প্রেক্ষিত বিবেচনা:

চলমান যুদ্ধাপরাধ বিচার প্রক্রিয়ায় জামায়াতের অন্যতম শীর্ষতম নেতা আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের প্রেক্ষাপটে গড়ে উঠা শাহবাগ আন্দোলন, শাহবাগ আন্দোলনে নেতৃত্ব দানকারীদের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগে কওমী ধারার ইসলামী দল ও প্রতিষ্ঠানগুলোর নাস্তিক্যবাদ বিরোধী আন্দোলন ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে জনপ্রিয় ইসলামী বক্তা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার প্রতিক্রিয়ায় জামায়াত পরিচালিত গণ-বিস্ফোরণের প্রেক্ষাপটে এ পর্যন্ত শতাধিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। রাজনৈতিক কর্মসূচি ইতোমধ্যেই ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরে বৃহত্তম সহিংসতায় রূপলাভ করেছে। চলমান প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রেক্ষিত ও পরিণতি আওয়ামী লীগ ও সহযোগীদের তরফ হতে এক রকম, বিএনপির তরফ হতে এক রকম, জামায়াতের তরফ হতে এক রকম, কওমী ধারার ইসলামী দল ও প্রতিষ্ঠানগুলোর তরফ হতে এক রকম।

কওমী ধারার ইসলামী দল ও প্রতিষ্ঠানসমূহের তরফে এই আন্দোলন:

শাহবাগ আন্দোলনকে ইসলামবিরোধী হিসাবে এরাই চিহ্নিত করে একে আত্মরক্ষামূলক অবস্থানে ঠেলে দেয়। জামায়াতের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা মওদূদীর আকীদা প্রশ্নে জামায়াতের সাথে কওমীদের ঐতিহাসিক যে বিরোধ তা নিরসনে জামায়াতের তরফ হতে কখনো সহনশীল মনোভাব ছিল না। বলা যায়, জামায়াত বরাবরই এদের প্রভাব ও সামাজিক শক্তিকে উপেক্ষা করে এসেছে। ফলশ্রুতিতে জামায়াত সাঈদী সাহেবের ফাঁসির রায় পরবর্তীতে মাঠের নেতৃত্বে চলে আসার পর পরই কওমী শক্তি ব্যাকফুটে চলে যায়। কওমী ধারার ইসলামী দল ও প্রতিষ্ঠানসমূহের তরফে এই আন্দোলন ইসলামী রাজনীতির অধিকার রক্ষা ও রাজনৈতিক ময়দানে নিজেদের অস্তিত্ব ও অবস্থান টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন। ধর্মীয় রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়ার মতো পরিস্থিতি ব্যতিরেকে এরা জামায়াতের পক্ষে যাবে– এমন কোনো কর্মসূচি পারতপক্ষে গ্রহণ করবে না।

আওয়ামী ও বামদের তরফ হতে এই আন্দোলন:

আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সফলভাবে স্বীয় মেয়াদের শেষ সময়ের কঠিন পরিস্থিতিকে যুদ্ধাপরাধ দিয়ে ঢেকে দিতে পেরেছে। ইসলামী ভাবধারা বিযুক্ত বিকল্প জাতিসত্তা গঠনের বাম এজেন্ডাকে তাঁরা সানন্দে গ্রহণ করেছে এই কারণে। ক্ষমতায় টিকে থাকা ও ফিরে আসা তাদের লক্ষ্য।

ইসলামপ্রিয় জনগোষ্ঠীর কাছে ধর্মবিরোধী ইমেজের কারণে সমাজের মূলধারা হতে বিচ্ছিন্ন বামধারা দশকের পর দশক ধরে নারী অধিকার, বিনোদন সংস্কৃতি, বুদ্ধিবৃত্তি, প্রযুক্তি ও গণমাধ্যমের মতো ইসলামী শক্তিকেন্দ্রসমূহ কর্তৃক উপেক্ষিত ও অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপ্রাপ্ত সেক্টরগুলোতে কাজ করেছে। শাহবাগ আন্দোলনে তাঁদের বিস্ময়কর সফলতার এটিই হচ্ছে উন্মুক্ত-রহস্য। জামায়াত পরিচালিত বর্তমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে শাহবাগ আন্দোলন ক্রমান্বয়ে দলীয় পরিচিতি লাভ করা সত্ত্বেও বামধারার অর্জিত সফলতা তাদের আকাঙ্খাকেও ছাড়িয়ে গেছে। বৈপ্লবিক কিছু না হলেও বাংলাদেশের সমাজ ও রাষ্ট্রের উপর শাহবাগ আন্দোলন একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসাবে বিবেচিত হবে।

বিএনপির তরফে চলমান পরিস্থিতি:

যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি হঠাৎ করে নাই হয়ে গিয়েছিল। প্রগতিশীলতার ইমেজ ধরে রাখার জন্য সে পারছিল না জামায়াতের পক্ষে কোমর বেধে নামতে। আবার জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনীতিতে নাই হয়ে থাকার পরিণতিও স্বাভাবিকভাবে তাদের কাছে কাংখিত বিবেচিত হয়নি। বিএনপির ফ্রন্ট লাইন হিসাবে ভূমিকা পালনকারী জামায়াত যদি নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়, তাহলে আওয়ামী লীগের মোকাবিলায় সাংগঠনিকভাবে অপেক্ষাকৃত দুর্বল বিএনপি অস্তিত্বের সংকটে পড়তে পারে। আওয়ামী লীগের পক্ষে ভারতের শক্ত অবস্থানকে বিএনপি নেতৃত্ব সিরিয়াসলি নিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। মাঠের আন্দোলনে বিএনপি জামায়াতের সাথে না থাকলে বিএনপি স্বীয় সমর্থক গোষ্ঠীর চাপের সম্মুখীন হবে। বিএনপির কর্মীবাহিনী ইসলাম রক্ষা ও লীগ ঠেকাও ইস্যুতে জামায়াতের সাথে নেমে পড়াটা বিএনপি নেতৃত্বের জন্য এক ধরনের লেজিটিম্যাসি ক্রাইসিস তৈরি করবে। পল্টন মিছিল পরবর্তী সহিংতায় সভানেত্রী ব্যতিরেকে সবাইকে মামলায় জড়ানোতে স্পষ্টতই বুঝা যায়, মাঠে মুখ রক্ষার জন্য টুকটাক কর্মসূচি দিয়েও বিএনপির পলায়নপর নেতৃবৃন্দ গা বাঁচাতে পারবে না।

জামায়াতের তরফে চলমান পরিস্থিতি:

জামায়াত দেশে ইসলামের একটা মধ্যপন্থী ও টেকসই ধারা সৃষ্টির পরিবর্তে ডমিন্যান্ট ধর্মবাদী ইসলামী ধারার সাথে নিজেকে আইডেন্টিফাই করেছে। বাস্তবে, বিশেষ করে সাংগঠনিক কার্যক্রমে সীমিত মাত্রায় হলেও আধুনিকতা ও বুদ্ধিবৃত্তি চর্চা করলেও সমাজে বিরাজমান পপুলার ফরম্যাটের বাহিরে উদারনৈতিকতা ও প্রগতিশীলতা ধারণ করে ইসলামকে যুগের অগ্রগামী মতাদর্শ হিসাবে চর্চা ও প্রতিষ্ঠা করার ক্ষেত্রে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। কম্যুনিস্ট ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ বামধারা এ দেশে দশকের পর দশক ধরে নারী অধিকার, বিনোদন সংস্কৃতি, বুদ্ধিবৃত্তি, প্রযুক্তি ও গণমাধ্যমের মতো সোশ্যাল পেরিফেরিতে কাজ করেছে। রাজনৈতিক ইসলামের ভারসাম্যহীন ও একতরফা চর্চা করে জামায়াত নিজেকে ইসলামী আন্দোলনের পরিবর্তে আক্ষরিকভাবেই ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলে পরিণত করেছে।

নারী অধিকার: বামধারার নারী কর্মীরা যেখানে মূল ভূমিকায় নেমে পড়েছে জামায়াতের শিক্ষিত নারী কর্মীরা এখনো মুখ ঢাকা যাবে কি যাবে না– এটি নিয়ে আছে। বগুড়াসহ দেশের ‍উত্তরাঞ্চলে মিছিল করা নারীরা জামায়াত হিসাবে নামেনি, ইসলামপ্রিয়, বিশেষ করে সাঈদী ভক্ত হিসাবে নেমেছে। আমার ধারণায়, তাবলীগ জামায়াতের মতো শহরাঞ্চলভিত্তিক জামায়াতের উচ্চশিক্ষিত নারী কর্মীরা আল্টিমেটলি মাঠে নামবে না। আগামী ৮ তারিখে বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষ্যে শাহবাগীরা নারী সমাবেশেরে ডাক দিয়েছে। প্রতি বছরই তারা বিশেষ আয়োজনে এটি উদযাপন করে। আমার জানা মতে, বিশ্ব নারী দিবস তো দূরের কথা, জামায়াতের মহিলা শাখা কখনো বেগম রোকেয়া ধরনের কিছুও কখনো পালন করেনি। নারীরা যেভাবে সমাজে জেগেছে, ইসলামপন্থীরা এই জাগরণে নেতৃত্ব দেয়া তো পরের কথা, এই জাগরণকে কখনো ইতিবাচক হিসাবেও দেখেনি। পুরুষদের পাশাপাশি সমাবেশ ও মারামারি করা তো দূরের কথা, জামায়াত-শিবিরের নারী কর্মীরা কখনো আল্লাহর ঘরে যেতেও আগ্রহী হয়নি!

বিনোদন সংস্কৃতি: বর্তমানে এমন অবস্থা হয়েছে, মসজিদের ইমাম-মোয়াজ্জিনের মোবাইলও হঠাৎ করে বেজে উঠাটা অসম্ভব  নয়। সমাজে একটা কিছু চালু হওয়ার পরে এরা বলে ‘এটি (অগত্যা) গ্রহণ করা যেতে পারে’। পহেলা বৈশাখ আসলে এরা ঘরে বসে থাকে। জাতীয় উৎসবাদিতে এরা দোয়া অনুষ্ঠান করে। মুসলমানের নাকি দুই ঈদের বাহিরে কোনো জাতীয় অনুষ্ঠান নাই। এক সময় রেডিওকে না জায়েয বললেও জামায়াতের প্রধান ও একমাত্র তাত্ত্বিক মাওলানা মওদূদী পাকিস্তান রেডিওতে নিয়মিত ভাষণ দিতেন। এভাবে ক্রমান্বয়ে টেলিভিশন কিনা, ডিশ-এন্টিনার সংযোগ নেয়া ইত্যাদিকে জায়েযকরণ করা হয়। বিনোদন সংস্কৃতির প্রতিযোগিতায় মার খেয়ে জামায়াত বাস্তবেই নিজেকে প্রতিক্রিয়াশীল হিসাবে প্রমাণ করেছে।

বুদ্ধিবৃত্তি: ইসলামের মতো কালজয়ী আদর্শের ধ্বজাধারী জামায়াতে ইসলামীতে কোনো থিংকট্যাংক সিস্টেম নাই। বিষয়টি অতিব বিস্ময়কর নয় কি? মাওলানা মওদূদী যখন স্বীয় মাসিক পত্রিকা তরজুমানুল কোরআনের পাঠকদের ডেকে একটা ইসলামী দল গঠনের প্রস্তাব করেন, তখন সবাই তাঁকেই এর প্রধান হওয়ার জন্য মনোনীত করে। লেখক হিসাবে তাঁর স্বাধীনতা বজায় থাকবে – এ শর্তে তিনি জামায়াতের আমীর হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। অথচ, জামায়াতের গঠনতন্ত্র মোতাবেক কোনো সদস্য (রুকন) দলীয় ফোরামের বাহিরে দলীয় কোনো বিষয়ে সমর্থন ব্যতিরেকে কোনো মত প্রকাশ করার অধিকার রাখেন না। এটি স্পষ্টতই সর্বাত্মকবাদী কম্যুনিস্ট বৈশিষ্ট্য। হাদীসে বলা হয়েছে, অপ্রিয় সত্য বলাটা সর্বোত্তম জিহাদ। ফোরামের কম্পোজিশনের কোনো খবর নাই, ফোরামের (শুরা) সিদ্ধান্ত শরীয়াহর চেয়েও অলংঘনীয়! ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতার মতো গণবিরোধী সিদ্ধান্তকেও শুরার নামে চালিয়ে দেয়া হয়। জামায়াতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নিয়মিত। নির্বাচনে কে কত ভোট পেয়েছে তা জানার অধিকার ভোটদাতাদের নাই। জামায়াতে যারা বুদ্ধিবৃত্তিশীল মননের অধিকারী তারা সবসময়েই উপেক্ষিত থেকেছে। জামায়াতের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শাখাগুলো কোনো ইসলামী বিষয়ে কোনো গবেষণা করেছে, প্রকাশনা বের করেছে, কোনো আয়োজন করেছে, এমন কোনো ঘটনা নাই!

প্রযুক্তির ব্যবহার: প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে জামায়াত তরুণ প্রজন্মকে কাছে টানতে পারতো। দলগতভাবে এবং নেতাকর্মীদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে জামায়াতের প্রযুক্তি-সংশ্লিষ্টতা ন্যূনতম মানের। এখন ধাক্কা খেয়ে তারা ইমেইল আইডি ও ফেসবুকে একাউন্ট খোলা শুরু করেছে। মসজিদসমূহকে সত্যিকারভাবেই কম্যুনিটি সেন্টার হিসাবে গড়ে তোলার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মকে ধরে রাখার কোনো আয়োজনই তারা করেনি, এখনো ভাবছে না। রাস্তায় মারামারি করেই উতরে যাবেন – এখনো ইনারা তাই ভাবেন!

গণমাধ্যম:  জামায়াতের লোকেরা এখনো বলেন, অমুক পত্রিকা এই বিষয়ে এইভাবে মিথ্যা লিখেছে, অমুক চ্যানেল এইভাবে ঘটনাকে ঘুরিয়ে উল্টিয়ে বলছেন ইত্যাদি। এরা এখনো বোকার স্বর্গে বাস করছে। প্রত্যেক গণমাধ্যমের যে নিজস্ব (সম্পাদকীয়) নীতি থাকে, সেটি তাদের অনেকেই জানে না, বুঝে না, মানতে চান না। শিবিরের ‘জিহাদী’ ছেলেরা পাশ করার আগেই ডেভেলপার কোম্পানির সাথে সংশ্লিষ্ট হয়ে টাকার বাণ্ডিল গোনার দিকে মনোযোগ দেয়। অপরদিকে, দেখেছি, অনার্স মাস্টার্সে প্রথম স্তরের ফলাফল নিয়ে একজন বামধারার ছাত্র কোনো পত্রিকায় রিপোর্টার হিসাবে কাজ করে। মীর কাশেম আলী আওয়ামী লীগকে কোটি কোটি টাকা দিয়ে বাঁচতে চাচ্ছে, ইত্যাদি তাদের কাছ হতে কত শুনেছি। শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি হয়েও টিভিতে কাজ করার জন্য মজিবুর রহমান মঞ্জুকে কত কথাই না শুনতে হয়েছে। এখন মীর কাশেম আলীর সেই দিগন্ত টিভি না হলে এরা টিভি মিডিয়া হতে সম্পূর্ণ ব্ল্যাক-আউট হয়ে যেত। মইন-ফখরুদ্দিনের অধীনে নির্বাচন না করতে বলার কারণে যে মাহমুদুর রহমানকে ঘরোয়া সমাবেশে জামায়াত নেতারা কখেনো র’য়ের এজেন্ট, কখনো হিজবুত তাহরীরের লোক বলেছে, সেই মাহমুদুর রহমান এখন জামায়াতের কাছে খলিফাতুল্য!

জামায়াত বর্তমানে তা-ই ফেস করছে যা সে নানাভাবে এ পর্যন্ত অর্জন করছে। এই সংকটোত্তর পরিস্থিতিতে জামায়াত আর কখনো আগের কাঠামো ও অবস্থানে ফেরত যেতে পারবে না। দু’বছর আগেই জামায়াতের কারান্তরীণ বুদ্ধিজীবী নেতা কামারুজ্জামান বলেছিলেন, জামায়াতকে জামায়াতের জায়গায় রেখেই একটা স্বাধীন ও স্বতন্ত্র সংগঠন কায়েমের জন্য। তখন যদি সেটি করা হতো, জামায়াতের দিক হতে বর্তমান দুঃসময়ে সেটি অপরাপর ইসলামী শক্তি ও বিএনপিসহ জাতীয়তাবাদী শক্তির মাঝে যোগাযোগ ও প্রভাবকের ভূমিকা পালন করতে পারতো।

ফেইসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

Tanvir M H Arif: সিলেবাসভিত্তিক নেতৃত্ব ও স্বাধীনতার বিরোধিতার কারণে যোগ্য ব্যক্তিদের একটি অংশ শিবিরের সাথে সম্পৃক্ত হলেও জামায়াতের নেতৃত্বে তারা কখনো নিজেদেরকে এগিয়ে নেননি এবং নেবেনও না। এইখানে জামায়াতের নেতৃত্বেশূন্যতা পরিলক্ষিত হয়। এছাড়াও নেতৃত্বের একটি অংশ গণভিত্তির প্রয়োজনীয়তা কখনো স্বীকার করেননি বলে মনে হয়, হয়তো বিংশ শতাব্দীতেও বিপ্লবের ভিন্ন কোনো পন্থা নীরবে নিভৃতে তারা লালন করতেন বলে প্রতীয়মান হয়।

Ashik Rahman: মূল্যায়ন অনেকাংশে ঠিক আছে। তবে এই মূল্যায়ন এখানে প্রকাশের সুযোগ আছে কিনা সেটা হলো ভাবার। কারণ, আমি মনে করি অনেকেই সাহসিকতার সাথে ফোরামে কথা তুলে ধরেন না। আর ফোরামের বাইরে যত ভালো আলোচনাই হোক না কেন তা কাজে পরিণত করার কোনো সুযোগ নেই ।

এ পর্যন্ত…… তা তাদের অর্জন এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু সেটা থেকে এবং বর্তমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের রাস্তা কী, সেটা উপেক্ষা করা হয়েছে লেখাতে। আরেকটা কথা, কে কোথায় চাকরি করছে তা নিয়ে কারো সমস্যা হয়নি। সমস্যা যেখানে হয়েছে সেটা আপনার বুঝতে পারার কথা। অর্থ অনর্থের প্রধান অনুষঙ্গ, আদর্শিক সংগঠনের জন্য এটাও ভাবনায় রাখতে হবে ।

শেষে আবারো বলছি, বর্তমান পরিস্থিতিতে কার্যকর আলোচনা হোক। কী হলে কী হতো না, কী কী ভুল ছিল, সেটা স্থিতিশীল পরিস্থিতিতে মূল্যায়িত হোক, এখন নয়।

Mohammad Mozammel Hoque: ফোরাম, সিস্টেম ইত্যাদির নামে অপ্রয়োজনীয় ও সর্বাত্মকবাদী গোপনীয়তার নীতি – এসব দিয়ে একবিংশ শতাব্দীতে আর যা-ই হোক গতিশীল সামাজিক আন্দোলন করা যাবে না। সামাজিক ও ধর্মীয় কতিপয় কম্পোন্যান্টওয়ালা রাজনৈতিক দল হিসাবে কন্টিনিউ করবে, নাকি একটা পলিটিক্যল উইং সাথে নিয়ে সামগ্রিক ও সত্যিকারভাবেই একটা আমব্রেলা অর্গানাইজেশান হবে– এটা অনেক আগেই জামায়াতের ভাবা ও সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত ছিল। যাহোক, জামায়াত রিফর্ম বা এ ধরনের কিছু আমার নোটের উদ্দেশ্য নয়। কেন এমনটা হলো, মাঠে থাকা পক্ষগুলোর দিক থেকে সেটি বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছি মাত্র।

Abu Zafar: “ফোরাম, সিস্টেম ইত্যাদির নামে অপ্রয়োজনীয় ও সর্বাত্মকবাদী গোপনীয়তার নীতি – এসব দিয়ে একবিংশ শতাব্দীতে আর যা-ই হোক গতিশীল সামাজিক আন্দোলন করা যাবে না।”

Definitely wrong judgement. Forum/system will work as the structure; social movement will get its fuel from this. We just need check and balance.

Mohammad Mozammel Hoque: জামায়াতে ইসলামী আন্দোলনকে জায়ান্ট ট্রি মডেলে আমল করে। ইসলামী আন্দোলনের জন্য আমার মডেল হচ্ছে গার্ডেন মডেল। জামায়াতের মতো নেতৃত্বের এককেন্দ্রিকতার পরিবর্তে আমি বিশ্বাস করে বহুত্ববাদে। নেতৃত্ব ও আনুগত্যের ভারসাম্যের শ্লোগানের আড়ালে নিঃশর্ত আনুগত্যের পরিবর্তে আমি নেতৃত্ব ও পরামর্শের ভারসাম্যকে প্রকৃত অর্থে সঠিক মনে করি। এসব বিষয় নিয়ে আলাদা নোটে বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে।

Abu Zafar: Sir, agreed with that model. We might went through that on a group thread. I just want to point that we can’t bring radical change in JI. We better work on parrellel something which will voice over social issues and their solutions, like think-tank with a number of volunteers.

Mohammad Ahsanul Haque Arif: এই নোটটির কারণ ও দৃষ্টিভঙ্গি স্যার নিজেই বলে দিয়েছেন। তাই এটি নিয়ে আর বিশেষ কিছু বলার নেই। মূল যে বিষয়টি বলতে চাচ্ছি তা হলো,

১। স্যার বা অন্য আরো যারা পরিবর্তনের কথা বলছেন তাদের পরিবর্তনের পথটি নিয়ে আমি এখনো কনক্রিট কোনো ধারণা পাইনি। এমন হলো কেন, এমন করল কেন, এমন করে কেন, এই জাতীয় কথায় সমাধান নেই, কেবল সংশয় আছে। আর আমার সামান্য যা অভিজ্ঞতা তাতে আমি এমন কথাতেই ফাঁক বেশি দেখি, অসামঞ্জস্যতা বেশি দেখি। আপনাদের ব্লগ লেখাগুলো কিছু কিছু আমি পড়েছি, কিন্তু উপসংহার দাঁড় করাতে পারিনি।

২। আমি শিবিরের খুব কম ছেলেকেই দেখেছি, যারা ব্যক্তিগত দুর্বলতায় ইসলামের বিধান পালনে শিথিলতায় জড়িয়ে পড়া ছাড়া আর কোনো কারণ আছে জামায়াতে যোগ না দেয়ার। এক্ষেত্রে মানবিক দুর্বলতাই দায়ী বলে মনে হয়, জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক স্ট্রাকচার নয়।

৩। এটির সাথে একমত যে, থিংকট্যাঙ্ক টাইপ কিছু থাকা উচিত। এটির সাথেও একমত যে সাংগঠনিক নেতৃত্ব আনুগত্যের প্রচলিত মানে ছাড় দিয়ে (বাস্তবে আমি যা দেখেছি তাহলো অনেক ক্ষেত্রেই কেবল ইসলামী মানে ছাড় দেয়া) হলেও কিছু মানুষকে সাংগঠনিক কাঠামোতে একমোডেট করার চেষ্টা হয়তো জামায়াত ইসলামী কম করেছে।

৪। এইসব সমস্যার সমাধান সংগঠনের আওতার মাঝেই করা যায়। যেখানেই এমন আওতার বাইরে এগুলো করতে চাওয়া হয়েছে, আমি কেবল বিচ্ছিন্ন কিছু কথাবার্তা ছাড়া সমাধান হয়েছে বা হচ্ছে বলে দেখিনি। তাই আওতার মধ্যে থেকেই যা করা যায় তার জন্যে সংগঠনকে দোষারোপ করলে সমাধান আসবে না। এই ব্যাপারে আশিকের কথার সাথে একমত। আর সংগঠনের ফোরামে না বলে বাইরে বলতে হবে বা খোলামেলাভাবে করতে হবে এমন একটি ইউজকেসের উদাহরণ দিলে বুঝতে সুবিধা হতো। কারণ আমি বুঝতে পারছি না যে খোলামেলা পরিবেশে কী আলোচনাটি করতে হবে, যা করা হচ্ছে না।

৫। জাফর ভাইয়ের কথার সাথে একমত এই পয়েন্টে যে, রেডিক্যাল পরিবর্তন আনা যাবে না। প্রচলিত স্ট্রাকচার, কর্মপদ্ধতিকে শ্রদ্ধা জানিয়েই ক্রমান্বয়ে পরিবর্তনের চেষ্টা করতে হবে। এতেই কল্যাণ আছে বলে মনে করি, আর এতেই পরিবর্তনের শরীক হওয়া যায় বলে মনে হয়। নিজে বাইরে থেকে এই পরিবর্তনে শরীক হওয়ার সুযোগ কম। তবে ভলান্টারিলি ব্যক্তিগত বা ফর্মাল সংগঠনের বাইরে কিছু মানুষ সংগঠিত হয়ে এই কাজগুলো আঞ্জাম দেয়ার চেষ্টার উদাহরণই বেশি দেখেছি।

৬। নারীদের এগিয়ে আসা, অংশগ্রহণ, মিডিয়া ইত্যাদি নিয়ে যে কথাবার্তা হচ্ছে, যে পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে, তার ব্যাপারে সংগঠন কখনো বাধা বলে মনে হয়নি। বরং সংগঠন তার কর্মীদের এই ব্যাপারে আধুনিক শিক্ষাই দেয় বলে মনে হয়। কিন্তু কথা হলো, আমরা কতটুকু শিক্ষা গ্রহণ করি, কতটুকু বাস্তবায়ন করি ইত্যাদি। এগুলোর জন্যে আমাদের রিসোর্স ডেভেলপ করা দরকার। এগুলো আমি যতদুর বুঝি, কখনোই সাংগঠনিক কাঠামোর মাঝে হয় না। বরং ব্যক্তিগত উদ্যোগেই করতে হয়। সাংগঠনিক কাঠামোর মাঝে এগুলোর ব্যাপারে কাজ করতে চাইলে আমার কখনো মনে হয় না যে কোনো ইফেক্টিভ উদাহরণ আমার সামনে আছে, যার ফরমেটটা আমরা ফলো করতে পারি। আপনাদের থাকলে জানাতে পারেন। এগুলোর জন্যে সংগঠনকে দোষারোপ করার চেয়ে, যারা এগুলো বোঝার সামর্থ্য রাখে তারাই ব্যক্তিগত উদ্যোগে কাজ করা উচিত, এবং নিজেই নিজের জবাবদিহিতা নেয়া উচিত যে আমি কী করলাম।

৭। আমব্রেলা সংগঠনের কথা যা বলা হচ্ছে, তার ব্যাপারে আমার আন্ডারস্ট্যান্ডিং হল, জাতীয়তাবাদী ধারার রাজনীতির অংশটি এখনও পর্যন্ত সেই সংগঠনের কাজ করছে বলেই হয়তো, জামায়াতে ইসলামী সেদিকে মনোযোগ দিচ্ছে না। আর যদি এই কাজটি সেভাবে হয়েই যায়, তাহলে আমব্রেলা সংগঠন হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। এই ক্ষেত্রে জামায়াত নিষিদ্ধ হলো নাকি হলো না এই জাতীয় আলোচনা অপ্রয়োজনীয়। কারণ সেটি অনেকগুলো নতুন কন্ডিশনের উপর নির্ভর করে। এটি ঠিক প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে হালাল করার চেষ্টা থেকে বের হয়ে আসা দরকার, কিন্তু সমাজ পরিবর্তনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় আমূল পরিবর্তনের চেষ্টা বাস্তবে রূপায়িত করায় অনেক ইফ অ্যান্ড বাটস আছে। আমি জামায়াতে ইসলামীর বাইরের সংগঠনগুলোর মাঝে এর বিপরীত কোনো মডেল দেখিনি। আপনাদের থাকলে জানালে ভালো হয়।

৮। পরিশেষে, মাঠে সক্রিয় গড় মেধার লোকদের সমন্বয়ে গঠিত সংগঠন, আর ময়দানে অসক্রিয় কিছু উচ্চমেধার লোকদের ইসলামী আন্দোলনের আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ে পার্থক্য হওয়াটা স্বাভাবিক। পরিবর্তন ততদিন আসবে না ইসলামী সংগঠনে, যতদিন এই পার্থক্যটা কমে এসে একটি কমন পয়েন্টে মিলিত না হয়। আর এর জন্যে, যারা পরিবর্তনের কথা বলে তাদেরই রোল মডেল হিসেবে উঠে আসার দরকার আছে বলে মনে করি। দুই পক্ষ মতামতের দিক থেকে দুই মেরুতে থেকে পরিবর্তনের আশা দুরহ।

ধন্যবাদ।

Mohammad Mozammel Hoque: I don’t know what you mean by ‘people active in the field and people not or less active in the field’. But you will not be misguided if you keep in mind that the writer of this note was, is and will be (inshaAllah) a man of/in the field. I did not say it out of anger. It is just a common phenomenon that when ever some one put a suggestion, no matter how much it is right, there are innocent minded people who stand to see, who is he! Is it Islamic? Huq or truth is self-evident, content is important, not the speaker. Isn’t it?

Abu Zafar: Sir, I know that you are in the track. But people are used to get this things from those persons who basically are drawing room activist. Thus a mindset has grown up amongst people and we can’t ignore that.

Mohammad Ahsanul Haque Arif: স্যার, সরি যদি কোনো ভুল বুঝাবুঝি হয়। আপনার নোটের চাইতেও আমি মূলত জোর দিয়েছিলাম কমেন্টের আলোচনাগুলোকে। এই জন্যে আমার কমেন্টের প্রথমেই আপনার নোটের উদ্দেশ্যের বিষয়টি আমি উল্লেখ করেছি। এটি হলো প্রথম বিষয়। দ্বিতীয় বিষয় হলো, আপনি যা বলেছেন শেষ কমেন্টে তা। আসলেই কোনো কথার ক্ষেত্রে স্পিকার নয়, বরং কথাটির মেরিটই মূল বিবেচ্য হতে পারে। আর সাধারণত তাই হয় বলে আমি মনে করছি। স্পিকারের কথা কেবল এই জন্যেই আসে যে, আসলেই স্পিকার সব ইফ অ্যান্ড বাটসগুলো কনসিডার করে কথা বলছে কিনা এটি বোঝার জন্যে। জাফর ভাই, এই ব্যাপারে মাইন্ড সেটে যে দুর্বলতা তা বলেছেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, আমাদের মাঝে যাদেরকে আল্লাহ উচ্চ মেধা দিয়েছেন, তারা ফর্মাল সাংগঠনিক স্ট্রাকচারের বাইরে উদ্যোগ নিতে পারেন এই বিষয়গুলো এড্রেস করার জন্যে। উদাহরণ স্বরূপ, IERA, IRF, বিশ্ববিদ্যালয়, মিডিয়া, ভলান্টিয়ার অর্গানাইজেশন এগুলোর কথা আমরা চিন্তা করতে পারি। যাদের সামর্থ আছে তারা যদি এই কাজ এগিয়ে নেয় তাহলে সংগঠনের মূল কাঠামোর গড় মেধার মানুষগুলোর উপর চাপ পড়বে না, এবং সংগঠন মিস গাইডেড হওয়ার ভয়ও থাকবে না। কারণ আমাদের মানুষগুলোকে নিয়েই সংগঠন।

Mohammad Mozammel Hoque: I must clear that this note is not as a jamaat person. I belong with JI or not, is not concerned here. This is an analysis. Average calibre people in the mainstream or high calibre ones from/of/in the outside – these sort of talks are quite irrelevant.

Jamaat has never and will never accept any reform which is fundamental but need of time. It will never be proactive. It has no capacity to be dynamic and adaptive. This is my conviction. Anyone has the right to differ with it.

Mohammad Ahsanul Haque Arif: স্যার, এই রিফর্মের রূপরেখা বা প্রস্তাবনার ব্যাপারে আপনার কোনো লেখা বা রেফারেন্স থাকলে দয়া করে আমাকে দিন। আমি এই ব্যাপারে একটু স্টাডি করতে চাই এবং বুঝতে চাই। জামায়াতের মেগা ট্রি আপ্রোচ থেকে গার্ডেন এপ্রোচে গেলে মেরিট ডিমেরিট এবং এই সংগঠনটিকে গার্ডেন এপ্রোচে নেয়ার কোনো রুপরেখা আছে কিনা এই ব্যাপারে কিছু বলবেন, প্লিজ। এগুলো পেলে আমি কিছুটা স্টাডি করতে পারবো যে, কেন জামায়াতে ইসলামীর বর্তমানের অবস্থা ও পরিস্থিতিকে সময়ের স্রোতে ঘটা কিছু অবশ্যম্ভাবী ঘটনা হিসেবে না দেখে আপনি এগুলোকে জামায়াতের কিছু ভুলের ফল হিসেবে দেখছেন। ধন্যবাদ।

Mohammad Mozammel Hoque: ১। ‘কেন চাই কনসেপ্ট গ্রুপ

২। ‘গণতন্ত্র নাকি জিহাদ?

৩। ‘ইসলামী শরীয়াহ বাস্তবায়নে ক্রমধারার অপরিহার্যতা

৪। ‘জামায়াতের সংস্কার নিয়ে কামারুজ্জামানের প্রস্তাবনা

Mohammad Ahsanul Haque Arif: স্যার, ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্যে। এগুলোর অধিকাংশই আমি আগে পড়েছি হয়তো। আজকে আবার পড়ার চেষ্টা করলাম। আপনাদের কথাগুলোর অনেকগুলোর সাথে আমি একমত। আবার অনেকগুলোর ব্যাপারে আমি আমার বুঝ অনুযায়ী দ্বিমত পোষণ করি। সমাধানের পথ খুঁজলে, আমি আমার জন্যে পথ তৈরির চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের প্রত্যেককে তাওফীক দিন। একটি বিষয়ে আপনার ব্যাখ্যা জানতে চাইছি–

১। ‘আপনি রুকন হয়ে ফোরামের বাহিরে সংগঠনের কার্যক্রম ও স্ট্যান্ডিং পলিসির সাথে দ্বিমত পোষণ করে কথা বলতে পারেন না!’

এখানে ভুল কী আছে? আর কথা থাকলে বা দ্বিমত থাকলে তা ফোরামে বললেই হয়, বাইরে বলার প্রয়োজনীয়তা বা উপকার কী?

২। ফোরামভিত্তিক সংগঠনের স্ট্রাকচারে সমস্যা কী? আমি ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে জানতে চাইছি, রাজনৈতিক দিক থেকে নয়।

ধন্যবাদ।

Ibn Monir: ফোরামে কথা হবে সবার, তবে সিদ্ধান্ত হবে আমীরের চিন্তার আলোকে…।

Mohammad Mozammel Hoque: Ibn Monir, forum is important, but not the only place to speak the truth. Jamaat people give utmost importance on the obedience of ameer or the forum while ignoring the competency of ameer. Forum’s decision is undoubtedly important but more important and the necessary precondition is the composition of the forum. In the qualitative approach, a competent one can turn the earlier result or decision of the whole set or forum.

Jamaat mind-set is totalitarian. Balance between leadership and guidance is more important than the balance between obedience and leadership. Jamat neglects the notion of leadership-guidance by the experts, public and silent observers. They place the so called forum as excuse and shield.

Daud Bangla: এখনো আপনাকে মারাত্মক ভাষায় কিছু কয় নাই, এইটা স্বস্তির। They are just gone case, sir.

Mohammad Mozammel Hoque: I know ins and outs of Jamaat-e-Islami, you know. They have nothing to do but accept the factual analysis so long they are not crazy.

Ibn Monir: There is only one party in the world which doesn’t have any mistake in political history! Jamaat have an interpretation for any mistake and wrongful decision. If they fail to provide proper argument in favor of the decision then they tern into ‘আল্লাহর পরীক্ষা’, but never confess that they have done the wrong decision.

Mohammad Ahsanul Haque Arif: কমেন্টের জন্যে ধন্যবাদ। Experts, public, and silent observers-দের একোমোডেট করার মতো উদ্যোগের কিছু অভাব আছে এটি ঠিক। জামায়াতকে আমূল পরিবর্তনের চিন্তা না করে বরং বর্তমান স্ট্রাকচারের আওতাতেই কীভাবে এদেরকে একোমোডেট করা যায় তার ব্যাপারে সরাসরি কোনো দিকনির্দেশনা আপনাদের কথায় পাইনি। আপনারা যদি বলেন যে, বর্তমান স্ট্রাকচার ধরে রেখে তা সম্ভব নয়, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। কিন্তু যদি বর্তমান স্ট্রাকচারে রেডিক্যাল কোনো পরিবর্তন না এনেই তা করার কোনো পদ্ধতি থাকে তাহলে জানালে ভালো হয়। কারণ এই বিষয়টি নিয়ে আমি অনেকদিন থেকেই চিন্তা করছিলাম।

তবে এই ক্ষেত্রে মনে রাখা দরকার, এই Expert, public and silent observer-দের এডাপ্ট করতে চাওয়ার প্রবণতা যেন এমন না হয় যে, তাদেরকে এডাপ্ট করতে গিয়ে আমরা প্রাক্টিক্যালি ইউজেবল নয় (এক্সপার্টদের এবং সাইলেন্ট অবজারভারদের পরামর্শের ক্ষেত্রে), ইসলামী আন্দোলন ও সংগঠনের মানের ডিমোশন হয় (পাবলিকদের ও সাইলেন্ট অবজারভারদের পরামর্শের ক্ষেত্রে) এমন কোনো বিষয়ের সাথে আপস করে না ফেলি। জামায়াতে ইসলামী তার সৃষ্টি থেকে আজ পর্যন্ত অনেক মানুষের অনেক রকম পরামর্শ পেয়েছে, অনেক পরিবর্তন-পরিবর্ধন সাধিত হয়েছে, আবার অনেক পরামর্শ রিফিউজও করা হয়েছে। মানসম্পন্ন পরামর্শ হলে তা রিফিউজ হয় বলে আমার জানা নেই। কিন্তু দুটি ভালো পদ্ধতির কোনো একটি গ্রহণের অধিকার সংগঠনের রয়েছে। এক্ষেত্রে কারো পরামর্শ বাদ পড়লে তাতে মন খারাপ বা আপত্তি না করে বড় হৃদয় নিয়ে পরামর্শ দেয়া অব্যাহত রাখা দরকার। মূল বিষয় হলো, সংগঠনের পরিবর্তন ফোরামেই সিদ্ধান্তের আলোকে হয় বা হবে। বাইরের আলোচনা কেবল চিন্তার খোরাক যোগাতে পারে। এর বেশি কিছু কমই হয়।

ফোরামে তোলার ও আলোচিত হওয়ার ব্যবস্থা করা এবং মত গৃহীত না হলে তার উপর আস্থা রাখাটা পরামর্শ দেয়ার ক্ষেত্রে জরুরি। আপনাদের অনেককে আমি ব্লগে দেখেছি এই বিষয়টি রেফার করতে যে, “আপনি যদি বেশিরভাগ লোকের মত অনুযায়ী চলেন তারা আপনাকে…”। যতদূর বুঝি এটিই ফোরামের ব্যাপারে বলা কথা নয়, যদিও আপনারা এটিকে ফোরামের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার উপর চালিয়ে দিচ্ছেন। এই আয়াতটির টার্গেট গ্রুপ ভিন্ন। আমার মনে হয় আমার চেয়ে আপনারা এই ব্যাপারে ভালোই জানেন।

যাক, আর কথা না বাড়াই। সুন্দর পরামর্শ সুন্দর পদ্ধতিতে উপস্থাপিত হলে ইনশাআল্লাহ ফোরাম তা বিবেচনা করে বা করবে। এতে দোষের কিছু নেই। আর অন্য পদ্ধতিগুলোর মাধ্যমে চিন্তার রাজ্যে কিছু মানুষের ঝড় উঠলেও মৌলিক সিদ্ধান্ত গঠন প্রক্রিয়ায় তার প্রভাব খুবই কম। এটি কেবল জামায়াতে ইসলামী নয়, বরং আর কোথাও আছে বলেও আমার জানা নেই। তবে আপনার মৌলিক চিন্তাগুলোকে ব্যক্তিগতভাবে আমার পক্ষ থেকে সাধুবাদ। এটি অব্যাহত থাকুক, পজিটিভলি। Gone case বলে কোনো লাভ নেই। ইতিহাসের অনেক আগে থেকেই এগুলো চলছে, বলা হয়েছে। তাতে কাজ থেমে যায়নি। আশা করি বুঝবেন।

Ibn Monir: Why jamat have taken democracy as a system of government? Is it Islamic? Today jamat have expenses there 90% asset to protect leaders but what about Islam?

তাত্ত্বিকভাবে সংগঠনে যা আছে, বাস্তবতা তার থেকে হাজার গুণ দূরে…।

Mohammad Mozammel Hoque: Inspite of present oppression, Jamaat will continue with all of its merits and demerits. In the post-trial era, there will be some Jamaat offshoots. Some, atleast one will be Jamaat backed and guided, some will be brought by jamaat people spontaneously or personally.

Mohammad Ahsanul Haque Arif, present jamaat is mono-polarised and totalitarian. The alternative future ‘one’ has to be truly pluralistic. I will appreciate if you contact me anyway.

Mohammad Ahsanul Haque Arif: Insha Allah, I will try to contact you. I saw a phone number at your profile. Is that okay, Sir?

Mohammad Ahsanul Haque Arif: Ibn Monir: ভাই, জামায়াতে ইসলামী কেন ডেমোক্রেটিক ওয়েতে আগায় বা কাজ করে, তার ব্যাখ্যা তো কমেন্টের ক্ষুদ্র পরিসরে দিতে পারবো না। এই ব্যাপারে জামায়াতের দৃষ্টিভঙ্গি ও র‍্যাশনাল ভিউ জামায়াতের সংগঠন পদ্ধতি, স্থায়ী কর্মনীতি, মাওলানা মওদুদীর ‘ইসলামী আন্দোলনের ভবিষ্যত কর্মসূচি’ বইটিতে দেয়া আছে। আপনি মাওলানা মওদুদীর বইটি (যেটি মূলত রুকন সম্মেলনে দেয়া একটি ভাষণ) পড়ে দেখুন, যেখানে রুকনদের একটি বড় অংশের আপত্তির জবাবে পুরো ব্যাখ্যাটি তিনি দিয়েছিলেন আজ থেকে ৪০-৫০ বছর আগেই। একই বিষয় বার বার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আনার অর্থ হয় না। তারপরও যদি আপনি আনতে চান, তাহলে আগে এই বইটি পড়ে তার উপর কমেন্ট করলে কৃতজ্ঞ থাকব, এবং আমাদের আলোচনাও সঠিকভাবে আগাতে পারে। জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ইসলাম বহির্ভূত কিছু নয়, বরং তারই অংশ। অধ্যাপক গোলাম আযম বলেছিলেন প্রায় ২০ বছর আগে নিউইয়র্কের একটি সমাবেশে যে, সাংবাদিকরা আমার কাছে আসে। আমি তাদেরকে ইসলামী সংগঠন হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর পরিচয় তুলে ধরি। কিন্তু তারা আমার একটি বাক্যও নোট করে না। এরপর তারা আমাকে জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন করলে, আমি উত্তর দিই আর তারা নোট নেয়। পরে মিডিয়াতে তারা তাই কেবল ছাপায় যেগুলোর নোট তারা নিয়েছিল। আপনার কমেন্ট দেখে মনে হচ্ছে আপনি এমনই বায়াসড মিডিয়ার প্রচারে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। জামায়াতে ইসলামীর মূল শক্তি তাদের ইসলামী কার্যক্রমগুলোই। ইউনিট পরিচালনাকালে আমি যদি মাসে ২০টি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতাম তবে তার ১৮-১৯টিই হতো কুরআন তালীম, সামষ্টিক ইসলামী অধ্যয়ন ইত্যাদি। কেবল ১-২টি হলো মিছিল বা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। ইসলামকে সেভ করার জন্যে জামায়াতের কর্মকাণ্ড কম বা নেই বলতে আপনি কী বোঝাচ্ছেন, তা আমার বোধগম্য হচ্ছে না। আর আপনার আরো কিছু পয়েন্টে চিন্তা করা দরকার। মাওলানা সাঈদী বা গোলাম আযম সাহেবরা হচ্ছেন সেইসব ব্যক্তি যাদের তারুণ্য থেকে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত প্রতিফোটা রক্ত-ঘাম ব্যয় হয়েছে ইসলামের কাজে, তাদেরই কাজের ফসল হচ্ছি আজকের তরুণ আমি। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাদেরই কাজের বরকত স্বরূপ জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা করার তাওফীক দিয়েছেন আমার মতো হাজারো তরুণকে। তাদেরকে অপবাদ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা যদি ইসলামকে রক্ষার চেষ্টার অংশ না হয়, তাহলে আর কথা বাড়ানোর দরকার নেই। আমি আপনার সাথে একমত হতে পারছি না। আমার কাছে তারা মর্যাদাবান, তারাই আজকের লাখো লাখো মানুষের মধ্যমনি, আগামীর কোটি কোটি মানুষের আসসাবেকুনাল আওয়ালুন। ইনশাআল্লাহ। আপনার মনে চাইলে দ্বিমত করতে পারেন, মনে চাইলে মেনেও নিতে পারেন। আমার কথা ভুল হলে মাফ করবেন এবং পরামর্শ দিবেন। ধন্যবাদ।

Ibn Monir: একজন দাঈকে বাঁচানোর জন্য কতজন দাঈর জীবন দিতে হবে?

Mohammad Mozammel Hoque: When it is a question of truth (huq), then to materialize it, quantity of sacrifice is not concerned, actually.

Ibn Monir: স্যার, যখন কোরআন বিরোধী আরপিওতে স্বাক্ষর করতে হয়, তখন জামায়াত একদম নীরবে সুবোধ বালকের মতো স্বাক্ষর দিয়ে আসে। তখন কিন্তু জামায়াত এটাকে অত গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না। কেন?

Mohammad Mozammel Hoque: Ibn Monir, I do agree with you. Jamaat is suffering from abnormal or imbalance growth in politics. Jamaat got a few chances to bring it out of unnecessary conflicts: after 1971, 1976 and recently. Jamaat would have regretted to change its constitution and would have deployed Qamaruzzaman or Abdur Razzak to form a moderate pro-Islamic political party. In that possible situation, Jamaat would have got to concentrate to integrate the Islamic forces and to work in dawah, education, social services etc. That’s why I remarked at the end of the note that Jamaat is facing exactly what it has earned already. They were never hesitant to label its mistakes as Julm (oppression) by the baatil (the evil force) on huq.

লেখাটির ফেইসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *