পাঠকের প্রশ্ন: “যুক্তি ও প্রমাণ কি একই জিনিস? যুক্তি কেন দেওয়া হয়? যে কোনো কিছু প্রমাণ করার জন্যে কি যুক্তি আবশ্যক? যদি আবশ্যক হয় তাহলে এর পেছনে কী যুক্তি আছে?”
আমার জবাব: যুক্তি ও প্রমাণ একই জিনিস নয়। বরং যুক্তির ভিত্তিতে মানুষ প্রমাণ থাকা বা না থাকার দাবি করে।
কনসেপ্চুয়াল যে কোনো কিছুর জন্য যুক্তি আবশ্যক। এমনকি, ‘যুক্তি লাগবে না’– এই ধরনের দাবির পক্ষেও যুক্তি দেখাতে হয়।
কথাটা উল্টা করে বললে, ‘যুক্তি যে লাগবে’ এজন্য ফারদার যুক্তি দেখাতে হয় না। কেননা, যুক্তি হচ্ছে স্ব-উপস্থাপিত ও স্বতঃপ্রতীত (self-presented and self-evident)।
যুক্তি হতে পারে অভিজ্ঞতাগত (empirical), যুক্তি হতে পারে বুদ্ধিগত (national), যুক্তি হতে পারে জ্ঞানের উৎসভিত্তিক।
অভিজ্ঞতা যে গ্রহণযোগ্য, সেটা অভিজ্ঞতাবাদীরা কীভাবে জানে? যদি বলা হয়, এর আগের অভিজ্ঞতা হতে। তাহলে শুরুর অভিজ্ঞতাটা কীভাবে কোত্থেকে আসলো?
স্ববিরোধ বা চক্রক দোষ হতে মুক্ত হয়ে এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেয়া সম্ভব নয়।
একই সমস্যা বুদ্ধিবাদের; কিংবা জ্ঞানের উৎস সংক্রান্ত অপরাপর মতবাদসমূহের।
আসলে জ্ঞানের উৎস সংক্রান্ত মতবাদগুলোর প্রত্যেকটিরই ভিত্তি হলো স্বজ্ঞা বা ইনটিউশান।
অভিজ্ঞতাবাদীদের কাছে কেন জানি মনে হয় অভিজ্ঞতাই সঠিক। বুদ্ধিবাদীদের কাছে কেন জানি মনে হয়, বুদ্ধি থেকে প্রাপ্ত জ্ঞানই সঠিক। এই যে ‘কেন জানি মনে হয়’, এইটা স্বজ্ঞা বা প্রত্যক্ষ জ্ঞান।
যুক্তির যৌক্তিকতা হলো স্বজ্ঞাত। Intuition is the argument for the need for augmentation.
পাঠকের প্রশ্ন: “লজিক তো একটা অবজারভেশনের উপরে ভিত্তি করে কাজ করে …”
আমার জবাব: অবজারভেশনের ভিত্তি কী? সেটা তো যুক্তি। কী বলো?
পর্যবেক্ষণ কীভাবে পর্যবেক্ষণ হয়ে ওঠে, সেইটা যদি বোঝার চেষ্টা করো তাহলে বুঝতে পারবে, পর্যবেক্ষণের প্রাথমিক ডাটাগুলো একটি সম্পূর্ণ পর্যবেক্ষণ হয়ে ওঠার জন্য সেগুলো আমাদের মাইন্ড বা cognitive faculty-তে এক ধরনের যাচাই-বাছাই ও সংযুক্তকরণের মধ্য দিয়ে যায়।
তথ্যের সাথে ধারণার সংমিশ্রণে পর্যবেক্ষণ গড়ে ওঠে।
যুক্তি হলো এক ধরনের স্বতঃপ্রতীত বা self-evident ধারণা।