[কেন এই লেখা: আধুনিক নগরজীবনে বিশেষ করে পারিবারিক জীবনে প্রেম, ভালোবাসা নিয়ে বাস্তব-অবাস্তব মিলিয়ে এক ধরনের তালগোলে ধ্যান-ধারণা লক্ষ করা যায়। সে জন্য আমি কিছু কাজ করছি। এরই ধারাবাহিকতায় এই কথাগুলোকে পাবলিকলি বলা। এ ধরনের সেনসেটিভ বিষয়ে আমাদের মতো ব্যাকগ্রাউন্ডের লোকেরা সাধারণত খোলামেলা কথা বলে না। আমি এই অচলায়তনটি ভাংগতে চাই। কেননা, ventilation prevents explosion। আমি বিশ্বাস করি, সুস্থ ব্যক্তিজীবন গঠন হলো সুস্থ সমাজজীবন নির্মাণের অন্যতম অপরিহার্য শর্ত।]
১. ভালোবাসা এক ব্যতিক্রমী সম্পর্ক। কামনা, আকর্ষণ, শ্রদ্ধা কিংবা স্নেহকে আমরা ভুল করে ভালোবাসা হিসেবে মনে করি।
In most of the cases, we cannot differentiate between love and lust. We fool ourselves by considering mere physical attraction, respect or affection as love.
২. যৌনতার জন্য পারস্পরিক সম্মতিই যথেষ্ট।
We can do physical relation, anywhere and anytime with anybody else, just in favorable situations. Consent is the minimum requirement at best.
৩. ভালোবাসার সাথে যৌনতার সম্পর্ক অকেশনাল।
Sex is not love. Yet, love could be formed by successful sexual relation, as well as without sexuality.
৪. সামাজিক চুক্তির মাধ্যমে ভালোবাসা পাওয়া যায় না।
No social contract can create true love.
৫. ভালোবাসা নয়, দাম্পত্য সম্পর্কের ভিত্তি হলো সন্তান, সুখ, নিরাপত্তা। যদিও সফল দাম্পত্য জীবন এক পর্যায়ে সত্যিকারের ভালোবাসায় পরিণতি লাভ করে।
‘conjugal love’ is basically a bonding for children, pleasure and security. Though, a successful conjugal life ends-up in true love.
৬. রক্তের সম্পর্কের মাধ্যমে যে ভালোবাসা গড়ে উঠে তা নিতান্তই প্রাকৃতিক।
‘blood relation’ generates love for the family members. It’s a quite natural phenomenon.
৭. মতাদর্শগত দৃষ্টিভঙ্গি মানুষের মধ্যে এক ধরনের নৈতিক ধারণা তৈরি করে, যা সম-মতাদর্শ অনুসারীদের মধ্যে পরস্পরের জন্য এক ধরনের ভালোবাসা সৃষ্টি করে।
A person’s ideological biasness, creates his or her sense of moral preference; which is also a form of love.
৮. বৃহত্তর অর্থে, স্বেচ্ছাকৃত বন্ধন মাত্রই ভালোবাসার একটা ধরন।
From a broader perspective, any non-compulsory bonding is a form of love.
৯. চাইলেই সত্যিকারের ভালোবাসা তৈরি করা যায় না। সত্যিকারের ভালোবাসা গড়ে উঠে স্বতঃস্ফূর্তভাবে, ব্যক্তির অবচেতনে। এটি কোনো নিয়মবিধির বাধা মানে না।
But true love grows subconsciously. It cannot be made by any prior agreement or conscious effort.
কাছাকাছি কিছু কথা পাবেন এই ভিডিওটিতে:
গতকালকে আমার একটা গ্রুপে লেখাটা শেয়ার করেছিলাম। সেখানে একজন কয়েকটা সম্পূরক প্রশ্ন করেছেন। সেগুলো এখানে এড করে দিচ্ছি।
প্রশ্ন-১: যৌনতার চাহিদা মেটানোর জন্য বিয়ে করবো, কিন্তু রোমান্টিকতার চাহিদা মেটানোর জন্য কী করবো? আপনার বক্তব্যে ব্যাপারটা ঠিক ক্লিয়ার হয়নি! আপনি নিশ্চয়ই জানেন, রোমান্টিকতা/প্রেম-ভালোবাসার চাহিদা শুধু নারীদের নয়, পুরুষদের মধ্যেও অল্পবিস্তর বিদ্যমান।
উত্তর: প্রত্যেক নারী-পুরুষের মধ্যে মিস্টার/মিস পারফেক্ট-এর একটা কাল্পনিক অবয়ব আছে। বাস্তবের মানুষটি সেটার যত কাছাকাছি হয় তত আমরা সেই মানুষটাকে মিস্টার বা মিস পারফেক্ট বলে মেনে নেই। এবং তার সাথে রোমান্টিক সম্পর্ক গড়ে তুলি বা তুলতে চাই।
সে রকম ‘মনের মানুষ’কে যখন বাস্তবে পাওয়া যায় না, বা পেলেও তাকে বাস্তব জীবনে আনা যায় না; তখন নৈতিকতার দিক থেকে দুর্বল পরিস্থিতিতে পরকীয়া ঘটবে, আর শক্তিশালী মূল্যবোধ সক্রিয় থাকলে যার যার ভালোবাসা নিয়ে তারা সুন্দর সামাজিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলবে। প্লাটোনিক ভালোবাসা বলতে যা বুঝায়।
মনে রাখতে হবে, ভালোবাসা থাকা আর ভালোবাসার সম্পর্ক স্থাপন করা, দুইটা দুই জিনিস। নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই এটি সঠিক। এ সংক্রান্ত আমার একটি লেখা: ভালোবাসা আর ভালোবাসার সম্পর্ক আলাদা জিনিস।
প্রশ্ন-২: নারীরা যৌনতাকে কীভাবে ডিফাইন করে? তাদের যৌন আকাঙ্ক্ষা/চাহিদা কি আমাদের (পুরুষদের) মতোই? অর্থাৎ তারা কি শারীরিকভাবে আমাদের প্রতি এট্রাক্টেড হয়? নাকি এ চাহিদা কেবল সন্তান উৎপাদনের সাপেক্ষে?
উত্তর: “ভালোবাসার এই মানচিত্রের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য হলো, যৌনতার নিবিড় অংশে উপনীত হতে হয় হালকা যৌনতার স্তর পেরিয়ে। তা না করে কেউ যদি সরাসরি ইন্টারকোর্স শুরু করে দেয়, তাহলে তা সম্মতিনির্ভর ধর্ষণ বা প্যাসিভ রেইপের শামিল।
নারীদের শরীরে আসতে হয় মনের দরজা দিয়ে। পুরুষবাদী সমাজের বেকুব লোকেরা এটি জানে না বা মানতে চায় না। যার কারণে আমাদের সমাজে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী দাম্পত্য ধর্ষণের অসহায় শিকার।
৩। নারী মনের দুই দুয়ারী ঘর।
নারীদের মনের দরজা দুই দিক থেকে খোলা যায়। বা দুই দিকে খোলা থাকে:
(১) যৌনতার মাধ্যমে। এবং অবশ্যই তা হালকা থেকে নিবিড় হওয়ার প্রক্রিয়ায়;
(২) ভালোলাগা ও ভালোবাসার মাধ্যমে।
মানসিক তৃপ্তিবোধ বা সত্যিকারের ভালোবাসা তাদের মধ্যে পছন্দের মানুষটির প্রতি যৌন আকর্ষণ তৈরি করে বা করতে পারে। আবার সফল দাম্পত্য সম্পর্কের মাধ্যমেও পুরুষ সঙ্গীটির প্রতি তৈরী হতে পারে কোনো নারীর সত্যিকারের ভালোবাসা।
এইখানে দেয়া মানচিত্রটি দেখলে বিষয়টা বুঝতে পারার কথা। বিস্তারিত জানার জন্য সংশ্লিষ্ট পোস্টটা পড়া যেতে পারে: ভালোবাসার মানচিত্র।
প্রশ্ন-৩: ওইদিন সৌরভ বললো, নারীরা রোমান্টিক নয় বরং রোমান্টিকতার ভোক্তা! কথাটা ব্যাখ্যাসাপেক্ষ। আমি ঠিক বুঝতে পারিনি। আপনি কি এ ব্যাপারে সৌরভের সাথে একমত? যদি একমত হন তাহলে কাইন্ডলি ব্যাপারটা একটু ব্যাখ্যা করবেন।
উত্তর: “নারীরা রোমান্টিক নয় বরং রোমান্টিকতার ভোক্তা!”— কথাটা অর্ধসত্য। অর্থাৎ এর আগের-পরের কথার সাথে মিলিয়ে পড়লে বা দেখলে, সত্য। আর বিচ্ছিন্নভাবে পড়লে মিথ্যা।
সে যাই হোক, মূল কথা হলো, নারী পুরুষ উভয় শ্রেণীর মানুষই একইসাথে রোমান্টিক এবং রোমান্টিকতার ভোক্তা। রোমান্টিকতা একটা কমন ব্যাপার।
রোমান্টিকতা আর সৌন্দর্য এক নয়। যদিও এতদুভয় ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। তারমানে beauty and romanticism are necessarily connected, but not identical. moreover, ‘beauty’ is mere subjective.
সৌন্দর্যের বিষয়ে একটা কথা পরিষ্কার করে বলা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছি।
যৌন সৌন্দর্য নারীদের জন্য সবল পুরুষ যতটা ততটুকু, কিংবা তারচেয়েও বেশি ‘সুন্দর’ নারী। আর পুরুষদের যৌন আকর্ষণ শুধু সুন্দর নারী। অর্থাৎ নারী হলো নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য সৌন্দর্যের প্রতীক।
সেজন্য মুমিন নয় এমন নারীদের জন্য নারীদের সতরের সীমা পুরুষের সমতুল্য। যদিও মুমিন নারীদের পরস্পরের জন্য পরস্পরের সতর হলো পুরুষদের পরস্পরের জন্য পরস্পরের যতটুকু সতর, ততটুকু।
প্রশ্ন-৪: আপনি বলেছেন, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকের উচিত মানবিক গুণাবলি অর্জন করা। আপনার দৃষ্টিতে মানবিক গুণগুলো কী কী?
উত্তর: মানুষকে ভালোবাসা। মানুষের সেবা করা। মানুষকে মানুষ হিসেবে মর্যাদা দেয়া। ন্যায় প্রতিষ্ঠা করা, অন্তত নিজের আওতায়। জ্ঞান অর্জন করা। জ্ঞান শিক্ষা দেয়া। বিদ্বেষমুক্ত, দ্বিমুখীনতামুক্ত সরল জীবনযাপন করা। সত্য কথা বলা। বড়দের আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধা করা, ছোটদের স্নেহ করা। এ সংক্রান্ত আমার লেখা: মানবিক হতে পারা না পারা।