কাঙালের কথা বাসি হলেই ফলে। বলেছিলাম ‘রিফর্ম ফ্রম উইদিন’ হবে না। এখন সেটাই প্রমাণিত হলো। যারা রিফর্ম চেয়েছিলেন কিংবা এখনো চান, তাদের কর্তব্য হলো নতুন প্ল্যাটফর্ম গড়ে নেয়া। যে কোনো একজন প্রাক্তন সভাপতিই হতে পারেন নতুন উদ্যোগের ঝাণ্ডাবাহী, নকীব। কালেক্টিভ লিডারশিপের ভুল ফর্মুলা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সেল্ফ-ব্র্যান্ডিংকে নিতে হবে ইতিবাচকভাবে।

পুরনো ও অকার্যকর কেন্দ্রনির্ভর ‘জায়ান্ট ট্রি’ মডেলের পরিবর্তে ইসলামী আন্দোলনের এই নতুন ধারাকে গড়ে উঠতে হবে গুচ্ছ পদ্ধতির ‘ওয়াইড গার্ডেন’ মডেলে।

তারমানে, আমি চাই অনেকগুলো সংগঠন ও উদ্যোগ গড়ে উঠুক। কেউ রাজনীতি করবেন পূর্ণ মনোনিবেশ সহকারে। পলিটিশিয়ান হবেন আপাদমস্তক। কেউ সমাজসেবা করবেন, টেকসই সোশ্যাল ওয়ার্কের প্রসিডিউর ফলো করে। কেউ সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করবেন একনিষ্ঠ হয়ে। উইথ টোটাল ইনভলভমেন্ট। নিজের আগ্রহ ও যোগ্যতার ভিত্তিতে কেউ ধর্মীয় অঙ্গনে কাজ করার জন্য নিজেকে নিয়োজিত করবেন। এ কাজে তাকে হতে হবে নিবেদিতপ্রাণ।

যাদের যোগ্যতা আছে তারা বুদ্ধিবৃত্তির অঙ্গনে কাজ করবেন। স্বীয় বিবেকের নির্দেশনা অনুসরণ করে চলবেন। সিদ্ধান্তের জন্য পলিটিশিয়ানদের দ্বারস্থ হবেন না। মূলকথা হলো, jack of all trades but master of none হওয়ার পুরনো পদ্ধতি বাদ দিয়ে প্রত্যেক ব্যক্তি তার জন্য উপযোগী বিশেষ কোনো সেক্টরের কাজে মনোনিবেশ করবে।

একটি কেন্দ্রীয় সংগঠনের আওতায় সব সেক্টরে শাখা তৈরি করার পরিবর্তে প্রত্যেকটি সেক্টরের কাজ বা সংগঠন হবে সম্পূর্ণ স্বাধীন ও স্বতন্ত্র। নেতৃত্ব গড়ে উঠবে যোগ্যতা ও প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে। মতবিরোধ ও ভাংগন হবে সামগ্রিকভাবে মতাদর্শ ও কৌশলগত উন্নয়ন ও অগ্রগতির নামান্তর। ফিজিক্যাল গ্রোথে কোষ বিভাজনের মতো।

প্রত্যেক সেক্টরে সংগঠন হবে অনেকগুলো। নিজ নিজ বিবেচনায় ন্যায়ের ভিত্তিতে তারা সব কল্যাণজনক কাজে পরস্পর প্রতিযোগিতা করবে। কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে নয়, বরং এই বহুধাবিভক্ত, বিচ্ছিন্ন ও বিচিত্র সব উদ্যোগগুলো সমন্বিত হবে বৃহত্তর আদর্শের ওপেন গাইডেন্স বা কমন পয়েন্ট অব রেফারেন্সের মাধ্যমে। সময়ে সময়ে হতে পারে ইস্যুভিত্তিক ঐক্য বা বৃহত্তর আদর্শের নিরব মতৈক্য (tacit agreement)। non-administrative ধরনের যে কোনো কাজের এটিই হলো সুস্থ ধারা ও টেকসই পদ্ধতি।

একজন বুদ্ধিজীবী হিসেবে আমি স্বভাবতই বুদ্ধিবৃত্তিক অঙ্গনে কাজ করাকে প্রেফার করি। বড়জোর মানবিক মূল্যবোধ উন্নয়নের লক্ষ্যে পরিচালিত কোনো সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগ আমি নিতে পারি। প্রস্তুতি পর্যাপ্ত হওয়া সাপেক্ষে।

যারা রাজনীতি করবেন তাদের জন্য রইল শুভেচ্ছা ও শুভাশিস। সময়ের সাহসী সন্তান হিসেবে আপনারা এগিয়ে যান, এটাই প্রত্যাশা। কথা অনেক হয়েছে। এবার কাজে নেমে পড়েন। উদ্যোগী হন। শুধু বাংলাদেশ নয়, এ বিশ্বকে নতুন করে গড়ার কাজে নিয়োজিত হন অদম্য হয়ে। আর পিছুটান নয়। এবার শুধুই এগিয়ে যাওয়া। নতুন দিনে, নতুন ধারায়, নব উদ্যমে।

পোস্টটির ফেসবুক লিংক

Similar Posts

One Comment

  1. I like this concept, so all Islamic Scholars will work on their own expertise area, like Sahabas were engaged in different fields to preach Islam and establish an enforcemental Islamic society !
    In this situation no one should criticize no one in public ; but ‘ihtisab’ procedures always will be open among the scholars with friendly manner without pride and boosting !!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *