“আল্লাহ্ তায়ালা কেন কিছু মানুষকে জন্মগতভাবে মুসলিম বানান আর কিছু মানুষকে জন্মগতভাবে অমুসলিম বানান? যাদেরকে জন্মগতভাবে মুসলিম বানান তাদের জান্নাতে যাওয়ার সম্ভবনা যারা জন্মগতভাবে অমুসলিম তাদের চাইতে বেশি নয় কি?” — একজন পাঠকের উক্ত প্রশ্ন নিয়ে খানিকক্ষণ আগে আমরা নিম্নের আলোচনাটি করেছি একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। পড়তে পারেন। হয়তো আপনার ভালো লাগতে পারে।

উক্ত প্রশ্নের উত্তরে আমি এই কথাগুলো বলেছি— হ্যাঁ, যারা জন্মগতভাবে মুসলিম হয়েছে, তারা একটা মুসলিম সংস্কৃতির মধ্যে বড় হয় এবং বসবাস করে। যার কারণে, ইসলাম গ্রহণ করা এবং মেনে চলার ব্যাপারে তাদের সুবিধা অন্যান্যদের চেয়ে অনেক বেশি। এক্ষেত্রে একটা আপাত পক্ষপাত হয়েছে, এটা অস্বীকার করা যায় না।

তবে খোদা যেভাবে ন্যায়বিচার করেন, আর আমরা যেভাবে ন্যায়বিচার নিয়ে চিন্তা করি, এই দুইটা জিনিস এক নয়। বরং খোদার ন্যায়বিচার হচ্ছে আমাদের ন্যায়বিচারের চেয়ে ভিন্নতর।

যেহেতু খোদা এবং আমরা ভিন্নতর সত্তা। আমাদের ন্যায়বিচারের মাপকাঠিতে যদি আমরা খোদাকে বিচার করতে যাই, তাহলে খোদাকে আমাদের সমতুল্য বিবেচনা করতে হয়। অথচ আমরা হচ্ছি লিমিটেড এবং পার্টিকুলার এনটিটি। আমাদের বিবেচনাবোধও হচ্ছে লিমিটেড এবং পার্টিগুলোর। আর খোদা (যদি তিনি থেকে থাকেন) হচ্ছেন আনলিমিটেড এবং অ্যাবসোলিউট।

এ কারণে খোদার বিবেচনা হচ্ছে আনলিমিটেড এবং অ্যাবসোলিউট, যা গ্রাপস করা কোনো লিমিটেড এনটিটির পক্ষে সম্ভব হওয়ার কথা নয়। খোদা কেন কোনোকিছুকে কোনো একভাবে করেন, সেটার কারণ আমরা ঠিক জানি না। এই না জানাটা বরং স্বাভাবিক ও যুক্তিসঙ্গত।

জগৎ, জীবন এবং খোদা সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হওয়া উচিত এমন যাতে করে আমরা আমাদের অস্তিত্বের দিক থেকে পুরো ব্যাপারটাকে সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করতে পারি। এই পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে যদি আমরা আমাদের অস্তিত্বের কারণ খুঁজতে যাই, তাহলে এক পর্যায়ে আমাদের এই এপিসটেমিক জার্নির ফাইন্ডিংস হিসেবে আমরা খোদার অস্তিত্বকে খুঁজে পাই।

বলতে পারেন, এক অর্থে আমরা খোদাকে আবিষ্কার করি। অথবা, বলা যায়, আমাদের জ্ঞান কাঠামোর সম্পূর্ণতার জন্য আমরা স্রষ্টার ধারণাকে নির্মাণ করি। যারা মনে করেন, GOD is out there, we just find it out as a fact, and get connected with HIM, তাদেরকে আমরা বলি বিশ্বাসী বা ঈমানদার। আমি নিজে এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত।

আমার, আপনার এবং যার যার অবস্থান থেকে আমাদের সবার উচিত আমাদের নিজেদের মতো করে সত্যকে খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করা। তাই, কেন ওরা আমাদের মত হয় নাই, বা আমি কেন অন্যদের মতো হই নাই, এটা কোনো যৌক্তিক প্রশ্ন নয়।

কারণ, we live, actually we find out ourselves, in a hierarchical and cyclical world. We don’t live in a flat world. In such a world what it is right now, luck distribution is a must for it’s becoming.

সবাই যদি এক রকম হতো তাহলে বর্তমান যে দুনিয়াতে আমরা বসবাস করছি সেটি অসম্ভব হয়ে পড়তো। আমরা জগতের অসম্ভবতা নিয়ে এখানে আলোচনা করছি না।

বরং আমাদের আলোচনার বিষয় হলো বিদ্যমান জাগতিক বাস্তবতাকে যতটা সম্ভব ভালোভাবে জানা এবং বিশ্লেষণ করা, এর অন্তর্নিহিত কারণ ও পরিণতি খুঁজে বের করার চেষ্টা করা। যাতে করে আমরা জীবন চলার পথে সঠিক করণীয় সহজে খুঁজে নিতে পারি।

আলোচনাতে অংশগ্রহণ করে ইঞ্জিনিয়ার রেজা বলেছেন:

Were Sahabas Muslim by born? Aren’t there atheists who are born Muslim.

It’s about how far one progresses from his/her starting point. For non-Muslims they start from (-), so the moment they accept tawhid, they start complete fresh which is far better than most of the by born Muslims.

On the other hand, a by born Muslim starts from + position. So, he/she needs to progress more than a non-Muslim.

There were sahabas who were Muslim just for one day, and still better than all of us.

It’s true there are additional social and family pressure for converters. But I think the situation for a by born Muslim if he/she wants to be a real practicing Muslim is not better in post 2000.

এরপর আমি বলেছি— ইসলামের দৃষ্টিতে সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্ম হচ্ছে ব্যক্তির একান্ত ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি, যেটাকে ইসলামের পরিভাষায় বলা হয় নিয়ত, আর ফিলসফির ভাষায় যেটাকে বলা হয় intentionality।

কোনো ব্যক্তি কিছু করতে পারুক বা না পারুক, জীবন ও জগৎ সম্পর্কে তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গি, এটিকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এবং এটার জন্যই মূলত মানুষকে দায়ী করা হবে। এমনকি, সেক্যুলার সেন্সেও এই দায়, যেটাকে সাধারণত বিবেকের দায় হিসেবে বলা হয়, সেটাকে কেউ অস্বীকার করতে পারে না।

আমাদের সবচেয়ে বড় দায় হল আমাদের আত্মপরিচয়কে খুঁজে বের করা। আত্মপরিচয় অনুসন্ধানের এই প্রক্রিয়াতে আমরা যার যার জায়গা থেকে সিরিয়াসলি এনগেইজ হবো, এটাই তো কথা।

কেন আল্লাহতালা সবাইকে সমান সুবিধা দেননি, এটি একটি জেনুইন প্রশ্ন। কেন আল্লাহতালা আত্মপরিচয় অনুসন্ধানের জন্য আমাদেরকে খানিকটা কনফিউজড করে পাঠিয়েছেন, এটিও একটা প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন। কেন আল্লাহতালা মানুষকে সৃষ্টি করেছেন বা এই জগতকে এভাবে সৃষ্টি করেছেন, এগুলোও কম গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন নয়।

ব্যাপার হলো, এই ধরনের প্রশ্নগুলো হলো এমন, যেগুলোর উত্তর ধারণ করা আমাদের পক্ষে অন্টলজিক্যালি সম্ভব হওয়ার কথা না। ওই যে পার্টিকুলার-অ্যাবসোলিউট, লিমিটেড-আনলিমিটেডের যে অন্টলজির কথা বললাম, সেটি অনুসারে।

তাই সব প্রশ্নের উত্তর ধারণ করা সবার পক্ষে সম্ভব হওয়ার কথা না। এর মানে এই নয় যে, সে ব্যক্তির কোনো প্রশ্ন জেনুইন নয়। আমাদের উচিত জেনুইন কোয়েশ্চেনগুলোকে নিয়ে এনগেইজ হওয়া।

আমাদের দিক থেকে আমাদের আত্মপরিচয় জ্ঞান কেমন হওয়া উচিত, সেটি হচ্ছে আমাদের জন্য অ্যাক্সিসটেন্সিয়াল জেনুইন কোয়েশ্চেন।

লেখাটির ফেইসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *