যারা আমাকে বিভিন্ন থটফুল লেখার লিংক পাঠিয়ে আপডেট রাখেন তাদের একজন কিছু দিন আগে মুনিম সিদ্দিকী নামের একজন শক্তিশালী লেখকের একটা লেখার লিংক পাঠালেন। পড়ে চমৎকৃত হলাম। এরপর হতে উনাকে নিয়মিত ফলো করি। আল্লাহ সাকার নন, নিরাকার– এটা নিয়ে তিনি আজ দুপুরে একটা স্ট্যাটাস দেন। তাতে আমি যে মন্তব্য করেছি তা নিয়ে এই পোস্ট।

কিছু লোক অহেতুক তর্ক করে। তাই আমি পারতপক্ষে কাউকে ট্যাগ করি না। ট্যাগ না করার সুবিধা হলো এক পর্যায়ে যদি কাউকে জোর করে ইসলাম প্রতিষ্ঠার ‘জেহাদে’ রত দেখা যায় তখন তাকে বলা যায়, আমি তো আপনাকে ডেকে আনি নাই, এটি আমার ওয়াল…। তাই জনাব মুনিম সিদ্দিকীর পোস্ট হতে যার মন্তব্যের উদ্ধৃতি দিচ্ছি তার নাম না ধরে হুবহু বক্তব্যটা তুলে ধরছি।

আল্লাহর অবশ্যই আকার আছে।

কিন্তু  তার আকার কেমন তা আমরা জানিনা। তিনিই ভাল জানেন। এবং কুরআনে আল্লাহ নিজের  দুই হাতের কথাও উল্লেখ করেছেন কিন্তু সেই দুই হাতের আকার কেমন তা আমাদের  কল্পনার বাইরে।

তবে মনে মনে বা প্রকাশ্য আল্লাহর কোন আকার কল্পনা করা স্পষ্ট পথভ্রষ্টতা কারন যে সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান নেই তা আমরা ধারণা করতে পারিনা

আল্লাহর আকার আছে– এমন অদ্ভুত দাবি করতে হলে হয়তো (১) আল্লাহ সাকার অথবা নিরাকার– এই বাইনারিকে অস্বীকার করতে হবে, অথবা (২) আল্লাহর অকল্পনীয় এক আকার আছে তা ভাবতে হবে। দেখুন, আমি এক্ষেত্রে অনির্ব্চনীয় কথাটা ব্যবহার করি নাই। কারণ, উপরের মন্তব্যেই দেখতে পাচ্ছেন কুরআনের বরাতে আল্লাহর বচনীয় অর্থাৎ বর্ণনাযোগ্য অংগ-প্রত্যংগ থাকার ওপর বিশ্বাস করতে বলা হয়েছে।

আচ্ছা, অকল্পনীয় সত্তা হতে পারে, অস্তিত্ব হতে পারে, আকার তো হতে পারে না। আকার ও অস্তিত্ব যে কোনো সৃষ্ট কিছুর জন্য প্রযোজ্য। আল্লাহর জন্য এটি প্রযোজ্য নয়। হতে পারে না।

যারা উপর্যুক্ত মন্তব্যকারীর উদ্ধৃতিকে এরপরও সঠিক মনে করেন, তাদেরকে শেষ পর্যন্ত  বলতে হবে, আল্লাহর (অকল্পনীয়) আকার আছে, যা সাকার ঈশ্বর ধারণার একটা বিশেষ ব্যতিক্রমী রূপ। জানি না, অতি আন্তরিক বুজুর্গরা ‘আল্লাহর আকার আছে’ এমন counter-intuitive কথা কীভাবে বলেন! হতে পারে, উনারা সত্তা ও আকারের সম্পর্ককে সর্বাবস্থাতেই অনিবার্য মনে করেন।

যদি এমন হয় যে, কোরআনে বলা হয়েছে, তাই তারা এমন অদ্ভুত দাবি করেন, যেহেতু কোরআনকে হুবহু মানতে হবে তাই, তাহলে দোস্ত-বুজুর্গ এসব অতি শুদ্ধতাবাদীদের (puritanic) সম্পর্কে হতাশই হতে হয়। কোরআনের পাঠক মাত্রই জানেন, কোরআনে দুই ধরনের আয়াত আছে। যা কোরআন নিজেই ক্লিয়ারলি বলে, আয়াতে মুহকাম বা দ্ব্যর্থহীন আয়াত এবং আয়াতে মুতাশাবিহ বা অনির্দিষ্ট অর্থ সম্পন্ন আয়াত। এর অতিরিক্ত হিসাবে মুহকাম ও মুতাশাবিহ আয়াতের কোনো তালিকা দেয়া হয় নাই। বৈশিষ্ট্য তথা অর্থ নিরূপণের ধরন নির্ণয়ের মাধ্যমে আমরা ঠিক করি, কোনটা মুহকাম আয়াত, কোনটা আয়াতে মুতাশাবিহ। হতে পারে এসব অর্গানিক বর্ণনা আয়াতে মুতাশাবিহ’র অন্তর্গত, যা হতে শুধুমাত্র শিক্ষা গ্রহণ করা যাবে। সেগুলোর বিস্তারিত খুঁটিনাটি নিয়ে এনগেজ হওয়া যাবে না।

যদি বলা হয় যে, এই আয়াতগুলো মুহকাম। অতএব এগুলোকে প্রত্যক্ষভাবে তথা লিটারেল সেন্সেই মানতে হবে। তাহলে, বর্ণনাগুলোর ফেইসভেলু অনুসরণ করে সরাসরি (মূর্তিপূজকদের মতো) খোদার মুখ-হাত-পা থাকার অর্থ গ্রহণ করা হবে না কেন? যদি সুরা ইখলাসের ‘কুফুয়ান আহাদ’ তথা কোন কিছুর মতো নহে – এই জাতীয় তাওহীদি আয়াতসমূহের সাথে সমন্বয়ের ব্যাপার থাকে, তাহলে, পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বারে বারে যে চিন্তা-ভাব্না-ফিকির করা তথা বিবেক-বুদ্ধিকে কাজে লাগানোর কথা অত্যন্ত স্পষ্ট করে বলেছেন সেই আয়াতগুলোকেও তো সমমর্যাদায় প্রত্যক্ষ বিবেচনায় রাখতে হবে। কিছু বাদ দিবেন, কিছু সমন্বয় করবেন এবং কিছু কিছুকে সমন্বয়ের কথা বলে কার্যত বাদ দিবেন, তাতো হয় না।

কোরআনের যে ইজায বা অলৌকিকত্বের কথা কোরআনেই বারম্বার দাবি করা হয়েছে, ইজাযুল কোরআন সম্পর্কিত কিতাবাদিতে দেখা যায়, কোরআনের অনন্য সাহিত্য গুণ এই অলৌককত্বের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য বা প্রমাণ। ভাষা যাই হোক না কেন, উপমা, উৎপ্রেক্ষা ও রূপক ছাড়া সাহিত্য হয় না। যদি এটি মানেন, তাহলে বলুন, লিস্টি করুন, কোরআনে বর্ণিত উপমা, উৎপ্রেক্ষা ও রূপকমূলক আয়াত কোনগুলো। দেখবেন আল্লাহর মুখ, হাত, পা সব এতে একোমোডেইট হয়ে যাচ্ছে। এখন ভাষায় ব্যবহৃত উপমামূলক বর্ণনাকে কেউ যদি আক্ষরিকভাবে নিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলেন তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির ব্যাপারে শোভন কথা কী হতে পারে, তা আমার জানা নাই।

উপরে উল্লেখিত উদ্ধৃতির একটা অংশ হচ্ছে “হাদিসে এসেছে জান্নাতে মুমিনরা আল্লাহকে দেখবে। আর যার আকার নেই তা  দেখতে পাওয়া যায়না। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন জান্নাতে জান্নাতবাসীরা  আল্লাহকে স্পষ্ট দেখতে পাবে। “

মুসলিম দর্শনে এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক আছে। এটিকে ‘দিব্য দর্শন’ বা beatific vision সম্পর্কিত সমস্যা বলা হয়। মুসলিম ফিলোসফিতে এই নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে কী কথাবার্তা, যুক্তি-পাল্টা যুক্তি আছে তা আলোচনার পরিসর এটি নয়। এ ব্যাপারে আমি শুধু স্ট্যান্ডার্ড আশারিয়া কনসেপ্টটাই তুলে ধরবো। আশারিদের মতে, আল্লাহর কোনো আকার নাই যে তা দেখা যাবে। তৎসত্বেও কোনো কিছু সাকারে সাক্ষাত দেখার যে প্রবল প্রত্যক্ষণ-অনুভূতি, তা মুমিন বান্দাহদের মধ্যে সৃষ্টি করার ক্ষমতা আল্লাহ রাখেন।

আমার মতে, বেহেস্তে প্রতি শুক্রবার আল্লাহকে দেখতে পাওয়ার বর্ণনার মানে হলো সেই সময়ে মানুষ আল্লাহর এমন দয়া, প্রেম, ভালবাসা লাভ করবেন, তাঁর এমন মহিমা প্রত্যক্ষ করবেন, যা ইতোপূর্বে তারা পান নাই, অনুভব করেন নাই। এভাবে অনন্ত কাল ধরে তারা মহান প্রভুর সান্নিধ্য লাভ করলেও শেষ পর্যন্তও তা দুনিয়ার জীবনে ঈমান আনার সময়কার অপ্রতুলতার মতো অপ্রতুলই থেকে যাবে।

পরম সত্তার সাথে ব্যক্তি সত্তার সম্পর্ককে ওয়াহদাতুশ শুহুদ তথা সত্ত্বার (অতি) নৈকট্য অর্থেই বুঝতে হবে। আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ করা মানে তার দয়া ও ভালবাসা লাভ করা। আল্লাহ সম্বন্ধে অধিকতর জ্ঞান লাভ করা। যা স্বত:ই অপূর্ণ। এ  এমন এক পথ যা সঠিক কিন্তু অন্তহীন। প্রতিটা মনযিলকেই অজ্ঞ পথিক মঞ্জিল ভেবে তৃপ্ত হবে। কিন্তু সহসাই তার ভুল ভাংগবে। অত:পর সে এগোবে। এবং এগোতেই থাকবে। আবাদান আবাদা, খা-লিদীনা ফিইহ…

ফেসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

Maruf Sajjad: স্যার, আমরা তো তিনটা স্প্যাশিয়াল ডাইমেনশনের বাইরের কিছুও চিন্তা করতে পারি না। সেজন্য কি আপার স্প্যাশিয়াল ডাইমেনশনের অস্তিত্ব অসম্ভব হয়ে গেল? যাঁরা আল্লাহর আকৃতির কথা বলেন, তাঁদের কথা হল, যেহেতু এ বিষয়ে আমাদের জ্ঞান নেই ও আমাদের কোন মতামত এখানে ভেরিফায়েবল ও না, সেহেতু এ বিষয়ে আমাদের আল্লাহ যা বলেছেন তাই মেনে নেয়া উচিৎ না?

Mohammad Mozammel Hoque: আল্লাহ যা বলেছেন তা না মানার কথা তো বলছি না। আল্লাহর কথাগুলোকে কীভাবে মানবেন, তাতো আল্লাহ নিজেই বলে দিয়েছেন। যেটা নোটে উল্লেখ করা আছে। আল্লাহর অস্তিত্বকে মেনে নেয়ার বাইরে তাঁর সত্তাগত আকারিক চিন্তামাত্রই স্ববিরোধিতায় পর্যবসিত হতে বাধ্য। আল্লাহর ক্ষেত্রে আকার চিন্তা নিছকই ক্যাটাগরি মিসটেক বা বাতুলতা মাত্র। আকারমূলক বর্ণনাগুলো আলংকারিক। আল্লাহর আকারমূলক বর্ণনাগুলোকে অলংকারিক ও রূপক বলাতে আল্লাহর মহান সত্তার কোনো প্রকার অমর্যাদা হয় না। বরং এতেই তাঁর মহিমা প্রকাশ পায়।

আল্লাহ তো বারে বারে “আমরা” শব্দটাকে ব্যবহার করেছেন। তাহলে, আল্লাহ মাফ করুক, আমরা কি মনে করবো, আল্লাহ আসলে প্লুরাল, যদিও তা এক হিসাবে আছে, যদিও তা আমরা বুঝতে অপারগ, ইত্যাদি?

Maruf Sajjad: স্যার, আপনি লিখেছেন “আল্লাহর আকার আছে – এমন অদ্ভুত দাবী করতে হলে হয়তো (১) আল্লাহ সাকার অথবা নিরাকার – এই বাইনারিকে অস্বীকার করতে হবে, অথবা (২) আল্লাহর অকল্পনীয় এক আকার আছে তা ভাবতে হবে।” এখানে দ্বিতীয় মতে স্ববিরোধীতা কোথায় সেটা স্পষ্ট হল না। জ্বি, এটা হয়ত কাউন্টার-ইন্টুইটিভ, কিন্তু ইনটুইশোন তো আমাদের আল্লাহর অ্যাট্রিবিউট এর দলিল নয়! আর ইন্টুইশনের উৎসটাও সাবজেক্টিভ, যারা ছোটবেলা থেকেই ক্রিশ্চিয়ান পরিবারে বড় হয়েছেন তাদের অনেকের তো ট্রিনিটির মত ডকট্রিন মানতেও সমস্যা হয় না!

Mohammad Mozammel Hoque: ট্রিনিটির বিশ্বাস তো ইনটুইশান নয়। এমনকি তাওহীদ বিশ্বাসও ইনটুইশান বা স্বজ্ঞা নির্ভর নয়। সাধারণ কাণ্ডজ্ঞান ও শুদ্ধ প্রজ্ঞা দিয়ে আল্লাহর অস্তিত্বকে হৃদয়ঙ্গম করে, তাওহীদ চিনে, মেনে সন্তুষ্ট হৃদয়ের কেউ স্বজ্ঞাতেও ঈমানের জ্ঞান লাভ করতে পারে। আপনি সত্তা (Existence or Being) এবং আকার (form, structure or physics) – এই দুইকে এক করে দেখছেন কিনা, তার উপর নির্ভর করবে আপনি আমার সাথে একমত হচ্ছেন কিনা। সমস্যাটা গোড়ায় চিহ্নিত করতে হবে। ভালো থাকুন।

সাকার? না, নিরাকার? এই সিম্পল বাইনারিতে তাওহিদী বয়ানে কার অবস্থান কোথায় হবে? আর, সাকার-নিরাকার বাইনারিকে অস্বীকার করার যুক্তি বা দলীল কী? কোরআনে তো অজস্র রেফারেন্স আছে যাতে সাকার কল্পনাকে খণ্ডন করা হয়েছে। তাহলে কোরআনে কি একই বিষয়ে বিরোধপূর্ণ কথা বলা হয়েছে?

Farid A Reza: Thanks. If you kindly send me original link, it would be great. To make comments I need to get time to read it. I am very busy now.

Mohammad Mozammel Hoque: www.facebook.com/munim.siddiqui/posts/10158086565400106

Farid A Reza: Thanks. I thought it is written in English or Arabic.

Mohammad Mozammel Hoque: সৌদি ফেরত আলেমদেরকে বলতে শুনেছি, আল্লাহর আকার আছে। যদিও তা আমরা বুঝতে অপারগ। উনারা আল্লাহর সত্তা “কোনো কিছুর মতে নহে”র এমন অর্থ করেন। এটা স্ববিরোধী লিটারালিস্ট এপ্রোচ। উনারা যুক্তি বুদ্ধির প্রবল বিরোধিতা করেন। অথচ, নিজেরাই সমন্বয়ের নামে নানা ধরনে যুক্তির অপব্যবহার করেন।

Farid A Reza: আমি মনে করি, আকার জিনিসটা বস্তুর সাথে জড়িত। আল্লাহ কোন বস্তু নয় যে তাঁর আকার থাকতে হবে। আল্লাহ নিজের হাত, চোখ, আরশে আসীন হওয়া ইত্যাদি বলেছেন উপমা হিসেবে, আমাদের বুঝার জন্য। আমরা নিজেরাও এ ভাবে বলি, এ কাজটা আমার হাতের বাইরে। এখানে হাত বলতে আমরা দৈহিক হাত না বুঝিয়ে ক্ষমতা বুঝাই। ভাষা ও সাহিত্যে এরকম মেটেফরিক্যাল প্রয়োগ আছে। কিছু আলেম সব কিছু আক্ষরিক ভাবে নেন। আমি মনে করি, কাব্য বা সাহিত্য যারা কম বুঝেন তারা এ ভাবে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেন।

তবে সার কথা হলো, আল্লাহর সত্তা নিয়ে বেশি কথা বলা ঠিক নয়।

আল্লাহ-ই ভালো জানেন।

Mohammed Shah Alam: আল্লাহর আকার হওয়া না হওয়া কি আসলে আমাদের জন্য কোন সমস্যা? এর কোন অনুমান করা ব্যাখ্যা করতে যাওয়া কি আমাদের জন্য জরুরী। কোরআনে আল্লাহর কিছু শরীরী (এবং হাদিসেও) এবং আমলী বর্ণনা আছে। এগুলো সামনে রেখে অনেক যুক্তি জিজ্ঞাসা উত্থাপন করা যায়। যেমন: “… তিনি আরশে অধিষ্ঠিত হলেন।” “আল্লাহ রাতের শেষ প্রহরে চতুর্থ আসমানে নেমে আসেন।” এখন রাতের শেষ প্রহর সর্বস্থানে একই সময়ে হয় না। তবে তো আল্লাহ নীয়ত ভ্রমণশীল থাকেন। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে আমাদের কি এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া, বা উত্তর সন্ধান করা জরুরী?

Mohammad Mozammel Hoque: আল্লাহর কালামের কিছু অংশ এলিগরিকেল – কেউ কেউ যেন এটি মানতে নারাজ। তারা হয়তোবা মনে করেন, আল্লাহ তায়ালা কিছু কিছু বিষয়ে এম্বিগাস কথা বলেছেন, এটি স্বীকার করলে, তাঁর মহিমা ক্ষুণ্ন হয়। এ ধরনের কথাগুলো যে নিছক রূপকার্থে তা নিয়ে ক্লিয়ারকাট ধারণা ও কথাবার্তা জারি থাকা জরুরী।

তাই, আল্লাহ কোনো কিছুর মতো নহেন – এই কথাটাকে বেইজ ধরে তাঁকে সাকার-নিরাকারের ভেদাভেদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ নিরাকারই ভাবতে হবে। আকার থাকার বর্ণনাগুলোকে আয়াতে মুতাশাবিহ হিসাবে গ্রহণ করতে হবে।

কোরআনের সাহিত্য মানের দিক থেকে আয়াতে মুতাশাবিহগুলোকে উপমা, উৎপ্রেক্ষা ও রূপকার্থে গ্রহণ করতে হবে। যদিও আয়াতে মুতাশাবিহগুলো ছাড়াও কোরআনে উপমা, উৎপ্রেক্ষা ও রূপক আয়াত রয়েছে।

Mohammad Mozammel Hoque: এ সংক্রান্ত একটা পোষ্টে একজন মন্তব্য করেছে “আল্লাহ তালা নিরাকার বললে আসলে গুনাহ হবে ভাই, শিরক পর্যায়ের কঠিন গুনাহ হবে।” তিনি একটা হাদীসের রেফারেন্স দিয়েছেন যেখানে পরকালে আল্লাহকে দেখার কথা বলা হয়েছে।

আমি খেয়াল করে দেখেছি, রাজনৈতিক আন্দোলনের ব্যর্থতা কিংবা তার নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় এ ধরনের রিলিজিয়াস পিউরিটানিজমের উৎপত্তি ঘটে। ভাবখানা এমন, এতদিন যা চলে এসেছে, সব ভুল। উদ্ভট সব বিষয়ের অযাচিত উত্তাপে ময়দানবিমুখ, পলায়নপর ও পরাজিত মানসিকতার লোকেরা সান্তনা খুঁজে পায়।

হ্যাঁ, মনে রাখবেন, জাতীয় জীবনে বিশেষত রাজনৈতিক বিপর্যয়ের পরবর্তীতে এ ধরনের অতি শুদ্ধতাবাদী দল-উপদল তৈরী হয়। সব সময়েই তা হয়েছে। জ্ঞান, প্রজ্ঞা, গুণ ও সাহস নিয়ে সমাজে যে মানবিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা, তা ভেংগে পড়লে বা দুর্বল হলে বা তাতে কোনো মেজর কন্ট্রাডিকশন তৈরী হলে সমাজের ‘ভালো মানুষদের’ মধ্যে নানা রকমের আধ্যাত্মিক নেচারের চিন্তা-বিভ্রাট মাথাচাড়া দিয়ে উঠে।

Abdul Alim Masud: ধন্যবাদ স্যার, এ বিষয়ে আমি কনফিউশনে ভুগতাম। সৃষ্টি জগতে আল্লাহর বিচরণ নিয়ে কিছু লেখার অনুরোধ রইল। আল্লাহ কি সর্বত্র বিরাজমান?

Masuk Pathan: আল্লাহর একটি নাম হল আল ওয়াসি- যিনি সবকিছু ধারণ করেন। কাজেই জগতসম্ভার তাঁর কাছে নিতান্ত কিছু। তিনি অবস্থান করেন তাঁর নিজস্ব ভাষ্যের নিজস্ব স্থান সময় সঙ্গায়নে। তবে আমাদের উর্ধাকাশে রাসু্লে সা. ভাষ্য অনুযায়ী। তার জ্ঞান, কুদরত/ সক্ষমতা, পাওয়ার, দৃষ্টি, মালিকানা সব স্থান, সব কালকে অতিক্রম করে। সকল দৃষ্টিকে/ জ্ঞানকে তিনি ধারণ করেন কোন দৃষ্টি/ জ্ঞান তাঁকে ধারণে চিরকালই অক্ষম।

Abdul Alim Masud: ধন্যবাদ ভাই

Mohammad Mozammel Hoque: না। আল্লাহ তায়ালা জগতের বাইরে। Transcendent অর্থে। যদিও জগতের সর্বত্র তাঁর নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ ও সর্বময় ক্ষমতা বিস্তৃত।

Abdul Alim Masud: ধন্যবাদ স্যার

মুহাম্মদ আফসার: আমরা আকার বলতে যা বুঝি আল্লাহ সে আকারের উর্ধ্বে, অস্তিত্ববান সত্তা হিসাবে তার কোন আকার থাকলে তার ধরণ বুঝা এবং তা নিয়ে ঝগড়ায় লিপ্ত হওয়া বান্দার কাম না।

Mohammad Mozammel Hoque: অস্তিত্ব সম্পন্ন সত্তা হলে কোনো না কোনো প্রকারের আকার থাকবে – এটি মানবীয় চিন্তার দুর্বলতা। ইসলাম তৌহিদ ধারণার মাধ্যমে এই চিন্তাভ্রমের সংশোধন করে।

Farid A Reza: আমরা বস্তুজগতের মানুষ। বস্তুর বাইরে কিছু আছে বলে কল্পনা করতে পারি না। এটা গুণ নয়, দুর্বলতা। বস্তু হচ্ছে সৃষ্ট জিনিস। সৃষ্টি যার আছে, তার লয় ও ধ্বংস আছে। আল্লাহ বস্তু নয়, সৃষ্ট নয়। রূহ আল্লাহর সৃষ্টি। সেই রূহের রহস্য আমরা এখনো ভেদ করতে পারিনি, চিনতে পারিনি। বস্তুকে নিয়ে পরীক্ষাগারে গবেষণা করা যায়। বস্তু না হলে সেটা সম্ভব নয়। এ জন্যে আমরা বলি, ‘আমানতু বিল্লাহি কামা হুয়া’ – আল্লাহ যে ভাবে আছেন সেভাবে আমরা তাঁর উপর বিশ্বাস করি। এর বাইরে আমরা জানি না।

Mohammed Shah Alam: আয়াতে মুতাসাবেহাহ্গুলো রূপক কিংবা গূঢ়ার্থপূর্ণ হোক কিংবা প্রচ্ছন্ন হোক, “জ্ঞানিদের” কর্তব্য হলো এগুলো “শোনার পর” মেনে “নেওয়া”; যুক্তিগ্রাহ্য ব্যাখ্যা তালাস নয়। তবু কেন আমরা ব্যাখ্যা খুঁজবো! আল্লাহর জাত এবং সিফাৎ দুটোর উপর ঈমান পোষণ করা জরুরী। সিফাতের মধ্যে শরীরী বর্ণনা আছে, আমলী বর্ণনা আছে। কিন্তু এগুলোর স্বরূপ উপলব্ধি মানবীয় কল্পণা, জ্ঞান ও বুদ্ধির অতীত। অনেক বৈশিষ্ট্য (সিফাৎ) বুর্ণনায় মানুষের বৈশিষ্ট্যের মত মনে হতে পারে। কিন্তু কোনক্রমেই মানূষের সাথে তুল্য নয়। যেমন বলা হয়েছে আল্লাহর ক্রোধের কথা। কিন্তু ক্রোধ যেমন মানবীয় বৈশিষ্ট্য তেমনি এটা মানব চরিত্র‍্যের দুর্বল গুন বা মন্দ গুন। কিন্তু আল্লাহ্‌ সকল প্রকার দুর্বলতা বা ত্রুটিমুক্ত মহা পবিত্র সত্তা।

আল্লাহ কোন কিছুর মত নন, আপন সত্তায়, আপন বৈশিষ্ট্যে অনন্য-অতুলনীয়। কিন্ত নিরাকার – এই বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে নিজের পরিচয় দেননি। যেটা আল্লাহ বলেননি, আমরা কোন বিদ্যাবলে বা কোন ক্ষমতা বলে সেটা আল্লাহ্‌র উপর আরোপ করতে যাবো? একটি হাদিস আছে, যেখানে রসুল স. মানুষের রুহের কথা বলতে গিয়ে নিজের দুটি আঙ্গুল কে প্রসারিত করে বলেন মানুষের রুহ আল্লার দু আঙ্গুলের মাঝখানে ঝুলন্ত। যাইহোক, শেষ কথা হোল আল্লাহ আপন সত্ত্বায়, আপন রূপে, আপন বৈশিষ্ট্যে অস্তিত্বমান। এগুলো মানবীয় যুক্তি, বুদ্ধি, চিন্তা, কল্পনা সক্ষমতার অতীত। এগুলোর ব্যাখ্যার চেষ্টা প্রয়োজনহীন এবং বিভেদ ও বিভ্রান্তির দরজা উন্মুক্ত করা।

Munim Siddiqui: খুব যৌত্তিকভাবে বিষয়টি তোলে ধরেছেন। আল্লাহ আপনাকে এর বিনিময় দুনিয়া এবং আখেরাতে দান করুন আমিন।

Manzurul Haque: স্যার, যার আকার নেই তা আমরা কল্পনা করতে পারি না, আমার মনে হয় এটা সবক্ষেত্রে সঠিক নয়, কারন মাত্র কয়েকশত বছর আগেও মানুষ অ্যাটম সম্বন্ধে ধারনা করতে পারত না বা এখনও আমরা অ্যাটম খালি চোখে দেখা যায় না, কিন্তু মানুষ তার কল্পনা শক্তি আর বিচার/অনুসন্ধিৎসু চরিত্রের কারনে শেষ পর্জন্ত অ্যাটম এর স্বরূপ আবিস্কার করেছে।

Mohammad Mozammel Hoque: আকার জানা না থাকা বা জানতে না পারা আর আদৌ আকার না থাকা – দুটা ভিন্ন ব্যাপার। “আল্লাহর আকার আছে। যদিও তা জানা হয়েছে বা জানা যাবে এমন কোনো আকারের মতো নয়।” আল্লাহ নিরাকার নন, এর মানে যদি এতটুকু হতো তাহলে তার সাথে আমি একমত না হলেও এর শক্ত প্রতিবাদ করতাম না।

বরং, কিছু লোক অতিশুদ্ধতাবাদের বশবর্তী হয়ে কোরআন-হাদীসে ব্যবহৃত এ সংক্রান্ত আলংকারিক (মেটাফরিকেল ও সিমিলি) বর্ণনাগুলোকে আক্ষরিকভাবে মানতে বাধ্য করতে চাচ্ছে। এটি অসুস্থ ও অতীব ভ্রান্তিমূলক টেনডেনসি।

দেখুন, কোরআনের সাহিত্যমানের যে পয়েন্টটাকে নোটে হাইলাইট করেছি, তা নিয়ে আকারবাদীদের কোনো কথা নাই। দুনিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ সাহিত্য কর্মে কোনো অলংকারিক বর্ণনা নাই, এটি কি বিশ্বাসযোগ্য? অথচ এই সালাফি-লিটারালিস্টরাই আল কোরআনের ইজায বা অলৌকিকত্বের বর্ণনায় এর সাহিত্য মানকে এর ঐশী গ্রন্থ হওয়ার অন্যতম প্রমাণ হিসাবে দাবী করে। ইনফ্যাক্ট, এটি তো কোরআনেই বলা হয়েছে।

তো, কোরআনের সাহিত্যমানকে অস্বীকার করা, কোরআনকেই অস্বীকার করার নামান্তর।

কিছু কিছু লোকের অবস্থা এমন, চাঁদের দিকে অঙ্গুলী নির্দেশ করে তাদেরকে দেখাতে চাইলে তাঁরা এতবড় চাঁদকে দেখে না, তারা ঐ ব্যক্তি যে আংগুল তুলেছে, সেটাই দেখে…

Pegieon Sohail: আল্লাহ কি বলেননি- আমাকে নয়, আমার সৃষ্টি নিয়ে গভেষনা কর? তারপরেও যারা কৌতুহলি, তারা কী মানুষের পর্যায়ে পড়ে?

Mohammad Mozammel Hoque: আকার মাত্রই হলো, তা যে আকারই হোক না কেন, আল্লাহর কর্তৃক সৃষ্ট। আল্লাহর ব্যাপারে মানুষের সামর্থ্য হলো তাঁর অস্তিত্ব ও গুণাবলীকে আইডেন্টিফাই ও কনফার্ম করতে পারা। এর বাইরে, আল্লাহ, আল্লাহর কাছে কেমন তা নিয়ে এনগেজ হওয়াটা অযৌক্তিক। কেননা, সত্তাগতভাবে তিনি একক ও অতুলনীয়।

কেউ কেউ আল্লাহ নিরাকার নন, অর্থাৎ তাঁর মতে করে তিনি সাকার, এ ধরনের কথাবার্তা বলে প্রাকারান্তরালে আল্লাহর সত্তা নিয়ে এনগেজড হয়ে পড়ছেন।

উনারা তাবৎ সৃষ্ট জীব, বস্তু ও অস্তিত্বের জন্য প্রযোজ্য নিজ নিজ রকমের আকারের অপরিহার্যতা আল্লাহর উপরও প্রযোজ্য – এমন ভুল ধারণা করছেন। আল্লাহ তায়ালা “অস্তিত্ব মানেই কোনো না কোনো আকার থাকা”র এই নিয়মের অধীন নয়। আল্লাহর সত্তা হলো এ দিক থেকে একমাত্র ব্যতিক্রম। এটি ভালোভাবে না বুঝার কারণে এই চিন্তাভ্রম।

মোহাম্মদ সংকেত: আমি তো ভেবেছিলাম, পৃথিবীতে আমাদের দৃষ্টির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ১৬০-১৭০ ডিগ্রি এঙ্গেল। এই সীমাবদ্ধ ধারণ ক্ষমতা দিয়ে মর্যাদা-শীল স্রষ্টাকে দেখার আশা করাটা বোকামি, স্ররষ্টার জন্য তা অবমাননাকরও বটে। তবে জান্নাতিদের দৃষ্টির ধারণ ক্ষমতা আর সীমাবদ্ধতার গন্ডিতে আবদ্ধ থাকবে না, তখন ৩৬০ ডিগ্রীর দৃস্টি শক্তির সীমানা শক্তি দিয়ে তথন তারা ইজিলি মহান সৃষ্টিকর্তা দেখতে পারবে।

Mohammad Mozammel Hoque: মহান আল্লাহ তায়ালার মহান সত্তাকে দেখা তথা দৃষ্টিশক্তির মধ্যে ধারণ করার মতো কোনো দৃষ্টিকোণ বা এংগেল নাই, হতে পারে না, হোক তা ৩৬০ ডিগ্রী বা এরও বেশি কিছু।

Mohammad Mozammel Hoque: আকার থাকা মানে কোনো না কোনো সীমার মধ্যে থাকা। আকার যত বড়ই হোক, তার পরিসর থাকবে। হোক সেটা ক্ষৃদ্রতম বা ক্ষুদ্রতর বা বৃহত্তর বা বৃহত্তম। আল্লাহর যেহেতু কোনো সীমা-পরিসর বা ক্ষেত্র নাই, তাই তাঁর আকারও নাই।

যারা ঈশ্বরকে সাকার মানে তারা তাঁকে নিরাকারও মানে। মূর্তিপুজারীরা হলো সাকারবাদী। তাদের মতে, নিরাকার খোদা মানুষের কাছে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আকারে হাজির হতে পারেন এবং তিনি তা হয়েছেন। এ ধরনের সাকার-ঈশ্বর ভাবনা ইসলামের দৃষ্টিতে শির্ক। ইসলাম অবতার ধারণাকে নাকচ করে।

ঈশ্বর যদি নিরাকান নন হন তাহলে তাঁর তাঁর মতো করে কোনো এক প্রকারের আকার আছে। এটি সাকারবাদী অবতারবাদের প্রাথমিক বা আদি রূপ।

মোট কথা, আল্লাহ ছাড়া বাদবাকী সবকিছুর ক্ষেত্রে আকার ও অস্তিত্বের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। মানুষ হিসাবে আমরা আল্লাহর অস্তিত্বকে টের পাই। তার আকারকে কল্পনা করতে পারি না।

কোরআন-হাদীসে আল্লাহ তায়ালার বিভিন্ন অংগ-প্রত্যংগ থাকার যেসব বর্ণনা আছে সেগুলো ধর্মীয় দৃষ্টিতে আয়াতে মুহাশাবিহ বা দ্ব্যর্থতাপূর্ণ আয়াত বা কথা। সাহিত্যের দৃষ্টিকোণ হতে সেগুলো রূপক, উপমা ও উৎপ্রেক্ষা।

কোনো বর্ণনা উপমা স্টাইলে হলে তা অর্থহীন হয়ে যায় না, সাহিত্য সম্পর্কে যার সামান্যতমও জ্ঞান আছে তিনি এটা বুঝবেন। বরং রূপক ও উপমা হলো সাহিত্যের অন্যত আকর্ষণ। কোরআন যদি যুগোত্তীর্ণ সাহিত্যও হয়, তাহলে তাতে কোনো রূপক ও উপমা থাকবে না, তা কি করে হয়? তাছাড়া সুরা আল আলে ইমরানের শুরুতেই আল্লাহ তায়ালা বলে দিয়েছেন, আয়াতে মুহকাম বা দ্ব্যর্থহীন আয়াতগুলোকে ভিত্তি ধরে কোরআন বুঝার জন্য।

আল্লাহ নিরাকার নন – এ কথার দ্বারা মানুষকে সাধ্যাতীত মানসিক বৈপরীত্যে নিক্ষেপ করা হয়।

আল্লাহ নিরাকার নন – এ কথার মানে তাঁর আকার আছে। আফসোস, ইসলাম যারা মানে না তারাও জানে, বলে, “ইসলাম ধর্ম অনুসারে স্রষ্টা নিরাকার। তাঁর আকার নাই।”

অথচ, কিছু অতি শুদ্ধতাবাদী বুদ্ধিরহিত যুক্তিবিদ্বেষী সালাফি ধার্মিকেরা বর্তমানে এটি অহরহ বলে বেড়াচ্ছে, “আল্লাহর আকার নাই, এটি বলা যাবে না। আল্লাহ নিরাকার নন।”

আশ্চর্য্য … !!!!

Mohammad Mozammel Hoque আল্লাহর আল্লাহর মতো করে আকার আছে, এই নিতান্ত অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে আমরা কেন এনগেজড হতে যাবো?

আল্লাহর আল্লাহর মতো করে আকার বা কী কী আছে বা নাই, এসব নিয়ে মাথা ঘামানো সিম্পলি ক্যাটাগরি মিসটেক, ঔদ্ধত্য, নির্বুদ্ধিতা ও পাগলামী।

আমরা জাস্ট দেখি, যা কিছু আছে তা কোনো না কোনো আকারেই আছে। থাকতে বাধ্য। আল্লাহ তায়ালাকে এভাবে থাকতে হয় না। তাঁকে কোনো আকার নিয়ে থাকতে হয় না, কোনো আকার যেমন মুখ দিয়ে কইতে হয় না, কোনো আকার যেমন হাত দিয়ে ধরতে হয় না। তিনি এসব সৃষ্টিগত সীমাবদ্ধতার উর্দ্ধে। কারণ, তিনি স্রষ্টা।

Foysal Hosain Abir: আমি আল্লাহকে নিরাকার হিসেবেই জানি, আর দুঃখজনক যে এই বিষয় নিয়ে আলোচনাও ইতিপূর্বে শুনিনি । যাইহোক, আমি নিরাকার মানে যার আকার নাই কিংবা নির্দিষ্ট আকার নাই হিসেবেই জানতাম। আর আল্লাহ তায়ালাকে দ্বিতীয় মিনিংয়েই ভাবতাম। কিন্তু বিষয়টা নিয়ে দেখছি স্টাডি করা লাগবে।

Mohammad Mozammel Hoque: “আল্লাহ নিরাকার নন” এমন মারাত্মক কিন্তু সূক্ষ্ম বিভ্রান্তির কারণ হলো আল্লাহ তাআলার জন্যও আকারকে অস্তিত্বের পূর্ব শর্ত মনে করা।

Foysal Hosain Abir: ঠিক বলেছেন।

লেখাটির ফেসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *