“স্যার, আমি একজন আইনজীবীকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, আপনারা যখন একজন নিরপরাধ ব্যক্তির বিপক্ষে রায় দিয়ে অপরাধীকে ছাড়িয়ে আনেন, সেটা কী আল্লাহর হুকুমে হয়? উনি আমাকে বলেন, আল্লাহর হুকুমে। এরপরে আমি বললাম, নিরপরাধ ব্যক্তির মৃত্যু হলে? উনি বলল, এটাও আল্লাহর হুকুমে। আমি উনাকে বললাম, আল্লাহ তো মানুষকে ভালোমন্দ বিচার করার জ্ঞান দিয়েছেন। কিন্তু আমরা তা পালন করি না, এটাও কি আল্লাহর হুকুমে? এখন আমার প্রশ্ন, মানুষ যখন পাপ করে এটাও কী আল্লাহর হুকুমে?”
এটি একজন পাঠকের প্রশ্ন।
এ ধরনের প্রশ্ন মূলত তাকদীর সংক্রান্ত। এর গোড়া হচ্ছে স্রষ্টা সম্পর্কে আমাদের ধারণা।
এই সংক্ষিপ্ত উত্তরে সব বিষয় ক্লিয়ার হবে না। তবুও কিছুটা ইনসাইট পাওয়ার জন্য এটি শেয়ার করা। ভালোভাবে উত্তর দিবো, এই ‘ফেতনা’তে পড়ে বহু প্রশ্নের উত্তর দিতে অনাকাঙ্ক্ষিত বিলম্ব হয়ে গেছে। তাই, ভাবলাম, কিছু বলে ফেলি।
এসব বিষয়ে জানার জন্য ‘মুক্তবুদ্ধি চর্চা কেন্দ্র‘ ওয়েবসাইটটি ভিজিট করতে হবে।
আমার উত্তর:
আল্লা তায়ালার দিক থেকে বলতে গেলে সবকিছু আল্লাহর হুকুমে হয়, এ কথাটা ঠিকই আছে। আর আমাদের দিক থেকে বলতে গেলে আমরা একটা সিস্টেমের মধ্যে দিয়ে অনেক কিছু নিজেদের হুকুমে করতে পারি। এটি হচ্ছে অনস্বীকার্য বাস্তব সত্য কথা।
স্মরণ রাখতে হবে, এটি হচ্ছে আমাদের দিক থেকে।
সামগ্রিকভাবে যদি বলতে হয়, তাহলে আমরা বলতে পারি, সবকিছু আল্লাহর হুকুমে হয়, এটি সঠিক হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কিছু কিছু বিষয়ে এখতিয়ার বা ইচ্ছার স্বাধীনতা দিয়েছেন।
আমাদের ইচ্ছার ও সীমিত পর্যায়ে কর্মের স্বাধীনতা থাকাটা যদি একটি বাস্তব সত্য হয়, আমাদের দিক থেকে; তাহলে আমাদের এই স্বাধীনতার সঠিক প্রয়োগ থাকা দরকার; এবং ক্ষেত্রবিশেষে তা না থাকলে সে ব্যাপারে একটা বিহিত ব্যবস্থাও থাকা উচিত।
আল্লাহর দিক থেকে আল্লাহ তায়ালা সবকিছু এভাবে করেছেন বা হতে দিচ্ছেন কেন সেটা আমরা ঠিক জানি না। আর আমাদের জানার ভিত্তিতে আল্লাহ তায়ালা এবং তাঁর কার্যক্রমকে বিচার করতে চাওয়া হলো আল্লাহকে আমাদের ক্যাটাগরির একটা সত্তা হিসেবে মনে করা।
এটিই হচ্ছে শিরক বা অংশীদারিত্ব।
আল্লাহ তায়ালার সাথে আমরা সম্পর্কিত হই তাঁর সিফাত বা গুণাবলীর মাধ্যমে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালার মূল সত্তা হলো তাঁর জাত বা অনন্য বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন সত্তা, যা আমরা জানি না, যা আমাদের জানার আওতাবহির্ভূত বা অজ্ঞেয়।