সেক্স কেন?
নানা দিক থেকে এর নানা উত্তর হতে পারে। বিবর্তনবাদী মনস্তত্বের দিক থেকে এর উত্তর হলো, মানুষ, বৃহত্তর অর্থে ম্যামালদের জন্য sex is the reward for reproduction।
একটু জাম্প করে ব্রিফলি বললে, মাতৃত্বকে কেন্দ্র করে একজন নারীর শারীরিক-মানসিক সবকিছু। ভুল বুঝবেন না। আমি বলিনি, নারীরা মাতৃত্বের দায়িত্ব ছাড়া আর কোনো দায়িত্ব পালন করবে না, করতে পারবে না বা করেনি।
নারী-পুরুষ উভয়েই মানব প্রজাতির অংশ। শুধু মানুষ বলে কিছু নাই। মানুষ পুরুষ হবে, নয়তো নারী হবে, এবং কারো কারো দাবী মোতাবেক ট্রান্সজেন্ডার বা অন্যকিছু হবে।
মানুষ হিসেবে আমাদের সর্বোচ্চ মূল্য(বোধ) হলো মনুষ্যত্ব। এ’কথার সাথে সাথে আপনাকে এ’কথাও মানতে হবে, আপনি যখন কাউকে বা নিজেকে ‘নারী’ বলবেন, নারী নামক সেই এনটিটির কাছে মেটারনিটি হলো দ্যা মোস্ট ইম্পর্টেন্ট অর সেন্ট্রাল থিং। নারী অধিকারের কথা বললেও হালনাগাদের নারীবাদ মাতৃত্বকে সেলিব্রেইট করে না। বরং কার্যত সিরিয়াসলি আন্ডারমাইন করে।
মনুষ্যত্ব, পুরুষত্ব-নারীত্ব থেকে শুরু করে ক্রেতা-বিক্রেতা, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অধিবাসী-আগত ইত্যাদি একেক দিক থেকে একেক পরিচয় আমরা একইসাথে ধারণ করি। আমাদের এই নানা ধরনের পরিচয় তথা মূল্য(বোধ)গুলো পরস্পর পরিপূরক। এ’গুলোর একটা আরেকটাকে প্রতিস্থাপিত করে না।
আমাদের সব সদর্থক মূল্যের মধ্যে সুসামঞ্জস্য সম্পর্ক ও ভারসাম্য তৈরী করা, প্রত্যেক হিউমেনিটারিয়ান ভেল্যুর জন্য উপযোগী ও স্বতন্ত্র স্পেইস তৈরী করা, এটাই তো সমাজ ও সভ্যতার কাজ। তা না করে আমরা একটার জন্য অপরটাকে বাদ দিয়ে দিচ্ছি। এটি মোটেও ভাল কাজ নয়।
মানলাম, বিশ্ববিদ্যালয় মানে মুক্ত আলোচনার জায়গা। কিন্তু মুক্ত আলোচনার সুযোগ মানে কি অবাধে যাচ্ছেতাই করার লিমিটলেস প্রটেকশান? কথাটা এজন্য বললাম, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে কোনোভাবে ক্ষমতা অর্জন করে একটা জনবিচ্ছিন্ন গোষ্ঠী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় মানে হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে ধর্ষণ করা, হত্যা করা, যেন একটা বিরাট বাহাদুরীর কাজ…!
পাশ্চাত্যের মতো হতে পারলেই যেন আমরা বেহেশতে চলে যাবো।
ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতে কেউ কেউ দেখছি ‘তুমি কেন চুরি করেছো, বলো?’ – এমন ধরনের লোডেড কোশ্চেন করছেন। এটি ফ্যালশিয়াস ফ্লড এপ্রোচ। তাদের মনোভাব ও বক্তব্য হলো, ট্রান্সজেন্ডার নারী মানে তো নারী-ই। এ’নিয়ে প্রশ্ন বা আপত্তি তোলার কোনো সুযোগ কোথায়? ট্রান্সজেন্ডার নারীকে নারী হিসেবে ভূমিকাপালন করার ব্যাপারে কথা বলার কী আছে?
আশ্চর্য! কেন কথা বলা যাবে না? ‘কথা বলতে দিতে হবে। চাই, প্রশ্ন করার অধিকার’ – এই শ্লোগান ফেইসবুকে কভার ফটো হিসেবে লাগিয়ে রেখেছি সেই ২০১৩ হতে। নিজেকে মুক্তমনা দাবী করে সবচেয়ে সংকীর্ণ আচরণ করতে দেখলে খুব খারাপ লাগে।
উন্নয়ন-সহযোগিতা নিতে বাধ্য হচ্ছি, তাই তাদের জঞ্জালও নিতে হবে?
কারো কাছ হতে উন্নয়ন সহযোগিতা নেয়ার মানে এই নয় যে চাহিবামাত্র আমার সবকিছু তার কাছে উজাড় করে দিতে হবে। সিঙ্গাপুরসহ দুনিয়ার অনেক দেশ পশ্চিমা দুনিয়া হতে উন্নয়ন-সহযোগিতা নিয়েছে, উন্নয়নের মিষ্টি খেয়েছে, কিন্তু স্বীয় ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক হওয়ার কারণে পশ্চিমা বিশ্বের অনেক জঞ্জাল বিশেষ করে জেন্ডার নৈরাজ্য তথা এলজিবিটিকিউ’র বড়িটা ফেলে দিয়েছে।
তারা পারলে আমরা কেন পারবো না?
সেদিন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে ট্রান্সজেন্ডারিজমের ওপর একটা উন্মুক্ত পাঠচক্র অনুষ্ঠিত হলো। আমি ছিলাম মূল বক্তা। আলোচনাটা বেশ প্রাণবন্ত ছিল। আমাদের ক্যামেরার ব্যাটারি ব্যাকআপ না দেয়ায় অনুষ্ঠানটা প্রপারলি রেকর্ড করা যায়নি।
অনেকের দাবী ছিলো পুরো আলোচনাটা অনলাইনে দেয়ার। সেদিনকার ডিসকাসশান পয়েন্টগুলোর ভিত্তিতে আজ চবি পুরাতন কলা ভবনে দর্শন বিভাগের শিক্ষক সামসুন নাহার মিতুল ম্যামের রুমে এই আলোচনাটা রেকর্ড করেছি। রেকর্ডেড এই আলোচনাতে যে কথাগুলো বলতে ভুলে গিয়েছিলাম তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট এখানে বললাম।
এই আলোচনাটা আছে সামাজিক আন্দোলন নামক ইউটিউব চ্যানেলে। সেখানে গতরাতে রেকর্ড করা একটা আলোচনাও আছে। একই বিষয়ে। বোর্ডে লেখার সুবিধা না পাওয়ার কারণে গত সন্ধ্যারাতের আলোচনাটা ততটা গোছালো হয়নি।
সামাজিক আন্দোলন চ্যানেলে “বাংলাদেশের তৃতীয় লিঙ্গ, হিজড়া বা ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায় সম্পর্কে পরীক্ষামূলক দর্শনচর্চা” এই শিরোনামে একটা আলোচনা পাবেন।
এনি ওয়ে। গো এহেড। হ্যাপী লিসেনিং।
মন্তব্য
ইমতিয়াজ কবির: হিজড়া আর ট্রান্সজেন্ডার কি এক? মনে মনে নারী কিন্তু পুরুষাঙ্গধারী মেয়ে হোস্টেলে ওঠে আর সুন্দরী নির্বাচিত হয়ে জাতীকে কি এনে দিলো? এদের বিষয়ে ইসলামি শরী‘য়া কি বলে? আলোচক: আব্দুল হাই মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ হুজুর