ময়দানবিমুখ হতাশ আদর্শবাদীরা শেষ পর্যন্ত অবাস্তব আধ‍্যাত্মিকতা ও কর্মগত অতিশুদ্ধবাদিতায় নিপতিত হন। বাহ‍্যিক নির্বিবাদী মনোভাব ও কৃত্রিম বিনয়ের আড়ালে ভিতরে ভিতরে তারা অসহিষ্ণু ও চরমপন্থী হয়ে উঠেন। আদর্শের রক্ষাবলয় মনে করে নৈতিকতার বুদবুদের মধ‍্যে বসবাস করেন। ষড়যন্ত্র-তত্ত্বের দোহাই দিয়ে অবাস্তব আত্মতুষ্টিতে ভুগেন।

তাই, নিজেকে ঠিক রাখার জন‍্য জরুরি হলো ব‍্যক্তিস্বার্থের বাইরে কোনো সামাজিক উদ‍্যোগে সম্পৃক্ত থাকা। যে কোনো পরিস্থিতিতে ময়দানমুখী থাকা। কৃত্রিম বিনয় ও চাপা অসহিষ্ণুতাকে বর্জন করা। আচার-আচরণে অকপট হওয়া।

সর্বোপরি, নিজের উদ‍্যোগে কিছু না কিছু করার চেষ্টা করা।

ফেসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

Yasir Adnan: স্যার, অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ব্যক্তির নিজের উদ্যোগ নেয়ার যোগ্যতা থাকে না। আবার প্রচলিত কাজগুলির প্রতি তার খুব একটা আস্থা নেই। আবার এরকম সামাজিক উদ্যোগও অহরহ নয়। ফলে ব্যক্তি নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে কিছুই করেন না। বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধার কেউ নেই।

Mohammad Mozammel Hoque: এই চক্র ভাংগতে হবে ব‍্যক্তিকেই। দুনিয়াতে প্রত‍্যেকের আগমনের পিছনে কোন না কোন বিশেষ উদ্দেশ্য আছে। এবং কেউ কিছু করতে চাইলে তাকে পথ দেখানো আল্লাহ তায়ালার​ দায়িত্ব।

Yasir Adnan: আল্লাহ তাওফিক দিন!

Mohammad Mozammel Hoque: ক‍্যারিয়ার তথা উপার্জনের উপায় এবং নিজস্ব সম্পদ-সম্পত্তির মত আদর্শবাদীদের কোন না কোন সামাজিক উদ‍্যোগ থাকতে হবে। এটি যতটা সমাজের জন্য, তারচেয়েও বেশি নিজেকে ঠিক রাখার​ জন্য।

Masuk Pathan: স্যার, স্পেসিফিক যাদের বলেছেন তাদের আমি ঠাহর করতে পারছি কিনা ভাবছি!!

তবে একজন শায়খকে আমি জেনেছি যিনি দুনিয়াটাকে ভিন্নভাবে তুলে ধরেছেন। তার কিছু বই ভিন্ন গবেষণা ও মেথডোলজিতে লেখা। কন্সপাইরেসি থিওরিকে আমলে নিয়ে সমাজ সভ্যতার ভিন্ন ডাইমেনশন নযরে এনেছেন।

Mohammad Mozammel Hoque: conspiracy theory is a black-hole. Negativity can’t be a good approach for anything good. We have to be positive. কাউকে হেদায়েত দেয়ার চিন্তাটাই ভুল। অপরকে পরামর্শ দেয়া ও সহযোগিতা করা যেতে পারে শুধু।

Masuk Pathan: জ্বি। স্যার। বুঝেছি। ইনবক্স করছি স্যার।

Mohammad Mozammel Hoque: মানুষ, জীবন ও জগত সম্পর্কে অকৃত্রিম সুধারণা পোষণ করতে হবে। হ‍্যাঁ, নেগেটিভ চিন্তা-ভাবনাকারীরাও ঘৃণা ছড়িয়ে জগতে বড় ধরনের কিছু করেছে বটে। কিন্তু অবশেষে সেসব ‘অগ্রগতি’, মানুষের সত‍্যিকারের মানবিক উন্নয়নের ​পথে বিরাট প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ষড়যন্ত্রতত্ত্ববাদীদের কাজের মাধ্যমে আপাতত কিছুটা ‘সচেতনতা’ তৈরী হলেও আলটিমেইটলি তাদের এসব নেতিবাচক বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে ‘ধর-মার-কাট’ ধরনের মন-মানসিকতার লোক তৈরী হচ্ছে। ঘৃণা, বিরোধিতা, অপছন্দ, সন্দেহ – এগুলো মানবিক বিষয়। এগুলো চাইলেই অস্বীকার করা যায় না। করা উচিতও না। এগুলো আমাদের মজ্জাগত। কথা হলো, এগুলোকে আমরা নার্সিং তথা লালনপালন করবো কিনা, তা।

এগুলোর বিপরীতার্থক তথা ইতিবাচক বিষয়গুলোর সাথে এই নেগেটিভ মানবিক অনুভূতিগুলোর ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক হতে হবে। আমরা জানি, ভারসাম্য মানে, সব সময়ে সমান সমান নয়। বরং, কোনো কোনো জিনিস জটিল কোনো সিস্টেমে কেবলমাত্র ক্ষুদ্রাংশ থাকাই মূলত: ভারসাম্য বজায় থাকা। যেমন আমাদের শরীরে বিদ্যুত প্রবাহ আছে। এর মাধ্যমে আমাদের স্নায়ুগুলো কাজ করে। কিন্তু সেগুলোর অত্যল্প মাত্রাই কাজে লাগে। মাত্রার বেশি হলেই তা প্রাণঘাতী হয়ে দাঁড়ায়।

মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য নেতিবাচক এলিমেন্টগুলোকে ব্যবহার করার চেষ্টাগুলো স্বয়ং নেতিবাচক ব্যাপার। অতএব, পরিত্যাজ্য। যদিও আদর্শের দোহাই দিয়ে সেগুলো করা হয়। এ ধরনের নেতিবাচকতায় উদ্বুদ্ধ ব্যক্তিবর্গ খারেজীসুলভ অতিশুদ্ধতাবাদী ও অসহিষ্ণু হয়ে থাকে।

লেখাটির ফেসবুক লিংক

Similar Posts

২ Comments

  1. আসসালাম… বারাকাতুহ
    শতভাগ সহমত!
    অন্তর্গতভাবে অসহিষ্ণু প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখা দ্ঃসাধ্য!!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *