ফিলোসফি কী, এ নিয়ে এক বিদগ্ধ পাঠকের সাথে আমার খানিকটা বাক-বিনিময়। যারা সহজভাবে ফিলোসফি বুঝতে চান, তাদের কাছে, পড়লে, ভালো লাগবে। আশা করি।
মানুষের ইচ্ছার স্বাধীনতা থাকা বা না থাকা নিয়ে আমি libertarianism-এ বিশ্বাস করি। কেননা,
we are free agents, though we have to choose within given options. this is philosophical, specifically epistemological predicament.
মানুষ স্বাধীন। কিন্তু এই স্বাধীনতাকে চর্চা করতে হয় সীমিত পরিসরে। মানুষের স্বাধীনতা ও সীমাবদ্ধতা দুটোই অভিজ্ঞতালব্ধ।
তাই, ‘মানুষ স্বাধীন, নাকি স্বাধীন নয়?’ এই ধরনের প্রশ্নই হলো ভুল। কেননা, ‘মানুষ স্বাধীন নয়’, এই কথাটা কোনো মানুষ যখন বলে তখন তাকে তা বলতে হয় খানিকটা স্বাধীনতা চর্চা করেই। আবার ‘মানুষ স্বাধীন’ – যারা এই কথাটাকে সত্য ও সঠিক মনে করে, কথাটা লিখে বা বলেই তবে তা অন্যকে জানাতে হয়। তারমানে, নিজের মনের ভাবকে কোনো না কোনো বস্তুগত তথা শারীরিক প্রক্রিয়া দিয়ে প্রকাশ করতে আমরা বাধ্য। যাকে আমরা ভাষা হিসেবে জানি। ভাষার বাইরে মনের ভাব, এমনকি সত্যি হওয়া সত্ত্বেও, অর্থহীন। ইউজলেস।
যেটা কোনোভাবেই প্রকাশযোগ্য নয়, সেটা থাকা না থাকার কোনো মানে হয় না। বিশেষ করে অন্যদের কাছে। তাই, ‘মানুষ স্বাধীন’ – এই কথাটাও মানুষকে এক ধরনের ভাষাগত বাধ্যবাধকতার মধ্য দিয়ে প্রকাশ করতে হয়। শেষ পর্যন্ত যার মানে দাঁড়ালো, মানুষ আসলে ‘পূর্ণ’ স্বাধীন নয়।
আসলে স্বাধীনতা মানে হলো ‘সংশ্লিষ্ট’ নিয়মের অধীনতা। এবার এই নিয়মতান্ত্রিক স্বাধীনতাকে আপনি স্বাধীনতা বলুন কিম্বা অধীনতা বলুন, সেটা আপনার ব্যাপার। in either sense, both are empirically true. ‘সত্যিকারের’ ‘অথরিটি’র কাছে নিজেকে সাবমিট করে তার অধিনতা বা গোলামী মেনে নেওয়াই হলো ‘সত্যিকারের স্বাধীনতা’।
ফেসুবকে প্রদত্ত মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য
Nure Elahi Shafat: “ভাষার বাইরে মনের ভাব, এমনকি সত্যি হওয়া সত্ত্বেও, অর্থহীন। ‘ইউজলেস’।
যেটা কোনোভাবেই প্রকাশযোগ্য নয়, সেটা থাকা না থাকার কোন মানে হয় না। বিশেষ করে অন্যদের কাছে।”
উচ্চারণ ধ্বনির বাইরেও তো ভাষা আছে, নন ভারবালি। যেটা অর্থ তৈরি করে ভাষা/শব্দ/ধ্বনিহীনতায়। মানুষের আবেগ-অনুভূতি কিংবা তার প্রয়োজনে হুট করে/মাঝেমধ্যে সে ভাষাকে খুঁজে পায় না, অবচেতনে/চেতনে। হ্যাঁ অন্যের কাছে তা ইউজলেস হতে পারে কিন্তু নিজসত্তার কাছে কি?
মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক: প্রথম কথা হচ্ছে, ভাষা মানে সব ধরনের ভাষা। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, নিজের কাছে অর্থপূর্ণ হওয়া এবং অন্যদের কাছে অর্থপূর্ণ হওয়া, দুটো ভিন্ন জিনিষ। নিজের কাছে অর্থপূর্ণ হলেও অন্যের কাছে যদি তা অর্থপূর্ণ না হয় তাহলে তা শেষ পর্যন্ত ভাষা হয়ে উঠবে না। যার কারণে শেষ পর্যন্ত তা অর্থপূর্ণ, এই কথাটা বলাও এক অর্থে অর্থহীন হয়ে দাঁড়ায়।