নিজেকে ভাবছো ব্যর্থ, পরাজিত, পরিত্যক্ত?
ফুরিয়ে যাওয়া, পুরনো, অচল?
না, তুমি তা নও। আমি জানি,
তোমার এখনও আছে সময়,
অনেক কিছু দেয়ার। এমনকি,
ভাবতে পারো…?
সবচেয়ে দামি জিনিসটি পাওয়ার,
সবচেয়ে মূল্যবান জিনিসটা দেয়ার,
এখনও রয়েছে তোমার পূর্ণ সুযোগ!
এই ব্যর্থতা যদি না আসতো
তাহলে তোমার প্রতীক্ষমান এই সফলতা
হতো না এতটা ব্যাপক, মধুর।
পরাজয় যদি না আসতো তোমার জীবনে
হতে না তুমি এতটা অদম্য, বিপ্লবী।
জড়বাদী স্বল্পবুদ্ধি লোকদের দ্বারা
যদি না হতে আজ পরিত্যক্ত,
তাহলে কি হতে পারতে তুমি
এতটা সত্যবাদী, নির্ভীক, ব্যতিক্রমী?
শান্তনা দিয়ে বলা হয়,
“শোককে রুপান্তর কর শক্তিতে।”
– কথাটা সত্যি।
পরাজয়ের বেদনা হলো
বিজয়ের সবচেয়ে বড় প্রেরণা।
জীবনের মূল্যমান ও শক্তি এতটাই বেশি,
যত পরাজয় আসুক না কেন,
জীবন কখনো একেবারে ব্যর্থ হয়ে যায় না।
কোন এক লেখায় বলেছিলাম,
“পরাজয়ের প্রথম কয়েক রাউন্ডে
জীবনের খেলা শেষ হয়ে যায় না।”
কথাটা সত্যি। এ আমার জীবনের
তিক্ত-মধুর অভিজ্ঞতা থেকে পাওয়া।
যা কিছু হারিয়েছ, তারচেয়েও বেশি কিছু পাবে,
যদি পারো শুধু
ধৈর্য, মনোবল আর নিরন্তর মোকাবেলার
সাহসটুকু বাঁচিয়ে রাখতে।
যাদের কাছে তুমি আজ পরিত্যক্ত, ব্যর্থ
ঠিক দেখবে একদিন
তোমার পরিচয় দিতে তারা গর্ববোধ করবে।
শুধু যদি পারো, তাদের ক্ষমা ও অস্বীকার করতে।
যদি পারো নিজের মতো হতে,
যদি পারো, শুধু নিজের জীবন যাপন করতে,
সফল হবে তুমি। একথা সত্যি।
আস্থা রাখো আমার এই নির্ভুল অনুমানে।
এ জগতে তোমার একটা কিছু করার আছে,
যা অনন্য। এক্সক্লুসিভ।
বিশ্বাস করো, তোমার কোনো বিকল্প নাই।
তোমার মতো কেউ আসে নাই আগে।
ঠিক তোমার মতো
কেউ হবে না এরপরে কখনো আর কোনোদিন।
এ জগত তোমারও বটে। এ জগতে রয়েছে
তোমারও ন্যায্য পাওনা, পূর্ণ অধিকার।
প্রকৃতি কিংবা ঈশ্বরের তুমিও অন্যতম শ্রেষ্ঠ সন্তান।
অবশ্যই পারবে তুমি
সফল হতে, জীবনের অবশিষ্ট সময়ে। জানি,
গেছে অনেকটুকু। যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছো তুমি,
তা ঢের বেশি। এ কথা সত্যি।
কিন্তু এরচেয়েও বড় সত্যি কথা হলো
জীবনের ক্যানভাস, সম্ভাবনার দিগন্ত,
ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ
এর চেয়েও অনেক অনেক বেশি।
তোমার মত করে সবকিছু গড়ে নিতে
যদি তুমি চাও
অবশ্যই সফল হবে তুমি।
নিজের মতো হও।
নিজের সুপ্ত সম্ভাবনাকে জাগিয়ে তোল।
পরিচিত হও নিজের সাথে।
অন্যের জীবন যাপন করো না।
অন্য কারো মতো হতে চেয়ো না।
তোমার সফলতা-ব্যর্থতার
সবচেয়ে বড় মাপকাঠি, নির্ণায়ক, তুমি নিজে।
যদি তুমি তা বিশ্বাস করো শুধু।
সত্যের সন্ধানে হও ক্লান্তিহীন।
নীতির প্রশ্নে থাকো আপসহীন।
প্রশংসানির্ভর থেকো না। ভেঙে পড়ো না সমালোচনায়।
ঝেড়ে ফেলো, উপেক্ষা করো যতসব
নির্দয়, বুদ্ধিহীন ও অযাচিত মূল্যায়ন, মন্তব্য।
আস্থা রাখো
নিজ অভিজ্ঞতা, জ্ঞান, বুদ্ধি ও বিবেকের ওপর।
আপন মনে কর প্রকৃতি কিংবা ঈশ্বরকে
সবচেয়ে বেশি।
উদ্দেশ্যময় এ জগতে
তোমার আগমনের সার্থকতা
এবং তোমার অস্তিত্বের পূর্ণতা
তোমাকেই নিতে হবে খুঁজে।
তোমার জীবনের অর্থ ও উদ্দেশ্য অনুসন্ধানের দায়
একান্তই তোমার।
কারো থেকে কেউ জীবনের উদ্দেশ্য
গ্রহণ করতে পারে না।
কেউ কারো জীবনের উদ্দেশ্য
পূরণ করে দিতে পারে না।
শেষ পর্যন্ত আমরা সবাই
অস্তিত্ব আর জীবনের দ্বন্দ্বমুখর পরিবেশে
অকপট আত্মকেন্দ্রিক।
আজকে তোমার যত কষ্ট
একসময় হতে পারে তা মধুরতম স্মৃতি।
তোমার জীবন শুধুই তোমার,
এ কথা কখনো ভুললে চলবে না।
সব সম্পর্ক হলো দেয়া-নেয়ার,
এতটুকু মনে রাখো।
কৃতজ্ঞ হও। কিন্তু আত্মবিস্মৃত হয়ো না।
ভুলে যেও না যেন, নিজের কর্তব্য, পরিচয়।
এসো, ভালো থাকি
জীবনের এই বিপুল আয়োজন,
অফুরন্ত সম্ভার আর বিচিত্র সমারোহে।
এসো যাপন করি মানবিক জীবন।
হীনমন্যতার কিছু নাই।
কোনো ব্যর্থতাই শেষ কথা নয়।
রয়ে যাওয়া সময়টুকু তোমার
জীবনের শ্রেষ্ঠতম কাজটি করার জন্য পর্যাপ্ত।
ব্যর্থতার এই বিপুল গ্লানি মুছে একদিন
সফলতা আসবে তোমার হাতের মুঠোয়,
আত্মনির্ভরশীল ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হতে পারো যদি।
একজন সফল মানুষ হিসেবে
তোমাকে জানাই অভিবাদন,
অগ্রিম শুভেচ্ছা।
ভালো থাকো আত্মতুষ্ট হয়ে।
০৬/০৫/২০১৮
# দক্ষিণ ক্যাম্পাস
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।