রাহেলা নামটা শুনলেই বুকের মধ্যে ছ্যাৎ করে উঠে। রাহেলা এক নিরীহ বস্ত্র শ্রমিক। নিহত।

৮-১০ বছর আগের ঘটনা। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন একটা পুকুরের পাড় দিয়ে কারখানা হতে ফেরার পথে কতিপয় দূর্বৃত্ত কর্তৃক ধর্ষণের শিকার হয়। অবশেষে আক্রমণকারীরা তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত মনে করে ফেলে যায়। সেখানে সে পড়ে ছিলো সেই রাত, তারপর দিন। পরের সন্ধ্যা রাতে কেউ একজন সেদিক দিয়ে যাওয়ার সময় গোঙ্গানির আওয়াজ শুনে দেখে একটা ‘মৃত দেহ’ পড়ে আছে। কাছে যাওয়ার পরে রাহেলা কোনো মতে বলে উঠে, “আমি মরি নাই। আমি বেঁচে আছি…!”

তাকে উদ্ধার করে হসপিটালাইজ করা হয়েছিলো। কয়েক দিন পরে আমাদের এই মেকি সমাজ, ধর্ম, সাহিত্য, দর্শন, রাষ্ট্র ও ‘সভ্যতার’ মুখে ঘৃণার পদাঘাত করে সত্যি সত্যিই রাহেলা মৃত্যুবরণ করে। যদ্দুর জানি, রাহেলা হত্যাকারীদের কারো শাস্তি হয়নি। একজন নীচুতলার তরুণী শ্রমিকের জীবনের কীইবা মূল্য? কত রাহেলাই তো পথে-ঘাটে-মাঠে প্রতিদিন মরে পড়ে থাকে…!

সেজো আপার বাসায় আজ একটা ফ্যামিলি গেট-টুগেদার ছিলো। দেখলাম উনি ‘রাহেলা’ ‘রাহেলা’ বলে ডাকছেন। রাহেলা উনাদের ছুটা বুয়া। ৭-৮ বছরের একটা মেয়েকে নিয়ে কাজে এসেছে। ৮-১০ বছরের একটা ছেলেও আছে। ওর জামাই আর একটা বিয়ে করে আলাদা থাকে। রিক্শা চালায়। ওদের বাড়ি গাইবান্ধা।

ওই এলাকার লোকেরা…। মাফ করবেন, রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রামের যত বুয়া দেখেছি সবারই একই কাহিনী। বুঝতে পারছি না, বিয়ে করাটা ওই এলাকার পুরুষদের লাভজনক ব্যবসা কিনা। এই রাহেলাকে দেখে ঐ নিহত রাহেলার কথা মনে পড়ে গেলো।

দুর্বল, অনিরাপদ ও অসহায় নারীর প্রতি সহিংসতার ‘সামাজিক বৈধতা প্রাপ্ত’ এই সমাজে জীবিত রাহেলারা এতকিছুর পরেও স্বামীর পরিচয়কে আঁকড়ে থাকে। স্বামীর সাথে ফোনে কথা বলার জন্য আঁকুপাঁকু করে। স্বামী তুড়ি দিয়ে ইশারা করলে সতীনের ঘর করার জন্য ছুটে যায়। উপার্জনের টাকা স্বামী-দেবতার চরণে নিবেদন করে সোৎসাহে। উচ্চবিত্ত ‘শিক্ষিত’ নারীবাদীরা বলতে পারেন, এসব নারীদের ‘ক্ষমতায়ন’ করতে হবে। তাদের ‘সুরক্ষা’ দিতে হবে। তাদেরকে ‘স্বাবলম্বী’ করতে হবে। ইত্যাদি।

বিশ্বাস করেন, এসব শূন্যগর্ভ কথা। বরং, আমার কাছে নারী স্বার্থবিরোধী তথাকথিত একাডেমিক প্রলাপের বেশি কিছু নয়।

পাশ্চাত্য প্রেসক্রিপশনের এসব একতরফা প্রচারণা এ দেশের নারীদের বরং অধিকতর নাজুক অবস্থানে ঠেলে দিবে। কিছুটা দিয়েছেও। কীভাবে, তা একটু পরেই বলছি। তার আগে এ ব্যাপারটা বুঝা দরকার।

নারীর ক্ষমতায়ন এ দেশে যা হয়েছে তাতে পাশ্চাত্য এনজিও ব্যবসায়ী নারীবাদীদের তেমন কোনো ইতিবাচক অবদান নাই। একইভাবে ইসলামপন্থীরাও এ কাজে একশ’ ভাগ ফেইল। নিম্নবিত্ত নারীদের উপার্জনে নিয়োজিত হওয়ার এবং এর মাধ্যমে তাদের উল্লেখযোগ্য সামাজিক অগ্রগতি সাধিত হওয়ার এ ব্যাপারটা ব্যবসায়ীদের মুনাফা-ক্ষুধার উপজাত বা by-product। শুধুমাত্র নারীদের মধ্যে এনজিওগিরির মতলবটাও পরিষ্কার।

ফ্যাক্টরিতে কাজ করা নারীদের গণহারে বোরকা পড়ার ব্যাপারটা হেফাজত পরবর্তী শিক্ষিত নারীদের বোরকা-ফ্যাশনের অনেক আগের ব্যাপার। এটি ছিলো ধর্মীয় সমাজপতিদের সাথে তাদের এক ধরনের নীরব সমঝোতা। তথাকথিত নারীর ক্ষমতায়ন কীভাবে নারীর নিরাপত্তা বরং ক্ষুণ্ন করেছে তা এই লেখার ফোকাস নয়। তবুও এই পয়েন্টটা বুঝার সুবিধার্থে পাঠকদেরকে গাজীপুরের সেই তরুণী বধূর কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাচ্ছি।

বছর দুই তিনেক আগে। এক তরুণী বধূকে শ্বশুর বাড়ির লোকেরা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন করতে গিয়ে একপর্যায়ে ‘মেরে’ ফেলে রাস্তায় ফেলে যায়। না, মেয়েটা শেষ পর্যন্ত মরে নাই। সে বেঁচে যায়। নির্যাতনকারীরাও গ্রেফতার হয়। তাদেরই একজন বলেছিলো, “আমরা ভেবেছি, মেরে ফেললে পুলিশকে দুই লাখ টাকা দিলেই মামলা খতম। তালাক দিতে গেলে তো কাবিনের পুরো ৮ লাখ টাকাই দিতে হতো।”

বিয়ের সুরক্ষার জন্য অবাস্তব পরিমাণে মোহরানা কাবিননামায় লেখা হয়েছে। যা নারীটার বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার গুরুত্বপূর্ণ মোটিভ হিসাবে কাজ করেছে। এমনকি পাশ্চাত্যেও বিয়ের হার হ্রাস পাওয়া ও লিভিং-টুগেদার বেড়ে যাওয়ার এটি অন্যতম প্রধান কারণ। বিয়ে করলে অনেক ‘ঝামেলা’। বিয়ে ছাড়া তথা তেমন কোনো দায়দায়িত্ব নেয়া ছাড়াই তো সব ‘সুবিধা’ পাওয়া যাচ্ছে। “বিয়েকে সহজ করো। বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ককে কঠিন করো” – এই মূলনীতির পরিবর্তে পাশ্চাত্য ভোগবাদীদের ‘একাডেমিক প্রেসক্রিপশন’ মুখস্ত আরোপের পরিণতি দেখেন।

যাহোক, রাহেলার কথায় ফিরি। নাহ, ইসলামী বা সেক্যুলার নারীবাদীদের কারো কাছেই এই সব রাহেলা, সকিনা ও জরিনাদের জন্য ‘প্রেজেন্টেবল একাডেমিক রিসার্চ’ বা ‘সাবমিট করার মতো সোশ্যাল ওয়ার্ক’ করা ছাড়া বাস্তব ও কার্যকরভাবে কিছু করার মন-মানসিকতা বা অবসর নাই। এমনকি নারীবাদী নারীরাও, খুব ব্যতিক্রম বাদে, তাদের অধিনস্ত নারীদের অধিকার আদায় করে না। ‘কাজের মেয়েদের’ নির্যাতন নারীরাই করে। বউ-শাশুড়ির দ্বন্দ্বে যে-ই নির্যাতিত হোন না কেন, তিনি একজন ‘ক্ষমতাশালী’ নারী দ্বারাই তো নির্যাতিত হয়ে থাকেন।

তাই সমস্যা ঠিক পুরুষতন্ত্র নয়। সমস্যা আমাদের শুদ্ধ নৈতিক চেতনায়। যেসব নারীরা নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় লিপ্ত হয় তারাও আসলে পুরুষবাদী। যদিও তাদের অনেকে কোনো না কোনো ধরনের নারীবাদের পক্ষে। নারীবিরোধী মনোভাব বা পুরুষতন্ত্রের ‘সুন্দর’ কিছু আবরণ আছে। কথাটা অন্যভাবে বললে, কিছু অপরিহার্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে পুরুষতন্ত্র এবিউজ করে। এর মধ্যে সামাজিক সংস্কৃতি এক নম্বরে। এর পরে ধর্ম। এর পরে রাষ্ট্র।

সেজো আপার বাসা হতে বের হয়ে ক্যাম্পাসে ফিরার পথে দেখলাম তারাবীর নামাজ শেষ হয়েছে। ঘর ফেরতি মুসল্লিদের জন্য মসজিদের সামনের রাস্তায় বাইক চালানো মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। চবি ক্যাম্পাসে প্রবেশের আগে এক নম্বর রাস্তার রেলগেইটে দেখলাম ওয়াজ মাহফিল হচ্ছে। মাইকের বিকট আওয়াজ। কোরআনের আয়াতের মুহুর্মুহূ তেলাওয়াত।

আফসোস, এত এত ধর্মচর্চা হচ্ছে। মুসল্লীদের ভিড়ে রাস্তায় হাঁটা যাচ্ছে না। রাস্তা বন্ধ করে জুমার নামাজ আদায় করা হচ্ছে। অথচ, মানবসভ্যতার ইতিহাসে শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তির এ কথাটা অত্র অঞ্চলে, শূন্য-গর্ব মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে আজ অবধি ‘যথাযথ ধর্মীয় পবিত্রতা’ অর্জন করতে পারলো না ! তিনি বলেছিলেন, এমন সময় শীঘ্রই আসবে যখন দ্বীন তথা শুদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে। তখন একজন নারী একাকী সানআ হতে হাজরামাউত পর্যন্ত (অর্থাৎ, একটা দেশের রাজধানী হতে আর একটা দেশের রাজধানী পর্যন্ত) একাকী ভ্রমণ করবে। আল্লাহর ভয় এবং বন্য প্রাণীদের ভয় ছাড়া অন্য কোনো প্রকারের ভয়-ভীতিতে সে আক্রান্ত হবে না।

কোথায় সে সমাজ? অগ্রগতি কদ্দুর? জীবনের কয়েক দশক ইসলামপন্থীদের সাথে সম্পৃক্ত থেকে দেখেছি, ক্ষমতার ডাণ্ডা মারার অবাস্তব চিন্তার বাহিরে এমন নিরাপদ ও মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কোনো তরীকা তাদের বা কারো মধ্যেই নাই। নারীদের কীভাবে কত বেশি ‘অদৃশ্য’ করা যায়, সেই চেষ্টায় দিনরাত মশগুল থাকার ব্যাপারে যেন ধর্মীয় সমাজপতিদের মধ্যে ‘ইজমা’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নারীর পোশাক নিয়ে ইসলামিস্টরা যতটা সংবেদনশীল, সক্রিয় ও উচ্চকণ্ঠ; নারীর নিতান্ত মানবিক অধিকার নিয়ে তারা ততটাই উদাসীন, জড় ও অনুভূতিশূন্য।

কোনো নারীই আজ নিরাপদ নয়। পরিবারের পুরুষ অভিভাবকদের নিরাপত্তা বলয়ের বাইরে প্রত্যেক নারীই অনিরাপদ। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করা মধ্যবয়সী স্ত্রী, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া কন্যা, স্কুলে পড়া মেয়েসহ কাউকেই আমি নিহত রাহেলার চেয়ে এতটুকু বেশি নিরাপদ মনে করি না। পার্থক্য হলো একাকী পুকুর পাড় দিয়ে তাদেরকে সন্ধ্যা রাতে কর্মস্থল হতে ফিরতে হয় না। এতটুকু। কত ভয়াবহ পরিস্থিতি, চিন্তা করে দেখেন।

ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়া বেচারী রাহেলাকে আমি দেখি নাই। তার কোনো ছবিও পত্রিকাতে সম্ভবত ছাপা হয় নাই। কিন্তু ঘটনাটা আমার মননের গভীরে এতটাই রেখাপাত করেছে যে আজ ‘রাহেলা’ নামটা শুনে মনের সেই চাপা পড়া গভীর ক্ষত ও অন্তহীন বেদনার ঘা যেন কাঁচা হয়ে উঠলো। কান্নাভেজা স্বরে উপস্থিত ফ্যামিলি মেম্বারদের ড্রয়িং রুমে বসিয়ে ঘটনাটা বললাম। তাদের এও বললাম, ‘সমাজের হত-দরিদ্রদের জন্য তোমাদের কাজ করতে হবে। তোমরা ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হয়েছো। কিন্তু ভুলে যেও না সিরিয়া-ইরাকের মতো আমাদের দেশেও প্রবল মানবিক সংকট চলছে। এখানেও যুদ্ধ চলছে। পার্থক্য শুধু বারুদ-বোমার ব্যবহার না হওয়া।’ একটা অনিরাপদ সমাজে তাই আত্মপ্রতিষ্ঠায় ভুলে থাকার সুযোগ নাই। কখন যে কে রাহেলার মতো করুণ পরিণতির সম্মুখীন হয় তার কোনো ঠিক ঠিকানা নাই।

ইচ্ছা করছে, অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্তের ‘ছন্নছাড়া’ কবিতার সেই রাস্তার-ছেলে, বখাটেদের একজন হই, যারা গাড়ি চাপা পড়া ভিখারীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার জন্য পাগলের মতো গাড়ি খুঁজছিলো। শিগগিরই… রক্তে মাখামাখি সেই দলা-পাকানো ভিখিরিকে ওরা পাজাঁকোলা করে ট্যাক্সির মধ্যে তুলে দিল । চেঁচিয়ে উঠলো সমস্বরে– আনন্দে ঝংকৃত হয়ে– প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ আছে…!

সাত-আট বছর আগে প্রিয় কবি চৌধুরী গোলাম মওলা ভাইকে এই টেবিলের সামনে বসিয়ে এক বিকেলে সেই আবৃত্তি শুনেছিলাম। রেকর্ড করেছিলাম এমপিথ্রি রেকর্ডারে। ক’দিন শুধু এটি বার বার শুনেছি। সে সময়ে বেশ কিছু দিন, দিন-রাত, এমনকি স্বপ্নেও কানে বাজতো মাওলা ভাইয়ের অসাধারণ সেই আবৃত্তি– প্রাণ আছে, এখনো প্রাণ আছে, প্রাণ থাকলেই স্থান আছে মান আছে, সমস্ত বাধাঁ-নিষেধের বাইরেও আছে অস্তিত্বের অধিকার।

রাহেলার বাঁচার আকুতি এ মুহূর্তে শুধু কল্পনা করতে পারি। সেই অস্ফুট কথার চেয়ে বেশি মানবিক, মনে হচ্ছে, কিছু হতে পারে না। সেই আর্তি স্বকর্ণে শোনার দুর্ভাগ্য না হলেও, বিশেষ করে আজকে অপর এক ভাগ্যাহত রাহেলাকে দেখার পরে সেই রাহেলার কথা মনে পড়ে গেল। যেন কানে বাজছে মারাত্মকভাবে​ আহত মৃত্যু পথযাত্রী সেই বালিকার ক্ষীণ আর্তস্বর, ‘আমি মরি নাই। আমি বেঁচে আছি।’ হতভাগ্য কাদম্বিনীর মতো মেয়েটি ক’দিন পরে সত্য সত্যই মরিয়া প্রমাণ করিল, দুদিন পর্যন্ত সে ধর্ষণস্থলে পড়ে ছিলো, বেঁচে ছিলো, হয়তোবা এ কথা বলার জন্য– আমি মরি নাই। আমি বেঁচে আছি…।

ফেসবুকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য

Asif Nur Talukder: “নারীর পোশাক নিয়ে ইসলামিস্টরা যতটা সংবেদনশীল, নারীর নিতান্ত মানবিক অধিকার নিয়ে তারা ততটাই উদাসীন, জড় ও অনুভূতিশূন্য।”

Sir, I think This line is the Moral point of this script.

Manzur Murshed: লেখাটা পড়ে অনেক আবেগাপ্লুত হয়ে পড়লাম। বিশেষ করে অচিন্ত্যকুমার সেন গুপ্তের ‘ছন্ন ছাড়া’ কবিতার উদ্ধৃতি যারপরনাই আবেগী করে তুলল। অনেক অনেক ধন্যবাদ স্যার। আপনার লেখাগুলো মনের খোরাক জোগায়।

Ferdous Sujon: স্যার, দারুণ একটা আলোচনা। ফ্যাক্ট বেইজড হয়ে এবং ডগম্যাটিক না হয়ে তুলনামূলক চিন্তা ও অভিজ্ঞতা থেকে এবং দরদ দিয়ে সমস্যার সমাধান ভেবেছেন। পুরুষতন্ত্র বিষয়ে আপনি ঘুরে ফিরে একই কথাই বলেছেন। ঐ আপাতদৃষ্টিতে ক্ষমতাবান নারী, পুরুষ সম্পর্কিত দিক দিয়েই প্রভাবশালী এবং আরেক নারীকেই নির্যাতন করছে। সেই পুরুষতন্ত্রেরই প্রতিনিধিত্ব। আপনিও তা-ই বলেছেন। তথাকথিত ক্ষমতায়ন বাদ দিয়ে আপনার প্রস্তাবিত শুদ্ধ নৈতিক চেতনার চর্চায় এই বৈষম্য বা নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতির সমাধান হবে বলে আপনি মনে করছেন? আমারও ব্যক্তিগত আগ্রহ ও পেশাগত প্রয়োজন, উভয় অবস্থান হতে আলোচনাটা করতে চাই। ধন্যবাদ স্যার।

Mohammad Mozammel Hoque: হ্যাঁ, আমি তা-ই মনে করি। পুরুষতন্ত্র কিংবা নারীতন্ত্রের পরিবর্তে মানবতন্ত্রকে সামনে আনতে হবে। অর্থাৎ মানবতাবাদী হতে হবে। তবে তা পাশ্চাত্য দর্শনের মানবতাবাদের সমার্থক নয়, বিরোধীও নয়। আমার প্রস্তাবিত শুদ্ধ মানবতন্ত্র, বুঝতেই পারছেন, পাশ্চাত্য ঘরানার মানবতন্ত্র নয়, আবার তা প্রাচ্য ঘরানার ঈশ্বরতন্ত্রও নয়। বরং এতদুভয়ের সুসমন্বয়। কীভাবে? তা বিস্তারিত পরবর্তী কোনো সময়ের জন্য তোলা রইলো। এখন ঘুমাবো।

Jannatul Ferdous Rupa: রাস্তা-ঘাটে বের হলে অনেক সমস্যাই ফেস করতে হয়। একদম কোন প্রয়োজন ছাড়া বের হওয়ার কথা ভাবাই যায় না। আমার মনে হয় যে কোন বয়সের প্রতিটা মেয়েই এ ধরনের সমস্যার কথা মাথায় রেখেই ঘর থেকে বের হয়। আসলেই যতই আইন আইন করে চিল্লাচিল্লি করা হোক, এর কোন প্রতিকার নেই। ……

লেখাটির ফেসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *