আইন ও সমাজের অনুমোদন না থাকার কারণে,
কিংবা অন্য কোনো কারণে ভালোবাসার নারীটির যখন থাকে না তেমন আগ্রহ,
তখন কোনো সক্ষম পুরুষ যদি ভুলে যায় ‌‘ওসব কিছু’র কথা,
অথচ সেই নারীটির সান্নিধ্যকে তার তখনো মনে হয় এক অমূল্য পাওয়া,
তাহলে নিশ্চিত বলা যায়,
পুরুষটি সত্যিকারভাবে ভালোবাসে সেই নারীটিকে।
নারী পুরুষের সম্পর্কের ক্ষেত্রে সত্যিকারের ভালোবাসা, যৌনতাকে অতিক্রম করে যায়।
সত্যিকারের ভালোবাসা যৌনতানির্ভর নয়। বরং এতে থাকে মানসিক তৃপ্তি। থাকে পূর্ণতার অনুভব।
কামনা আর ভালোবাসার এই পার্থক্য অনেক পুরুষ বুঝতে পারে না।
স্থূল রুচির পুরুষেরা নারীদেরকে দেখে নিছক কামনার দৃষ্টিতে।
বিবেচনা করে পুতুলের মতো অনুভূতিহীন, সংসারের প্রয়োজনীয় আসবাবপত্রের মতো ভোগ্যপণ্য হিসেবে।
দাম্পত্য সম্পর্কের ক্ষেত্রে যৌনতা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলেও
সত্যিকারের ভালোবাসার ক্ষেত্রে এটি মুখ্য বিষয় নয়, বরং একটি প্রাসঙ্গিক ব্যাপার।
মানবিক বন্ধনের ভিত্তি হলো সহমর্মিতা। যৌনতা এখানে একটি অন্যতম অনুষঙ্গ।
ইংরেজিতে ফুলফিলমেন্ট বলে একটা কথা আছে। সত্যিকারের ভালোবাসায় এটি লক্ষ্য হিসেবে কাজ করে। শরীরী সাহচর্য যেখানে উপলক্ষ্য মাত্র।
ভালোবাসা মানুষের জীবনে পূর্ণতা এনে দেয়।
পারিবারিক, সামাজিক বা অন্য কোনো ধরনের সম্পর্ক না থাকা সত্ত্বেও দুজন
নারী ও পুরুষের মধ্যে যখন এক ধরনের ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে ওঠে তখন এটি অস্বীকার করার মানে হয় না যে যৌনতা হলো তাদের এ বিশেষ সম্পর্কের ভিত্তি, লক্ষ্য বা মূল আকর্ষণ।
এ ধরনের সম্পর্ক হতে পারে কামনার সম্পর্ক, হতে পারে অবৈধ সম্পর্ক কিংবা বৈধ দাম্পত্য সম্পর্ক, অথবা যে কোনো কিছু।
কিন্তু তা যদি হয় ভালোবাসা,
যদি দাবি করা হয় সম্পর্কটি হলো সত্যিকারের ভালোবাসার, তাহলে সেটি যৌনতাকে অতিক্রম করে যাবে।
ভালোবাসার নারীর কাছে একজন প্রেমিক পুরুষ অযাচিতভাবে পুরুষ হয়ে উঠবে না।
ভালোবাসার নারীর কাছে সে সব সময়ে একজন নির্ভরযোগ্য মানুষ হিসেবে থাকবে।
সহমর্মিতা হবে তাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তি। পারস্পরিক আস্থা হবে তাদের সম্পর্কের মূল ভিত্তি বা চালিকাশক্তি

 

কামনা আর ভালোবাসার এই যাচাই-সূত্র দিয়ে হে তরুণেরা, তোমরা নিজেদের যাচাই করে নাও।
মেপে দেখো, তোমাদের ভালোবাসার দাবি কতটুকু খাঁটি।
‌‘ভালোবাসার মানচিত্রে’ খুঁজে নাও নিজের অবস্থান।
না, নারীর সাথে পুরুষের সম্পর্ক ভালোবাসার সম্পর্কই হতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
যেমন, দাম্পত্য সম্পর্ক হলো কিছু সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালন এবং অধিকার আদায়ের বিষয়।
এসব বিষয়ে এর আগেই আমি কথা বলেছি। তাই এখানে আর নতুন করে কিছু বলছি না।
ভালোবাসা হওয়া না হওয়া, বিশেষ করে তা যদি হয় সত্যিকারের ভালোবাসা, সেটা নিয়ে খুব একটা ভাবিত হবার কিছু নাই।
সেটি হলে ভালো। না হলেও চলে।
যা চলে না, তা হলো প্রতারণা।
আমার এই কথাটা মনে রাখবে,
‌‘চুক্তি করে ভালোবাসা যায় না;
চুক্তি করে শান্তি পাওয়া যায় না; প্রেমের কোনো চুক্তি হয় না।’
ভালোবাসা গড়ে ওঠে অবচেতনে।
ভালোবাসার সম্পর্ককে যদিও গড়ে তুলতে হয় সযতনে।

 

ফেইসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *