আমাদের বাড়ির (নাজিরহাট) কাছাকাছি এক বাড়িতে মেজবান খেতে গিয়েছিলাম। উনারা তিন ভাই মিলে একটি দালান বানিয়েছে। তিন ভাইয়ের জন্য তিনটি বেড রুম। দুই বোনের জন্য কিছু নাই। সে জন্য তাদের কোনো আফসোসও নাই। বাপের বাড়ি হতে ভাগ নেয়া, ‘তর্কা’ চাওয়া, যেন হারামের চেয়েও হারাম! বাপের বাড়িতে নিজের কোনো জায়গা/ঘর না থাকায় বোনেরা ভাইদের ঘরে উঠতে বাধ্য হন। ভাই ভালো হলেও ভাবীরা সাধারণত সুবিধার হয় না। বিয়ের পর কার্যত তারা পৈত্রিক সব কিছু হতে উচ্ছেদ হয়ে মেহমান, লোকাল ভাষায়, ‘নাইঅরি’ বনে যান।
আমার এক চাচীকে দেখলাম ছেলের ঘর হতে একটা প্লেট নিয়ে আসছেন, যাতে ভাত-তরকারী দেয়া আছে। ছেলের ঘরে সাজানো ড্রয়িং রুম থাকলেও, আইপিএস থাকলেও মা থাকেন অন্য ঘরে যেখানে আইপিএসের কানেকশন নাই। চাচী মারাত্মক ডায়াবেটিসে ভুগছেন। অথচ, উনার তিন ভাই সুপ্রতিষ্ঠিত। স্বামীর পেনশন পান হাজার দুয়েকের মতো। অবস্থা বেশি খারাপ হলে মেয়ের কাছে যান। মেয়ে সাধ্যমতো সেবা করে।
পাশের বাড়ির এক চাচী এলেন কিছু সাহায্যের জন্য। উনার ছেলে উনাকে মেরেছে। কপালে, হাতে, পায়ে কিছু দাগও দেখালেন। কিছুটা অসংলগ্ন হলেও তিনি পাগল নন। অথচ, ছেলে তাকে শিকল দিয়ে বেধে রেখেছে, ‘টাট্টিখানায়’ আটকিয়ে রেখেছে– এমনও হয়েছে। হতে পারে, এই ছেলেকে জন্ম দিতে গিয়েই প্রসব সংক্রান্ত জটিলতার (যেমন এক্লেমশিয়া) কারণে উক্ত মহিলা আজ খানিকটা ভারসাম্যহীনতার শিকার!
আমার এক চাচাকে তার ছেলে মেরে হাত ভেংগে দিয়েছিলো। চট্টগ্রামে বাপ-মায়ের বৃদ্ধ বয়সে তাদেরকে অপাংক্তেয় মনে করার, এমনকি মারধর করারও একটা প্রবণতা লক্ষ্যনীয়! নিতান্ত লজ্জার বিষয় হলেও এটি সত্য!