গতকাল গেলো আন্তর্জাতিক নারী দিবস। চায়নাসহ তিনটি দেশ এই দিনে সরকারী ছুটি দিয়েছে। দেশে-বিদেশে, সরকারী-বেসরকারী নানান কর্মসূচি।
আমাদের দেশের ইসলামপন্থীরা কোথায়? তাদের ভূমিকা জানতে চাই।
এসবি ব্লগ থেকে নির্বাচিত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য
লাল বৃত্ত: কোনো ভূমিকা নেই। এরা এখনো নারী নিয়ে ভয়াবহ কনফিউশনে আছেন। এদেরকে কী করবেন, কোথায় রাখবেন, কীভাবে রাখবেন– এ নিয়ে আশংকাজনক ধরনের লজ্জা কাজ করছে।
নারী স্বাধীনতা কিংবা নারীর অধিকার সংক্রান্ত আলোচনা আসলেই চুপসে যায়। বিষাদ ও জড়াগ্রস্ত কোটরাগত চক্ষু নিয়ে দোদ্যুল্যমান। ইসলামের অনেক বিষয়কেও আলখেল্লার নিচে লুকিয়ে রাখতে অভ্যস্ত। অথচ নিয়ম মেনে প্রাপ্য পাওনা বুঝিয়ে দিলেই হয়ে যায়।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: যাক, আপনার মোটামুটি বিস্তারিত একটা মন্তব্য পাওয়া গেল। এত দিন তো খালি ফুলেল মন্তব্যই পেয়েছি। ধন্যবাদ।
বাংলার জমিন রাখিব মুক্ত: নারী নিয়ে ইসলামে অবশ্যই সুস্পষ্ট মন্তব্য ও চিন্তা আছে। তবে ইসলামপন্থীরা নিজেরাই কয়েক ভাগে বিভক্ত। তাই তাদের আখের গুছাতে তারা ব্যস্ত।
হাসমত: আপনাকে ধন্যবাদ। তবে লেখাটা এত সংক্ষিপ্ত যে মন্তব্যই করা যাচ্ছে না। তারা কী ভূমিকা পালন করছে, কী করছে না, আরো কী করা দরকার ছিল– একটু বিস্তারিত লেখা দেয়া যেত না?
তারপরেও বলি, নারীদের জন্য ইসলামের যে ভূমিকা, তা ফুটিয়ে তোলা যাচ্ছে না। কিন্তু এই নারীদের বাদ দিয়ে কীভাবে ইসলাম কায়েম সম্ভব? তাদের আনুপাতিক হার দিন দিন বেড়েই যাবে। রাসূলের (সা) দেয়া পূর্বাভাস তাই তো বলে।
লক্ষ লক্ষ নারী গার্মেন্টসে কাজ করছে, অথচ তাদের জন্য সেই কিছু বস্তুবাদী এনজিও ছাড়া আর কেউই মাথা ঘামায় না।
আমাদের দৃষ্টি কোথায়? আল্লাহ পাকই ভাল জানেন।
অনেক ধন্যবাদ।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: নারীদের জন্য তো আলাদা সংগঠন আছে, যেমন ইসলামী ছাত্রী সংস্থা ইত্যাদি। তাদের সাংগঠনিক প্রচারপত্রে নারীত্বই মূল গুরুত্বে (ইসলামী ছাত্রশিবির ইত্যাদিতে যেমনটি আছে তেমনভাবে) ইকামতে দ্বীনের উপর স্পষ্ট কোনো কথা নাই!
এখন এই নারীত্ববাদী নারী ইসলামী কর্মীরাই বলুক, আন্তর্জাতিক নারী দিবসের ব্যাপারে তাদের কর্মসূচী কী অথবা তাদের বক্তব্য কী?
হাসমত: তারা কী আর বলবে? তাদের কী বলা উচিত কিংবা কী করা উচিত, হয়ত তা স্পষ্ট নয়।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: আসল কথা হলো ইকামতে দ্বীনের ফরজিয়াত সম্পর্কে ছাত্রী সংস্থার অ-পরিস্কার অবস্থান। একজন বললেন, ছাত্রী সংস্থা জামায়াতের অংগ সংগঠন। মূল সংগঠনে যেহেতু ইকামতে দ্বীনের ব্যাপারটা আছে, তাহলে অংগ সংগঠনে না থাকলেও চলে। সমস্যা হলো: ইসলামী ছাত্রী সংস্থা যে জামায়াতের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণাধীন অঙ্গ সংগঠন– এটি নিয়ে লুকোচুরি! বুঝতে পারছি না, ইসলামী ছাত্রী সংস্থার লোকজন কি ব্লগ পড়ে না?
ইবনে বতুতা: মোজাম্মেল ভাই, আপনার কাছ থেকে বিস্তারিত লেখা আশা করছি। আপনি একদিন বলেছিলেন, জামায়াতের নারীনীতি সঠিক নয়, নারীকে তারা অনেক আলাদা বা দূরের করে দেখে (আপনার কথাটা হুবহু মনে নেই, তবে অনেকটা এরকমই)।
আমরা লক্ষ্য করি, হাদীসে লেখা আছে, রাসূলের (সা) সময় নারীরা মসজিদে যেতেন এবং উনার মজলিসগুলোতে উপস্থিত থাকতেন। পুরুষদের পাশাপাশি তাঁরাও যখন প্রয়োজন তখন সরাসরি রাসূলকে (সা) নানান প্রশ্ন করে ইসলামের বিধান জেনে নিতেন। উদাহরণ– হজ্বের সময় একজন নারী রাসূলকে (সা) কোনো একটা ব্যাপারে কিছু প্রশ্ন করেছিলেন। আরেকবার এক ঈদের জামায়াত শেষে রাসূল (সা) যখন সবাইকে দান করতে উৎসাহিত করলেন তখন সেখানে উপস্থিত নারীরা তাদের গয়না খুলে খুলে দান করতে লাগলেন। আরেকবার আরেকজন নারী রাসূলের (সা) এক ভরা মজলিসে উপস্থিত হয়ে সরাসরি বললেন, আমি আপনাকে বিয়ে করতে ইচ্ছুক। রাসূল (সা) তাকে তিরস্কার করেননি।
এসব থেকে বোঝা যায়, নারীরা পুরুষদের কাছাকাছি অবস্থান করতেন। অপরপক্ষে বর্তমানে জামায়াত বলুন, সুফি বলুন, আর তাবলীগ বলুন– সবক্ষেত্রেই নারীদেরকে অনেক দূরে রাখা হয়। ওয়াজ মাহফিলে নারীদের বসার জন্য আলাদা খোঁয়াড় রাখা হয়। রাসূলের (সা) যুগের সাথে মিল পাচ্ছি না।
এই প্রেক্ষাপটে বিস্তারিত একটা লেখা আশা করছি মোজাম্মেল ভাইয়ের কাছ থেকে। আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক ইসলামের শিক্ষা অর্জন ও বিতরণের তৌফিক দান করুন।।
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: একটা লেখা হাতে আছে। এর একটা প্রিন্ট কপি এক প্রাগ্রসরমনা বিদেশ ফেরত দায়িত্বশীলকে মন্তব্য দেয়ার জন্য পড়তে দেই। তিনি এমন সাঁড়াশি আক্রমণ করলেন যে, ভাবলাম এমন এডাপ্টেশনবাদী লোকই যদি এত ক্ষেপে যান তাহলে সাধারণরা তো আমার মস্তক দাবি করে বসবেন! কখনো লেখাটা ব্লগে দিলে আপনাকে জানাবো, ইনশাআল্লাহ।