নাস্তিকতা তো বিশ্বাস নয়। এটা দর্শন বা উপলব্ধি। তাছাড়া, ঈশ্বর যদি থেকেই থাকে তাহলেও তো তা ইসলাম ধর্মের আল্লাহ নয়। কার, কোরানে তো অনেক সায়েন্টিফিক ভুল ও বৈপরিত্য আছে। ভিডিও আলোচনা ও লেখাআপনি যে যুক্তি দেন, তা মেনে নিয়ে আমরা বড়জোর অ্যাগনস্টিক হতে পারি, আস্তিক হতে পারি না।

একজন পাঠকের পক্ষ থেকে মেসেঞ্জারে পাঠানো মন্তব্য।

উনাকে আমি বলেছি,

জ্ঞানতত্ত্বের দৃষ্টিতে সকল জ্ঞানই হচ্ছে বিশ্বাস, কিন্তু সকল বিশ্বাস জ্ঞান নয়। শুধুমাত্র সেই বিশ্বাসগুলো জ্ঞান যেগুলো সত্যতানির্ভর ও যাচাইযোগ্য।

এই দৃষ্টিতে দেখলে নাস্তিকতাও একটি বিশ্বাস। বিশেষ করে যেটা শতভাগ নাস্তিকতা। উল্লেখ্য, যেটা আস্তিকতাও নয়, অজ্ঞেয়বাদও নয়, সেটাই হল পূর্ণ নাস্তিকতা।

সায়েন্সকে স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে ধরলে যে কোনো নন-সায়েন্টিফিক লিটারেচারের অনেক কিছুকেই ভুল মনে হবে। শুধু ধর্ম নয়, এর মধ্য থেকে দর্শন ও সাহিত্যও বাদ যাবে না।

সায়েন্স, বিশেষ করে ফিজিক্যাল সায়েন্সের দৃষ্টিতে কখনো সূর্য ডোবে না। ফিজিক্যাল সায়েন্সের দৃষ্টিতে আমি বা আমরা বলে কোনো কিছু নাই। ফিজিক্যাল সায়েন্সের দৃষ্টিতে ভালোবাসা, ঘৃণা, সুন্দর, অসুন্দর, কঠোর, নমনীয়, ভালো বা মন্দ– এগুলোর কোনো অস্তিত্ব নাই। এগুলো নন সায়েন্টিফিক ফেনোমেনা। এ রকম আরো হাজারো কথা বলা যেতে পারে। এখানে আমি শুধু একটু হিন্টস দিলাম।

এক ডিসিপ্লিনের স্টাডি দিয়ে অন্য ডিসিপ্লিনের কোনো কিছুকে ভুল বা সঠিক প্রমাণ করাই হচ্ছে একটা ক্যাটেগরি মিসটেক। বিজ্ঞানবাদীরা (sciencists) হরদম যা করে থাকে।

আর হ্যাঁ, আমার আলোচনা থেকে কেউ আস্তিকই হবে এমন কোনো কথা নাই। নাস্তিকও হতে পারে। এগনস্টিকও হতে পারে। যদিও আমি ব্যক্তিগতভাবে পরবর্তী দুইটাকে ভুল মনে করি।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আমার বিরোধী পক্ষের অবস্থানকে ভুল প্রমাণ করলে, অথবা আমার বিরোধীপক্ষ নিজের অবস্থানকে সঠিক প্রমাণ করতে না পারলে, আমার অবস্থান অটোমেটিক্যালি সঠিক প্রমাণিত হয়ে যায় না। নিজের অবস্থানকে প্রমাণ করার দায় থেকে কোনো পক্ষই মুক্ত থাকে না। সোজা কথায়, বার্ডেন অফ প্রুফ থেকে কারো রেহাই নাই।

একজন ফিলোসফারের কাজ হচ্ছে সকল ফিলোসফিক্যাল পজিশনগুলোকে যথাসম্ভব নিরপেক্ষভাবে তুলে ধরা। এরপর তিনি তার ব্যক্তিগত অবস্থান তুলে ধরতে পারেন এবং অতি অবশ্যই তা করতে হবে যথোচিত যুক্তির ভিত্তিতে। আমার মনে হয়, আমি এমনটাই করার চেষ্টা করি।

‘প্রমাণের দায়’ নিয়ে আমার একটা ইনফরমাল ভিডিও বক্তব্যের ইউটিউব লিংক–

লেখাটির ফেসবুক লিংক

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *