[দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ লিখিত ‘ইসলামী আন্দোলনের গোড়ার কথা’ শীর্ষক প্রবন্ধটি ফেসবুকে শেয়ার দেয়ার দেয়ার সময় আমার মন্তব্য]
ইসলামী আন্দোলনের ধারণা সংগঠন বিশেষের একচ্ছত্র কোনো ব্যাপার নয়। এটি মূলত রাজনৈতিক কোনো ব্যাপারও নয়। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, ইসলামী আন্দোলনের কথা বলে এক পক্ষ ইসলামের এই সামগ্রিকতার ধারণাকে নিছক দলীয় রাজনীতির ব্যাপার বানিয়ে নিয়েছে। ড. জিসি দেবের সমতুল্য দার্শনিক, ড. দেবের পিএইচডি স্টুডেন্ট অধ্যাপক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তানের প্রথম দিকটায় তমুদ্দুন মজলিশের প্রভাব ও বুদ্ধিবৃত্তিক ম্যাচিউরিটি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা সম্ভব হবে।
তমুদ্দুন মজলিশের বুদ্ধিবৃত্তি এবং তাবলীগ জামাতের ধর্মীয় কার্যক্রমের সমন্বয় হিসাবে এখানে ইসলামী আন্দোলনের ময়দানভিত্তিক কাজ গড়ে উঠার কথা ছিলো। তা হয় নাই। হয়েছে এক অন্য জিনিস, যাকে বিরোধী পক্ষ ‘পলিটিক্যাল ইসলাম’ বলে। মজার ব্যাপার হলো বাংলাদেশে যারা ইসলামী আন্দোলন ধারণার পক্ষে মাঠে-ময়দানে কাজ করেছে তারাও নিজেদের ‘ইসলামী আন্দোলন’কে এখন রাজনৈতিক সংগঠন হিসাবে দাবি করে রাজনীতির ময়দানে টিকে থাকার সংগ্রামে লিপ্ত।
আমরা যারা একবিংশ শতাব্দীর নবতর বাস্তবতার নিরিখে বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের এক নতুন ধারা গড়ে তুলতে চাই, তাদের জন্য, যে নামে বা যেভাবেই হোক না কেন, এ দেশেরই যেসব মনীষী ইসলামী আন্দোলনের ধারণাকে লালন করেছেন তাদের অবদান সম্পর্কে জানা ও অন্যদের জানানোর কাজটা বিশেষ জরুরি। কেননা, চিন্তা যত মহান হোক না কেন, চিন্তাবিদ যত উচ্চমানের হোক না কেন, একটা দেশে বড় ধরনের বা মৌলিক পরিবর্তন সাধন করতে হলে সে দেশের মাটি, মানুষ, মনন, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সাথে পরিচিত চিন্তা ও চিন্তাবিদদের কাজের মাধ্যমেই তা করতে হবে। এ কাজে যারা ইতোমধ্যে আছেন তাদের সম্মুখে আনতে হবে। এর পাশাপাশি এই নতুন নতুন জ্ঞান-গবেষণাকে নিজেদের উপযোগী করে তুলে আনতে হবে।
সিএসসিএস-এর এই প্রয়াস অনুরূপ একটা প্রচেষ্টা। আশা করি বিদগ্ধ পাঠক এতে চিন্তাগত সাযুজ্যতা খুঁজে পাবেন।