আমার কী রোগ,
কেন আমি কর্মবিমুখ স্তব্ধ হয়ে থাকি রাত্রি দিন,
মাঝে মাঝে, তুমি কি তা জানো?

আমার এই রোগের নাম, ‘তুমি’!
এই রোগের একমাত্র ঔষধ, ‘তুমি’!
তুমি কি তা জানো?

যখন দেখি তুমি আছো,
হয়তো ব্যস্ত কোনো কাজে,
হয়তো নিরালায়, আমার পাশে;
তখন মনে হয় দুনিয়াটা কতো সুন্দর,
সবকিছু কতো মধুর!

যখন তুমি আড়াল হয়ে যাও,
অথবা যাও দূরে, কোনো কাজে,
অথবা অন্য কারো সংসার সাজাতে,
তখন মনে হয়, এই পৃথিবী বড় নিঠুর,
কোনো মানে নেই এই প্রিয়-বঞ্চিত জীবনের।

তুমি আমার প্রেম,
তুমি আমার নারী,
তুমি আমার সংগ্রামী হওয়ার প্রেরণা,
তুমি আমার পুরুষ জীবনের স্বার্থকতা।

তোমাকে ছাড়া বিপ্লবী হওয়া অসম্ভব,
তোমাকে ছাড়া সুখী হওয়া অসম্ভব,
তোমাকে ছাড়া কবিতা লেখা অসম্ভব,
তোমাকে স্মরণ না করে
সুন্দর কিছু অনুভব করা অসম্ভব।

অথচ তোমাকে পাওয়া, একান্ত আমার করে,
শুধু সামাজিক চুক্তির বলে, অসম্ভব।
আইনের অধিকারে গৃহিণী হিসেবে তোমাকে পাওয়া,
সে তো কোনো পাওয়া নয়। জানি।
তোমাকে পাওয়া মানে তোমার হৃদয়কে পাওয়া,
তোমাকে পাওয়া মানে
হতে পারা তোমার শ্রেষ্ঠ প্রেমিক।

তোমার মননে,
তোমার নারীসত্তার সবটুকুতে,
যদি স্থিত থাকি আমি,
যদি ঠাঁই পাই তোমার অন্তরে,
যদি হতে পারি শ্রেষ্ঠ নাবিক
তোমার প্রেমের সমুদ্রে,
তাহলেই শুধু সুখী হবো আমি।
ভাববো সেদিন,
পেয়েছি তোমাকে সত্যিকারভাবে।

যতদিন না পারি এভাবে সুখী হতে,
ততদিন সারবে না আমার এই নিরব ব্যাধি।
একাকীত্বের এই যন্ত্রণা,
ভালোবাসার এই রোগ
বড় সাংঘাতিক। জীবনঘাতী।

আমার কর্মব্যস্ত জীবন দেখে
বাইরে থেকে বোঝে না লোকেরা,
ভিতরে ভিতরে আমি কতটা অসহায়,
নির্ভরশীল তোমার উপরে।

ভুল করে তারা মনে করে,
আমি অনেক সুখি।
ভুল করে মনে করে,
আমি যেন ভুলে গেছি প্রেম।
ভুল করে মনে করে,
নিরানন্দ আদর্শবোধটুকু যেন
আমার জীবনের সবকিছু।
ভুল করে তারা মনে করে,
যেন সেই কবে নষ্ট হয়ে গেছে
আমার ভালোবাসার ভ্রূণ।

অথচ, ভেতরে-ভেতরে আমি এক অচেনা মানুষ,
অতিমাত্রায় সংবেদনশীল,
সঙ্গ-নেশায় মাতাল এক
চির প্রত্যাশী প্রেমিক পুরুষ।
আজীবন আমি
এক অসহায় কাঙ্গাল, ভালবাসার।

যখন তোমাকে না দেখি,
মাত্র কিছু সময়ের জন্যে,
মনে হয় আমার চেয়ে বড় দুঃখী কেউ নেই,
এই বিশ্ব সংসার জীবনে।

তুমি যখন এসে দাঁড়াও আমার পাশে,
মনে হয় তখন
আমি অনায়াসে জয় করতে পারি
সমস্ত বিশ্ব একাকী।
মনে হয়, আমার চেয়ে বেশি সুখী
কেউ নেই আর এই জগতে।

তুমি আমার দুঃখের কারণ,
তুমি আমার সুখের উৎস,
তুমি আমার ভালো না থাকার জন্য দায়ী,
তুমি আমার আনন্দময় থাকার
নির্ভার নিশ্চয়তা।

কী নামে ডাকবো তোমায়,
জানি না।
যে নামেই ডাকি না কেন,
তুমি আমার ‘সেই তুমি’,
তারুণ্যের প্রতীক স্বপ্নময়
এক আলোর মৌসুমী।
তোমাকে ছাড়া জীবন
এক শূন্য মরুভূমি।

হৃদয়ের মূল্যে পেতে চাই তোমাকে
আমার হৃদয়ের জমিনে।
নাগরিকত্ব দিতে চাই তোমাকে
আমার হৃদয় রাজ্যের নিবাসী হিসেবে।
তোমার সাথে আবদ্ধ হতে চাই
নিখাদ ভালোবাসার
এক চির-বন্ধনে।
তোমার সাথে আমার
সম্পাদন করতে চাই একটা চুক্তি,
ভালোবাসা ব্যবসার।

এই বিপন্ন মানুষটিকে বাঁচানোর জন্যে,
ভালোবাসার মানুষের হৃদয়ে
নিজেকে খুঁজে পাওয়ার জন্যে,
হৃদয়ের দামে হৃদয় পাওয়ার জন্যে
তোমাকে আমার ভীষণ দরকার।

এই গভীর নিশিথে
আছি তোমার সম্মতির অপেক্ষায়,
মননে চির কিশোর সেই আমি
তোমার স্বপ্ন পুরুষ –
শ্রাবণ দিনের আকাশ

ফেইসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *