মাঝে মাঝে খুব গুরুত্বপূর্ণ কিছু হারিয়ে যায়। অকারণে। অথবা সামান্য ভুলে। খানিকটা কষ্টের পর মনে হয়, ভালই তো হলো। নতুন সেটআপ। নতুন জীবন। নতুন করে পাওয়া না পাওয়ার আনন্দ। অথবা বেদনা। নতুন সম্পর্ক, সময়; মনে হয় ততটা মন্দ নয়।
হারানোর কষ্ট না থাকলে পেত না মানুষ ফিরে পাওয়ার আনন্দ। চলে যায় সুখ, সাজানো সংসার। তাই তো এত আনন্দ, ফিরে পাওয়ার। মাঝে মাঝে ভাবি, মানুষের আছে অদ্ভূত রীতিমতো পাশবিক ক্ষমতা, নতুন পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেয়ার।
কী হারিয়েছি, তাই এত হাহাকার?
ঘটনা হলো, গতকাল ফোনের ডিফল্ট আর এসডি কার্ড হতে গত কয়েকমাসের সব ছবি ভিডিও কাট করে ল্যাপটপে ট্রান্সফার করেছি। তারমধ্য থেকে একটা ছবি ফেইসবুকে শেয়ার করার জন্য খুঁজতে গিয়ে দেখি, কোন ফাঁকে যেন প্রায় ১২জিবি’র পুরো ফোল্ডারটাই ডিলিট করে দিয়েছি। সেই কষ্টে উপরের এই লেখা।
যে ছবিটা শেয়ার দিতে চেয়েছিলাম সেটার মতো আরো একটা ছবি একটু আগে মিতুল ম্যাম তুলে দিয়েছেন। যেমনটা দেখছেন, এখানে আমি টাইটাকে হাইলাইট করছি।
প্রায় ১২-১৪ বছর আগের কথা। মাস্টার্স রেজাল্টের পরে সনাতনী ধর্মের একছাত্রী এসে বললো, “স্যার আমাদের ধর্মে শিক্ষা সমাপনান্তে গুরুকে প্রণাম করে দক্ষিণা দিতে হয়। তাই এসেছি গুরু দক্ষিণা নিয়ে।”
আমার জন্য একটা টাই আর ম্যামের জন্য একটা স্কার্ফ। সত্যি সত্যি সে আমাদেরকে ইনডিভিজুয়েলি প্রণাম করলো, পদধূলি নিলো, আর গুরুদক্ষিণা দিলো।
আমার গোটা বিশেক টাই আছে। শীতকালে একটু সাজুগুজু করা যায়। শীতকাল মেয়েদের জন্য অসুবিধা। ছেলেদের জন্য সুবিধার। গরমকালে ভাইসভার্সা।
যাহোক, টাই-এর গল্পে আসি। কোনো কোনো টাই পরাই হয় না। কোনোটা একবার পরি। ছাত্রীর কাছ হতে গিফট হিসেবে পাওয়া এই দামী টাইটা কয়েকদিন পরি। যতবার পরি ওর কথা মনে পড়ে।
যারা নয় আমলা শিক্ষক, অথবা কামলা শিক্ষক, অথবা শিক্ষা ব্যবসায়ী কিংবা একদা শিক্ষক; যারা শুধুই শিক্ষক, শিক্ষা যাদের ব্রত, মোর দেন প্রফেশন, তাদেরই একজন আমি; অথবা হতে চাই তেমনই একজন।
তাই খুব এনজয় করি একেবারেই আলাদা এই সম্মানটুকু।
ধন্যবাদ, অপি সাহা।
মন্তব্য
অপি সাহা: স্যার, আমি সত্যিই অনেক ভাগ্যবান যে আপনাদের মতো শিক্ষক পেয়েছি। আমিও এখন কলেজে পড়াই। আমি আজ যা হয়েছি তার সবটাই আমার শিক্ষকদের আশির্বাদে। আপনি আমাকে মনে রেখেছেন, এটা যে আমার জন্য কত বড় পাওয়া তা বলে বুঝাতে পারবোনা। ম্যাডাম আর আপনি সুস্থ থাকুন এটাই প্রার্থনা।