[ফেইসবুক ম্যাসেঞ্জারে এক পাঠকের সাথে প্রশ্নোত্তর]
পাঠকের প্রশ্ন:
“আসসালামু আলাইকুম।
আপনার নাস্তিকতা বা স্রষ্টা বিষয়ক মানুষের মনের বিভিন্ন প্রশ্নের যৌক্তিক আলোচনাগুলো খুবই সুন্দর। আল্লাহ আপনার জ্ঞান আরো বাড়িয়ে দিন।
স্যার, মানুষ কেন তার স্রষ্টাকে অস্বীকার করে বা মানতে চায় না? এর সাইকোলজিক্যাল ও ফিলোসফিক্যাল ব্যাখ্যা কী হতে পারে? যেমন, কুরআন থেকে আমরা জানতে পারি, বাপ দাদার অন্ধ অনুসরণ হতে পারে এর একটা কারণ। হতে পারে, আমরা কেন স্রষ্টাকে দেখি না, ফেরেশতা কেন দেখি না, প্রমাণ নাই ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু সৃষ্টিকর্তাকে মেনে নেওয়ার ব্যাপারটাই তো স্বাভাবিক। কুরআনে বলা হয়েছে, অহংকারবশত তারা দয়াময়কে মানে না। আসলে আমি জানতে চাইছি, এই অহংকারটা কেন স্রষ্টার সাথে? মানুষের সাথে অহংকার হতে পারে। তার মানে কি এই, স্রষ্টা সবাইকে দেখা দিলে বা কানে কানে বলে দিলেই সবাই মেনে নিত?
স্রষ্টার সাথে মানুষের অহংকার, বা স্রষ্টাকে না মানার এই যে প্রবণতা, এর সাইকোলজিটা যদি একটু ব্যাখ্যাসহ বলতেন তাহলে উপকৃত হতাম।”
*****
আমার উত্তর:
এটি ব্যাখ্যা করা তো আসলে একটা কঠিন ব্যাপার। মানুষ কেন স্রষ্টাকে মানতে চায় না, তা একটু ধৈর্য্য সহকারে বুঝতে হবে। এটি একটি বহুমাত্রিক সমস্যা। ইংরেজিতে বললে multi-layer প্রবলেম।
আমরা যারা ঈশ্বরবিশ্বাসী আছি আমাদের দিক থেকে এটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির যুক্তি-বুদ্ধির সমস্যা।
মানুষের র্যাশনাল ক্যাপাসিটি সম্পর্কে আমার দৃষ্টিভঙ্গি হলো, মানুষের যুক্তি-বুদ্ধির সক্ষমতা সমপর্যায়ের। দেকার্তের ভাষায় এটি হচ্ছে সহজাত ধারণা বা ইননেইট আইডিয়া। সমস্যা হলো, যুক্তি-বুদ্ধির এই জন্মগত সক্ষমতাকে মানুষ সব সময় সমানভাবে বা ততটা যত্ন সহকারে ব্যবহার করে না বা করতে পারে না। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিগত নানা ধরনের সীমাবদ্ধতা এবং ভুল ধারণা তৈরি হওয়ার এটি হচ্ছে মূল কারণ।
বাহ্যত যুক্তিসঙ্গত মনে না হওয়ার কারণে কেউ কেউ স্রষ্টা বিশ্বাস করে না। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ব্যাপারটাকে এই হিসেবে ভাবলেও এর ভিতরকার যে ব্যাপার বা এর পরবর্তী লেভেলে তার মধ্যে যেটা কাজ করে সেটা হচ্ছে জীবন সম্পর্কে তার এক ধরনের ভোগবাদী দৃষ্টিভঙ্গি। সচেতনভাবে সে নিজেকে যুক্তিনির্ভর ভাবলেও অবচেতনে আসলে সে ভোগবাদী দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে।
নিজের এই ভোগবাদী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে নিজের অযৌক্তিক স্বাধীনতা চর্চা করতে গিয়ে সে কোনো সুপ্রিম অথরিটিকে মেনে নেয়ার ব্যাপারে অনিচ্ছুক (repugnant) হয়ে পড়ে। বলাবাহুল্য, এটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অবচেতনে কাজ করার কারণে তিনি সচেতনভাবে আমার এই ধরনের কথার তীব্র প্রতিবাদ করবেন, এটা নিশ্চিত। এর মানে এই নয় যে তিনি ভোগবিলাস এবং এই ধরনের বস্তুগত স্থূলতার মধ্যে দিনরাত ডুবে আছেন বা থাকবেন।
মানুষ যেটাকে ভালো মনে করে কখনো কখনো বা সাময়িকভাবে, বাহ্যত সে সেটা থেকে খানিকটা দূরত্ব বজায় রাখে। মোদ্দা কথা হলো, অন্তর্গতভাবে ভোগবাদী হওয়াটা মানুষের বস্তুবাদী হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
এর পরবর্তী পর্যায়ে যে কারণে মানুষ নিরীশ্বরবাদী হয়ে থাকে তা হলো তার তকদির বা ভাগ্যলিপি। দুনিয়াতে কোন মানুষ ঈমানদার হবে, কে কাফের হবে, কে কী হবে বা না হবে, তা সবই মহান আল্লাহ তায়ালা আগেভাগেই নির্ধারণ করে রেখেছেন, বা আমরা বলতে পারি, এটা আল্লাহর তরফ থেকে নির্ধারিত হয়েই আছে। কোনো ব্যক্তির ক্ষমতা নাই এর নড়চড় করা।
সেই জন্য কেউ ঈমানদার হয়েছে, সেটি তার কৃতিত্ব নয়। আল্লাহর রহমত। কেউ কাফের হয়েছে, এটিও তার ব্যর্থতা নয়। সেটি আল্লাহর হুকুম। এই কথাটা খুবই ক্লিয়ার। অন্যরা এটা স্বীকার করতে চায় না। কিন্তু আমি এটা ক্লিয়ারলি বললাম। এই সহজ সরল সত্য কথাটাকে নানা ধরনের উদ্ভট ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দিয়ে অস্বীকার করার চেষ্টা করাটা হচ্ছে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত অবিমৃষ্যকারিতা।
কারো এমন হওয়া বা তেমন হওয়া, এটা হওয়া বা ওইটা হওয়া, ভালো হওয়া কিংবা খারাপ হওয়া, আরো স্পেসিফিকভাবে বললে, কারো ঈমানদার হওয়া কিংবা কাফের হওয়া, এগুলোর মধ্যবর্তী কিছু কারণ আমরা দেখতে পাই বা দেখাতে পারি বটে। কেননা আমাদের দিক থেকে দেখলে অর্থাৎ ফ্রম ওয়ার্ল্ড টু গড, আমাদের স্বাধীন ইচ্ছা থাকার বিষয়টা অনস্বীকার্য এম্পিরিক্যাল ট্রুথ বা এন আনডিনায়েবল ফ্যাক্ট।
আমাদের দিক থেকে মানুষের নৈতিক দায়বদ্ধতার অন্তর্বর্তী নানা কারণ আমরা খুঁজে পেলেও আল্টিমেইটলি ব্যাপারগুলো সেরকম নয়। আল্টিমেইটলি ব্যাপারটা কী, কেন এরকম, কিংবা ওরকম নয়, তা নিয়ে মুসলিম স্কলাররা ক্লিয়ার-কাট কথা বলতে চায় না। এই পর্যায়ে গিয়ে, অর্থাৎ এতটুকু গভীরে গিয়ে তাকদীর সংক্রান্ত কোনো আলোচনাতে তারা এনগেইজ হতে চান না। আলোচনার ফাঁদে পড়ে খানিকটা এনগেইজ হয়ে পড়লেও ভিতরে ভিতরে তারা এ পর্যায়ে এসে ভীষণ অস্বস্তিবোধ করেন। তখন অনোন্যপায় হয়ে যুক্তির বদলে তারা অন্ধবিশ্বাসের দাবি তুলে পুরো ব্যাপারটাকে রীতিমতো ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল অথবা fatal threat-এর পর্যায়ে নিয়ে যান।
আমি বিশ্বাস করি – ‘যুক্তির বাইরে কিছু নাই। বুদ্ধির অনুকূলে আমরা, সর্বদা’ – এই নীতিতে। আমার দৃষ্টিতে ইসলামের তাকদীর বিশ্বাসের মতো এত বেশি যৌক্তিক আর কিছু নাই। এবং বলাই বাহুল্য, তাকদীর বিশ্বাস ছাড়া তাওহীদের ধারণা অচল ও অকার্যকর। তাওহীদ তথা monotheism যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে তাকদীর বা প্রিডেস্টিনেশন সঠিক না হওয়াটাই বরং যুক্তি-বুদ্ধির খেলাফ।
এর পরবর্তী কথা হলো, আল্লাহ কেন কাউকে ঈমান আনার তৌফিক দিয়েছেন এবং কাউকে সেটা কেন দেন নাই সেটা আমরা জানি না। আমরা সেটা জানতেও পারি না। পার্টিকুলার এন্ড লিমিটেড এন্টিটি হওয়ার কারণে যুক্তিসঙ্গতভাবেই আমরা এটি জানার দাবিও করতে পারি না। ন্যায্যতা বা ন্যায়ের প্রসঙ্গ হয় সমতা বা ইকোয়ালিটির ভিত্তিতে বা এ ধরনের মৌলিক সমতা থাকা সাপেক্ষে।
কথাটা আবার রিপিট করে বললে বলতে হয়, অ্যাবসলিউট এন্ড সুপ্রিম কোনো অথরিটি কোনো কিছু কেন করবে তা তাঁরই অধীনস্ত কোনো এন্টিটির পক্ষে সঠিকভাবে জানা বা বুঝতে পারা, কিংবা সেটাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারা, সোজা কথায় যাচাই করতে পারা ইত্যাদি যুক্তিবিদ্যার নিয়ম অনুসারেই অসম্ভব। কেউ যদি পার্টিকুলার-অ্যাবসলিউটের এই অন্টোলজিক্যাল রিলেশনকে অস্বীকার করতে চায়, সেটি তার ব্যাপার।
এই কারণে আমি ইদানিং ‘ঐশী অজ্ঞেয়বাদ’ বা divine agnosticism নামে এক ধরনের তত্ত্বের কথা বলছি। এর মূলকথা হলো, আমরা নিজেদেরকে জানতে পারি, জগতকে জানতে পারি, এমনকি ঈশ্বরকেও জানতে পারি বটে। তবে, অতি অবশ্যই তা নিছকই আমাদের মতো করে। আমরা সেভাবেই বুঝবো যেভাবে আমাদেরকে বলা হয়েছে। বা স্রষ্টা বিশ্বাসের দৃষ্টিতে, যেভাবে যা তিনি বলেছেন। আমরা শুধুমাত্র সেটাই জানতে পারি, বুঝতে পারি, যা জানা ও বুঝতে পারার ক্ষমতা তিনি আমাদের দিয়েছেন।
কথাটা অন্যভাবে বললে, নিরীশ্বরবাদীদের দৃষ্টিতে, ‘প্রকৃতি’(?) আমাদেরকে যতুটুকু ক্যাপাসিটি দিয়েছে; অর্থাৎ আমাদের যে ইনার পটেনশিয়ালিটি, শুধুমাত্র সেই প্রদত্ত সীমানার মধ্যেই আমরা কোনো কিছু জানতে পারি, বুঝতে পারি, যাচাই করতে পারি, ন্যায়-অন্যায় নির্ধারণ করতে পারি। অসীম কোনো সত্তার সবটুকু সত্যিকারভাবে জানার দাবি অসম্ভব, হাস্যকর, নিছক পাগলামী ও স্ববিরোধী অযৌক্তিকতা।
আমরা যেহেতু অংশমাত্র, সমগ্র নই, সেই জন্য সমগ্রকে জানার দাবি করতে পারি না। আর অংশ হয়ে সমগ্রকে জানার এই অযৌক্তিক দাবি যদি কেউ করে সেটাই হবে তার সত্যিকারের অডাসিটি বা ঔদ্ধত্য। কাফেররা যেটা করে থাকে।
*****
আমার এই উত্তরের প্রেক্ষিতে সেই পাঠকের মন্তব্য:
“জাঝাকাল্লাহ। আপনার শেষ প্যারার লিখাটাই দারুণ। আসলে এরপর আর কথা থাকে না।”
ফেসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য
Mohammad Asadullah: যারা ঈমানদার নয়, ধর্মমতে তাদের পরিণতিটাও ভালো হওয়ার কথা নয় (আমার জানায় ত্রুটি আছে কিনা জানি না)। তো ঈমানদার না হওয়াটা ব্যক্তি বিশেষের একান্ত নিজের দোষ হওয়ার কথা নয়, যেহেতু আগেই নির্ধারিত কে ঈমানদার হবে। তাহলে ধর্মমতে ঈমানদার না হওয়ার কারণে খারাপ পরিণতির ফল ভোগকারীর প্রতি সঠিক বিচার করা হলো কি? নাকি অন্য কোনো হিসেব আছে আরো?
MH Monir: ইসলাম ধর্মমতে, তাকদীর বা আল্লাহ তাঁর পরম প্রজ্ঞা দিয়ে যা লিপিবদ্ধ করেছেন তাতে সম্যক জ্ঞান ছাড়াই বিশ্বাস করা যেমন আবশ্যিক, তেমনি মানব প্রচেষ্টাকে এর বিপরীতে দাঁড় করিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা থেকে বিরত থাকা বা একে অপ্রয়োজনীয় মনে না করাটাও আবশ্যিক। তাকদীর বিশ্বাসের অন্তর্ভুক্ত, এটা এম্পিরিক্যাল ফেনোমেনা নয়।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: তাকদীর বা অদৃষ্ট বিশ্বাস একটি এম্পিরিক্যাল ফেনোমেনা। এ কথাটা যখন বলা হয় তখন কেউ কেউ মনে করে, ইচ্ছার স্বাধীনতা বুঝি ‘এম্পিরিক্যাল ফেনোমেনা’ নয়। মজার ব্যাপার হলো ইচ্ছার স্বাধীনতা এম্পিরিক্যাল ফেনোমেনা নয়, এ কথাটাও কিন্তু কাউকে বলতে হয় তার intrinsic freedom of will তথা ইচ্ছার স্বাধীনতাকে কাজে লাগিয়েই।
মানে, আমি যদি বলি যে, ‘আমি স্বাধীন নই’, দুঃখজনক হলেও সত্য, এ কথাটা বলার জন্য আমি কিন্তু স্বাধীন। তার মানে, আমি স্বাধীন নই, এ কথাটা স্ববিরোধী। সেজন্য আমাদের ইচ্ছার স্বাধীনতা থাকাটা একটি স্বতঃপ্রতিষ্ঠিত সত্য বা সেলফ এভিডেন্ট ট্রুথ।
তো, empirical phenomena বলতে কী বোঝায়, এটি আমাদের কাছে পরিষ্কার হওয়া দরকার। আমি এই মুহূর্তে টাইপ করছি। আমি যেখানে আছি তার আশপাশে অনেক কিছু দেখতে পাচ্ছি। ভয়েস কমান্ডে লেখার কারণে আমার গলার শব্দগুলো আমি শুনতে পাচ্ছি। আমার আশপাশের লোকদের কথাবার্তাও আমি শুনতে পাচ্ছি। আমি হাতে একটা হেডফোনের মাইক্রোফোন ধরে আছি। ইত্যাদি। প্রতি মুহূর্তে বহু বহু ইন্দ্রিয় অভিজ্ঞতা আমি লাভ করছি।
এম্পিরিক্যাল ফেনোমেনা মানে শুধুমাত্র ইন্দ্রিয় অভিজ্ঞতা যদি হয়ে থাকে তাহলে ইচ্ছার স্বাধীনতা থাকা বা না থাকা বা এ ধরনের যে কোনো তত্ত্বগত বা মেটাফিজিক্যাল বিষয় এম্পিরিক্যাল ফেনোমেনার বাইরের বিষয়।
এম্পিরিক্যাল ফেনোমেনা বলতে যদি এমন ধরনের জ্ঞানকে বুঝানো হয় যা আমাদের ইন্দ্রিয় অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান তথা এম্পিরিক্যাল নলেজকে যেভাবে আমাদের কাছে সন্দেহাতীত মনে হয় সেই মানের বা সে রকম সন্দেহাতীত কিছু, তাহলে মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতা থাকাটাও একটি অন্যতম এম্পিরিক্যাল ফ্যাক্ট বা বাস্তব সত্য তত্ত্ব।
এটুকু পর্যন্ত আমরা সবাই বুঝি। আমাদের এই কমন আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের সাথে সাথে আমার বক্তব্য হলো, আমাদের এটাও বুঝা উচিত, এম্পিরিক্যাল ফ্যাক্টের উপরে উল্লেখিত দ্বিতীয় অর্থ মোতাবেক, জগতের একজন সৃষ্টিকর্তা থাকা এবং তাঁর পক্ষ থেকে জগতের মধ্যস্থ সবকিছুর গতিপ্রকৃতি, সীমা-পরিসীমা, উৎপত্তি ও পরিণতি ইত্যাদি নির্ধারিত হওয়া, এগুলো তেমনই বাস্তবসম্মত সত্য তথা as like as empirical fact।
আমাদের অস্তিত্ব হচ্ছে আমাদের কাছে প্রথম এম্পিরিক্যাল ফ্যাক্ট বা বস্তুগত সত্য। জগতের অস্তিত্ব আমাদের কাছে দ্বিতীয় এম্পিরিক্যাল ফ্যাক্ট। স্রষ্টার অস্তিত্ব আমাদের কাছে তৃতীয় এম্পিরিক্যাল ফ্যাক্ট। এ পর্যায়ে বুঝতে হবে, স্রষ্টার অস্তিত্ব থাকা সাপেক্ষে স্রষ্টা কর্তৃক সবকিছু নির্ধারিত হওয়াটাও এম্পিরিক্যাল ফ্যাক্ট হওয়া উচিত।
এখন আমি যদি স্রষ্টার সমতুল্য না হই, তাহলে আমি কীভাবে স্রষ্টার পক্ষ থেকে নির্ধারিত হওয়াটাকে অস্বীকার করবো, কিংবা অন্যায় বলে মনে করবো? আমি আর স্রষ্টা কি সমান?
এই কথাটাই হচ্ছে মূল কথা।
ইনক্লুসিভ মুহাম্মদ ইকবাল: “কেউ ঈমানদার হয়েছে, সেটি তার কৃতিত্ব নয়। আল্লাহর রহমত। কেউ কাফের হয়েছে, এটিও তার ব্যর্থতা নয়।”
“যে নিজেকে পবিত্র করল, সে সফল। আর যে নিজেকে কলুষিত করল, সে ব্যর্থ হলো।” (সূরা শামস: ৯-১০)
এইটা কি পরস্পরবিরোধী নয়?
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: না। এ দুটি পরস্পর বিপরীত নয়। কারণ ব্যক্তির দিক থেকে নিজেকে কলুষিত করার জন্য ব্যক্তি নিজেই দায়ী। আবার কে নিজেকে পবিত্র করতে পারবে এবং কে নিজেকে পবিত্র করতে পারবে না, বরং কলুষিত হবে, তা মহান আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে আগে থেকে নির্ধারিত। From world to God এবং from God to world – এই দুইটা দৃষ্টিভঙ্গি স্বতন্ত্র। তাই এতদসংক্রান্ত কোরআন-হাদীসের বর্ণনাগুলো বোঝার জন্য এই দুইটা প্রেক্ষাপট যে আলাদা, তা স্মরণ রাখা জরুরী। কোরআন শরীফে তাকদীর সংক্রান্ত যেসব বিবরণ আছে সেগুলোর কোনটা কোন প্রেক্ষিতে বলা হয়েছে, সেটা যথাযথভাবে বুঝতে হবে।
আক্কাস আলী: আমার সসীম জ্ঞান দিয়ে এখন মনে হচ্ছে আল্লাহ রোবট বানালেই পারতেন। শুধু শুধু মানুষের মতো বুদ্ধিমান ও চিন্তাশীল প্রাণী বানালেন, তারপর কে তাকে বিশ্বাস করবে বা করবে না সেটাও পূর্বনির্ধারিত করে দিলেন। আবার বলেও দিলেন যে অবিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে আগুনের জাহান্নাম। ? কী অসাধারণ যুক্তি, বাহ্!! এরকম অসীম যুক্তিবাদী একজন সৃষ্টিকর্তার সংজ্ঞাকে নাস্তিকরা কেমনে যে অস্বীকার করে!! হাহাহা।?? আপনার লেখাটি পড়ে গ্রিক ফিলোসফার Epictetus-এর এই মজার উদ্ধৃতিটা প্রাসঙ্গিক মনে হলো:
“You may fetter my leg, but Zeus himself cannot get the better of my free will.”
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আল্লাহ রোবট বানাতে পারতেন। মানুষ কেন বানালেন? আল্লাহ কেন আল্লাহ হলেন? অথবা, আমরা মানুষরা কেন আল্লাহ হলাম না? এরকম অনেক ব্যাকরণগতভাবে সঠিক বাক্য প্রশ্ন আকারে বলা গেলেও এগুলো আসলে ছদ্মবাক্য বা ভুল কথা।
এ ধরনের ভুল চিন্তা মানুষের জ্ঞানগত সসীমতার করুণ প্রমাণ। হ্যাঁ, মানুষ বুদ্ধিমান ও চিন্তাশীল প্রাণী। তবে মানুষের সঠিক বুদ্ধি এবং চিন্তা, মানুষের বুদ্ধিগত এবং চিন্তাগত সীমাবদ্ধতার কথাই প্রকটভাবে তুলে ধরে।
আল্লাহ কেন এটা করেছেন, কেন ওটা করেছেন, কেন ওটা করলেন কিংবা ওটা করলেন না, এই ধরনের বিষয় তথা তাঁর সত্তাগত এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তোলাই হচ্ছে ঔদ্ধত্য বা অহমিকা।
এই ধরনের ফাঁপা গর্ববোধের কারণে মানুষ শেষ পর্যন্ত বিশ্বাসী হয়ে উঠতে পারে না। আমার স্ট্যাটাসে আমি এ কথাটা বলার চেষ্টা করেছি। মানুষ এবং স্রষ্টা যে একই স্কেলের কোনো বিষয় নয়। এই দুই এন্টিটির epistemic স্কেল যে আলাদা এবং মানুষের এপিস্টেমিক স্কেল যে ইনফেরিয়র এবং গডের স্কেল যে সুপেরিয়র এবং অ্যাবসলিউট, এটি যদি আপনার কাছে plausible মনে না হয়, তাহলে আমার আর কিছুই বলার নাই।
আক্কাস আলী: Sir, I think you are not considering the difference between reason and logic at all. And you are also trying to define Allah in a way that Allah didn’t define himself like that in Quran. Moreover, with your ‘finite knowledge’, you have come to the following conclusions:
- Allah has predetermined the fate of every human on earth. In other words, free will does not exist.
- Yours or religious fundamentalist’s theorized definitions of Allah should be above reason/making sense. WHY & HOW THAT WORKS? I mean you cannot just come to weird conclusions about God and then call others opinions as ছদ্মবাক্য বা ভুল কথা।
- Moreover, no one is judging the physical attributes of God. To do that, we have to use ‘LOGIC’, not REASON. We can apply the ‘DIVINE AGNOSTICISM’ concept where we need scientific ‘LOGIC’, because we are finite being, and we have limitations. We cannot know how big is God in size, or where does God live and bla bla bla. I completely agree with you there. But we should judge everything else base on ‘reason’.
- YES REASON. In other words, an absolute God will never TAKE ANY DECISION FOR HUMANS THAT GOES AGAINST REASON. For instance, saying things like –
“Everything, I mean rape, killing, abusing, destroying is predetermined by God, IS AGAINST REASON. A God will never take such a stupid decision for complex beings like Humans.
“God will consider all non-Muslims bad/sinner” IS AGAINST REASON.
“God is against humans trying to enjoy in this world/materialism” IS AN ABSURD THEORY AND AGAINST REASON.
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক:
১. অধীনস্ত কোনো এন্টিটির কোনো বিষয়ে ঊর্ধ্বতন অথরিটির যদি পূর্ণ ক্ষমতা না থাকে তাহলে সেই অথরিটি অথরিটি হয়ে ওঠে না।
সৃষ্টি জগতের উপর স্রষ্টা হিসেবে খোদার অথরিটি অনন্য সাধারণ বা extra-ordinary। অন্যান্য অথরিটির ক্ষেত্রে অথরিটি এবং সেটার sub-ordinate উভয়ই কিছু কমন নিয়ম বা আইন বা মূল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত হয়। এটি আল্লাহ তায়ালার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
যদিও আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টিজগতের সাথে তার সম্পর্কের ব্যাপারে নানা ধরনের নীতি ও মূল্যবোধের সূত্রকে অনুসরণ করে চলেন, কিন্তু ব্যাপার হলো খোদা তায়ালার এসব নীতি ও মূল্যবোধ তাঁর ওপর আরোপ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কোনো অথরিটি বা সত্তা নাই।
তার মানে হলো আল্লাহ তায়ালার অধীনে সবকিছু এবং তার অধীনে যা কিছু ঘটে বা ঘটতে পারে তাঁর কোনো কিছুই তাঁর অনুমতি বা অনুমোদন ব্যতীত ঘটে না।
আমাদের দিক থেকে দেখলে, অর্থাৎ ফর্ম ওয়ার্ল্ড টু গডের প্রেক্ষিতে আমাদের ইচ্ছার স্বাধীনতা থাকা এবং কিছু গিভেন আইনের অধীনে আমাদের ভালো-মন্দ নির্ধারিত হওয়া এবং এক ধরনের গিভেন বা আরোপিত ন্যায়ব্যবস্থার ভিত্তিতে আমাদের কার্যক্রমের বিচার ও যাচাই এবং পুরস্কার ও শাস্তির ব্যবস্থা হওয়া, এগুলো এম্পিরিক্যাল ফ্যাক্ট বা নিতান্ত বাস্তব সত্য।
আমাদের ইচ্ছার স্বাধীনতা থাকা, জগতে ন্যায়বিচার বলে একটা কিছু থাকা, সেটা যে ধরনেরই হোক না কেন, জগৎ সৃষ্টির একটা কারণ থাকা, এগুলো স্বতঃ প্রতিষ্ঠিত সত্য। এগুলোকে আমি সেলফ এভিডেন্ট বলছি এজন্যই যে এগুলোকে অস্বীকার করার জন্যও এগুলোই লাগবে।
২. যুক্তি বুদ্ধি বা মেকিং সেন্সের বাইরে কেউ নয়, কিছু নয়। এমনকি আল্লাহ তায়ালাও নন।
সমস্যা হলো, আল্লাহ তায়ালা ভিন্ন অন্য সকল সত্তার যুক্তি, বুদ্ধি ও বিবেচনাবোধ প্রদত্ত বা গিভেন, বাই সাম হায়ার অথরিটি।
এই কথাটা আমি বারে বারে বিভিন্ন লেখায় বলেছি, মানুষের মতো কোনো লিমিটেড এন্টিটির বিবেচনাবোধ দিয়ে স্রষ্টার মতো অনন্য কোনো অ্যাবসলিউট এন্টিটির ভালো-মন্দ বিবেচনা করা, যাচাই করা, বিচার করা, এগুলো সিম্পলি ক্যাটাগরি মিসটেক। অংশ-সমগ্রের সম্পর্কগত অন্টোলজি দিয়ে সেটা আমরা বুঝতে পারি।
আমাদের জ্ঞানতত্ত্বের আলোচনাতে যাচাইয়ের তথ্যগুলো আলোচনা করতে গিয়ে প্রায় সময় আমি এ কথাটা বলি, ‘মাপকাঠির মাপ কী?’ অর্থাৎ, যেটা দিয়ে আমরা কোনো কিছুকে যাচাই করি, সেটিকে যাচাই প্রক্রিয়ার ঊর্ধ্বে রাখতে হয়। নচেৎ, কোনো যাচাই সম্পূর্ণ, সম্পন্ন বা যুক্তিসঙ্গত হয় না।
জ্ঞানতাত্ত্বিক যাচাইকরণের যেসব তত্ত্ব সমকালীন জ্ঞানতত্ত্বে আছে তাতে দেখা যায়, যেমন আছে তেমনভাবে তথা as such গ্রহণ করার বাইরে কিছু বিষয়কে আমরা অধিকতর যাচাই করতে পারি না।
Foundationalism-এ এগুলো হলো বেসিক বিলিফস। coherentism-এ এটি হলো কোহারেন্স বা সেট।
আরোপিত নিয়ম অনুসারে কাজ করাটাই হচ্ছে প্রত্যেক অন্তর্বর্তী অথরিটির জন্য যুক্তিসঙ্গত।
কোনো আরোপিত অথরিটির অধীনস্ত না হওয়ার কারণে, পরম সত্তা বা স্রষ্টার জন্য ন্যায় হচ্ছে সেটাই যেটা তিনি করেন।
ফাউন্ডেশনালিজমের বেসিক বিলিফগুলো যেমন করে সেল্ফ জাস্টিফাইড তেমনি করে খোদা তায়ালার কার্যক্রমও সেলফ জাস্টিফাইড। এই অর্থৈ যুক্তি ও বুদ্ধি সঙ্গত।
৩. ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে খোদা তায়ালা বস্তুগত অস্তিত্বের সীমাবদ্ধতা হতে মুক্ত। তাই তিনি কত বড় ইত্যাদি ধরনের বিষয় এখানে অপ্রাসঙ্গিক।
মন্দ বলতে আমরা যেগুলাকে জানি সেগুলো যে মন্দ সেটা আমরা কীভাবে অস্বীকার করবো? কিন্তু আমাদের দিক থেকে মন্দকে মন্দ বলা এবং সেটাকে অনাকাঙ্খিত মনে করা, এগুলো সব ঠিকই আছে। ব্যাপার হলো, দুনিয়াটাকে আল্লাহ তায়ালা সৃষ্টি করেছেন ক্রমসোপানমূলকভাবে বা হায়ারারকিক্যাল ফর্মে।
অস্তিত্বের এ ধরনের নিচু স্তর এবং উচ্চ স্তরের গঠন-কাঠামোতে নিম্নতর স্তরে যেটাকে ভালো মনে করা হবে, বৃহত্তর বা উচ্চস্তরের দিক থেকে সেটা ভালো নাও হতে পারে। আবার নিম্নতর স্তরে যেটাকে খারাপ মনে করা হবে, বৃহত্তর পরিমণ্ডল হতে বা সামগ্রিকভাবে সেটাকে মন্দ মনে নাও করা হতে পারে। এখানে প্রত্যেকে নিজের অবস্থান থেকে বিবেচনা করে। আমরা মানুষেরাও আমাদের অবস্থান থেকে বিবেচনা করি এবং জগতে অনেক মন্দ বা খারাপ দেখতে পাই। আমাদের দিক থেকে এগুলো নিশ্চিতভাবেই খারাপ বা জেনুইনলি ব্যাড। এগুলো যে আসলেই বা অবজেক্টিভলি খারাপ, সেটা আমরা কীভাবে বুঝবো?
যেহেতু আমরা পার্টিকুলার, আমাদের ক্যাপাসিটি লিমিটেড, সেই জন্য সর্বোচ্চ অথরিটি থেকে যেটা এসেছে সেটাকে তিনি যেভাবে যা কিছু নির্ধারণ করেছেন সেভাবেই সংশ্লিষ্ট বিষয় গুলোকে মেনে নেওয়াটাই হলো যুক্তি-বুদ্ধির দাবি।
ঊর্ধ্বতন অথরিটির বিবেচনাবোধকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং সেটাকে মেনে নেওয়া, সেটি তো আমাদের যুক্তি-বুদ্ধিরই এই দাবি। আমি সেটাই বলার চেষ্টা করেছি।
আপনি যে আমার ‘ঐশী অজ্ঞেয়বাদ’ তত্ত্ব বা divine agnosticism থিওরিকে আংশিকভাবে হলেও সমর্থন করেছেন সেটা দেখে ভালো লাগছে।
Abdul Awal Arman: Sabbir Shanto, স্যারের কথাগুলোর সাথে কি তোর দ্বিমত আছে?
Sabbir Shanto: আমি তাকদীরে বিশ্বাসী নই। কাজেই ??
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: ‘আমি তাকদীরে বিশ্বাসী নই’ – এই কথাটাও কিন্তু এক ধরনের শরীরী-তাকদীর দিয়ে তথা নির্ধারিত শারীরিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই কিন্তু আপনাকে বলতে হচ্ছে। আপনি ভাবছেন, আর যাদেরকে বলতে চাচ্ছেন, তারা আপনাতেই বুঝা যাবে – এমন কোনো সিস্টেম নাই। কখনো হতেও পারে না। কোন না কোনো পূর্ব নির্ধারিত প্রক্রিয়া বা পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো কর্ম সম্পাদনের জন্য আমি আপনি বা প্রত্যেকে বাধ্য। আমাদের ওপর এই বাধ্যবাধকতা আমরা নিজেরা আরোপ করিনি। সেটা প্রকৃতি কিংবা ঈশ্বর আমাদের ওপরে আরোপ করেছেন। ভাষাটা সেটার একটা উদাহরণ। মৌখিক ভাষার মতো ভোকাল কর্ডের মাধ্যমে না হলেও সেটা হতে হবে স্নায়বিক প্রক্রিয়া রেকর্ড করা এবং ট্রান্সমিট করার মাধ্যমে। অথবা অন্য কোনো প্রক্রিয়ার মাধ্যমে। ইন আইদার সিচুয়েশন, আপনাকে কোনো না কোনো লিমিটেশনের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে।
তাকদীর হচ্ছে এই ধরনের লিমিটেশন, যেটাকে সংশ্লিষ্ট এন্টিটি অতিক্রম করে যেতে পারে না। এখন সেটি ওয়ান-টু-ওয়ান হবে নাকি একটি ব্রড বাউন্ডারির মধ্যে হবে সেটা ভিন্ন বিষয়। অর্থাৎ আপনি যখন রেলগাড়িতে যান তখন ট্রেন লাইনের যে বিট, আপনি সেটার বাইরে যেতে পারেন না। আর যখন রাস্তায় কোনো গাড়ি চলে তখন সেইটা রাস্তার ডান দিকে কিংবা বাম দিকে কিংবা মাঝখানে, যে কোনোখান দিয়ে যেতে পারে। একই কথা উড়োজাহাজ এবং জাহাজের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
আমাদের এই শরীরী সীমাবদ্ধতার মতোই আমাদের জ্ঞানগত ও মানসিক সীমাবদ্ধতা, বুঝজ্ঞানের সীমাবদ্ধতা, বুদ্ধিবৃত্তির সীমাবদ্ধতা, এক কথায় আমাদের অস্তিত্বগত সীমাবদ্ধতা।
সীমাবদ্ধতাগুলোকে তখনই টের পাওয়া যায় যখন আমরা সেগুলোকে অতিক্রম করার চেষ্টা করি, অথবা সেগুলোর মধ্যে কোনো ত্রুটি বা ঘাটতি তৈরি হয়, অথবা যখন আমরা সীমাবদ্ধতা পেরিয়ে নতুন সম্ভাবনা বা সক্ষমতা অর্জন করি। এছাড়া বাকি সময়ে আমরা বুঝতেই পারি না যে আমরা একটি প্রদত্ত বা নির্ধারিত সীমার ভিতরে ‘স্বাধীন’।
স্বাধীনতা মাত্রই হলো অথরিটি এবং লিবার্টির মধ্যে একটা সমন্বয়।
আপনি জানেন কিনা জানি না, যারা বিজ্ঞানবাদী তারাও কিন্তু determinism-এর কথা বলে। যদিও তারা এটাকে compatibilism নামক একটা পোশাকি কথার আড়ালে কখনো কখনো সেটা ঢাকার চেষ্টা করে।