Who has created God? এই প্রশ্নটাই তো একটা ভুল প্রশ্ন বা category mistake। যুক্তির খাতিরে যদি ধরেও নেই, somebody has created God তাহলে প্রশ্ন আসবে ওই ‘somebody’কে কে সৃষ্টি করলো? তাহলে দেখা যাচ্ছে, কার্যকারণের যে ধারাবাহিকতার উত্তর পাওয়ার জন্য আমরা ঈশ্বর নামক এক পরমের কথা বললাম, সেই পরমকেও যদি কোনো একজন সৃষ্টি করে থাকেন তাহলে সেই ঈশ্বর বা সেইসব ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্তা কে?

এই ধরনের আলোচনা হতে শেষ পর্যন্ত কোনো উত্তর পাওয়া অসম্ভব।

তার মানে হল, “ঈশ্বরকে কে সৃষ্টি করেছেন?” – এই প্রশ্নটা নিয়ে আলোচনা শুরু করার সময়েই আমি ধরে নিচ্ছি, প্রশ্নটার কোন উত্তর নাই। এবং তা হতেও পারে না।

তাহলে ব্যাপারটা কী দাঁড়ালো?

সৃষ্টি-সৃষ্টিকর্তা, কার্য-কারণ কিম্বা জগতের কারণ হিসেবে ঈশ্বর ও ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্তা হিসেবে তৎপূর্ববর্তী কিছু একটা এবং সেই যার অস্তিত্বের কারণ হিসেবে সেটার পূর্ববর্তী কিছু একটা – এই অবস্থা এক অন্তহীন ধারাবাহিকতার উৎপত্তি ঘটায়। অথচ আমরা শুরুতে জানতে চাইতেছিলাম, দৃশ্যমান এই ধারাবাহিকতার উৎস কোথায়? এই চেইনের শেষ কোথায়?

যদি “এর কোনো শেষ নাই” – এমন “উত্তর”(?) দেয়া হয় তাহলে এইটা এক ধরনের logical fallacy’র উদ্ভব ঘটায়। এই ফ্যালাসিকে বলে begging the question fallacy। কিংবা এই সমস্যাকে আপনি loaded question fallacyও বলতে পারেন।

তাহলে দেখা যাচ্ছে, ‘ঈশ্বরকে কে সৃষ্টি করলো?’ – নিরীশ্বরবাদী, বস্তুবাদী বা সংশয়বাদীদের এই প্রশ্নটা আসলে একটা ভুল ধরনের প্রশ্ন বা fallacious question। কেননা, প্রশ্নকর্তা প্রশ্ন করার সময় ধরেই নিয়েছে, এই প্রশ্নের কোনো যুক্তিসঙ্গত সদুত্তর নাই। অথবা, আদৌ তিনি কোনো উত্তর পেতে চান না।

চাচ্ছিলাম শুধুমাত্র এটুকু বলে শেষ করব। কিন্তু “ঈমানদার নাস্তিকেরা” এতই অবুঝ যে কথাটা আরো খানিকটা খোলাসা করা দরকার বলে মনে করছি।

আসলে প্রশ্ন-উত্তর বলতে আমরা কী বুঝি? কেউ যদি বলে উত্তর হিসেবে নতুন কোনো কথা বলা হয়েছে যা প্রশ্নের মধ্যে নাই, অতএব প্রদত্ত উত্তরটি সঠিক উত্তর হলো না, তাকে আপনি কী বলবেন? আবার কেউ যদি প্রশ্নের মধ্যেই একটা উত্তরকে লোড করে নেয়, তাহলে সেই প্রশ্নকারী সম্বন্ধে আপনি কী ভাববেন?

এমন অবুঝ প্রশ্নকর্তা সম্বন্ধে আমি ভাববো, তিনি আসলে বিষয়টাই ধরতে পারেন নাই। অথবা তিনি সচেতনভাবে সঠিক উত্তরকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। যেমনটা দেখা যায়, ‘ঈশ্বরকে কে সৃষ্টি করেছে’ এমন প্রশ্নকারীদেরকে। কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা বা অনিবার্যতাকে ঈশ্বরের উপরও প্রয়োগযোগ্য মনে করা হলো জাগতিক ক্ষেত্রে কার্যকারণের পরম্পরা কিংবা অনিবার্যতাকে অস্বীকার করার মতো এক ধরনের category mistake (শ্রেণীগত বিভ্রান্তি) বা বিভ্রান্তকর পরিস্থিতি।

ফেসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

আদনান ওকতার: আচ্ছা স্যার, ধরে নিলাম বিশ্বজগতের ঈশ্বরেরও একজন সৃষ্টিকর্তা আছে। কিন্তু ঐ সৃষ্টিকর্তার আর কোন সৃষ্টিকর্তা নেই, তিনি চিরন্তন। এটা কেন অযৌক্তিক হবে?

Mohammad Mozammel Hoque: ভাই, আপনাকে তো কোথাও না কোথাও থামতে হবে। সেটা হোক অন্তহীনতায় অথাব ঈশ্বরে। ঈশ্বর ভালো না লাগলে অন্তহীনতা নিয়ে থাকেন। আই মিন, কেউ থাকতে চাইলে, আর কি। কথা হলো, প্রশ্ন থাকলে উত্তরও থাকবে। যদি প্রশ্নটাই ভুল প্রশ্ন হয় তাহলে তার কোনো উত্তর থাকবে না। মানে সদুত্তর থাকবে না। যেমন করে আমরা প্রশ্ন করতে পারি, এমন কোনো জগত আছে কিনা যেখানে বৃত্তরা বর্গক্ষেত্রের আকৃতিতেও সম্ভব হতে পারে?

জগত এবং ঈশ্বর দুইটাকে ফেনোমেনা হিসাবে ধরলে জগতকে আমরা জানি। ঈশ্বরকে জানি না। তাতে সমস্যাও নাই। কেননা, জগতকে না জানার কারণে ঈশ্বর প্রকল্প। ঈশ্বরকে যদি জগতের মতোই কিছু একটা হতে হয় যার কারণ থাকতে হবে, তাহলে তা স্বয়ং ঈশ্বরপ্রকল্পের প্রস্তাবকদের প্রস্তাবনাটাকেই বিকৃত করে উপস্থাপনা করা হয়। এটাকে বলে strawman fallacy।

আদনান ওকতার: কিন্তু স্যার, এমনটা তো হতেই পারে, তাই নয় কি? এখানে তো অন্তহীনতার ব্যাপারটা আসছে না।

Mohammad Mozammel Hoque: কেমন হতে পারে? সার্কুলার স্কয়ার?

আদনান ওকতার: আপনার জ্যামিতিক উদাহরণ নিয়ে বলিনি। আমার কমেন্টের যুক্তিটার সম্পর্কে বলেছি।

Mohammad Mozammel Hoque: আমরা যা-ই বলি না কেন, আমাদেরকে সর্বদা যুক্তির মধ্যেই থাকতে হবে। কিছু কিছু প্রশ্ন ব্যাকরণগতভাবে সঠিক হলেও আসলে যুক্তিবিরোধী বা ভুল প্রশ্ন। তাই সেগুলো এনটারটেইন করাও অসম্ভব। যেমন, এমন কোনো জগত কি হতে পারে যেখানে বৃত্তাকার বর্গক্ষেত্র সম্ভব? এই প্রশ্নের উত্তর হবে– না। এমন জগত হতে পারে না। কেননা, বৃত্তাকার বর্গক্ষেত্র হওয়া যৌক্তিকভাবে অসম্ভব। যা কিছু যৌক্তিকভাবে সম্ভব তা নিয়েই কেবল আমরা এনগেইজ হবো।

ঈশ্বরের একজন ঈশ্বর থাকার দাবি, প্রশ্ন বা প্রসংগটাও সে রকম অযৌক্তিক প্রশ্ন। যদিও ঈশ্বরের অস্তিত্বের প্রশ্ন ও উত্তরটা নিতান্ত যৌক্তিক। আমাদের ও জগতের অস্তিত্ব, শৃংখলা ও পরিচালনা সংক্রান্ত প্রশ্নগুলোর উত্তর হিসাবে ঈশ্বরের প্রসংগ আসে।

বিশ্বজগত হলো বাস্তব ফেনোমেনা। ঈশ্বর হলো এর ব্যাখ্যা বা কারণ হিসাবে সম্ভাব্য বা প্রস্তাবিত ফেনোমেনা। তো, বিশ্বজগতের কারণ হিসাবে ঈশ্বরকে মানার পরে সেই ঈশ্বরেরও কোনো ‘কারণ’ থাকবে কেন? an explanation needs no further explanation if it explains conclusively. otherwise, it is not an explanation at all.

আদনান ওকতার: আমি বোধহয় প্রশ্নটা স্পষ্ট করতে পারিনি। আবার চেষ্টা করি। মনে করুন, মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা “ক”। আর “ক”-এর সৃষ্টিকর্তা “খ”। কিন্তু “খ”-এর কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই, তিনি চিরন্তন সত্তা। এখানে “খ”-এর অস্তিত্ব কি অযৌক্তিক?

এর মাধ্যমেও তো বিশ্বজগতের কার্যকলাপ ব্যাখ্যা করা যায়।

Mohammad Mozammel Hoque: হ্যাঁ, আননেসেসারি অর্থে অযৌক্তিক।

আদনান ওকতার: কিছু অপ্রয়োজনীয় হলেই, সেটা অস্তিত্বহীন ধরে নিতে পারি না।

রুপক ইবরাহীম: স্যার, আপনি বললেন আমাকে কোথাও না কোথাও থামতেই হবে। ধরুন আমি তাই করলাম। এটা জেনেও যে যুক্তি আমাদের বলছে যে না এরপরেও আরো পথ আছে। এখন যেই যুক্তি দিয়ে আমি এতদূর এগোলাম সেই একই যুক্তি দিয়ে যখন আমি পরের দূরুত্বগুলো অস্বীকার করবো, সেটা কি তাহলে হিপোক্রেসি হলো না? বিষয়টা এমন যে আমি আমার সুবিধামত ফুল স্টপ দিয়ে সেখানেই একজন ঈশ্বরকে বসিয়ে দিলাম।

Mohammad Mozammel Hoque: রুপক ইবরাহীম আমি আমার সুবিধামতো ‘ফুল স্টপ’ দিলাম না। কথার কথা, চলতেই থাকলাম। তো আমি কদ্দুর যেতে পারবো? এক অর্থে অসীমতা হলো সসীমতা বা সীমাবদ্ধতাবোধের পরিণতি। আসল কথা হলো, অসীমতা আমাদের নিয়তি। বলতে পারো, infinity is our epistemic predicament। এখন কেউ বস্তুর অসীমতায় বিশ্বাস করতে পারে অথবা ঈশ্বরের অসীমতায় বিশ্বাস করতে পারে। প্রথম প্রকারের বিশ্বাস যুক্তির দিক থেকে দুর্বল। এই আর কি।

রুপক ইবরাহীম: হুম স্যার ? ঈশ্বর নিজেও ইনফিনিট। তার শুরু নেই, শেষ নেই। যেহেতু এই সবকিছুর পেছনেই একজন বুদ্ধিমান চেতনাকে প্রয়োজন, সেই ক্ষেত্রে স্রষ্টা ব্যাতিত আর পথ নেই। তাহলে আমরা একই সাথে ইনফিনিট ও স্রষ্টা দুটোই পবো। অন্যরা ইনফিনিট নিয়েই সুখে থাকুক।

Mohammad Mozammel Hoque: ইনফিনিটি তো গডেরই অন্যতম মৌলিক বৈশিষ্ট্য। এজন্য, ফিলোসফিকাল গড আর পারসনাল গড এ ধরনের একটা ভাগাভাগি করা হয়। কেননা, ফিলোসফিক্যাল বা লজিক্যাল গডকে অস্বীকার করা অসম্ভব। যে কেউ ইউনিভার্সাল, এবসলিউট, ইনফিনিট ধরনের টার্ম ব্যবহার করবে সে আসলে গডকেই বুঝাবে। তো, এমন যুক্তির গডকে কেউ ব্যক্তিগত ও সমাজ জীবনে অর্চনার বিষয় হিসাবেও যদি মানে বা মানার দাবি করে, তাহলে তার বিশ্বাসের গড হবে একই সাথে ফিলোসফিক্যাল ও পার্সোনাল। এ জন্য ডকিন্স-রাসেলসহ নামকরা নাস্তিকেরা কৌশলগতভাবে নিজেদেরকে অজ্ঞেয়বাদী হিসাবে পরিচয় দেয়। burden of proof হতে বাঁচার জন্য।

Sarwar Kamal: একজন ঈশ্বর আছেন এবং এক ঈশ্বর আছেন। এই দুই বচনের অর্থ ও দ্যোতনা ভিন্ন। ঈশ্বরকে যখন একজন হিসেবে দেখি, তখন ঈশ্বরকে ব্যক্তি হিসেবেই দেখি, যেমন মানুষ হিসেবে আমিও একজন ব্যক্তি যে এই কথাগুলোর স্রষ্টা। শুরুতেই ঈশ্বরকে একজন ব্যক্তি বা কেউ একজন হিসেবে ধরে নেয়া যৌক্তিকভাবে ত্রুটিপূর্ণ।

কার্যকারণ দিয়ে ব্যাখ্যা করাও ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণের ক্ষেত্রে ত্রুটিপূর্ণ। কারণ কার্য ও কারণ স্বরূপগতভাবে একই, মানে একই ঘটনার দুই দিক যা কালগত দূরত্বে অবস্থিত। মূলত, কার্য হতে কারণ এবং কারণ হতে কার্যকে সম্পূর্ণ আলাদা করা যায় না। তাই কোনো কোনো বিজ্ঞানী মেকানিস্টিক ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, যেখানে ঈশ্বরকে মহাবিশ্বের নিয়মের সমষ্টি হিসেবে দেখা হয়।

এরপর স্রষ্টার সংজ্ঞা হিসেবে যদি আল্টিমেট ক্রিয়েটর বা আল্টিমেট কজ হিসেবেও দেখি, তাহলে প্রশ্ন আসবে সৃষ্টি করা বলতে আমরা কী বোঝাতে চাচ্ছি? আমি একটি কলম তৈরি করলাম, আর বংগোপসাগরে একটি দ্বীপ জন্ম নিলো, এই দুই সৃজনের প্রক্রিয়া এবং সংজ্ঞা কি একই অর্থ জ্ঞাপন করবে?

বিজ্ঞান দিয়ে স্রষ্টার সংজ্ঞা দেয়া বা যুক্তি দিয়ে স্রষ্টার অস্তিত্ব প্রমাণ করতে যাওয়া ত্রুটিপূর্ণ। কারণ, যুক্তি ও বিজ্ঞানের আওতায় মহাজগতের সমস্ত জ্ঞান, তথ্য ও স্বরূপকে ধারণ করা অসম্ভব। এছাড়া জগতে ভাষার জন্ম বেশিদিন হয়নি, এমনকি খোদ ভাষার জন্ম, ভাষার স্বরূপের সাথে মানবচিন্তার স্বরূপ এখনো কম্পাটিবল নয়। কাজেই ঈশ্বরের আলোচনায় যখন আমরা জগতের স্রষ্টার কথা আনি, তখন part-whole relation-এর ফ্যালাসি দেখা দেয়। কারণ জগতের এতো ক্ষুদ্র প্রাণীর এতো ক্ষুদ্র নিউরণে, ঈশ্বরের কন্টেক্সট ও কন্টেন্ট ধারণ করা অসম্ভব। অসম্ভব বলেই মানুষ সব সময় তার নিজের পারস্পেক্টিভ, ভাষা ও চিন্তাগত সীমাবদ্ধতার ভেতরে ঈশ্বর সম্পর্কিত যুক্তিগুলোকে স্থাপন করে। এই ধরনের যুক্তি শেষ পর্যন্ত যুক্তিতে পরিণত হতে পারে না। বড়জোর শিল্প হয়।

Mohammad Mozammel Hoque: ঈশ্বর স্বরূপে এক, কিন্তু প্রকাশের দিক থেকে এক’জন’ হিসাবে প্রকাশিত। তাই তাঁর সন্তুষ্ট হওয়া আর অসন্তুষ্ট হওয়ার প্রসংগ ধর্মের বর্ণনাতে আছে। মানুষের দিক থেকে ঈশ্বরকে মানবিক ধরনে কল্পনা করাটা যুক্তিসংগত। হতে পারে, মূর্তি তৈরী বা অবতারে বিশ্বাসটা বাড়াবাড়ি। কিন্তু ঈশ্বর যদি মানুষের কাছে মানুষের বুঝার মতো করে উপস্থাপিত না হতেন তাহলে মানুষ কীভাবে তাঁকে জানতে পারতো? সেক্ষেত্রে তিনি স্বরূপত থেকেও মানবিক বিবেচনায় অস্তিত্বহীন হতেন।

তিনি অস্তিত্বশীল। তারমানে এই নয়, তিনি গ্রহ-নক্ষত্রের মতো অস্তিত্বশীল। তাঁর অস্তিত্বকে আমরা পাই যৌক্তিক কল্পনায়। তাঁর অস্তিত্বের পক্ষে যুক্তি পাই আমাদের নিজেদের অস্তিত্বে। আমরা সসীম। তাই আমরা ontologically চিন্তা করি, অসীম বলে একটা কিছু আছে।

আমাদের সমাজ জীবনকে প্রকৃতির অংশ মনে করলে এটি যুক্তিসংগত যে প্রকৃতির অপরাপর নিয়মাবলীর মতো সমাজ জীবনেরও কোনো প্রকৃতিসম্মত নিয়ম থাকবে। সেই নিয়মকে আমরা যুক্তি-বুদ্ধি দিয়ে বুঝতে পারি। আমাদের এই অন্তর্গত বুঝজ্ঞানকে সহযোগিতা ও সঠিক পথে পরিচালনার জন্য অহী ও পয়গম্বরদের উপস্থিতি যুক্তিসংগত। এভাবে এক ঈশ্বর একজন ঈশ্বর হয়ে উঠে।

সৃষ্টি করা বলতে কলম সৃষ্টি না দ্বীপ সৃষ্টি বুঝাচ্ছি, ঈশ্বরের সৃষ্টিকর্ম সম্পর্কে এ ধরনের প্রশ্ন সিরিয়াসলি করাটাই ভুল। ঈশ্বরের কাজকে আমরা অভিজ্ঞতায় পাই। স্বয়ং ঈশ্বরকে পাই না। পাওয়ার কথাও না। উচিতও না। ঈশ্বর কীভাবে কাজ করেন তা না জানাটাই স্বাভাবিক। ঈশ্বর যদি থেকে থাকেন তাহলে তার কাজ অনন্য হওয়াটাই যুক্তিসংগত।

মেটাফিজিকেলি জগত আর ঈশ্বর স্বতন্ত্র বিষয়। জগত হলো তত্ত্ববিদ্যার বিষয়। ঈশ্বর হলেন তত্ত্ববিদ্যাগত প্রশ্নের অন্যতম উত্তর। বিশ্বাসীদের কাছে তা একমাত্র সঠিক। একজন বিশ্বাসী হিসাবে আমার দায়িত্ব হলো অ-বিশ্বাসীদের কাছে বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী উভয় পক্ষের স্বীকৃত মানদণ্ডে উত্তীর্ণ যুক্তি তুলে ধরা।

part-whole fallacy সহ এ ধরনের সব ফ্যালাসিই অ-আকারগত, আমরা জানি। এর মানে হলো, পার্ট-হোল রিলেশন কখনো কার্যকর, কখনো অকার্যকর। এ সবকিছুই নির্ভর করে র‍্যাাশনালিটির ওপর। তাই, যার যার প্যারাডাইম অনুসারে তার তার বৌদ্ধিক কাঠামো গড়ে উঠে। তাই একজনের কাছে যা fallacious, আর একজনের কাছে তা perfect এন্ড rational।

বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, আস্তিক-নাস্তিক সব যুক্তি ও উদাহরণই fallacious। এর মানে এই নয় যে, দুটোই ভুল। either-or statement যেমন কখনো ভুল হতে পারে না, তেমনি আস্তিক-নাস্তিক উভয় পক্ষই ভুল হতে পারে না। দিন শেষে উভয় পক্ষই ফ্যালাসি-আক্রান্ত। পরিণতিতে বিশ্বাসাশ্রয়ী। বিষয়টা যে পর্যায়ের তাতে বৈজ্ঞানিক ‘প্রমাণ’, দার্শনিক যুক্তি, সব ধ্বসে পড়ে।

একটা উপায় হতে পারে, মিশিও কাকুর মতো undecidable position গ্রহণ করা। তা করা যেত যদি জীবন একটা না হয়ে অন্তত কয়েকটা হতো। কিংবা বিষয়টা নিতান্ত ব্যক্তিগত না হয়ে সামষ্টিক পর্যায়ের হতো।

শেষ কথা হলো, ফ্যালাসি ধরাও একটা ফ্যালাসি বটে। একে বলে fallacy of fallacy। অর্থাৎ কোনো কিছু সত্য-মিথ্যা হওয়া আর ফ্যালাসিমুক্ত বা ফ্যালাসিযুক্ত হওয়া, এক কথা না।

যুক্তি হলো বাহন, বিশ্বাস হলো চালিকাশক্তি। সত্যতা হলো লক্ষ্য। এমন লক্ষ্য যা মায়ার মতো শেষ পর্যন্ত অধরা।

এখানে কথাগুলো বিস্তারিত বলার মানে হলো অপরাপর পাঠকরা যাতে বিষয়গুলো ঠিকমতো ধরতে পারে। not to clarify you, exactly. You already know these matters better. Thanks for the comments.

Sarwar Kamal: যুক্তি দিয়ে ঈশ্বরের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে যাওয়ার অনেকগুলো বিপদ আছে। ১) ধর্মের ক্ষেত্রে ‘বিশ্বাস’-এর গুরুত্ব কমে যাওয়া। ২) Ontologically ঈশ্বর, স্রষ্টা, সৃষ্টি, মানুষের চিন্তার পদ্ধিতি এইসব স্পষ্ট না করে, সরাসরি যুক্তিতে ওইসব ধারণা ব্যবহার করা নতুন নতুন বিভ্রান্তি তৈরি করে। অনেক সময় এইসব যুক্তির দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করেই বিজ্ঞানপন্থীরা নাস্তিকতার পক্ষে প্রচার চালায়।

Mohammad Mozammel Hoque: যুক্তি দিয়ে আসলে যৌক্তিকতা দেখানো যায়, প্রমাণ করা যায় না। ঈশ্বর বিশ্বাস বা অবিশ্বাস কেন, entire ফিলোসফিতে আমার দৃষ্টিতে কোনো ‘প্রমাণ’ নাই। এখানে বরং প্রামাণিকতার সব দাবিকে যাচাই করা হয়। যুক্তি এখানে হাতিয়ার। গ্রহণযোগ্য যুক্তিকে প্রমাণ হিসাবে হাজির করা হয়।

Nure Elahi Shafat: অসৃষ্ট স্রষ্টা যেহেতু ফ্যালাসি তৈরি করছে না। তার প্রতি দার্শনিকভাবে ঈমান আনার সহজ পন্হা এবং উত্তর কি?

Mohammad Mozammel Hoque: অসৃষ্ট স্রষ্টার ধারণা ইটসেলফ কোনো ফ্যালাসি নয়। বরং, সৃষ্ট জগতের মধ্যকার যা কিছু, সে সবের উপর আরোপিত নিয়মকানুনকে স্বয়ং স্রষ্টার অস্তিত্ব বা সত্তার ওপরও সমভাবে প্রযোজ্য মনে করাটাই আসলে begging the question বা loaded question fallacy’র মতো চিন্তাবিভ্রাট তৈরী করছে।

Md Nayeem Watto: তাহলে তো স্যার শেষ পর্যন্ত বলতেই হয়, ‘ঈশ্বর হলো সকল কারণের কারণ’ – এটা একটা অনুমিত বিশ্বাস এবং ঈশ্বরের “ঈশ্বর” থাকার possibility-র কথা যারা বলে সেটাও একটা অনুমিত বিশ্বাস। কারণ যারা ঈশ্বরকে সকল কারণের মূল কারণ বলে মানে তারা ঈশ্বরকে দেখেনি, ঠিক তেমনিভাবে যারা ঈশ্বরের “ঈশ্বর ” থাকার সম্ভাবনায় আছে তারাও ঈশ্বরের “ঈশ্বর”-কে প্রত্যক্ষ করেনি।

তাই দু’পক্ষই যুক্তির মাধ্যমে তাদের দাবিকে প্রতিষ্ঠা করার প্রচেষ্টা করে থাকে।

Mohammad Mozammel Hoque: ঈশ্বর তো দেখার বিষয় না। ঈশ্বরকে দেখা গেলে, এই দেখার কারণেই তার ঈশ্বরত্ব বাতিল হয়ে যাবে। খেয়াল রাখতে হবে, যারা ঈশ্বর থাকার কথা বলছেন তারা তাঁকে কোন অর্থে ও কীভাবে ‘আছে’ বলে বলছেন।

কারো প্রস্তাবনাকে সমর্থন-বিরোধিতা করা আর সংশ্লিষ্ট প্রস্তাবনাকে নিজের সুবিধাজনকভাবে পরিবর্তন করে এরপর সেটাকে খণ্ডন করার চেষ্টাকে বলে strawman fallacy। মনে করো, আমাকে মোকাবিলা করতে না পেরে কেউ খড়খুটা দিয়ে একটা কুশপুত্তলিকা বানিয়ে এরপর সেটাকে কুপোকাৎ করে দাবি করলো সে আমাকে ধরাশায়ী করেছে। এই ব্যক্তির কর্মকাণ্ড যে রকম, ঈশ্বর বলতে ঈশ্বরবাদীরা যা বলছেন তা পরিবর্তন করে ঈশ্বরবিশ্বাসকে ‘খণ্ডন’ করাও সে রকম ব্যাপার।

ঈশ্বরকে কেউ বস্তুগতভাবে প্রত্যক্ষ করতে পারে না। পারার কথাও নয়। ঈশ্বরকে মানুষ অনুভব করে তার অন্তরে। নিজের এই স্বতঃস্ফূর্ত অন্তর্গত বিশ্বাসকে সে যুক্তির সাহায্যে অপরের কাছে তুলে ধরে। ব্যাপারটা বড়জোর এতটুকু।

ঈশ্বর জগতের মতো নয়। সেজন্যই তিনি ঈশ্বর। আমরা তার অস্তিত্ব থাকাটা জানতে পারি আমাদের নিজেদের অস্তিত্বের কারণ হিসাবে। এছাড়া তাঁর স্বরূপ আমাদের জন্য অজ্ঞেয়। আমাদের দিক থেকে আমরা তাঁকে যেভাবে দেখি তিনি আমাদের জন্য তাই-ই, যদিও তাঁর দিক থেকে অর্থাৎ from God to world তিনি কেমন তা আমরা জানি না। যা জানি না, তা এ রকম, সে রকম, এ রকম নয় বা সে রকম নয়– এসব বলাবলি করাটা অর্থহীন।

Md Nayeem Watto: আসলে ঈশ্বরের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উদ্ভবের মূলে রয়েছে বিভিন্ন ধর্মে ঈশ্বরের বিভিন্ন definition. মূলত ঈশ্বরের নানাবিধ definition ও ঈশ্বরের আনুগত্যের নানাবিধ তরিকার জন্যই যখন একজন ব্যক্তি নিরপেক্ষ জায়গা থেকে ঈশ্বরের অস্তিত্বকে বোঝার চেষ্টা করে তখনই doubt সৃষ্টি হয়ে থাকে “is there any God!”

Mohammad Mozammel Hoque: বিভিন্ন ধর্ম প্রস্তাবিত বিভিন্ন ঈশ্বরের সব বৈচিত্র্যপূর্ণ বৈশিষ্ট্যের মধ্যেও ঈশ্বর বলতে কী বুঝায় তার বিষয়ে বিশ্বাসীদের মধ্যে কিছু সাধারণ ঐক্য আছে। ঈশ্বরের কিছু সাধারণ বৈশিষ্ট্যের কথা পক্ষ-বিপক্ষ-নিরপেক্ষ সবাই-ই স্বীকার করেন। ঈশ্বরকে যারা নিছক ঈশ্বর-প্রকল্পের বাইরে বাস্তব ও সত্য হিসাবে মানেন না, তারা নাস্তিক। আর যারা একে ব্যক্তিগতভাবে গ্রহণ করেন এবং মানেন, তারা আস্তিক। তাই, ঈশ্বরের ধারণা সব ধর্ম ও মতে একই।

Md Nayeem Watto: স্যার, কিছু সাধারণ ঐক্য বলতে??

Mohammad Mozammel Hoque: ঈশ্বর আছেন অর্থাৎ তিনি তাঁর মতো করে অস্তিত্বশীল। ঈশ্বর সর্বশক্তিমান। তারমানে, যুক্তি বুদ্ধিতে যা সম্ভবপর বলে মনে হতে পারে অথচ জগতের কেউ বা কোনো শক্তি যা করতে পারে না, ঈশ্বর তা করতে পারেন। তিনি সব কালের সবকিছু তাৎক্ষণিকভাবে জানেন। অর্থাৎ ঈশ্বর সর্বজ্ঞানী। তিনি পাপ ও অন্যায় হতে মুক্ত। তাই তিনি সদা সর্বমঙ্গলময়। তিনি একটা শৃংখলার মধ্য দিয়ে জগতকে সৃষ্টি ও পরিচালনা করছেন। একমাত্র তিনিই স্থায়ী সত্তা। সবাই বা সবকিছু তাঁর ওপর নির্ভরশীল, অথচ তিনি কারো ওপর নির্ভরশীল নন।

খেয়াল করলে দেখবেন, সব ধর্মে ঈশ্বরের এই মৌলিক বৈশিষ্ট্যগুলো বিদ্যমান।

Md Nayeem Watto: ঈশ্বরের বিপক্ষ ও নিরপেক্ষরা কি ঈশ্বরের সর্বশক্তিমত্তা, সর্বজ্ঞানী, সদা সর্বমঙ্গলময়, স্থায়ী সত্তা – এই কথাগুলো স্বীকার করে নেয়?

Mohammad Mozammel Hoque: অবশ্যই। তবে তা, আপনি হয়তো খেয়াল করেন নাই, উপরের মন্তব্যে বলেছি, “ঈশ্বর-প্রকল্প” হিসাবে। অর্থাৎ যারা ঈশ্বরের কথা বলেন, তারা ঈশ্বর বলতে কী বুঝান তা সবার কাছেই এক। বিশ্বাসীরা এটিকে নিছক প্রস্তাবনা বা যুক্তি হিসাবে মনে না করে একে বাস্তব ও সত্য হিসাবে গ্রহণ করেন। তাই তারা বিশ্বাসী। আর যাদেরকে আমরা অবিশ্বাসী বলছি তারা ঈশ্বর-প্রকল্পকে প্রকল্পের অধিক কিছু মনে করেন না। তাই এই প্রকল্প তাদের দৃষ্টিতে বাতিল।

আপনি যে মতবাদকে সঠিক মনে করেন না, সেই মতবাদ বলতে কী বুঝায় তা আপনার কাছে ঠিক তাই-ই যা ওই মতবাদের অনুসারীরা দাবি করে। উক্ত মতবাদের পক্ষের লোকদের সাথে আপনার পার্থক্য হচ্ছে, আপনি সেটিকে সঠিক মনে করেন না। আর এর অনুসারীরা একে সঠিক মনে করে। প্রস্তাব বা প্রস্তাবনাকে গ্রহণ বা বর্জনের কারণে প্রস্তাবনাটা স্বয়ং পরিবর্তিত হয়ে যায় না।

মানেন বা না মানেন, কেউ কিছু বললে বা কোনো পক্ষ কোনো প্রস্তাবনা তুলে ধরলে, তা সবাই পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাইয়ের বিষয় হিসাবে সমভাবে গ্রহণ করে। যাচাই শেষে কেউ সেটাকে গ্রহণ করে, কেউ বর্জন করে। মতবাদসমূহ উপস্থাপনাগতভাবে নিরপেক্ষ, সমর্থন বা বিরোধিতার দিক থেকে সেগুলো কোনো না কোনো পক্ষভুক্ত। আশা করি বুঝেছেন।

Md Nayeem Watto: জি স্যার, ধন্যবাদ

Mohiuddin Jimi: আচ্ছা, বুঝলাম। এখন বলেন, শয়তানের ব্যাপারে মতামত কি? আল্লাহ তাকে এত ক্ষমতা কেন দিলেন?

Mohammad Mozammel Hoque: এমন একটা জগত কি আমরা কামনা করতে পারি যেখানে কোনো অভাব থাকবে না? যেখানে অভাব থাকবে সেখানে স্বার্থের সংকট ও সংঘাত থাকবে। যেখানে স্বার্থের দ্বন্দ্ব থাকবে সেখানে মন্দ থাকবে। কিছু মন্দ প্রাকৃতিক। কিছু মন্দ নৈতিক। এই নৈতিক মন্দকে ধর্মের ভাষায় শয়তান বলা হয়। তো এখন বলেন, শয়তান না থাকলে জগত কি সম্পূর্ণ হতো?

অবশ্য যদি প্রশ্ন করেন, মানুষ কেন হলো? না হলে কী হতো? কিংবা মানুষ কেন মানুষ হলো, অন্যকিছু হলো না? জগতটা এভাবে কেন? কেন অন্য রকম হলো না? আল্লাহ কেন আছেন? ইত্যাদি, তাহলে আমার কাছে এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর নাই। আমার দৃষ্টিতে এগুলো ভুল প্রশ্ন। তাই অর্থহীন।

জিমি ভাই, যেভাবে আমরা আছি সেভাবে ধরে নিয়ে আমাদের অস্তিত্ব, যেভাবে জগত আছে বা হয়েছে তা যথাযথ হিসাবে ধরে নিয়ে আমাদের বাদবাকি প্রশ্নগুলোকে ডিল করতে হবে। আমার কথা হলো, যেসব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য আমাকে স্বয়ং গড হতে হবে, সেসব প্রশ্নকে আমি কেন ডিল করবো?

আপনি শয়তানের ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন করেছেন। আচ্ছা, মন্দবিহীন কোনো জগত যদি আমরা কল্পনা করতে না পারি তাহলে, আমার মতে আমাদের উচিত, প্রাকৃতিক মন্দগুলোকে যথাসম্ভব মিনিমাইজ করে নৈতিক মন্দগুলোকে যথাসম্ভব দূর করার চেষ্টা করা।

এবার বলেন, শয়তান যদি এত শক্তিশালী না হতো আমাদের পক্ষে নৈতিক ভালত্ব অর্জন করা কি সম্ভব হতো? পাথর যখন নিচে পড়ে তখন কি সে কোনো নৈতিকভাবে ভালো কাজ করে? আমরা জানি, সীমিত পরিসরে হলেও স্বাধীনতাপ্রাপ্ত কোনো এনটিটির পক্ষেই শুধু নৈতিক ভালত্ব অর্জন করা সম্ভব।

হেমন্তের গানটা কি মনে আছে? “খোলা আকাশ কি এত ভাল লাগতো, কিছু কিছু মেঘ যদি নাহি থাকতো?”

ভাল থাকেন।

Mohiuddin Jimi: বড়ই কঠিন

Mohammad Mozammel Hoque: আমার কাছে তো অর্থনীতিকে বেশি কঠিন মনে হয়।

Mohiuddin Jimi: আপনার কাছে তো কঠিন, আর আমার কাছে অর্থনীতি কি জিনিস সেটাই ভুলে গেছি। এবং ভালো লাগে আপনার লেখা। দেখা হবে।

Md Abdul Aziz: Sir, i know that Is the best logic, without logic Allah Is God & creator of the World…

Mohammad Mozammel Hoque: আপনি বলছেন logic ছাড়াই আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিকর্তা। হ্যাঁ, আপনার কথা একশ ভাগ সঠিক। আল্লাহ তায়ালার কাছে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিকর্তা হওয়ার জন্য কোনো মানুষের স্বীকৃতি পাওয়া না পাওয়ার বিষয়টা অর্থহীন ও অপ্রাসঙ্গিক। এটা সত্য।

কিন্তু আল্লাহর দিক থেকে আল্লাহ কেমন হতে পারেন তা নিয়ে আপনি আমি কেন মাথা ঘামাবো? আমরা আসলে আমাদের নিজেদের অস্তিত্ব নিয়ে সমস্যাগ্রস্ত ও চিন্তিত। আমাদের মধ্যে চিন্তা আসে, আমরা কোথা থেকে এলাম? এ জগত কোথা থেকে এলো? জগতের সাথে আমাদের প্রকৃত ও ন্যায্য সম্পর্ক কী?

এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য আমরা চিন্তিত। আল কুরআন আমাদের এই প্রশ্নগুলোরই এক ধরনের উত্তর প্রদান করে। যাকে আমরা সংক্ষেপে ইসলাম হিসেবে জানি। তাই তো?

এবার আসেন আল-কুরআনে এসব বিষয়ে কী বলা হয়েছে, কেমন করে বলা হয়েছে তার দিকে যদি আমরা একটু লক্ষ করি। আমরা দেখি, আল কুরআনের পাতায় পাতায় আল্লাহ তায়ালা নানা বিষয়ে যুক্তির পর যুক্তি দিয়ে গেছেন। আপনি জানেন, কুরআনের অধিকাংশ সূরা ও আয়াত হলো মক্কী যুগের। সেইসব সূরা ও আয়াতসমূহে কোন বিষয়ে কী কী বলা হয়েছে, কীভাবে বলা হয়েছে, একটু স্মরণ করেন।

তাহলেই বুঝবেন, ইসলামের সাথে যুক্তির সম্পর্ক কী বা কতটুকু। আমি শুধু আপনাকে এ বিষয়ে চিন্তা করার পথ বাতলে দিলাম। সাথে এতটুকুও মনে রাখবেন, ‘যুক্তির দরকার নাই’ – এটি যখন আপনি বলবেন তখন আপনাকে অথবা যিনি এমনটা বলবেন তাকে কোনো না কোনো যুক্তি দিয়েই বলতে হবে কেন তিনি মনে করছেন, যুক্তির দরকার নাই। তাহলে দিনশেষে ব্যাপারটা কি দাঁড়ালো?

পোস্টটির ফেসবুক লিংক

Similar Posts

২ Comments

  1. প্রিয় মোজাম্মেল ভাই:

    আস্সালামু…..
    আপনার পরিচয়টা কি জানতে পারি? কোথায় থাকেন? আপনার পেশা কী?
    আপনার ইমেল ও ফোন নম্বর পেতে পারি?
    ওয়াহিদ

    1. তিনি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষক। তাঁর ওয়েবসাইটে এই পরিচিতি দেয়া আছে: https://mozammelhq.com/about-me

      তাঁর সাথে যোগাযোগ করা যাবে এখান থেকে: https://mozammelhq.com/contact

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *