছিলাম না। যাহোক, নারী ও পুরুষের উর্বরতার পার্থক্যটার দিকে যদি আমরা দেখি তখন আমরা বুঝতে পারি ‘একটি মাত্র জননেন্দ্রিয়’ থাকার সমতাটা একটা অক্ষিপুঞ্জ ও একটি অক্ষির সমতার মতো ব্যাখ্যাসাপেক্ষ।

Md Sohrab Hossain: ক্ষমতা থাকলেই সে ক্ষমতার ব্যবহার করতে হবে এমনটা ভাবা অমূলক। শান্তির জন্য নিগোসিয়েশন করা যেতেই পারে। কিছু নির্দিষ্ট সময়ে নারী যৌনকর্মে অক্ষম থাকে, সে সময়ে পুরুষ রোজা থাকুক!! ইসলামে অবিবাহিত পুরুষকে সামর্থ থাকলে বিয়ে করতে বলা হয়েছে, আর সামর্থ না থাকলে রোজা রাখতে বলা হয়েছে। এভাবে অন্তত অতিউর্বরতা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। তবুও একইসাথে একাধিক স্ত্রী নয়!! তাতে সমাজে শান্তি আসে না।

Mohammad Mozammel Hoque: আপনার সর্বশেষ মন্তব্য অপ্রাসঙ্গিক। fallacious

Wasim Firuz Baizid: সোহরাব হোসেন ভাই, আপনি একদিকে ইসলামের কিছু অংশ মানার কথা বলছেন (রোজা রাখার কথা); আরেক দিকে বহুবিবাহ, যেটা ইসলামে বৈধ, সেটার বিরোধিতা করছেন, ?????

কেমন কেমন হয়ে গেল না???

Md Sohrab Hossain: Wasim Firuz Baizid ভাইয়া, অন্য ধর্মের মানুষের কাছে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার কি জানেন?? ইসলামে বলা হয়েছে যে “যুদ্ধবন্দিনিদেরকে এবং কৃতদাসিদেরকে শারিরিকভাবে তাদের মালিক ভোগ করতে পারবে।” আমরা নির্বিকারভাবে এই প্রশ্নের উত্তর দেই যে সেই সময়ের প্রেক্ষিতে এটার অনুমতি ইসলামে দেওয়া হয়েছিল এবং এটা শুধু সেই সমাজের জন্যই। এটা ছাড়া যুক্তিসঙ্গত কোন উত্তর নেই আমাদের। আজকের মুসলিম বিশ্বে হযরত আলী (রা ) এর মত নেতা এখন আর নেই, তাই শান্তির জন্য গনতন্ত্রে বিশ্বাস করতে হবে, একনায়কতন্ত্র নিয়ে পড়ে আছে যারা তাদের অবস্থাতা দেখেন । ধর্মে বলা আছে তাই অন্ধভাবে মেনে নিবেন?? সৃষ্টিকর্তা তো আমাদেরকে বিবেচনা করার ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন। বহুবিবাহ কখনই সমাজে শান্তি আনতে পারে না। সময় বদলেছে, সমাজ বদলেছে পরিস্থিতি বদলেছে, তাহলে বিশ্বাস নয় কেন ? ইসলামে ইজমা/কিয়াস বলে তো কিছু আছে নাকি? ????

Nirjhor Ahammed Plabon: স্যার, সোহরাবের যুক্তিগুলো প্রচণ্ড শক্তিশালি মনে হচ্ছে। দাহমি উপজাতীয়রাও ইচ্ছে করলে একাধিক বর নিতে পারে বলে পড়েছিলাম। নিজস্ব ধর্মের নিয়মের বাইরে গিয়ে মুক্তভাবে চিন্তা করলে সোহরাবের যুক্তিগুলো খণ্ডানো বেশ জটিল মনে হচ্ছে। ধর্ম এবং মতবাদি সীমার বাইরে এসে যদি আপনি পূর্ণাঙ্গ বিশ্লেষণ করতেন তাহলে অনেক উপকৃত হতাম। আমার বিশ্বাস আমার পাশাপাশি জাতিও উপকৃত হবে। সোহরাবকে অভিনন্দন সাহস করে সাহসি বিশ্লেষণ করার জন্য। আপনাকে স্যালুট চমৎকার বিষয় তুলে ধরার জন্য….

Md Sohrab Hossain: Nirjhor Ahammed Plabon, আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। আসলে সম্মানিত কোন মানুষের কথা পছন্দ না হলেও কেউ মন্তব্য করে না, জাস্ট মনে কষ্ট নিয়ে এভোয়েড করে যায়। স্যারের অন্য পোস্টে তার ছাত্রীরা মন্তব্য করেন কিন্তু আজকের এই পোস্টে কোন মেয়ে মন্তব্য তো দুরের কথা লাইকও দেয়নি। স্যারকে অনুরোধ করছি পাবলিক সেন্টিমেন্ট বিবেচনা করার জন্য এবং মানুষের না বলা কথা ডিটারমাইন্ড করার জন্য।

Mohammad Mozammel Hoque: দাসীর সাথে মালিকের ‘সম্পর্ক’ যে এক প্রকারের বৈবাহিক সম্পর্ক তা জানার জন্য পড়ুন:

https://www.facebook.com/MH.philosophy/posts/1373785229305275

Wasim Firuz Baizid: সোহরাব হোসেন ভাই, আপনার অবশ্যই স্বাধীনভাবে চিন্তা করে নিজের পথ ঠিক করার অধিকার আছে। তবে প্রবলেম হলো, আপনার আর আমার ভালো লাগা আর আপত্তি দিয়ে ইসলাম/ধর্ম চলে না! যেগুলা আপনার মতে সঠিক সেগুলা মানবেন, আর যেগুলা আপনার যুক্তিতে ভুল সেগুলা মানবেন না, এই অধিকার ইসলাম আপনাকে দেয় নাই!

ইজমা-কিয়াস তখনি প্রযোজ্য হবে যখন কুরআন এবং হাদীসে কোন কিছুর সুস্পষ্ট আলোচনা থাকবে না! কুরআন-হাদীসকে টপকিয়ে ইজমা-কিয়াস প্রযোজ্য নহে।

সমাজ বদলেছে, সময় বদলেছে কিন্তু মুহাম্মদ (স.) কে সব যুগের জন্য আদর্শ হিসেবে প্রেরন করা হয়েছে!

(আমি নিজে যে খুব প্র্যাকটিসিং মুসলিম না, তা আগেই বলে নিচ্ছি) আপনি একবার ধর্মের ভিতরে থেকে চিন্তা করছেন, আরেকবার ধর্মের বাইরে গিয়ে চিন্তা করছেন।

Syed Al Jaber Ahmed: Md Sohrab Hossain, যদি আপনি বিবাহিত হয়ে থাকেন তাহলে বলি, আপনি আপনার স্ত্রীকে আপনার বর্তমানে আরেকটি বর দিন ও একই বাড়িতে থাকতে দিন, দিবেন কি! চিত্রটা একটু ভাবুন তো, কেমন উপভোগ্য হয়!

একবার ড. হুমায়ুন আজাদকে প্রশ্ন করা হলো, ধরুন, আপনার স্ত্রী অন্য পুরুষের সাথে পরকীয়া প্রেম করছে, তখন আপনার কেমন লাগবে? তিনি কিছুক্ষণ চুপ থেকে বললেন, ভেবে দেখিনি। এখানেই ও এভাবেই থেমে যায় তারা। ড. আজাদ আবার পরকীয়াকে আপনকীয়া বলতেন, হায় কৃষ্টি!

মজার ব্যাপার হলো যতদূর জানি কোন নারী এ যাবৎকাল একসাথে একাধিক স্বামী নিয়ে সংসার করতে চায় দাবি করেছে শুনিনি, পুরুষরাই এসব বলছে, ব্যাপারটি জান্নাতের হুরের মতো, যে হুর নিয়ে নারীদের কোন কথা নেই, নারীর হুর হবো কি হবো না তা নিয়ে মাথা ব্যথা নরদের!! অদ্ভুত! আসুন প্রবৃত্তি নয় প্রকৃতি তথা ইসলাম মেনে চলি।

এক উপজাতি প্রসঙ্গ টেনেছেন, সে ক্ষেত্রে বলি। কোন কোন উপজাতির লোকেরা মৃত মানুষদের দেহ খেয়ে ফেলে, মাটি বা পুড়িয়ে ফেলে না। তো আপনি কি খাবেন মৃত মানুষের দেহের হাড় ও মাংস? সো, কোন এক উপজাতির উদাহরণ বাস্তবসম্মত নয়। আশা করি বোধদয় ঘটবে।

Shaila Nur Pinks: ধন্যবাদ সোহরাব ভাইকে আমাদের মনের কথা বলার জন্য। স্বামীর দ্বিতীয় বউকে মেনে নেয়া থেকে একজন মেয়ের জন্য বিধবার জীবন বেশি সম্মানের।

Md Sohrab Hossain: Shaila Nur Pinks ম্যাম, ধন্যবাদ সাহস করে মন্তব্য করার জন্য। একবার ভাবেন তো সৌদি আরবে নারীরা ড্রাইভিং লাইসেন্স পেয়েছে এই ২০১৭ সালে, আই মিন অনেক দেরিতে। নারী ভোটাধিকার, শিক্ষার অধিকার, ড্রাইভিং লাইসেন্স, চাকরির অধিকার সবকিছুই অনেক দেরিতে পেয়েছে। আধুনিক সমাজের শিক্ষিত হিন্দুরা ব্রাক্ষনদের তৈরি উচু জাত নিচু জাত প্রথা মানেন না, তাদের তৈরি সতীদাহ প্রথাও মানেন না। আধুনিক সমাজের শিক্ষিত মুসলমানরাও মোল্লাদের তিন চারটা বিয়ে হাস্যকর চোখে দেখে, আল্লাহ্‌ মুখ দিলে আল্লাহ্‌ খাওয়াবে এমন কথা বলে ১৫/২০ টা সন্তান জন্ম দিয়ে অনাদরে অনাহারে বড় করবে এমনটাও হাস্যকর চোখে দেখে। ধর্মের আইন বা দেশের সাংবিধানিক আইন কোনটার তোয়াক্কা না করে মনগড়া ফতোয়া দিয়ে নিরপরাধী বা সামান্য অপরাধীকে চাবুক/বেত্রাঘাত করতে করতে মেরে ফেলবে এগুলাও এখন আর কেউ বরদাস্ত করে না। মোদ্দা কথা হল যুগে যুগে ইতিহাস রচিত হয়েছে এখনও হচ্ছে আই রিপিট রচিত হয়েছে। আর আমরা রচিত ইতিহাস বেশি পড়ি। ধর্মের ব্যাখ্যাও নীতিনির্ধারকগন নিজেদের সুবিধামত করে এসেছেন। আমাদের ন্যাচারটাই এমন যে মানুষ জন্মালে আয়োজন করে সবাইকে দাওয়াত করে খাওয়াই, মানুষের বিয়েতেও আয়োজন করে সবাইকে দাওয়াত করে খাওয়াই আবার সেই মানুষটাই মারা গেলে সবাইকে দাওয়াত করে খাওয়াই। এখানে হাসি/কান্না কোন ফ্যাক্ট না, ফ্যাক্ট হল মানুষের খাওয়া মানুষের সুবিধা।

Md Sohrab Hossain: প্রিয় স্যার, মনের ভুলেও আমাকে নাস্তিক মনে করবেন না প্লিজ। আমি নামাজ পড়ি, ইসলাম ধর্ম মানি। কিন্তু ধর্মের ভিতরে যেসব কল্পকাহিনী আছে সেগুলা মানি না। বিষাদ সিন্ধু টাইপের হাজারটা ঐতিহাসিক উপন্যাস আছে যেগুলা শুধুই উপন্যাস!! কিন্তু মোল্লারা এই ধরনের হাজারটা কল্পকাহিনীকে ধর্ম/সত্য বলে প্রচার করে। হাদিসের ব্যাখ্যা তাদের মনমত করে দেয়। অন্য ধর্মের মানুষের কাছে ইসলাম ধর্ম হাস্যকর হয়ে উঠছে যার জন্য খুবই খারাপ লাগে। ধন্যবাদ।

Mohammad Mozammel Hoque: Did I say anything which caused doubt in your mind that I’ve considered you atheist? I know you personally, you know that. I appreciate your concern on this issue. I always enjoy to exchange with argument and never take advantage of seniority.

Nirjhor Ahammed Plabon: স্যার, লিংক দেয়া লেখাটা পড়লাম। ওটা এত দুর্বল মনে হয়েছে যে, ওটা নিয়ে প্রশ্ন করতে চাই না। আপনি যদি বিস্তৃতভাবে লেখেন তাহলে জাতি অনেক বেশি উপকৃত হবে। আপনার লেখা পড়ার প্রত্যাশায় প্রহর গোনা শুরু করলাম…।

Sabuj Kabir: বিধবা বিয়ে নিয়ে আমাদের মানসিকতা এমন যে কোন বিধবা বিয়ে করতে ইচ্ছুক হলে তাকে খারাপ চোখে দেখা হয়। এমনকি এই দাবিও শুনেছি যে বাচ্চাসহ বিধবা আবার বিয়ে করার থেকে একা বাচ্চা মানুষ করা নাকি অনেক ভালো কাজ! একটা ঘটনা দেখেছি– এক বয়স্ক বিধবা মহিলার ছেলে বিদেশে স্থায়ী, মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। মহিলা আবার বিয়ে করতে চাইলে ছেলে মেয়েরাই প্রচন্ড বাধা দিতে যায়। বেচারা মেয়ের জামাই শাশুড়িকে সমর্থন ও সাহায্য করে এখন নিজের ঘরেই সমস্যায়!

Mohammad Mozammel Hoque: আমাদের এক সহকর্মীর মৃত্যুর পর উনার স্ত্রীকে উনার ছেলে তার মায়ের দ্বিতীয় বিয়ের ব্যাপারে বলেছিলো, যদি ‘ওই লোকের’ ঘরে কোনো সন্তান হয়, তাহলে সে আত্মহত্যা করবে। সেই হুমকি বা শর্তকে মেনে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন।

Rashedul Alam: সমাজে নৈতিকভাবে সুখ balanced করার জন্য পুরুষের বহুবিবাহ, বিধবা বিবাহ একটি উত্তম পন্থা।

Abdul Mannan: স্যার, নারী এবং পুরুষের রেশিওর ব্যবধান খুব একটা বেশি নয়। তাহলে পুরুষের বহু বিবাহের চাইতে বিধবা বিবাহের বিষয়টিকে সহজ করে তোলা কি অধিকতর উত্তম নয়? নারী পুরুষের সংখ্যাগত যে বৈপরিত্য তার জন্য বহুবিবাহকে প্রমোট করার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু?

Mohammad Mozammel Hoque: হাইপোথেটিকেলি ভাবতে পারি, পুরুষ ও নারীর সংখ্যা প্রায় সমান না হয়ে শুধু পুরুষ বা শুধু নারী কিংবা পুরুষের বিরাট সংখ্যাগরিষ্ঠতা বা নারীর বিরাট সংখ্যাগরিষ্ঠতা যদি হতো, তাহলে কেমন হতো। উপরের একটা মন্তব্যে বলেছি, নিতান্ত অবাস্তব কিছু নিয়ে কল্পনার সাগরে ভেসে বেড়ানোর নাম বুদ্ধিবৃত্তি চর্চা নয়। তারমানে, যা বাস্তবসম্মত তা নিয়েই এনগেইজ হওয়া উচিত। ইতিহাস ও পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে আমরা বুঝতে পারি নারীরা কিঞ্চিত সংখ্যাগরিষ্ঠ। ব্যতিক্রম দিয়ে তো আর নিয়ম হয় না। ব্যতিক্রম ব্যতিক্রমই। আইন হয় সাধারণ অবস্থার প্রেক্ষিতে।

আমরা জানি, আইন ও নিয়মের স্থায়ী উৎস হলো ন্যাচার বা ন্যাচারাল ওয়ার্ল্ড। প্রকৃতির রাজ্য। প্রকৃতির দিকে যদি আমরা লক্ষ করি তাহলে আমরা পলিগেমির সচরাচর উদাহরণ দেখতে পাই। নারীর একাধিক পুরুষ সঙ্গী তথা পলিয়েন্ড্রি বা গ্রুপ সেক্সের উদাহরণ প্রকৃতিতে অতি বিরল ঘটনা।

দ্বিতীয়ত: প্রাকৃতিক ফেনোমেনা সমুদয়ের সাথে (যেমন, নেংটু থাকা) মানুষের যে সভ্যতাগত বিরোধ তা আসলে প্রকৃতির বিরোধিতা নয়। বরং তা হলো প্রকৃতির অতিবর্তিতা। একটাকে বাদ দিয়ে অপরটা রিপ্লেসমেন্ট অর্থে নেয়াকে আমরা বিরোধিতা বলতে পারি। অপরদিকে, নিম্নস্তরের ত্রুটি বা সীমাবদ্ধতাকে কাটিয়ে উঠার জন্য সংশ্লিষ্ট নিম্নস্তরের বিষয়টির পরিবর্তে তদুনুরূপ উচ্চস্তরের কোনো কিছুকে গ্রহণ করা হলো অতিবর্তিতা। একে আপনি প্রগতিও বলতে পারেন। তাই, পুরুষের বহুবিবাহের প্রচলন হলো প্রকৃতির দাবি। সবকিছুর পরেও মানব সমাজের গড়পরতা পরিসংখ্যান অনুসারে পুরুষের এক বিবাহের সংখ্যাগরিষ্ঠতা হলো মানুষের সভ্যতাগত উৎকর্ষতার নিদর্শন। প্রকৃতির সাথে মানুষের দৃশ্যমান বিরোধের তাৎপর্য না বুঝে আমরা অনেক সময় ভুল করি।

সে যাই হোক, দ্বিরুক্তি করে বললে বলতে হয়, একাধিক বিবাহ হলো পুরুষের শারীরিক ও মানসিক গঠনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই বলে পুরুষমাত্রই অনিবার্যভাবে বহুগামী হবে বা হয়েছে, এমন তো নয়। যারা পুরুষের বহুবিবাহের বিপক্ষে বলেন তারা প্রতিপক্ষের বক্তব্যকে বিকৃত করে উপস্থাপন করে এরপর একে ‘খণ্ডন’ করার চেষ্টা করেন। তারা পুরুষের বহুবিবাহের বিরোধিতা করতে গিয়ে এমনভাবে কথা বলেন যেন পুরুষের বহুবিবাহের পক্ষপাতী হওয়া মানেই বাস্তবে বহুগামী হওয়া। পুরুষের বহুবিবাহ বিরোধিতাকারীদের এই slippery slope argument ইতিহাস ও পরিসংখ্যানের সাথে সাংঘর্ষিক।

পুরুষের বহুবিবাহ হলো নারীর নিরাপত্তার ব্যাপার। হ্যাঁ, দুনিয়ার সব ভালো কিছুরই যেমন অপপ্রয়োগ আছে, এই ব্যবস্থারও ক্ষেত্রবিশেষে কমবেশি অপপ্রয়োগ আছে। বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশে। ওভারঅল প্রাচ্য সমাজ নারী স্বার্থবিরোধী পুরুষতান্ত্রিকতায় দুষ্ট। এর বিপরীতে পাশ্চাত্য সমাজ উগ্র নারীবাদের মতো প্রকৃতিবিরুদ্ধ মতবাদ দ্বারা বিভ্রান্ত। সেখানে নারীরা নারী হওয়ার কারণে এত মারাত্মক শীতের মধ্যও ঊর্ধ্বাংশ ও নিচের অংশ উন্মুক্ত রেখে হাঁটাচলা করতে সামাজিকভাবে বাধ্য হয়, কত বড় জুলুমের ব্যাপার! তাই, সামগ্রিক আদর্শগত বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনার মধ্যে স্থানীয় অপসংস্কৃতিকে ‘যুক্তি’ হিসাবে টেনে আনা ভালো প্র্যাকটিস নয়। মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার সুপারিশ তো আর করা যায় না। তাই না?

দেখবেন, যারা পুরুষের বহুবিবাহের ঘোরতর বিরোধী তাদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ নারী-পুরুষের স্বাভাবিক সম্পর্কভিত্তিক ঐতিহ্যবাহী পারিবারিক ব্যবস্থারও প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ বিরোধী। তাদের বিবেচনায়, লিভিং টুগেদার কনসেপ্টই হলো যৌন সম্পর্কের মূল কাঠামো। এ ধরনের উগ্র চিন্তার প্রভাব প্রাচ্য সমাজে বসবাস করে ততটা টের পাওয়া না গেলেও পাশ্চাত্য সমাজে এটি প্রকটভাবে দৃশ্যমান। সমলিংগ বিয়ের যারা পক্ষে তারা তো পুরুষের বহুবিবাহ প্রথার মতো ‘পুরুষতান্ত্রিকতার’ বিরোধিতা করবেই। আমরা যে কত গভীরভাবে পাশ্চাত্য ভাবধারার অনুসারী তা চট করে বুঝতে পারি না। যে নিজে বুঝতে পারে না, এমনকি বুঝতে যে পারছে না তাও যখন কেউ বুঝতে পারে না, নিজেকে যখন কেউ ‘সব বুঝে ফেলেছি’ হিসাবে ভাবে, এমন অবুঝকে বুঝাতে যাওয়ার মতো বোকামী আর হয় না।

যারা যুক্তি শুনতে চান না, ভুল যুক্তির আশ্রয় নেন কিংবা যুক্তির গভীরে না গিয়ে জেদাজেদির কৃত্রিম বুদবুদের মধ্যে কমফোর্ট ফিল করেন তারা দেখবেন, ধর্ম মানার দাবি করে কিন্তু ধর্মের অকাট্য বিষয়সমূহের কোনো কোনোটিকে মানতে অপারগ। দেখবেন, তারা উচ্চশিক্ষিত হওয়ার দাবি করে কিন্তু যৌক্তিক কথাকে ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে প্রতিপক্ষের প্রতি ব্যক্তি-আক্রমণমূলক কথা বলে।

আপনার মন্তব্যের উত্তরে সর্বশেষ কথা হলো, সেই পুরনো কথা, কান টানলে মাথা তো আসবেই। কথাটা উল্টা করে বললে, কান ছাড়া তো মাথা নিতে পারবেন না। কোনো বিষয়ের অপরিহার্য অনুষঙ্গের একটাকে নিলে বাদবাকিগুলো আপনাতে এসে পড়ে। লেখাটা শেয়ার করার সময়ে উপরে দেয়া ছোট্ট ভূমিকার কথাটুকু তাই আবার বলছি। (১) বিবাহ, (২) বিবাহ বিচ্ছেদ, (৩) পুনর্বিবাহ ও (৪) বহুবিবাহ – এর প্রথমটাকে যদি নেন তাহলে বাদবাকি তিনটাকেও সহজভাবে নিতে হবে। কথা সহজ। পুরুষের মতো নারীরও একইসাথে একাধিক স্বামী থাকার অধিকার নাই কেন, সেটা equality আর equity’র প্রশ্ন। সে আলোচনা ভিন্ন প্রসংগ।

আল্লাহতায়ালা বলেছেন,

وَأَنكِحُوا الْأَيَامَى مِنكُمْ وَالصَّالِحِينَ مِنْ عِبَادِكُمْ وَإِمَائِكُمْ إِن يَكُونُوا فُقَرَاء يُغْنِهِمُ اللَّهُ مِن فَضْلِهِ وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ

তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহহীন, তাদের বিবাহ সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন। আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ। [সূরা নূর: ৩২]

লেখাটির ফেসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *